প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বাতিল: হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে সরকার

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৩১ জন সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ বাতিল সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করা হয় বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন। আগামী রোববার চেম্বার আদালতে এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।
এর আগে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ ৬ হাজার ৫৩১ জন সহকারী শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল করে রায় দেন। ওই নিয়োগে কোটা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে অভিযোগ করে করা এক রিটের পর আদালত ওই রায় দিয়েছিলেন।
আদালতে রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী কামরুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, ২৩ জুলাইয়ের প্রজ্ঞাপন-পরিপন্থি হওয়ায় ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ বৈধ নয় বলে আদালত রায় দিয়েছেন। নিয়োগ বঞ্চিত ১৫৩ জন প্রার্থী রিট করেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ৩১ অক্টোবর প্রকাশিত ফলাফল বাতিল করেন এবং নতুন করে মেধার ভিত্তিতে ২৩ জুলাইয়ের প্রজ্ঞাপন অনুসরণ করে ফল প্রকাশের নির্দেশ দেন।
বর্তমানে সরকারি চাকরিতে মোট কোটা ৭ শতাংশ, যা আগে ছিল ৫৫ শতাংশ। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া দেশব্যাপী বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পর আদালতের নির্দেশে ২৩ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে, যেখানে সরকারি নিয়োগের ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
২৩ জুলাইয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, মেধার ভিত্তিতে ৯৩ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত।
২০২৩ সালের ১৪ জুন প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির পর ৩১ অক্টোবর চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ৩১ অক্টোবরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রার্থীদের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০১৯ অনুসরণ করে উপজেলাভিত্তিক মেধাক্রম অনুযায়ী নিয়োগের জন্য প্রাথমিকভাবে প্রার্থী নির্বাচন করে তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে।
পরে, ১১ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় নিয়োগ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে। ২০ নভেম্বর নিয়োগপত্র ইস্যুর কথা ছিল।
কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করার অভিযোগ তুলে নিয়োগবঞ্চিতরা হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি শেষে ১৯ নভেম্বর হাইকোর্ট নিয়োগ প্রক্রিয়া ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন, যার ফলে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নিয়োগ আটকে যায়। ৬ ফেব্রুয়ারি রুলের ওপর চূড়ান্ত রায় দেন হাইকোর্ট