Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Sunday
June 08, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
SUNDAY, JUNE 08, 2025
হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে, আওয়ামী লীগের নির্বাচন করায় আপত্তি নেই: দ্য হিন্দুকে ইউনূস

বাংলাদেশ

সুহাসিনী হায়দার, দ্য হিন্দু
19 November, 2024, 12:50 am
Last modified: 20 November, 2024, 02:08 pm

Related News

  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নৌবাহিনী প্রধানের সাক্ষাৎ
  • যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ সেনাপ্রধানের
  • জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপে জামায়াত আমিরের সন্তুষ্টি
  • ‘জুলাই সনদ একটি প্রতিশ্রুতি’ — আগামী মাসেই প্রকাশের আশ্বাস প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের
  • ধ্বংসস্তূপ থেকে নতুন যাত্রায় ৩টি কাজ করতে হবে: ড. ইউনূস

হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে, আওয়ামী লীগের নির্বাচন করায় আপত্তি নেই: দ্য হিন্দুকে ইউনূস

[প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হাসিনার] আপাতত ভারতে বসবাস করাটা সমস্যা নয়। সমস্যা হচ্ছে বাংলাদেশের সঙ্গে তার যোগাযোগ। তিনি বাংলাদেশি জনগণের সঙ্গে কথা বলছেন, এবং সেটা রাজনৈতিক রূপ নিচ্ছে। তিনি তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন, এটিই সমস্যা।
সুহাসিনী হায়দার, দ্য হিন্দু
19 November, 2024, 12:50 am
Last modified: 20 November, 2024, 02:08 pm
ড. ইউনূস। ছবি: ইউএনবি

ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য হিন্দু'র সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে দেশের পরিস্থিতি, সরকার, সংখ্যালঘু, নির্বাচন, রাজনৈতিক দল, সংস্কার, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সাক্ষাৎকারটির বাংলা অনুবাদ পাঠকের জন্য প্রকাশ করা হলো।


ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনতে কাজ করবে বাংলাদেশ। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস স্পষ্ট করেছেন, আওয়ামী লীগ যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায়, তার এতে কোনো আপত্তি নেই।

ঢাকায় তার বাসভবনে দ্য হিন্দু-এর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এবং তার সরকারের সংস্কার পরিকল্পনার বিষয়ে কথা বলেন। তিনি তার সরকারের ১০০ দিনের শাসনের অর্জনগুলোর পক্ষে কথা বলেন এবং মৌলবাদ ও দেশের হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে যে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে, তা 'প্রোপাগান্ডা' হিসেবে উল্লেখ করেন।

প্রশ্ন: আপনি ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ১০০ দিন সম্পন্ন করেছেন। আইন-শৃঙ্খলা ও অর্থনীতির মতো দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আপনি আপনার সরকারকে কেমন মূল্যায়ন করবেন?

মুহাম্মদ ইউনূস: আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নের পথে রয়েছে, তবে আমি এটিকে এখনো পুরোপুরি সন্তোষজনক বলতে পারব না। অর্থনীতির ক্ষেত্রে আমি আমাদের কাজকে এ-প্লাস দেব। কারণ আমরা যখন ক্ষমতা গ্রহণ করি, তখন দেশ প্রায় একটি ভেঙে পড়া অর্থনীতি নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। আমাদের ব্যাংকিং ব্যবস্থা ছিল বিশৃঙ্খল—খারাপ ঋণ, প্রায় ৬০ শতাংশ ঋণখেলাপি। আমরা সে পরিস্থিতি থেকে ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে স্থিতিশীল করার উদ্যোগ নিয়েছি। এখনও উন্নতির প্রয়োজন আছে, তবে অগ্রগতি হচ্ছে। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ইতোমধ্যে বাড়ছে এবং আমরা বেশ কিছু ঋণ পরিশোধ করতে পেরেছি, যা আন্তর্জাতিক মহলে আমাদের ভাবমূর্তি উন্নত করেছে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছি। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, আমরা বৈশ্বিক সহায়তা পাচ্ছি—আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আমাদের সঙ্গে ব্যবসা করছে এবং বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। আমি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠকে অংশগ্রহণকালে প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিসহ অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও রাজনৈতিক সহায়তা প্রদানের ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা ওয়ান-স্টপ পরিষেবা চালু করেছি, যেখানে বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রয়োজনীয় সব পরিষেবা পাওয়া সম্ভব। তাই বলতে পারি, দেশ ইতিবাচকভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে।

প্রশ্ন: আপনি নিশ্চয়ই একটি ইতিবাচক চিত্র তুলে ধরেছেন। কিন্তু আপনি ভবিষ্যৎ নিয়ে কি চিন্তিত? যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচিত হওয়া নিয়ে কী ভাবছেন? তার একটি বিবৃতিতে বাংলাদেশের সমালোচনা রয়েছে। নতুন এ মার্কিন প্রশাসনের পর আপনি কতটা আত্মবিশ্বাসী যে, আন্তর্জাতিক সমর্থন অব্যাহত থাকবে?

মুহাম্মদ ইউনূস: আমার মনে হয় না প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বাংলাদেশ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেছেন।

প্রশ্ন: তিনি করেছেন, সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে…

মুহাম্মদ ইউনূস: বটে। এটা সরাসরি বাংলাদেশ নিয়ে নয়, বরং সংখ্যালঘুদের নিয়ে—তিনি মনে হয় না পুরো বিষয়টা ভালোভাবে জানেন। এটি একটি প্রোপাগান্ডা যা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু যখন তিনি বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে আরও জানবেন, তখন বুঝতে পারবেন যে বাংলাদেশের পরিস্থিতি কতটা আলাদা। সাধারণত মার্কিন প্রেসিডেন্ট পরিবর্তনের ফলে [দেশটির] পররাষ্ট্রনীতি ও দেশভিত্তিক সম্পর্ক খুব বেশি বদলায় না। যদি ট্রাম্প ২.০-এর সময়ে কিছু পরিবর্তন হয়ও, আমাদের মনে রাখতে হবে যে, এখন এটি একটি নতুন বাংলাদেশ—বাংলাদেশ ২.০। আমরা আশা করছি, ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদেও আমাদের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি উন্নত হতে থাকবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ অটুট থাকবে। তারা এবং আমরা উভয়ে একে অপরের সবচেয়ে বড় সরকারি ক্রেতা। আমার দীর্ঘ কয়েক বছরে দারুণ সম্পর্ক তৈরি করেছি, তাই আশা করছি সম্পর্ক দৃঢ়তর হবে।

প্রশ্ন: আপনি মি. ট্রাম্প যা বলেছেন সেটাকে প্রোপাগান্ডা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু শুধু তিনি নন, ভারত সরকারও একাধিক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, বাংলাদেশের হিন্দুরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন, তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, কিছুক্ষেত্রে খুনের ঘটনা ঘটছে, এমনকি ধর্ষণের সন্দেহও করা হচ্ছে। আপনি কী বলবেন?

মুহাম্মদ ইউনূস: প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে আমার প্রথম ফোনকলে [১৬ আগস্ট] তিনি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। আমি তাকে স্পষ্ট করে বলেছিলাম, এটি একটি প্রোপাগান্ডা। এখানে অনেক সাংবাদিক এসেছিলন, কিছু ঘটনা নিয়ে সংবাদ হয়েছে। তবে সেগুলো ততটা না যতটা গণমাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।

প্রশ্ন: এর পেছনে তাহলে কারা থাকতে পারে বলে আপনি মনে করেন?

মুহাম্মদ ইউনূস: আমি সঠিকভাবে জানি না, তবে এ প্রোপাগান্ডার সঙ্গে বাস্তবতার তেমন কোনো মিল নেই। এ সবগুলো ঘটনা গুরুত্বের সঙ্গে পরীক্ষা করে দেখেছেন একদল লোক, প্রতিটা ঘটনা ঘেঁটে দেখেছেন…

প্রশ্ন: আমি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আদতেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তারা ভাবছেন তারা লক্ষ্যবস্তুর শিকার। ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওতে দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশ মুসলিমরাষ্ট্র হবে। শোনা যাচ্ছে, ক্ষমতাসীন দল সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দেওয়ার কথা ভাবছে। এ নিয়ে অনেকে মনে করছেন, আপনার সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশে এমন একটি উগ্র ইসলামিক ধারা প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে, যা গত ১৬ বছরে দেখা যায়নি। এ পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলোকে আশ্বস্ত করতে আপনার সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে?

মুহাম্মদ ইউনূস: এ[চিত্র]টি কি আমার সঙ্গে মানায়? আমার উপদেষ্টা পরিষদের প্রত্যেক সদস্যই হয় একজন মানবাধিকারকর্মী যিনি নিজেই বিভিন্ন সময়ে ভুক্তভোগী হয়েছেন, অথবা পরিবেশ সংরক্ষণে নিবেদিত, কিংবা জেন্ডার সমতা বা অন্যান্য সামাজিক বিষয় নিয়ে কাজ করছেন। আপনি যদি তাদের কাছে গিয়ে উল্লিখিত অভিযোগ করেন, তারা তীব্রভাবে এর বিরোধিতা করবেন।

প্রশ্ন: তাহলে আপনি বলছেন, আপনার উপদেষ্টা পরিষদের কেউ উগ্র ইসলামিক এজেন্ডাকে সমর্থন করবেন না?

মুহাম্মদ ইউনূস: উপদেষ্টাদের কাজ ও জীবন পর্যালোচনা করুন। তারা সবসময় মানবাধিকারের পক্ষে কথা বলেছেন; এখানে নারীরাও নেতৃত্ব দিচ্ছেন—তারা কখনোই আপনি যা বলছেন সেসবের পক্ষে অবস্থান নেবেন না।

প্রশ্ন: আরও কিছু বিষয়ে উদ্বেগ আছে। মানবাধিকার সংগঠন 'অধিকার' জানিয়েছে, কেবল সেপ্টেম্বরেই রাজনৈতিক সহিংসতায় ৮৪১ জন আহত এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে আটজন নিহত হয়েছেন। কিছু সাংবাদিকের অ্যাক্রিডিটেশন বাতিল হয়েছে। কেউ কেউ বলবেন, আপনার সরকার পূর্ববর্তী সরকারের ধারাই অনুসরণ করছে।

মুহাম্মদ ইউনূস: জনগণই বিচার করবে যে এ সরকার কী করছে এবং পূর্ববর্তী সরকার কী করেছিল। আমি [এ বিষয়ে] তর্কে যেতে চাই না। আমরা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছি—এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। অ্যাক্রিডিটেশন আইন আমরা তৈরি করিনি, আমরা কেবল এটির প্রয়োগ করছি। তবে আপনি বলতে পারেন, এটা সঠিক প্রয়োগ কি না। আমি আইনটি পরিবর্তন করতে চাই। এটি অন্য ধরনের শাসনব্যবস্থার তৈরি করা আইন।

প্রশ্ন: রাজনৈতিক প্রতিশোধপরায়ণতার কারণে আগের সরকারের নেতা-কর্মীরা লক্ষ্যবস্তু হতে পারেন বলেও উদ্বেগ রয়েছে। এমনটা ঘটবে না তা নিশ্চিত করার কোনো ব্যবস্থা কি আপনার কাছে আছে?

মুহাম্মদ ইউনূস: আমি বলব, আইনের শাসন বজায় থাকুক। দ্যাটস ইট।

প্রশ্ন: আপনি সংস্কারের জন্য কয়েকটি কমিশন গঠন করেছেন—কিন্তু সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে কোনো কমিশন নয় কেন?

মুহাম্মদ ইউনূস: আমাদের কিন্তু একটি মানবাধিকার কমিশন রয়েছে—সংখ্যালঘুদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করতে হবে কেন? আমি [সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে] বলেছি, আপনারা এ দেশের নাগরিক, সংবিধান আপনাদের সব অধিকার দিয়েছে। আমরা সবাই চাই মানবাধিকার এবং সংবিধানে উল্লেখ থাকা সব অধিকার নিশ্চিত করতে। সংবিধান কমিশনের দিকে তাকান, দেখুন এর প্রধান কে [আলী রিয়াজ]—তারপর আপনারা কী বলছেন সে মতপার্থক্য দূর করুন… না হলে এটা পুরোটাই প্রোপাগান্ডা।

প্রশ্ন: যদি প্রতিবেশী ভারত বা যুক্তরাষ্ট্রে এমন ধারণা বিশ্বাস করা হয়, তাহলে কি আপনার সরকার জনগণকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছে যে এটি প্রোপাগান্ডা?

মুহাম্মদ ইউনূস: হয়তো বিশ্বকে অন্যভাবে বোঝানোর টাকা বা ক্ষমতা আমাদের নেই।

প্রশ্ন: আপনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে এখনও সরাসরি সাক্ষাৎ করেননি, যদিও ফোনে কথা হয়েছে...

মুহাম্মদ ইউনূস: হ্যাঁ, এখনো আমাদের সরাসরি সাক্ষাৎ হয়নি। আমি যখন জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অংশগ্রহণ করি, মিস্টার মোদি ততক্ষণে চলে গিয়েছিলেন। আমি বাকুতে কপ-এ অংশ নিই, কিন্তু তিনি সেখানে ছিলেন না। বিমসটেক সম্মেলন [থাইল্যান্ডে] বাতিল হয়েছিল। আর কমনওয়েলথ সিএইচওজিএম বৈঠকে আমাদের দুজনের কেউই অংশ নিইনি। তবে তার মানে এ নয় যে, আমরা কখনো দেখা করব না। আমরা কেবল প্রতিবেশী নই, ইতিহাস ও ভূগোল আমাদের একত্র করেছে। ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কও আমাদের সংযুক্ত করেছে। আমি প্রথম থেকেই প্রধানমন্ত্রী মোদিকে সার্ক পুনরুজ্জীবিত করার আহ্বান জানিয়েছি। এটা কেন এভাবে পড়ে থাকবে? এমনকি আমি প্রস্তাব দিয়েছিলাম, সার্ক নেতারা নিউইয়র্কে স্রেফ পাঁচ মিনিটের জন্য হলেও যেন বৈঠক করেন যাতে একটা বার্তা পাঠানো যায় যে, সার্ক এখনো আছে।

প্রশ্ন: ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ৫ আগস্টের ঘটনাগুলো কীভাবে প্রভাব ফেলছে? এটি কি একটি ধাক্কা ছিল?

মুহাম্মদ ইউনূস: কেন এমনটা হবে? বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে ভারতের উদযাপন করা উচিত যে, বাংলাদেশ এমন একটি শাসন থেকে মুক্ত হয়েছে যেখানে মানুষ চরম কষ্টে ছিল, অনেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন, অনেকে গুম হয়েছিলেন এবং অনেক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। আমাদের তরুণ প্রজন্মের উদযাপনে সঙ্গে ভারতেরও অংশ নেওয়া উচিত এবং একসঙ্গে উদযাপন করা উচিত, যেমনটা অনেক রাষ্ট্র করছে।

প্রশ্ন: আপনি বলেছিলেন, ৫ আগস্ট থেকে শেখ হাসিনার ভারতে উপস্থিতি সম্পর্কের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করছে…

মুহাম্মদ ইউনূস: [প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হাসিনার] আপাতত ভারতে বসবাস করাটা সমস্যা নয়। সমস্যা হচ্ছে বাংলাদেশের সঙ্গে তার যোগাযোগ। তিনি বাংলাদেশি জনগণের সঙ্গে কথা বলছেন, এবং সেটা রাজনৈতিক রূপ নিচ্ছে। তিনি তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন, এটিই সমস্যা।

প্রশ্ন: সেটা কীভাবে? 

মুহাম্মদ ইউনূস: তিনি বাংলাদেশিদেরকে ঢাকা ও অন্যান্য শহরের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করতে উৎসাহিত করছেন। তার এসব বক্তব্য প্রচারিত হয়েছে। তিনি [সদ্য নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট] ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে বলছেন—যেন পুলিশ বাধা দেয়, যাতে তারা বলতে পারে বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কাজ করছে। এটি আরেকটি দেশের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ।

প্রশ্ন: আপনার সরকার ইন্টারপোলের কাছে তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য আবেদন করেছে—কেন সরাসরি ভারতকে অনুরোধ করছে না? প্রয়োগ করার মতো দ্বিপাক্ষিক প্রক্রিয়া তো এক্ষেত্রে রয়েছে।

মুহাম্মদ ইউনূস: আমরা তাকে ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের আইনি পদ্ধতি অনুসরণ করব।

প্রশ্ন: তারপরও আপনার সরকার এখনো প্রত্যর্পণের জন্য আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করেনি। দুই দেশের মধ্যে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে। 

মুহাম্মদ ইউনূস: আমার মনে হয় আমরা আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করছি, তবে সে পর্যায়ে এখনো পৌঁছাইনি।

প্রশ্ন: রাজনৈতিক মামলা বিষয়ক ধারার কথা উল্লেখ করে যদি ভারত বাংলাদেশের অনুরোধ গ্রহণ না করে?

মুহাম্মদ ইউনূস: আপনি কি বলছেন ভারত চুক্তি লঙ্ঘন করবে? হ্যাঁ, এ ধরনের ধারা রয়েছে, তবে যদি ভারত সরকার সেগুলো কার্যকর করে এবং [শেখ হাসিনাকে] দেশে রাখে, তাহলে আমাদের মধ্যে সম্পর্ক খুব ভালো থাকবে না। আমাদের অন্তর্বর্তী সরকার খুবই স্বল্পস্থায়ী, তাই বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের সব দিক এখনই মীমাংসা করা সম্ভব নয়। তবে পরবর্তী কোনো সরকারও এটি সহজে মেনে নেবে না।

প্রশ্ন: আপনি কি অন্য ক্ষেত্রগুলোতে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক মসৃণভাবে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন? সম্প্রতি আমরা জ্বালানি ও বাণিজ্য সংযোগ বিষয়ে কিছু উদ্যোগ দেখেছি।

মুহাম্মদ ইউনূস: আমাদের স্বপ্ন একটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন-ধাঁচের সম্পর্ক তৈরি করা [মুক্ত চলাচল ও বাণিজ্যের স্বাধীনতাসহ]। আমরা সে দিকেই এগোতে চাই। আপনার উল্লেখ করা উদ্যোগগুলো ইতিবাচক লক্ষণ এবং আমরা সে লক্ষ্যের দিকেই এগোতে চাই। তবে সেগুলো আমাদের মূল লক্ষ্যমাত্রা থেকে এখনো অনেক দূরে। আমাদের লক্ষ্য খুবই নিবিড় সম্পর্কের একটি ইউনিয়ন গঠন। আমাদের জন্মই হয়েছে পাশাপাশি থাকার জন্য, আমরা যমজ।

প্রশ্ন: আপনার সরকার কতটা 'স্বল্পমেয়াদি'? নির্বাচন কখন হবে বলে মনে করেন?

মুহাম্মদ ইউনূস: আমাদের সরকার গঠন করার সময় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল যে, আমরা স্রেফ একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার হয়ে থাকব না—যারা আসবে, নির্বাচন দেবে এবং ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। আমাদের প্রধান দায়িত্ব বলা হয়েছিল, বাংলাদেশ ২.০-এর জন্য সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করা। আমরা দীর্ঘমেয়াদি সরকার হতে চাইনি, তাই এ কাঠামো তৈরি করেছি। প্রথম দিন থেকেই স্বতন্ত্র প্রক্রিয়া হিসেবে নির্বাচনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সেইসঙ্গে সংস্কার কার্যক্রমও চলমান থাকবে।

প্রথমত, আমরা নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা করেছি, যা একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। আগামী সপ্তাহের মধ্যে ঘোষণা করার সম্ভাবনা আছে, কারা প্রধান নির্বাচন কমিশনার হবেন এবং নির্বাচন পরিচালনার জন্য একটি স্বাধীন সংস্থা গঠন করবেন। তবে, অন্য কিছু সংস্কার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তারা নির্বাচন পরিচালনা করতে পারবেন না। যেমন, আমাদের দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ হবে কি না, বাংলাদেশে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব থাকবে কি না, মেয়াদ ও মেয়াদের সীমা সংক্রান্ত বিষয় ইত্যাদি সম্পর্কে সাংবিধানিক সংস্কার কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। আমি বলব, নির্বাচনের ট্রেন স্টেশন ছেড়ে গেছে। তবে এ ট্রেন কোন পথে চলবে সেট আমাদেরকে ঠিক করতে হবে। আর সে পথ নির্ধারণ করতে আমাদেরকে সংস্কার কমিশনের কাছে ফিরে যেতে হবে।

প্রশ্ন: এতে কি কয়েক বছর লেগে যেতে পারে? 

মুহাম্মদ ইউনূস: আমার কোনো ধারণা নেই। জনগণ একটি নির্বাচিত সরকার দেখতে চায়, তাই আমরা যত দ্রুত সম্ভব ঐক্যমত্য গড়ে তুলতে চেষ্টা করছি।

প্রশ্ন: আওয়ামী লীগ কি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে? 

মুহাম্মদ ইউনূস: এটা ইতোমধ্যেই ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চাইনি, এবং বিএনপি (বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল) বলেছে, সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। সুতরাং তারা ইতোমধ্যেই সিদ্ধান্ত দিয়ে দিয়েছে। আমরা দেশের একটি প্রধান দলের মতামত অগ্রাহ্য করতে পারি না।

প্রশ্ন: তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণে আপনার কোনো আপত্তি নেই? 

মুহাম্মদ ইউনূস: আমি রাজনীতিবিদ নই যে এ দল বা অন্য দল বেছে নেব। আমি রাজনীতিবিদদের ইচ্ছা বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করছি।

প্রশ্ন: আপনি কয়েক বছর আগে (২০০৭ সালে) নিজস্ব রাজনৈতিক দল গঠনের চেষ্টা করেছিলেন যদিও...

মুহাম্মদ ইউনূস: সেটা মাত্র ১০ সপ্তাহের জন্য ছিল। তারপর আমি একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সেটা বন্ধ ঘোষণা করেছিলাম। অনেকে আমাকে চাপ দিয়েছিলেন, বলেছিলেন জনগণ পরিবর্তন চায়। আমরা দলের নাম পর্যন্ত ঠিক করেছিলাম, কিন্তু সেখানেই শেষ। তারপরও সারাজীবন রাজনৈতিক দল তৈরি করতে চাওয়ার অভিযোগ শুনতে হয়েছে।

প্রশ্ন: আপনি কি নিজেকে রাজনীতিবিদ হিসেবে দেখেন না? 

মুহাম্মদ ইউনূস: আমি নিজেকে কখনোই রাজনীতিবিদ মনে করি না।


[ঈষৎ সংক্ষেপিত ও পরিমার্জিত অনুবাদ: সুজন সেন গুপ্ত]

Related Topics

টপ নিউজ

অন্তর্বর্তী সরকার / ড. মুহাম্মদ ইউনূস / প্রধান উপদেষ্টা / অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস / বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক / সাক্ষাৎকার

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • চীনের কাছ থেকে এবার স্টেলথ ফাইটার পাচ্ছে পাকিস্তান
  • পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বন্যার ফলে যেভাবে সৃষ্টি হয়েছিল ভূমধ্যসাগর
  • নির্বাচন আয়োজনের জন্য আগামী ঈদুল ফিতরের পর এক মাস সময় যথেষ্ট: বদিউল আলম মজুমদার
  • অনিরাময়যোগ্য রোগী যারা, কেমন কাটবে তাদের ঈদ
  • কোভিড-১৯: আবারও জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় মাস্ক পরার পরামর্শ
  • কসাই নিয়ে কাড়াকাড়ি!

Related News

  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নৌবাহিনী প্রধানের সাক্ষাৎ
  • যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ সেনাপ্রধানের
  • জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপে জামায়াত আমিরের সন্তুষ্টি
  • ‘জুলাই সনদ একটি প্রতিশ্রুতি’ — আগামী মাসেই প্রকাশের আশ্বাস প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের
  • ধ্বংসস্তূপ থেকে নতুন যাত্রায় ৩টি কাজ করতে হবে: ড. ইউনূস

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

চীনের কাছ থেকে এবার স্টেলথ ফাইটার পাচ্ছে পাকিস্তান

2
আন্তর্জাতিক

পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বন্যার ফলে যেভাবে সৃষ্টি হয়েছিল ভূমধ্যসাগর

3
বাংলাদেশ

নির্বাচন আয়োজনের জন্য আগামী ঈদুল ফিতরের পর এক মাস সময় যথেষ্ট: বদিউল আলম মজুমদার

4
ফিচার

অনিরাময়যোগ্য রোগী যারা, কেমন কাটবে তাদের ঈদ

5
বাংলাদেশ

কোভিড-১৯: আবারও জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় মাস্ক পরার পরামর্শ

6
ফিচার

কসাই নিয়ে কাড়াকাড়ি!

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net