শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়: আলোচনা ‘বন্ধ’, সমাধান কোন পথে?

শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বৈঠকে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সঙ্কটের সুরাহা হয়নি। নতুন করে উভয়পক্ষের বৈঠকের কথা বলা হলেও তা আর হয়নি। ফলে এই সঙ্কটের সমাধান কোন পথে, এই নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
শনিবার রাতে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের সাথে বৈঠক করেন শিকামন্ত্রী ডা. দিপু মনি। এতে শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার্থীদের অনশন ভেঙে আলোচনায় আসার আহ্বান জানান। আর শিক্ষার্থীরা জানান, উপাচার্যের পদত্যাগ ছাড়া অনশন ভাঙ্গবেন না। ফলে কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয় বৈঠক।
রোববার দুপুরে আরবারও দুইপক্ষের বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা আর হয়নি। এদিকে উপাচার্যের পদত্যাগ ইস্যুতে দুইপক্ষ বিপরতমুখী অবস্থান নিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা এই দাবিতে অনমনীয় আর শিক্ষা উপমন্ত্রী গণমাধ্যমকে বলেছেন, তাদের এই দাবি অযৌক্তিক। এই বিপরীতমুখী অবস্থানের কারণে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে এসেছে।
শিক্ষা উপমন্ত্রীর কথার প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, 'আমাদের তিন দফা দাবির আন্দোলনে পুলিশ গুলি চালায়, লাঠিচার্জ করে। এর পরে আমরা এই উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করছি। যে গুলি চালাতে পারে, তাকে আমরা চাই না। এটা আমাদের যৌক্তিক দাবি। এই দাবিতে আমাদের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন আমরণ অনশন করছে। তারা হাসপাতালে ভর্তি, এই পরিস্থিতি আমাদের মনে হচ্ছে আমাদের প্রাণের চেয়ে ওই একটা চেয়ারের দাম বেশি। আমরা সেই পথে যাচ্ছি, আমাদের গণঅনশনে এখন অনেকেই যোগ দিচ্ছেন।'
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সাব্বির আহমদ বলেন, 'আমরা আলোচনা চাই। তবে আমাদের একটাই দাবি, উপাচার্যের পদতাগ। এই দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস চাই।'
এদিকে, রোববার রাত থেকে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের বাসভবনে বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার বিকল্প ব্যবস্থায় তার বাসায় বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আলমগীর কবীরের নেতৃত্বে কয়েকজন শিক্ষক্ষ খাবার নিয়ে এসে উপাচার্যের বাসভবনে প্রবেশ করতে চাইলেও শিক্ষার্থীরা তাদের প্রবেশ করতে দেননি।
এ সময় প্রক্টর আলমগীর কবীর বলেন, 'উপাচার্য বিদ্যুৎ ও পানিবিহীন অবস্থায় আছেন। তিনি অসুস্থ। আমরা মানবিক দায়িত্ব থেকে তার সাথে দেখা করতে এসেছিলাম। শিক্ষার্থীদের জন্যও আমরা খাবার নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আমাদের অনুরোধ রাখেনি। ফলে আমরা ভেতরে ঢুকতে পারিনি।'
আন্দোলন শিক্ষার্থী মোহাইমিনুল বাশার বলেন, 'আমরা এতদিন ধরে অনশন করছি, অনেকে মৃত্যুপথযাত্রী, অথচ স্যারেরা আমাদের কথা না ভেবে উপাচার্যের জন্য খাবার নিয়ে এসেছেন। এতে বোঝা যায় শিক্ষার্থীদের প্রতি তাদের কোনো দরদ নেই।'
সোমবার বিকেলে ক্যাম্পাসে মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া সন্ধ্যা থেকে রোড পেন্টিং করে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিনের পদত্যাগের দাবি জানানো হচ্ছে। আর উপাচার্য ভবনের সামনে চলছে অনশন।