শিক্ষায় অনেক অনিয়ম, দুর্নীতি আছে: শিক্ষা উপদেষ্টা

শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, শিক্ষায় অনেক অনিয়ম, দুর্নীতি আছে। শিক্ষকরা ভাতা পান না, স্কুল পরিদর্শকরা হেনস্তা করেন। বেসরকারি স্কুল-কলেজের পরিচালনা বোর্ডে অনেক সমস্যা আছে। এখানে আগের বোর্ড চলে যাওয়ার পরে— চর দখলের মতো নতুন প্রভাবশালীরা দখল করেছে।
তিনি বলেন, ডিসিরা অনেক দায়িত্ব পালন করেন। এজন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, কমিটিতে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবী, শিক্ষক, স্থানীয় ভালো মানুষ, গণ্যমান্য মানুষদের যুক্ত করতে। যাতে শিক্ষক নিয়োগ বা অন্যান্য কাজে সমস্যা না হয়। এজন্য ডিসিদের রাজনৈতিক চাপ প্রতিহত করতে বা সহ্য করতেও বলা হয়েছে।
এ ছাড়া যেসব পাঠ্যবইয়ে বার্ষিক পরীক্ষা হয়, সেগুলো চলতি ফেব্রুয়ারির মধ্যে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
আজ রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত 'জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন -২০২৫' এর প্রথম দিনে পরিকল্পনা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি আলোচনা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষকদের অনলাইনে বদলি, বকেয়া অবসরভাতা পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অবসর সুবিধা পরিশোধের জন্য যে পরিমাণ অর্থ দরকার, সে তুলনায় আছে খুবই অপ্রতুল। এজন্য বন্ড ছেড়ে একটা তহবিল গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, অবসর সুবিধা দেওয়ার জন্য ৬-৭ হাজার কোটি টাকা থাকা দরকার ছিল। এখন এই পরিমাণ অর্থ নেই। একটা বাজেটেও এত টাকার ব্যবস্থা করা কঠিন। এজন্য বন্ড ছেড়ে তহবিল গঠন করা হবে।
আগামী বাজেটে শিক্ষকদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হবে। অবকাঠামোর কিছু ঘাটতি থাকলেও— শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা।
একইভাবে স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা খাতেও বরাদ্দ বাড়ানো হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
অসমাপ্ত প্রকল্পে ঠিকাদার নিয়োগের নির্দেশ:
পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, স্থানীয়ভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নে অনেক অসুবিধা হচ্ছে। ঠিকাদাররা টাকা নিয়ে চলে গেছে। আবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি নেই। এরকম পরিস্থিতিতে ডিসিরা যাতে নিজস্ব উদ্যোগে জনহিতকর প্রকল্প বাস্তবায়নে ঠিকাদার নিয়োগ করেন, সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ।
'পাশাপাশি যেখানে নতুন প্রকল্প নেওয়া দরকার, বিশেষ করে যেখানে সড়ক আছে কিন্তু ধরেন সেতু নেই, আবার শিক্ষক আছেন কিন্তু ভবন জরাজীর্ণ, এ ধরনের ক্ষেত্রে নতুন প্রকল্প নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা সরাসরি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলা হয়েছে।'
তিনি রাজনৈতিক বিবেচনার জন্য অনেক উন্নয়ন প্রকল্প বাদ পড়েছে, আবার জানুয়ারি মাসে অনেক নতুন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এসব নতুন প্রকল্প যাতে ডিসিরা দেখভাল করেন, সেজন্য বলা হয়েছে।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ডিসিরা শক্তিশালী হাতিয়ার। তাদেরকে দায়িত্বরত জেলায় নিজ কাজের নিদর্শন রেখে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যাতে ওই এলাকায় মানুষ মনে রাখে যে সেখানে দায়িত্বপালনকারী একজন প্রশাসক এই কাজটা করেছিলেন।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কারোর নামে কিছু হবে না। কোনো ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন বা অন্য কিছু করবে না এই সরকারের উপদেষ্টারা।