দাতাসংস্থার ঋণ নিতে সরকার মরিয়া হয়ে নেই: অর্থ উপদেষ্টা

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বর্তমানে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভালো। আর্থিক ও চলতি হিসাব-ও ভালো অবস্থায় আছে। ফলে সরকার দাতাসংস্থাগুলোর সব শর্ত মেনে ঋণ নেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে নেই।
আজ রোববার বিকেলে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে ঢাকা সফররত বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজারের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
মার্টিন রাইজার গতকাল শনিবার চার দিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন। তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ আরও কয়েকজন উপদেষ্টার সাথে বৈঠক করবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ঋণের পরবর্তী কিস্তি ছাড়ের সময় পিছিয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, এ বিষয়ে আইএমএফ তাকে কিছু জানায়নি।
তিনি বলেন, আইএমএফের সাথে আগামী মার্চে বৈঠকের কথা রয়েছে। এখনও ফেব্রুয়ারি মাস আছে। আশা করা যায়, আইএমএফ অন- ট্র্যাক। আর এখন দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। ফলে সরকার ঋণের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেনি। সেটা শুধু আইএমএফ নয়, অন্যান্য সংস্থার ঋণের বেলায়ও।
বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও তার প্রতিনিধি দলের সাথে কি আলোচনা হলো- সে বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আগামী জুনে মিটিং হবে বিশ্বব্যাংকের সাথে। তাদের কিছু বিষয়ে অগ্রাধিকার ছিল, সেগুলো বাংলাদেশ পূরণ করেছে। বিশেষ করে, এনবিআরের (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) কর নীতি ও কর প্রশাসন আলাদা করা, আরও বেশি রাজস্ব সংগ্রহ, কর অব্যাহতি কমানো। এগুলো করা হয়েছে।
ফাইন্যান্স অ্যাক্ট, ফাইন্যান্স বিলসহ বাজেটের কয়েকটি বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
মার্টিন রাইজার সাংবাদিকদের বলেন, কর প্রশাসন, সরকারের ক্রয় কার্যক্রম, অ্যাক্সেস টু ইনফরমেশন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর স্বাধীনতা ইত্যাদি খাতের সংস্কার অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, "এনবিআরের কর নীতি ও কর প্রশাসন আলাদা করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। উপদেষ্টা আমাকে জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তারা কাজ করছেন। বিশ্বব্যাংক আশা করে- কয়েক সপ্তাহ বা মাসের মধ্যে এ বিষয়ে দৃশ্যমাণ অগ্রগতি দেখা যাবে। তবে আমরা এটাও বুঝি যে সরকারের অভ্যন্তরীণ কিছু প্রক্রিয়া থাকে।"
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কোনো নতুন কর ব্যয় বা কোনো নতুন করের ব্যবস্থার জন্য বাজেটের মাধ্যমে আইনি অনুমোদন প্রয়োজন।
রাইজার বলেন, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির অবস্থা আপনারা (সাংবাদিকরা) নিশ্চয় অবগত আছেন। আমি মনে করি না- এটা বলার প্রয়োজন আছে। অবশ্যই অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের অনেক সম্ভাবনাও রয়েছে। আমরা আশা করব, সম্ভাবনাগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবে সরকার।