শিক্ষা, স্বাস্থ্যকে ক্যাডার সার্ভিস থেকে আলাদা করার প্রস্তাব সংস্কার কমিশনের

বিসিএস শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারের জন্য আলাদা সার্ভিস কমিশন গঠনের প্রস্তাব করছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন।
আজ (৫ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে সংস্কারের সুপারিশ-সম্বলিত প্রতিবেদন জমা দেবে কমিশন। সেখানে কারিগরি ক্যাডারগুলোকে নিয়ে প্রকৌশল সার্ভিস এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষির মতো বিশেষায়িত ক্যাডারগুলোর জন্য আলাদা আলাদা সার্ভিস কমিশন গঠনের প্রস্তাব করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে এই দুই খাতে ক্যাডার, নন-ক্যাডারসহ সব ধরনের নিয়োগের ব্যবস্থা করার সুপারিশ করবে কমিশন।
অর্থাৎ, বিদ্যমান এই ক্যাডারগুলোকে আর ক্যাডারভুক্ত না রেখে জুডিশিয়াল সার্ভিসের মতো আলাদা করার সুপারিশ করা হচ্ছে। অন্যদিকে, প্রশাসন ক্যাডারের জন্যও বিদ্যমান ব্যবস্থার পরিবর্তে একটি সার্ভিস গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে– যেখানে তাদের পদগুলো মাঠ প্রশাসনে সীমাবদ্ধ থাকবে।
কমিশনের সদস্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, আন্তঃক্যাডার বৈষম্য কমাতে 'সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিস' (এসইএস) নামে নতুন একটি সার্ভিস গঠনের প্রস্তাব থাকছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে। সরকারের উপসচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব পর্যন্ত কর্মকর্তারা এই সার্ভিসের অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। এই সার্ভিস থেকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুখ্য সচিবসহ মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সচিব নিয়োগ দেওয়া হবে।
সকল ক্যাডারের কর্মকর্তারা সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিসে অন্তর্ভুক্তি ও উপসচিব পদে পদোন্নোতির জন্য এই পরীক্ষা দিতে পারবেন। উত্তীর্ণ কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রশাসন ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ এবং অন্যান্য ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ পদ পূরণ করা হবে।
বর্তমানে পরীক্ষা ছাড়াই উপসচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারের ৭৫ শতাংশ এবং অন্যসব ক্যাডার থেকে ২৫ শতাংশ কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
আজ দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে সংস্কার কমিশনের। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেসুর রহমান জানান, প্রতিবেদনটি জমা দেওয়ার পর তা প্রকাশ করা হবে এবং এটি অনলাইনেও পাওয়া যাবে। প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন হস্তান্তরের আগে সুপারিশগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলতে রাজি হননি এই কর্মকর্তা।
এদিকে, সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী গতকাল মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, "প্রতিবেদনে ১০০টির বেশি সুপারিশ থাকছে এবং সবগুলোই বাস্তবায়নযোগ্য। সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন সম্ভব হবে কি না, সেটা সরকার বুঝবে।"