নির্যাতনের চিহ্নসহ যুবদল নেতার লাশ উদ্ধার, নিরাপত্তা বাহিনী তুলে নিয়েছিল অভিযোগ পরিবারের

কুমিল্লায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে জাতীয়তাবাদী যুবদলের নেতা তৌহিদুল ইসলামকে তুলে নেওয়ার পর তাকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। নিহতের পরিবারের সদস্য ও পুলিশ জানিয়েছে, তার শরীরে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন ছিল।
পুলিশ ও স্বজনদের ভাষ্য, তৌহিদুল কুমিল্লা সদরের পাঁচথুবী ইউনিয়নের ইটাল্লা গ্রামের বাসিন্দা। তার ভাই আবুল কামাল দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানিয়েছেন, তৌহিদুল বিএনপির যুব শাখার পাঁচথুবী ইউনিটের আহ্বায়ক ছিলেন।
তিনি কখন মারা গেছেন, তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) হাসপাতালে তার লাশ পান স্বজনেরা।
কুমিল্লা পুলিশের অতিরিক্ত সুপারিনটেনডেন্ট (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ সাইফুল মালিক বলেন, "তার লাশ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।"
তবে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে তৌহিদুলের মৃত্যুর কারণ ও সময় নিশ্চিত করতে পারেননি। "তদন্ত শেষ হলে বিস্তারিত জানানো হবে," বলেন তিনি।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ ফরহাদ আহমেদ চৌধুরী টিবিএসকে জানান, "পুলিশ সদস্যরা দুপুর ১২:৩০ মিনিটে তৌহিদুল ইসলামকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। দ্রুত তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। ইসিজি করার পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।"
এদিকে, নিহতের ভাই কালাম অভিযোগ করেন, শুক্রবার রাত আড়াইটার দিকে নিরাপত্তা বাহিনীর তিনটি গাড়ি ও একটি লাল রঙের গাড়ি তাদের বাড়িতে আসে।
তিনি বলেন, "তারা আমার ভাইয়ের কাছে অস্ত্র আছে অভিযোগ করে ধরে নিয়ে যায়। কিন্তু সে কখনও কোনো অস্ত্র বহন করেনি। আমাদের এলাকার সবাই তাকে ভালোভাবে চেনে। বারবার অনুরোধ করেও আমরা তাকে ফেরত পাইনি।"
কালাম আরও জানান, দুপুর ১২:৩০ মিনিটে কোতোয়ালি থানা পুলিশ তাদের জানায় যে তৌহিদকে "গোমতী নদীর তীরে গোমতী বিলাস নামক স্থানের কাছে পাওয়া গেছে এবং সে এখন হাসপাতালে আছে"।
তিনি অভিযোগ করেন, "কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে আমরা তাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। তার শরীরজুড়ে বেদম মারধরের চিহ্ন ছিল।"
চট্টগ্রাম বন্দরে শিপিং এজেন্টের কর্মচারী তৌহিদুল তার বাবার কুলখানিতে যোগ দিতে বাড়ি গিয়েছিলেন। "চার দিন আগে আমার বাবা মারা গেছেন। আমরা তার শোকে আচ্ছন্ন ছিলাম," বলেন কালাম।
প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তৌহিদুল স্ত্রী ও চার মেয়ে রেখে গেছেন। অতিরিক্ত সুপারিনটেনডেন্ট মালিকের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না।