মাতৃভূমির বিজয় দিবসে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে ‘৫০’ লিখলেন বাংলাদেশি তরুণ পাইলট

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে নিউইয়র্কের আকাশে বিমান উড়িয়ে এভিয়েশন রাডারে '৫০' সংখ্যাটি এঁকেছেন এক তরুণ বাংলাদেশি পাইলট।
২০ বছর বয়সী এ তরুণ পাইলটের নাম ফারহান হক। তিনি তাঁর বন্ধু আসাদ আবদুল্লাহকে নিয়ে গত ১৬ ডিসেম্বর সেসনা সি১৭২ এয়ারপ্লেনে চড়ে মাতৃভূমির স্বাধীনতার ৫০ বছর উপলক্ষ্যে এভাবে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে ফারহান লিখেছেন, "প্রথমবারের মতো এভিয়েশন রাডার ম্যাপে বাংলা ভাষায় কিছু একটা লেখা হল। এটি ঘোষণা দিতে পেরে গর্বিত অনুভব করছি যে, আনুষ্ঠানিকভাবে 'মিশন ৫০' সম্পন্ন হলো। এই '৫০' সংখ্যাটির মাধ্যমে বাংলাদেশের ৫০তম বিজয় দিবসকে বোঝানো হয়েছে এবং এটি ৭১ জিপিএস কোঅর্ডিনেট দিয়ে আঁকা হয়েছে যা মূলত ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার প্রতিনিধিত্ব করে। এটি সম্ভব করতে সহায়তা করায় আসাদুল্লাহ আবদুল্লাহ এবং আমাদের জেডএনওয়াই এটিসি কনট্রোলার্সকে অনেক ধন্যবাদ। বিজয় দিবসের অভিনন্দন।"
এ বিষয়ে ফারহান গণমাধ্যমকে বলেন, "ফ্লাইংয়ের প্রতি আমার আজন্ম টান। নিজেকে আমি বাংলাদেশি এভিয়েশন কমিউনিটির একজন হিসেবেই অনুভব করি। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ফেডারেল এভিয়েশন এডমিনিস্ট্রেশনের সনদ পাওয়া একজন প্রাইভেট পাইলট আমি। এখন জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড অপারেশনস ক্রু হিসেবে কাজ করছি কাতার এয়ারওয়েজে। ছোট থেকেই আমি সবসময় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী বা বিমান বাংলাদেশের পাইলট হিসাবে প্লেন চালানোর স্বপ্ন দেখতাম। কিন্তু ব্যক্তিগত এবং পেশাগত কারণে, আমাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হতে হয়েছিল।"

"বাংলাদেশের জন্য কিছু করার তাড়না সবসময়ই আমার মধ্যে কাজ করে। যখন আমারা ৫০তম বিজয় দিবস পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম তখন এটা একেবারে মাথার ভেতরে ঢুকে যায়। সেকারণে আমি চিন্তা করেছি আমাদের জন্য যারা এ দেশটি স্বাধীন করেছেন তাদের শ্রদ্ধা জানাতে একটি এয়ারক্রাফট নিয়ে আকাশে বাংলায় ৫০ সংখ্যাটি লিখতে।"
তিনি বলেন, "প্রাথমিকভাবে আমরা এটা আটলান্টিক মহাসাগরের উপর করতে চেয়েছিলাম। তবে নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় নিয়ে স্থলভাগের উপর করার পরিকল্পনা করেছি। আমাদের ক্যানভাস হিসেবে বেঁছে নিয়েছি কানেটিকাট রাজ্যের আকাশ। এই ফ্লাইট প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী স্থায়ী হয়েছিল।"
ফারহান জানান, সেসনা সি১৭২ এয়ারক্রাফট দিয়ে বিশ্বের ব্যস্ততম এই আকাশপথে ফ্লাইটটি সম্ভব করা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল।
"এ বিষয়ে আমাদের দারুণভাবে সহায়তা করেছে নিউইয়র্ক এলাকার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলাররা। আমরা যাতে ট্রাফিক ইন্টারসেকশনগুলো নিরাপদে পার করতে পারি সেটি তারা নিশ্চিত করেছেন। শেষ পর্যন্ত আমি এবং আমার কো-পাইলট আসাদ আবদুল্লাহ কোনো ধরণের জটিলতা ছাড়াই ফ্লাইটটি শেষ করতে পেরেছি এবং সফল করেছি মিশন ৫০!"