সীতাকুণ্ডের অগ্নিকাণ্ডে ১১০ মিলিয়ন ডলারের বেশি আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

শনিবার (৪ জুন) রাতে বিএম ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রাথমিকভাবে ১১০ মিলিয়ন ডলারেরও (৯ হাজার ৮১৩ কোটি টাকা) বেশি আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করছে অভ্যন্তরীণ কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশন (বিকডা) কর্তৃপক্ষ।
বিকডার তথ্য অনুযায়ী, রপ্তানির জন্য ৮০০ টিইইউ'স (২০ ফুট দীর্ঘ কনটেইনার) বোঝাই তৈরি পোশাক এবং হিমায়িত খাদ্যপণ্য ছিল। আমদানিকৃত পণ্য বোঝাই কনটেইনার ছিল ৫০০টি এবং খালি কন্টেইনার ছিল ৩ হাজার।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারি এলাকার একটি কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৪ জন নিহত ও দুই শতাধিক আহত হয়েছেন।
বেসরকারি বিএম কনটেইনার ডিপোতে প্রায় ৬০০ শ্রমিক কাজ করেন। ৩০ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত ডিপোটির কনটেইনার ধারণক্ষমতা ৬ হাজার ৫০০ টিইইউ'স। এরমধ্যে শনিবার ডিপোটিতে ৪ হাজার ৩০০ টিইইউ'স (২০ ফুট দীর্ঘ কনটেইনার) রপ্তানি, আমদানি এবং খালি কনটেইনার ছিল বলে জানা যায়।
বিকডার সচিব রুহুল আমিন সিকদার দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "আমরা ধারণা করছি, প্রাথমিকভাবে ১১০ মিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্যের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে রপ্তানি কনটেইনারে ৪৫ মিলিয়ন ও আমদানি পণ্যের কনটেইনারের ক্ষেত্রেও ৪৫ মিলিয়ন ডলারের বেশি এবং অন্তত ২০ মিলিয়ন ডলারের খালি কনটেইনারের ক্ষতি হয়েছে।"
"লোকসানের পরিমাপ নিরূপণে আমরা এখনও এটি নিয়ে কাজ করছি। দুপুর আড়াইটায় জরুরি বৈঠক ডেকেছি আমরা," যোগ করেছেন তিনি।
বিজিএমইএর সহ-সভাপতি রকিবুল আলম চৌধুরী দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "গত পাঁচ দিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে রপ্তানির জন্য এখানে পণ্যের চালান বোঝাই করা হয়েছে।
"ডিপোতে প্রাণ এবং অনন্ত গ্রুপের পণ্য ছিল," যোগ করেন তিনি।
এমন পণ্যও ছিল যেগুলো মার্কিনভিত্তিক চেইন ক্লথ ব্র্যান্ড এইচঅ্যান্ডএম-এর জন্য চালানের অপেক্ষায় ছিল। এছাড়া, ইউরোপীয় একটি ব্র্যান্ডকে ১০০ টিইইউ পণ্য পাঠানোর কথা ছিল বলেও জানান রকিবুল আলম চৌধুরী।
বাংলাদেশে ১৯টি ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো (আইসিডি) রয়েছে। এগুলো প্রায় শতভাগ রপ্তানি পণ্য ব্যবস্থাপনা করে। এছাড়া ৩৮ ধরনের আমদানি পণ্য যেমন- চাল, গম, সরিষা, ছোলা, ডালসহ আরও বেশকিছু পণ্য ডেলিভারির জন্য নিয়ে আসা হয় এসব ডিপোতে। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বন্দর এলাকার বাইরে থেকেই পণ্য খালাস ও ডেলিভারির মাধ্যমে এই ডিপোগুলো মূলত চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর চাপ কমাতে সাহায্য করে।
এসব ডিপোর ধারণক্ষমতা প্রায় ৭৭ হাজার টিইইউস কনটেইনার। অন্যদিকে, চট্টগ্রাম বন্দরের ধারণক্ষমতা ৪৯ হাজার ১৮ টিইইউএস কনটেইনার।