বিএনপির বর্ধিত সভা: জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণে নেতা-কর্মীদের ‘সর্বাত্মক প্রস্তুতি’ নিয়ে কাজ করার আহ্বান

বিএনপি জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণের দায়িত্ব নিতে 'সর্বাত্মক প্রস্তুতি' নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গতকাল (২৭ ফেব্রুয়ারি) দলটির এক বর্ধিত সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
এ লক্ষ্যে দলটি সব পর্যায়ের নেতা-কর্মী, সহযোগী সংগঠন ও অঙ্গসংগঠনগুলোকে জনবান্ধব কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণের মাঝে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দলের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক পোস্টে সভার সিদ্ধান্তের বিস্তারিত জানিয়ে বলা হয়, বিএনপি কথা ও কাজের মাধ্যমে জনগণের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা অর্জনে নেতাকর্মীদের বলেছে।
পোস্টে আরও উল্লেখ করা হয়, 'সভায় দলীয় নীতি, আদর্শ ও কর্মসূচি বাস্তবায়নে অবহেলা না করার পাশাপাশি জনবিরোধী কর্মকাণ্ড ও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব থেকে বিরত থাকতে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।'
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় নেতারা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে 'গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ' প্রকাশ করেন।
দলটি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে, যাতে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিত্যপণ্যের দাম রাখা হয় এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটে।
পোস্টে আরও বলা হয়, 'সভা দৃঢ়ভাবে মনে করে, কৃষি ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির উৎপাদকদের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি এবং আমদানিকৃত পণ্যাদির বাজারজাতকরণে মধ্যস্বত্বভোগী আওয়ামী সিন্ডিকেট ভাঙতে সরকারি ব্যর্থতার কারণে ক্রমবর্ধমান জনদুর্ভোগ দ্রুত দূর করা না হলে তা দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হতে পারে।'
এতে আরও বলা হয়, 'ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সকল রাজনৈতিক দল এবং শ্রেণি-পেশার সংগঠনকে আস্থায় নিয়ে সম্মিলিতভাবে পতিত সরকারের সৃষ্ট ও সুবিধাভোগী ব্যবসায়ী ও সিন্ডিকেটের পাশাপাশি, অযৌক্তিক কারণে আন্দোলনের নামে জনজীবন বিপর্যস্ত করার অপচেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলা প্রয়োজন। চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব ও বিশৃঙ্খলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারি ব্যর্থতা গ্রহণযোগ্য নয়।'
'ফ্যাসিবাদী শাসনের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে গুম, খুন, গায়েবি মামলাসহ সীমাহীন গণবিরোধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মূলহোতা অবৈধ সরকারপ্রধানসহ [শেখ হাসিনা] তার চিহ্নিত সহযোগীরা কীভাবে নির্বিঘ্নে দেশ থেকে বেরিয়ে গেলেন এবং এখনও অসংখ্য অপরাধী [কীভাবে] অবাধে বিচরণ করছে' — তার একটি সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি করেছে বিএনপি।
একই সঙ্গে বিএনপি এ সব অপরাধীদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট প্রমাণ এবং দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের নির্ভরযোগ্য অভিযোগ থাকার পরও তাদের বিচার ও শাস্তি দানে বিলম্বে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।
বিএনপি আরও বলেছে, 'যারা দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও শান্তি-শৃঙ্খলার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে এবং অপপ্রচার চালাচ্ছে, তাদের এবং তাদের দেশীয় সহযোগীদের বিরুদ্ধে কার্যকর কূটনৈতিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের আরও উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন।'
এছাড়া, ১/১১-এর সময়কার সরকার ও তার সহযোগীদের দায়ের করা সব 'মিথ্যা ও গায়েবি মামলা' অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে দলটি।