শেখ হাসিনার বিদেশ ভ্রমণে অপচয় ও ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়ে অনুসন্ধান করবে দুদক

রাষ্ট্রীয় টাকা অপচয় করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভ্রমণ এবং ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়ে অনুসন্ধান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন।
তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশ সফরে গেলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজ ভাড়া করতেন সরকারি টাকায়। টানা ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকাকালে প্রায় প্রতি জাতিসংঘের অধিবেশনে সরকার প্রধান হিসেবে যোগ দিয়েছেন তিনি। প্রতিবারই নিউইয়র্ক নিয়ে যেতেন বিশাল বহর।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা ২০১৫ সালে ২২৭জনের একটি দল নিয়ে নিউইয়র্কে ৭০তম সাধারণ অধিবেশন এবং টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে যান। ২০১৪ সালে ৬৯তম সাধারণ অধিবেশনে এই সংখ্যা ছিল ১৭৮ এবং ২০১৩ সালে এই সংখ্যা ছিল ১৩৪।
দুদক সূত্রে জানা যায়, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে বিমানের বোয়িং ৭৭৭ ও ৭৮৭ সিরিজের অত্যাধুনিক উড়োজাহাজে যেতেন। ২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত গত পাঁচ বছরে রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ সংস্থাটি ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৮টি ভিভিআইপি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। এসব সফরে শেখ হাসিনা ব্যয় করেছেন প্রায় ২০০ কোটি টাকা।
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে স্থানীয় সময় বিকেলে হেলসিংকির ভানতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ভিভিআইপি ফ্লাইট বিজি-১৯০২ যোগে নিউইয়র্কের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী।
বিমানের সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সূত্রে খবর নিয়ে জানা গেছে, সরাসরি ঢাকা থেকে নিউইয়র্ক যাত্রা না করে ফিনল্যান্ডে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের এই ভিভিআইপি চার্টার্ড ফ্লাইট অবতরণ এবং সেখানে দুই দিনের ল্যান্ডিং চার্জসহ সফরসঙ্গীদের যাবতীয় খরচ বহন করতে অতিরিক্ত সাত কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়েছে।
উল্লেখ্য ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিমানের প্রায় ৫০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে সরকারের কাছে।
এদিকে অভিযোগ রয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভুয়া ডক্টরেট সংগ্রহ করেছেন বলে জানান আক্তার হোসেন। তিনি বলেন, দেশের সরকারি টাকা লবিস্ট এর পিছনে ব্যয় করে মানদণ্ড ভঙ্গ করে সংগ্রহকৃত উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ভুয়া ডক্টরেট হলো-ভারতের ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়, বেলজিয়ামের ক্যাথলিক বিশ্ববিদ্যালয় অব ব্রাসেলস, ভারতের বিশ্ব-ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। জানা যায় তিনি যে সকল পদক ও ডিগ্রি সংগ্রহ করেছেন তার প্রায় সবগুলোর পিছনে প্রচুর খরচ বা জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থি চুক্তির বিনিময়ে বাগিয়ে নিয়েছেন।
গোয়েন্দা সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের প্রেক্ষিতে সার্বিক পর্যালোচনান্তে কমিশন কর্তৃক উল্লিখিত বিষসমূহ প্রকাশ্যে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে জানান তিনি।