জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা বাতিল

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে পোষ্য কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কমিটির সভা শেষে উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান কোটা বাতিলের সিদ্ধান্তের কথা জানান।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২ টার দিকে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে এসে উপাচার্য এই ঘোষণা দেন।
উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, 'কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির জরুরি সভায় কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।'
উপাচার্য আরও বলেন, 'সুবিধাটি বাতিলের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা অংশীজনের স্বার্থ জড়িত। সেজন্য আমাদের আলোচনা করতে হয়েছে। ভর্তি পরীক্ষা কমিটি একইসাথে উপলব্ধি করেছে, যারা এই সুবিধার সাথে জড়িত, পেশাগত জীবনে অনেকগুলো অধিকার তাদেরও পাওনা। সেগুলো অপূর্ণ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তারাও দাবি জানিয়ে আসছে। সেজন্য ভর্তি কমিটি তাদের প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধাদি বিবেচনা করার জন্য আলাদা কমিটি গঠন করেছে।'
এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে গত রোববার বেলা ১১ টা থেকে ৯ জন শিক্ষার্থী পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেন। পরে কোটা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার আশ্বাস দিলে ভোরবেলা তারা অনশন প্রত্যাহার করেন।
গতকাল (সোমবার) রাতে উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান পোষ্য কোটার জন্য ৫ দফা সংস্কার প্রস্তাব দেন। প্রস্তাবগুলো হলো- প্রতিবছর মাত্র ৪০ জন পোষ্য কোটায় ভর্তি হতে পারবে, পোষ্যদের জন্য পাশ মার্ক ৩২ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ৪০ শতাংশ করা হবে, শুধু শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঔরসজাত ও গর্ভজাত সন্তান পোষ্য বলে বিবেচিত হবেন, একজন শিক্ষক কিংবা কর্মকর্তা-কর্মচারী জীবনে শুধু একবারই একজনের জন্য এই কোটা ব্যবহার করতে পারবেন এবং পোষ্য কোটায় নিজ বিভাগে কেউ তার সন্তানকে ভর্তি করাতে পারবে না।
শিক্ষার্থীরা সংস্কার প্রস্তাব মেনে নিলেও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পরদিন দুপুরে কোটা পুনর্বহালের দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেন। একই দাবিতে বুধবার থেকে লাগাতার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কর্মকর্তা–কর্মচারী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুর রহমান বাবুল বলেন, 'পোষ্য কোটা একটি প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা। বাংলাদেশের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেই এই সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান রয়েছে। যত দিন পর্যন্ত পূর্বের সুযোগ-সুবিধা পুনর্বহাল করা না হবে, তত দিন পর্যন্ত আমাদের লাগাতার কর্মবিরতি চলবে।'
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এমন হুমকির প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা ফের আন্দোলন শুরু করেন। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে জরুরি সভা আহ্বান করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।