পুলিশ মহানগর নাট্যোৎসব বন্ধ করেনি, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণেই বাতিল হয়েছে: ফারুকী

নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণ দেখিয়ে শনিবার বিকেলে (১৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর নাট্য উৎসব স্থগিত করা হয়েছে। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা জানিয়েছেন, পুলিশ এই উৎসব বন্ধের কোনো নির্দেশ দেয়নি, বরং নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল। বরং নাট্যকর্মীদের একটি অংশই মহিলা সমিতি কর্তৃপক্ষের কাছে হল বরাদ্দ বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিল।
আজ নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে এক পোস্টে এমনটা জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
পোস্টে তিনি বলেন, 'নাট্য উৎসব বন্ধের খবরটা দেখে আমরা কাল সন্ধ্যা থেকেই খোঁজ খবর নেয়া শুরু করি। কারণ সরকার শিল্পকলার মাধ্যমে সারাদেশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছড়িয়ে দিতে উৎসাহ দিচ্ছে, গতকালও শিল্পকলায় তিনটা প্রদর্শনী হলো। আজকেও প্রাচ্যনাটের শো আছে শিল্পকলায়। তাহলে এখানে কেনো পুলিশ উৎসব বন্ধ করতে বলবে? খোঁজ নিয়ে জানলাম, পুলিশ এইরকম কিছুই বলেনি। কালকে রাতেই বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে তারা কাউকে উৎসব বন্ধ করতে বলেনি। বরং তারা নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত'।
উপদেষ্টা আরও বলেন, 'আমাদের দ্রুত অনুসন্ধান থেকে জানা গেলো, নাট্যকর্মীদের মধ্যেই একটা অংশ এই উৎসবের বিরোধিতা করে মহিলা সমিতি কর্তৃপক্ষের কাছে হল বরাদ্দ বাতিলের জন্য জোর দাবি জানিয়ে আসছে বেশ কিছুদিন ধরে। সংক্ষুব্ধ নাট্যকর্মীদের দাবি, এই উৎসবের আড়ালে জুলাই আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতা হত্যায় বিবৃতি দিয়ে উসকানি দেয়া কিছু ব্যক্তি বা তাদের গোত্রীয় কিছু মানুষ সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। তারা দাবি জানায় জুলাইয়ে তাদের ভূমিকার জন্য বিচারের মুখোমুখি হওয়ার আগে কোনো পুনর্বাসন চলবে না। অবশেষে কালকে মহিলা সমিতি বরাদ্দ বাতিল করে (যারা ওয়াকিবহাল না তাদের জন্য বলা দরকার- মহিলা সমিতি বরাদ্দ দেয়া এবং বাতিল করা কোনোটাই সরকারের এখতিয়ার না)'।
উপদেষ্টার ভাষ্যে, বিবৃতিতে কর্তৃপক্ষ এইসব কিছু না বলে কৌশলে প্রথমে পুলিশের কাঁধে দোষ চাপানোর চেষ্টা এবং বিবৃতির শেষে মবের কারণে উৎসব বাতিল করতে হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে।
তিনি আরও বলেন, 'তারা তো জানেই কারা তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে। তাদের পরিচয় না লিখে মব বলে চালিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্য কি একটা বিশেষ ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠা করা? বা কেন ওই বিক্ষুব্ধ নাট্যকর্মীরা প্রতিবাদ করছে তারা জানে। কিন্তু সেটাও তারা বিবৃতিতে উল্লেখ না করা কি ওই বিশেষ ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা কিনা সেটা সবাই ভেবে দেখতে পারেন। পাশাপাশি আরেকটা প্রশ্নও আসে, জুলাইয়ে তাদের ভূমিকার জন্য জাতির কাছে এখনো কি একবারও ক্ষমার চাওয়ার প্রয়োজন বোধ করেছে তারা?'
উল্লেখ্য, শনিবার বিকাল ৫টায় ঢাকার নাটক সরণির মহিলা সমিতি মিলনায়তনে এই উৎসব উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল। সন্ধ্যায় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক 'পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়' মঞ্চস্থ হওয়ার কথা ছিল। এছাড়াও, উৎসবের তিনটি পর্যায়ে একটি করে নাটক মঞ্চস্থ করার কথা ছিল ৮৫টি নাট্যদলের।