‘আর রাজনীতি করব না; আওয়ামী লীগ থেকে অব্যাহতি নিয়েছি’—আদালতে কামাল মজুমদার

"আমি আর রাজনীতি করব না। আমি আওয়ামী লীগের সদস্যপদ থেকেও অব্যাহতি নিয়েছি। কোনো দলীয় পদে নেই," আদালতে দাঁড়িয়েছে বিচারকের উদ্দেশ্যে কথাগুলো বলছিলেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার।
আজ সোমবার (৩ মার্চ) সকালে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলছিলেন তিনি।
রাজধানীর কাফরুল থানায় দায়ের করা আতিকুল ইসলাম হত্যা মামলায় কামাল মজুমদারসহ আরও ছয়জনকে সিএমএম আদালতে আজ হাজির করা হয়।
এ সময় তিনি আদালতকে বলেন, "মাননীয় আদালত, আমার বয়স এখন ৭৬ বছর। আমি ডায়াবেটিসের রোগী। কারা কর্তৃপক্ষ আমাকে ডায়াবেটিক মাপার মেশিনও নিতে দিচ্ছে না।"
কান্না-জড়ানো কণ্ঠে তিনি বিচারকের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, "এই আদালতে আসার পরও আমরা আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলতে পারছি না। আমাদের আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না।"
"আমি আর রাজনীতি করব না। আমি আওয়ামী লীগের সদস্যপদ থেকেও অব্যাহতি নিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দেওয়া হচ্ছে। একের পর এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে। নির্যাতন করা হচ্ছে। এই বয়সে আমাদের নাতি-নাতনির সঙ্গে খেলা করার কথা," বলেন তিনি।
এ সময় কামাল আহমেদ মজুমদার কারাগারে ডায়াবেটিক মাপার মেশিন এবং ডিজিটাল কোরআন শরিফ সরবরাহ করার অনুমতি দেওয়ার অনুরোধ জানান।
শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র গত বছর বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় কাফরুলে আতিকুল ইসলাম হত্যা মামলায় কামাল মজুমদারসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন গ্রহণ করেন। এই মামলার অন্য আসামিরা হলেন–সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন ও এ কে এম শহিদুল হক।
শুনানি শেষে এজলাস কক্ষ থেকে তাদেরকে বের করে আদালতের বারান্দায় আনা হলে কালাম মজুমদার সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, "আমি আওয়ামী লীগের সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছি। আমি রাজনীতি থেকেও অব্যাহতি নিয়েছি। আমি আর রাজনীতি করব না।"
"এই দেশে রাজনীতি করার কোনো পরিবেশ নেই। ৭৬ বছর বয়সে রাজনীতি করা যায় না। আমরা চাই, নতুন যুব নেতৃত্ব আসুক," বলেন তিনি।
এর আগে, গত বছরের ১৯ অক্টোবর রাতে ঢাকার গুলশানের একটি বাসা থেকে কামাল মজুমদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে বেশ কয়েকটি হত্যা ও হত্যারচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।