রমজানকে সামনে রেখে আমদানি বেড়েছে, দাম কমতে পারে পণ্যের

রমজানের উচ্চ চাহিদার কথা মাথায় রেখে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ফলে ভোক্তারা আশা করছেন, এবার রোজার মাসে এসব পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর থেকে জানুয়ারির মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি গত বছরের একই সময়ের চেয়ে বেড়েছে। এ সময়ে খেজুরের আমদানি ২৩ শতাংশ, মটর ও মসুর ডাল ৮৫ শতাংশ, ছোলা ৬৪ শতাংশ এবং সয়াবিন তেল ৩৪ শতাংশ বেড়েছে।
চলতি অর্থবছরের অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত ঋণপত্র (এলসি) নিষ্পত্তির তথ্য অনুযায়ী, আসন্ন রমজানের জন্য ৪.৫৪ লাখ মেট্রিক টন চিনি আমদানি করা হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩.৭৮ লাখ মেট্রিক টন বেশি।
রমজানকে ঘিরে সয়াবিন তেলের আমদানি বেড়ে ৫.৯৮ লাখ মেট্রিক টনে পৌঁছেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৩৪ শতাংশ বেশি। ছোলা আমদানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৭ হাজার মেট্রিক টনে, যা ৬৪ শতাংশ বৃদ্ধি। এ ছাড়া আদার আমদানি ৫২ হাজার মেট্রিক টনে পৌঁছেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৫৬ শতাংশ বেশি।
খেজুরের আমদানি ১৪ হাজার ৪২০ মেট্রিক টন বেড়েছে, যা ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি। পেঁয়াজ আমদানি দাঁড়িয়েছে ২.৮০ লাখ মেট্রিক টনে, যা গত বছরের তুলনায় ২ শতাংশ বেশি।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'রমজানের আগে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। গত ছয় মাস ধরে ব্যাংকগুলোতে রেমিট্যান্স প্রবাহ ভালো থাকায় আমদানি এলসি সহজেই খোলা যাচ্ছে।'
তিনি আরও বলেন, বাজারে ডলারের বিনিময় হার ও ব্যাংকের নির্ধারিত রেটের পার্থক্য কম থাকায় প্রবাসীরা হুন্ডির পরিবর্তে ব্যাংকিং চ্যানেলে বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন।
টিবিএস-এর সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে পুরান ঢাকার কদমতলীর বাসিন্দা নাজমুস সাকিব জানান, তিনি বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি ৪৫০ টাকায় প্যাকেটজাত খেজুর কিনেছেন, পাঁচ কেজির দাম পড়েছে দুই হাজার ২৫০ টাকা।
তিনি বলেন, 'রমজানের আগে সাধারণত এই ধরনের খেজুর ৬০০-৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। এবার দাম তুলনামূলক কম।'
আরেক ক্রেতা মারুফ বিল্লাহ জানান, এবার রমজানে সবজির দামও তুলনামূলক কম। তিনি বলেন, 'পেঁয়াজ ৫০ টাকা, শসা ৩০ টাকা এবং বেগুন ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ছয় মাস আগেও এসব সবজির দাম ১০০ টাকা কেজির কাছাকাছি ছিল।'
তিনি আশা প্রকাশ করেন, রমজানে আমদানি করা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও সবজির দাম স্থিতিশীল থাকবে।
আমদানিকারক মাজেদুর রহমান টিবিএসকে বলেন, 'আমরা বিভিন্নভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের এলসি খুলতে পারছি। সরকারি নির্দেশনার ফলে ব্যাংকগুলো সহজেই আমদানি এলসি খুলছে, তাই রমজানের আগে প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ ও ছোলা আমদানি সম্ভব হয়েছে।'
খেজুর আমদানিকারক রবিউল ইসলাম সুইট বলেন, 'ব্যাংকগুলো যদি ধারাবাহিকভাবে এলসি খুলতে থাকে, তাহলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ ও বাজারমূল্য স্থিতিশীল থাকবে।'