গাজীপুরে অটোরিকশা চালক হত্যার অভিযোগে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ

গাজীপুরের শ্রীপুরে অটোরিকশা চালককে হত্যার প্রতিবাদ এবং দোষীদের বিচারের দাবিতে উপজেলার গড়গড়িয়া এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন অটোরিকশা চালক ও স্থানীয়রা।
আজ মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে শুরু হওয়া অবরোধ দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে। এ সময় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ।
নিহত অটোরিকশা চালকের নাম লিটন মিয়া (৩৫)। তিনি শ্রীপুর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাদখলা গ্রামের মো. দুলাল মিয়ার ছেলে।
এর আগে, সোমবার (৩ মার্চ) রাত পৌনে ৮টার দিকে শ্রীপুরের বেতঝুড়ি এলাকায় তার মরদেহ পাওয়া যায়। পুলিশ লিটনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় তাকওয়া পরিবহনের বাসচালক জনি মিয়াকে (২৯) আটক করেছে পুলিশ।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয়দের দাবি, তাকওয়া পরিবহন নামের একটি বাসের লোকজন লিটনের হাত ও পায়ের রগ কেটে হত্যার পর মহাসড়কে ফেলে রাখে। এ ঘটনায় মামলা দিতে গেলে গড়িমসি করে শ্রীপুর থানা পুলিশ।
নিহত লিটনের স্ত্রী শারমিন বেগম বলেন, "গতকাল বিকেলে গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি এলাকায় তাকওয়া পরিবহনের একটি বাসের স্টাফের সঙ্গে আমার স্বামীর বাগবিতণ্ডা হয়। এরপর স্বামীকে তাকওয়া পরিবহনের স্টাফরা জোর করে তুলে নিয়ে যান। তুলে নেওয়ার দুই ঘণ্টা পর ঘটনাস্থল থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে স্বামীর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে স্বামীর হাত-পায়ের রগ কাটা রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পাই।"
লিটনের ভাতিজি তাসলিমা খাতুন বলেন, "আমার চাচা অটোরিকশা চালান। গতকাল সোমবার তাকওয়া পরিবহনের একটি বাস তার অটোরিকশাকে চাপা দেয়। এতে অটোরিকশার কাঁচ ভেঙে যায়। পরে জরিমানা আদায়ের জন্য চাচা দৌড়ে বাসের সামনে দাঁড়ান। এ সময় তাকওয়া পরিবহনের ভেতরে থাকা চালক ও সহকারী মিলে চাচাকে জোর করে বাসে তুলে নিয়ে যায়।"
গাড়ীর ভেতরে রেখেই তাকে ব্যাপক মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে তাকে হত্যা করে বাস থেকে মহাসড়কে ফেলে দেওয়া হয় বলে দাবি করেন তিনি।
তাসলিমা খাতুন আরও অভিযোগ করেন, ওই ঘটনায় বাস ও এর চালককে আটক করেছে পুলিশ, কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নিচ্ছে না।
নিহতের ছোট ভাই মো. আজিজুল অভিযোগ করে বলেন, "ভাইকে তুলে নিয়ে হাত ও পায়ের রগ কেটে হত্যা করেছে। আমরা থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে গড়িমসি শুরু করে। রাতভর থানায় অবস্থান করি, কিন্তু মামলা নেয়নি পুলিশ।"
"আমার ভাইকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খুন করল, অথচ মামলা করার সময় পরামর্শ দেন সড়ক দুর্ঘটনা। এজন্য স্থানীয় বাসিন্দা ও অটোরিকশা চালকেরা সড়ক অবরোধ করেন," যোগ করেন আজিজুল।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, "ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করে মামলা নেওয়া হচ্ছে। তারা তাকওয়া পরিবহন বন্ধ না করার দাবি করছে। পরে আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে ১২টার দিকে সড়ক ছেড়ে দিলে যান চলাচল শুরু হয়।"