Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Monday
December 15, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
MONDAY, DECEMBER 15, 2025
ভ্লাদিমির পুতিন: যার হাত ধরে বিশ্ব ব্যবস্থায় পুরনো রূপে ফিরছে রাশিয়া

মতামত

জান্নাতুল তাজরী তৃষা
10 May, 2021, 11:00 pm
Last modified: 10 May, 2021, 11:01 pm

Related News

  • পেগাসাস স্পাইওয়্যার ও গুপ্তচরবৃত্তির আন্তর্জাতিক রাজনীতি
  • সাইবার নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি
  • আবারও একটি তালেবান রাষ্ট্র মেনে নেবে আফগান জনগণ?
  • বাস্তববাদের রাজনৈতিক দুনিয়ায় অভিবাসীর ভাগ্য যখন ‘সলিল সমাধি’
  • তালেবান টিকে থাকলে কার লাভ কার ক্ষতি?

ভ্লাদিমির পুতিন: যার হাত ধরে বিশ্ব ব্যবস্থায় পুরনো রূপে ফিরছে রাশিয়া

বিশ বছরেরও অধিক সময় যাবত রাষ্ট্রের শীর্ষ ক্ষমতায় থাকা পুতিনের এত বছরের পররাষ্ট্রনীতি বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, তার মূল লক্ষ্য রাশিয়াকে অতীতের অবস্থানে অর্থাৎ সোভিয়েত আমলে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া।
জান্নাতুল তাজরী তৃষা
10 May, 2021, 11:00 pm
Last modified: 10 May, 2021, 11:01 pm
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইলাস্টেশন: পিক্সাবে

আয়তনে বিশ্বের সর্ববৃহৎ এবং অন্যতম পারমাণবিক ক্ষমতাধর দেশ রাশিয়ার রাষ্ট্র ক্ষমতায় প্রায় দুই দশক ধরে অধিষ্ঠিত আছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সাংবিধানিকভাবে পরপর দুইবারের বেশি একজন ব্যক্তির রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকার সুযোগ ছিলো না রাশিয়ায়। তাই প্রেসিডেন্ট পুতিন সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ২০৩৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকাকে নিশ্চিত করেছেন, যা অঘোষিতভাবে তাকে দেশটির স্বৈরশাসকে পরিণত করেছে। জোসেফ স্ট্যালিনের পর তিনিই রাষ্ট্র ক্ষমতায় সর্বোচ্চ সময় থাকবেন।

বিশ বছরেরও অধিক সময় যাবত রাষ্ট্রের শীর্ষ ক্ষমতায় থাকা পুতিনের এত বছরের পররাষ্ট্রনীতি বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, তার মূল লক্ষ্য রাশিয়াকে অতীতের অবস্থানে অর্থাৎ সোভিয়েত আমলে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া।

অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নিজের অবস্থান স্থায়ীকরণসহ আঞ্চলিক প্রভাব ও কর্তৃত্ব বৃদ্ধির সাথে সাথে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও শান্তি, নিরাপত্তাসহ বৈশ্বিক সকল ক্ষেত্রে রাশিয়াকে অপরিহার্য শক্তি হিসাবে রূপ দেয়াই পুতিনের চূড়ান্ত ভিশন। বিশ্লেষকরা মনে করেন, পুতিন রাষ্ট্র ক্ষমতাকে ইতোমধ্যে ব্যক্তিগতকরণ করে ফেলেছেন এবং অন্যান্য লক্ষ্য অর্জনে দেশের মধ্যে অভিজাত শ্রেণির স্বার্থ রক্ষাকে যথেষ্ট গুরুত্বও দিচ্ছেন। রাশিয়াকে নিয়ে প্রেসিডেন্ট পুতিনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা আরো স্পষ্টভাবে বুঝতে রাশিয়ার ইতিহাস নিয়ে কিছুটা আলোচনা করা যেতে পারে।

১৯১৭ সালে ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিনের বলশেভিক পার্টির নেতৃত্বে অক্টোবর বিপ্লব/বলশেভিক বিপ্লবের মাধ্যমে পতন হয় রুশ বা রাশিয়ান জার সম্রাজ্যের। পরের বছর, ১৯১৮ সালে বলশেভিকরা সরকার গঠনকালে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ, যা সামলে উঠতে সময় লেগেছলো প্রায় ৪ বছর। ১৯২২ সালে লেনিনের নেতৃত্বে রাশিয়ান, ট্রান্সককেশিয়ান, বেলারুশিয়ান এবং ইউক্রেনিয়ান রিপাবলিক নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে ইউনিয়ন অব সোভিয়েত সোশ্যালিস্ট রিপানলিকস বা ইউএসএসআর।

১৯২৪ সালে লেনিনের মৃত্যুর পর ক্ষমতায় আসেন জোসেফ স্ট্যালিন। তার নেতৃত্বে রাশিয়ার অর্থনীতি ও শিল্পে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটে। তবে দ্রুত শিল্পায়নের ফল হিসেবে ১৯৩২-১৯৩৩ সালে দুর্ভিক্ষের ধাক্কাও সামলাতে হয়েছিলো তৎকালীন সোভিয়েত রাশিয়াকে। তার নেতৃত্বেই সোভিয়েত রাশিয়া অংশ গ্রহণ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে। যদিও যুদ্ধ শুরু হওয়ার কিছুকাল পূর্বে জার্মান নাজি বাহিনীর সাথে সোভিয়েতের অনাক্রমণাত্বক চুক্তি হয়েছিলো, তথাপি সোভিয়েত যুক্তরাষ্ট্রসহ মিত্রবাহিনীর পক্ষে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। তবে মিত্র বাহিনীর সাথে সম্মিলিতভাবে যুদ্ধে জয়লাভ করলেও দ্রুতই আদর্শগতভাবে ভিন্নতার দরুণ সোভিয়েত ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের মাঝে শুরু হয় স্নায়ুযুদ্ধ। বিশ্ব তখন দুইমেরুতে বিভক্ত হয়ে পড়ে। একটি সোভিয়েত নেতৃত্বাধীন সমাজতান্ত্রিক ব্লক এবং অন্যটি যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন পুঁজিবাদী ব্লক।

মূলত এসময় থেকেই রাষ্ট্রসমূহ পারমাণবিক সক্ষমতা উন্নয়ন ও বৃদ্ধি করতে থাকে। পুঁজিবাদী ব্লক যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় ন্যাটো বাহিনী (১৯৪৯)। প্রত্যুত্তরে সোভিয়েত তার মিত্রদের সমন্বয়ে সমাজতান্ত্রিক ব্লক প্রতিষ্ঠা করে ওয়ার'শ প্যাক্ট (১৯৫৩)। এভাবেই আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বাড়তে থকে উত্তেজনা। পারমাণবিক সক্ষমতা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে গবেষণা, মহাকাশ জয়, শক্তির বহিঃপ্রকাশে আফগানিস্তান আক্রমণ, এইসবকিছুর প্রেক্ষিতে সোভিয়েত রাশিয়া ধীরে ধীরে অর্থনৈতিক স্থবিরতায় পড়তে থাকে এবং ফলাফল হিসেবে ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে স্বাধীন ১৫ টি রাষ্ট্র গঠিত হয়। যাত্রা শুরু হয় বাইপোলার (Bipolar) বা দ্বিমেরু ভিত্তিক বিশ্বব্যবস্থা থেকে ইউনিপোলার (Unipolar) বা একমেরু কেন্দ্রিক, অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র কেন্দ্রিক পুঁজিবাদী বিশ্বব্যবস্থা, যা এখন অব্দি বর্তমান।

কিন্তু সোভিয়েতের পতন এবং প্রধান দুই বিশ্বশক্তির একটি হওয়ার "মর্যাদা" থেকে ছিঁটকে পড়াকে রাশিয়ানরা স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেনি, যার বহিঃপ্রকাশ রাশিয়ার বিগত দুই দশকের পুতিনের রাজনৈক আচরণ ও পরষ্ট্রনীতি বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যায়।

রাশিয়া সব সময়ই তার রাজনৈতিক প্রভাব বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে রাখতে চায়। সোভিয়েত আমলে রাশিয়ার মূল ভূমি তার চারপাশের অঞ্চলের উপর যেভাবে প্রভাব বিস্তার করত, নব্বইয়ের দশকে তা ভেঙে যাওয়ার পরেও সেই প্রভাব টিকিয়ে রাখতে রাশিয়া প্রতিষ্ঠা করে "কমনওয়েলথ অব ইন্ডিপেনডেন্ট স্টেটস" বা সিআইএস। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যে স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহ গঠিত হয়েছিলো তাদের সমন্বয়েই এই সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়। সিআইএস এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা এবং রাশিয়া ও বেলারুশের মাধ্যমে এক ধরণের সুপারন্যাশনাল সংঘ (Supernational Union) তৈরি করা, যেখানে ক্ষমতার মূলে থাকবে প্রধানত রাশিয়া। তবে লিথুনিয়া, লাটভিয়া, এস্তনিয়া (বাল্টিক রাষ্ট্রসমূহ) রাশিয়ার উপর অবৈধ দখলের অভিযোগ দিয়ে সিআইএসে যোগদান করেনি। অন্যদিকে, জর্জিয়া প্রথমে যোগদান করলেও ২০০৮ সালে সদস্যপদ প্রত্যাহার করে নেয় এবং ক্রিমিয়াকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের ফলে  ২০১৮ সালের পর থেকে সংগঠনটিতে ইউক্রেনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

মূলত রাশিয়ার একক কর্তৃত্ব থেকে বেরিয়ে আসতেই উক্ত দেশগুলো সিআইএসে যোগদান করেনি বা পরে বেরিয়ে এসেছে। তবে রাশিয়া বাদে বাকি যে ৮ টি দেশ এখনো এই সংগঠনের সদস্য সেসব দেশে নিঃসন্দেহে রাশিয়ার সামরিক ও রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে, যা ইউক্রেনের দিকে তাকালেই বোঝা যায়।

২০১৪ সালে অবৈধভাবে ক্রিমিয়া দখল করে নেয় পুতিন নেতৃত্বাধীন রাশিয়া। ডনবাসে ক্রিমিয়া-রাশিয়া যুদ্ধে অন্তত ১৪ হাজার মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর একুশ শতকে এটিই ইউরোপে সবচেয়ে বড় ভূমি দখলের উদাহরণ। পশ্চিমা বিশ্বসহ অন্যান্য রাষ্ট্রগুলো রাশিয়ার এমন কর্তৃত্বপরায়ণতাকে সমর্থন করেনি। কিন্তু প্রেসিডেন্ট পুতিন সেসব বক্তব্যে কর্ণপাতও করেনি।

বোঝায়ই যাচ্ছে, কতটা কর্তৃত্বপরায়ণ স্বভাবের হলে একুশ শতকে এসেও কোনো রাষ্ট্র বিতর্কিত কোনো ভূমিকে চৌদ্দ হাজার প্রাণের বিনিময়ে ৭ বছর ধরে দখল করে রাখতে পারে। আনুষ্ঠানিকভাবে নব্বইয়ের দশকেই পূর্ব ইউরোপের উপর থেকে রাশিয়া দাবি ছাড়তে বাধ্য হলেও মন থেকে হয়ত এখনো দাবি ছাড়তে পারেনি, যার প্রমাণ পূর্ব ইউরোপের উপর তার কর্তৃত্ববাদী আচরণ থেকেই অনুমান করা যায়।

পূর্বাঞ্চলীয় কথনের পর এবারে আসা যাক পশ্চিমে দিকে। আদর্শগত দিকে পশ্চিমাদের বিপরীত হওয়ায় বরাবরই রাশিয়ার সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক দ্বান্দ্বিক। ১৯৪৭ সালে ট্রুম্যান ডক্ট্রিনের মাধ্যমে পশ্চিমারা বিশ্বব্যাপী রাশিয়ান কমিউনিজম বিস্তার রোধের যেই এজেন্ডা হাতে নিয়েছিলো, সেটা পূর্ণতা পায় নব্বইয়ের দশকে সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের মাধ্যমে। পতনের পর প্রায় পুরো নব্বইয়ের দশক জুড়ে রাশিয়ায় চলেছিলো অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা আনায়নের কাজ। গেলো শতাব্দীর শেষের দিকে, ১৯৯৯ সালে ক্ষমতায় আসেন সাবেক কেজিবি ইন্টেলিজেন্স অফিসার ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি ব্যক্তিগতভাবে সোভিয়েত পতনের মূল কর্মক হিসেবে পশ্চিমাদের বিশেষত, যুক্তরাষ্ট্রকেই দায়ী বলে মনে করেন।

তবে ২০০১ সালে নাইন ইলেভেন ঘটনার পর বৈদেশিক রাষ্ট্র নেতাদের মধ্যে পুতিনই সর্বপ্রথম  জর্জ ডাব্লিউ বুশকে টেলিফোন করে সমবেদনা জানিয়েছিলেন। কারণ তখন রাশিয়ার উদ্দেশ্য ছিলো যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বৈশ্বিক অংশীদার হওয়া। কিন্তু ২০০৮ সালের দিকে যখন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়, তখন আবার রাশিয়া পশ্চিমাদের থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে চীনের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করে, যেনো অর্থনৈতিকভাবে রাশিয়াকে পশ্চিমাদের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়তে না হয়। রাশিয়ার এমন সুবিধাবাদী আচরণের উদাহরণ এটিই প্রথম নয়। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাতীয় স্বার্থের পক্ষে রাশিয়া মিত্রবাহিনীর হয়ে যুদ্ধেও জড়িয়েছিলো। অর্থাৎ, জাতীয় স্বার্থের ক্ষেত্রের রাশিয়া চির প্রতিদ্বন্দী যুক্তরাষ্ট্রের সাথেও সহযোগিতামূলক আচরণ করতে দ্বিধাবোধ করে না।

জিডিপির পরিমাপে বিশ্বে রাশিয়ার অবস্থান ১১ তম। অর্থাৎ অর্থনীতিতে ইতালির চেয়েও ছোট দেশ এখন রাশিয়া। কিন্তু তারপরেও আন্তর্জাতিক বিশ্বে রাশিয়া ইতালি বা ফ্রান্সের তুলনায় অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ এক্টর (Actor) হিসেবে কাজ করছে। এখন প্রশ্ন হতে পারে অর্থনীতিতে এত পিছনে থাকা সত্ত্বেও এমনটা হওয়ার কারণ কী?

এই প্রশ্নের উত্তর খুব বেশি জটিল নয়। বিশ্বের ৯০ শতাংশ পারমাণবিক অস্ত্র রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র, এই দুই দেশের মজুদে রয়েছে। এছাড়া রাশিয়া বিশ্বের অন্যতম অস্ত্র নির্মাতা ও রপ্তানিকারক দেশ। ধারণা করা হয়, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি গ্যাস ও তেলের মজুদও রয়েছে রাশিয়ায়। ইউরোপের অনেক দেশই রাশিয়ার প্রাকৃতিক সম্পদের উপর অনেকাংশে নির্ভশীল। সোভিয়েত ভাঙনের পরে বৈশ্বিক রাজনীতিতে রাশিয়ার প্রভাবকে কমাতে পারলেও, মূলত এইসব ভূরাজনৈতিক ও কৌশলগত কারণে রাশিয়াকে একেবারে প্রতিহত করতে পারেনি পশ্চিমারা।

অন্যদিকে, রাশিয়ার তেল - গ্যাস ক্রয়ের সবচেয়ে বড় ক্রেতা চীন। দিন দিন চীনের সাথে রাশিয়ার অর্থনৈতিক ও ব্যবসায় বাণিজ্য সংক্রান্ত সম্পর্ক বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা পশ্চিমা বিশ্বের জন্য অন্যতম দুঃশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেনোনা ঐতিহাসিককাল হতেই সমাজতান্ত্রিক চীনও পশ্চিমাদের তথা যুক্তষ্ট্রের অন্যতম প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী।

খ্রিস্টপূর্ব তিনশত অব্দে সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের প্রধানমন্ত্রী কৌটিল্য তার বিখ্যাত গ্রন্থ "অর্থশাস্ত্রে" বলেছিলেন, "শত্রুর শত্রু হয় বন্ধু"। নিঃসন্দেহে রাশিয়া ও চীন কৌটিল্যের এই নীতিকেই অনুসরণ করছে পশ্চিমাদের উপর চাপ বজায় রাখতে।

পুতিনের পেশাগত অভিজ্ঞতা ও কৌশলবিদ্যার ছাপ রাশিয়ার রাষ্ট্রনীতিতেও লক্ষ্য করা যায়। অন্যান্য যেকোনো দেশের তুলনায় সাইবার প্রযুক্তির ক্ষেত্রে পুতিনের কল্যাণে রাশিয়া অনেক বেশি এগিয়ে আছে। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য মিত্ররা বোধহয় রাশিয়ার সামরিক শক্তির চেয়ে সাইবার আক্রমণ নিয়েই বেশি চিন্তিত।

গেলো বছর ট্রাম্প প্রশাসনামলে রাশিয়ান সরকারের মদদে একদল হ্যাকার যুক্তরাষ্ট্রের বেশকিছু সরকারি ওয়েবসাইটসহ বিশ্বব্যাপী সাইবার হামলা চালায়। প্রায় সাত থেকে আট মাসব্যাপী ওয়েবসাইটগুলোয় হ্যাকারদের প্রবেশের সুযোগ  ছিলো, ফলে তারা অনেক সংবেশীল তথ্যও চুরি করতে সক্ষম হয়েছিলো। প্রায় দুই শত প্রতিষ্ঠান জানায় যে তাদের তথ্য চুরি হয়েছে। ব্যয়বহুল অস্ত্রের ব্যবহার না করে সস্তায় সাইবার হামলা চালিয়ে বিশ্বব্যাপী যে ত্রাস তৈরি করেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন তা সত্যিই নজিরবিহীন।

পূর্ব ও পশ্চিমের পর এবার প্রাচ্যের দিকে নজর দেয়া যাক। মধ্যপ্রাচ্যে পুতিনের নীতির কথা ভাবলেই যে কারও চোখে প্রথমেই ভেসে উঠবে সিরিয়ান রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ ময়দানের বীভৎস দৃশ্য। একাবিংশ শতকের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ, যেখানে রাশিয়া দেশটির স্বৈরশাসক বাশার আল আসাদকে শুরু থেকেই রাজনৈতিক এবং পরবর্তিতে সামরিক সমর্থন দিয়ে আসছে। সোভিয়েত আমল থেকেই সিরিয়ার সাথে রাশিয়ার সুসম্পর্ক রয়েছে। তবে সোভিয়েত ভাঙনের পর সেই সম্পর্কে কিছুটা ভাটা পড়লেও ২০১১ সালে শুরু হওয়া সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে যখন প্রেসিডেন্ট আসাদের বাহিনী পরাজয়ের মুখে পড়ছিলো, তখন ২০১৫ সালে হঠাৎই রাশিয়া আসাদের বিরুদ্ধ বাহিনীর উপর বোমা হামলা চালাতে শুরু করে এবং ইরানের সাথে একযোগে কাজ করে প্রেসিডেন্ট আসাদকে পরাজয়ের হাত থেকে বাঁচায়।

এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলের সাথেও রাশিয়া বেশ উষ্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে পেরেছে সাম্প্রতিক সময়ে। একই সময়ে ইরান ও ইসরাইলের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার নজির রাজনৈতিক বিশ্বে খুব বেশি নেই। এখানেও প্রেসিডেন্ট পুতিনের কৌশলী নীতির ছাপ লক্ষণীয়।

সুন্নী প্রধান দেশগুলোর সাথেও রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক যোগাযোগ রয়েছে। এই অঞ্চলে রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটি না থাকলেও সিরিয়ার কল্যাণে রয়েছে এয়ার বেস। ফলে মধ্যপ্রাচ্যে ভালোভাবেই রাশিয়ার সম্পৃক্ততা তৈরি হয়ে। 

পূর্ব, পশ্চিম, প্রাচ্য ছাড়াও বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের সাথে রাশিয়ার বাণিজ্যিক সম্পর্ক বেশ উন্নত। বিশেষ করে ভারত, চীন, ব্রাজিলসহ বড় দেশগুলো রাশিয়ার অন্যতম বাণিজ্যিক অংশীদার। এছাড়া বাংলাদেশ ও নেপালের মত উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও রাশিয়া সহজ শর্তে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে সমর্থ হয়েছে, যার মাধ্যমে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলেও রাশিয়ার পদচারণা ঘটেছে বেশ দৃঢ়ভাবেই।

সুতরাং, সন্দেহাতীতভাবে বলা যায়, একাবিংশ শতকের শুরু থেকেই রাশিয়াকে রাজনৈতিক বিশ্বের প্রধান কর্মক হিসাবে পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের যে চেষ্টা, তা সফল করতেই তিনি আগামী ১৫ বছর টানা ক্ষমতায় থাকার সকল বাঁধাকে ইতোমধ্যেই অতিক্রম করেছেন। আর চীনের কল্যাণে বিশ্বব্যাবস্থা এখন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ইউনিপোলার রূপ থেকে আস্তে আস্তে বাইপোলারে রূপান্তরিত হওয়া শুরু করেছে। মাল্টিপোলার ব্যাবস্থার মত অতোখানি ক্ষমতাসীন পর্যায়ে রাশিয়া এখনো পৌঁছাতে না পারলেও প্রেসিডেন্ট পুতিন ইতোমধ্যে "গ্লোবাল প্লেয়ার" হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে সমর্থ হয়েছেন। সামনের ১৫ বছরে সমাজতান্ত্রিক চীন ও রাশিয়া পশ্চিমাদের টক্কর দিয়ে বিশ্বব্যবস্থায় যে নতুন ধরণের পরিবর্তন আনতে চলেছে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। চীনের আজীবন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রাশিয়ার আগামী ১৫ বছরের কর্তা ভ্লাদিমির পুতিন মূলত সে পথেই হাঁটছেন।

  • লেখক: সাবেক শিক্ষার্থী, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
  • ইমেইল: trisha.jannat1112@gmail.com

    আরও পড়ুন: 
  • শি জিনপিং: উদীয়মান সুপারপাওয়ার চীনের সুপারহিরো
  • বাইডেনের পররাষ্ট্রনীতির উচ্চাকাঙ্খা পূরণের পথ কতটা কণ্টকময়

Related Topics

টপ নিউজ

জান্নাতুল তাজরী তৃষা

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ছবি: এএফপি
    ৭,৮০০ কোটি গাছ লাগিয়েছে চীন; তাতেই নষ্ট করেছে নিজেদের পানিচক্রের ভারসাম্য
  • ছবি: সংগৃহীত
    বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার পর ৫৭,৫৭৬ কোটি টাকা লোকসান দেখাল ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক
  • ছবি: সংগৃহীত
    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গোলাম আযম-নিজামীদের প্রতিকৃতি মুছে দিল প্রশাসন, 'জানেন না' প্রক্টর
  • ছবি: সংগৃহীত
    হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক
  • ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট
    ‘মামলা’ এড়াতে ট্রাফিক কর্মীকে কয়েকশো মিটার টেনেহিঁচড়ে নিয়ে পালালেন সিএনজি চালক
  • পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ছবি: বাসস
    ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

Related News

  • পেগাসাস স্পাইওয়্যার ও গুপ্তচরবৃত্তির আন্তর্জাতিক রাজনীতি
  • সাইবার নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি
  • আবারও একটি তালেবান রাষ্ট্র মেনে নেবে আফগান জনগণ?
  • বাস্তববাদের রাজনৈতিক দুনিয়ায় অভিবাসীর ভাগ্য যখন ‘সলিল সমাধি’
  • তালেবান টিকে থাকলে কার লাভ কার ক্ষতি?

Most Read

1
ছবি: এএফপি
আন্তর্জাতিক

৭,৮০০ কোটি গাছ লাগিয়েছে চীন; তাতেই নষ্ট করেছে নিজেদের পানিচক্রের ভারসাম্য

2
ছবি: সংগৃহীত
অর্থনীতি

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার পর ৫৭,৫৭৬ কোটি টাকা লোকসান দেখাল ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক

3
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গোলাম আযম-নিজামীদের প্রতিকৃতি মুছে দিল প্রশাসন, 'জানেন না' প্রক্টর

4
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

5
ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট
বাংলাদেশ

‘মামলা’ এড়াতে ট্রাফিক কর্মীকে কয়েকশো মিটার টেনেহিঁচড়ে নিয়ে পালালেন সিএনজি চালক

6
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ছবি: বাসস
বাংলাদেশ

ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net