Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

আমি কিডনি বিক্রয় করতে চাই; মগবাজারের এ দম্পতির কিডনি বিক্রিই কেন শেষ উপায়?

২০১৭ সালে জামশেদের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। শুরুতে হালিমা টেইলার্সের দোকান চালাতেন। জামশেদ অন্য জায়গায় কাজ করতেন। দুজনের আয়ে সংসারও ভালোই চলছিল। দোকানে দুজন কর্মচারীও ছিল। দোকানের আয় থেকেই তাদের বেতন মিটিয়ে প্রতিমাসে বাড়িতে বাবা-মার কাছেও টাকা পাঠাতেন হালিমা। তবে করোনা মহামারির কারণে তাদের ব্যবসায় লোকসানের শুরু।
আমি কিডনি বিক্রয় করতে চাই; মগবাজারের এ দম্পতির কিডনি বিক্রিই কেন শেষ উপায়?

বাংলাদেশ

তৌসিফ কাইয়ুম
15 October, 2024, 07:00 pm
Last modified: 15 October, 2024, 07:01 pm

Related News

  • ২০২৭-২৮ অর্থবছরে ঋণভার পৌঁছাবে ২৯ লাখ কোটি টাকায়, ডেট অফিস স্থাপনের পরিকল্পনা সরকারের
  • ‘নিরাপত্তাঝুঁকিতে’ টাঙ্গাইলে ‘তাণ্ডব’ সিনেমার প্রদর্শনী বন্ধ
  • ‘নো করিডর, নো পোর্ট’: ২৭-২৮ জুন রোডমার্চ করবেন বামপন্থীরা
  • প্রস্তাবিত বাজেট ‘অকার্যকর, একতরফা’: বিএনপি
  • অন্য জেলা থেকে ঢাকায় কাঁচা চামড়া পরিবহন ঈদের দিনসহ ১০ দিন নিষিদ্ধ

আমি কিডনি বিক্রয় করতে চাই; মগবাজারের এ দম্পতির কিডনি বিক্রিই কেন শেষ উপায়?

২০১৭ সালে জামশেদের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। শুরুতে হালিমা টেইলার্সের দোকান চালাতেন। জামশেদ অন্য জায়গায় কাজ করতেন। দুজনের আয়ে সংসারও ভালোই চলছিল। দোকানে দুজন কর্মচারীও ছিল। দোকানের আয় থেকেই তাদের বেতন মিটিয়ে প্রতিমাসে বাড়িতে বাবা-মার কাছেও টাকা পাঠাতেন হালিমা। তবে করোনা মহামারির কারণে তাদের ব্যবসায় লোকসানের শুরু।
তৌসিফ কাইয়ুম
15 October, 2024, 07:00 pm
Last modified: 15 October, 2024, 07:01 pm

অন্যান্য দিনের মতো এটিও ছিল সাধারণ একটি দিন। ঢাকার ইস্কাটনের একটি সড়ক  দিয়ে তিন ব্যক্তি হেঁটে যাচ্ছিলেন। হঠাৎই তাদের চোখ আটকে যায় সড়কের পাশে দেয়ালের একটি লিফলেটে। যাতে লেখা- 'আমি কিডনি বিক্রয় করতে চাই। ব্লাড গ্রুপ- বি+, ০১……..'।

লিফলেটটি পড়ে তাদের তিনজনের কৌতূহল তৈরি হয়। 

একটা সময় বাংলাদেশে তাৎক্ষণিকভাবে ও খুব সহজে টাকা উপার্জনের জন্য কিংবা বিদেশে পাড়ি জমানোর খরচ জোগাতে কিডনি বিক্রয়ের প্রচলন ছিল। তবে এখন আর সেটি নেই।

এনিয়ে খোঁজ-খবর করতেই দেয়ালে লাগানো লিফলেটের পেছনের গল্প সামনে এল। লিফলেটটির সূত্র ধরে খোঁজ মেলে রাজধানীর মগবাজার এলাকার একটি টেইলার্সের দোকানের। আর দোকানই সেই জায়গা, যেখান থেকে গল্পের শুরু।   

অনুগ্রহের বোঝা

সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহের রৌদ্রোজ্জ্বল একটি দিন। মগবাজার মোড়ের একটি টেইলার্সের দোকানে জামা সেলাইয়ে ব্যস্ত ছিলেন এক দর্জি। অপরদিকে হিজাব পরিহিত এক নারী এক  গ্রাহকের জামার মাপ নিচ্ছিলেন। পাশেই ছিল ছোট্ট এক শিশু। মাপ নেওয়ার ফাঁকে ফাঁকে একটু পর পরই সেই শিশুর দিকে তাকাচ্ছিলেন এই নারী। 

ওই গ্রাহক চলে যাওয়া মাত্রই সেই নারী শিশুটিকে কোলে নিয়ে কাপড় সেলাইয়ে ব্যস্ত সেই দর্জির সঙ্গে আলাপ শুরু করলেন। এ লোকটি আর কেউ নন, তারই স্বামী।  

দোকানটিতে গিয়ে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে ওই নারীর কথা হয়। জানতে চাওয়া হয়, কিডনি বিক্রয়ের সেই লিফলেটটি তারই কি না।

তিনি জবাব দেবেন, ঠিক সেই মুহূর্তেই দোকানে আরেকজন এসে হাজির। তাকে দেখে থেমে গেলেন ওই নারী। তার চোখে মুখে তখন ভয় এবং একইসঙ্গে লজ্জার ছাপ স্পষ্ট।   

যখন গ্রাহকটির সঙ্গে ওই দর্জি আলাপ শুরু করলেন, তখন পাশে চুপচাপ দাঁড়িয়ে তার স্ত্রী। গ্রাহকটি চলে যাওয়ার পরই জবাব দিতে শুরু করলেন তিনি। বললেন, 'হ্যাঁ, ওটা আমারই নম্বর, যাকে আপনি ফোন করেছিলেন।'

এ নারীর নাম হালিমা বেগম। তার স্বামী জামশেদ রহমান। শিশুটির কথা জিজ্ঞাসা করায় জানালেন এটি তাদেরই সন্তান।

কথায় কথায় হালিমার কাছে কিডনি বিক্রয়ের কারণ জানতে চাওয়া হয়। জানালেন, এ গল্পের শুরু ২০২০ সালে, করোনা মহামারির সময়।

মহামারির পর থেকে ব্যবসায় বিভিন্ন ঝুঁকির সম্মুখীন হতে শুরু করেন হালিমা। সঙ্গে বাচ্চা। তাই তিনি বুঝে গিয়েছিলেন যে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য তাকে বেশ কিছু কঠিন পদক্ষেপ নিতে হবে।  

সাধ্যাতীত ঋণ, ঋণের দুষ্টচক্র

মহামারি পরবর্তী সময়ে এ দম্পতির ব্যবসা আগের চেয়ে অনেক কমে যায়। তবুও তারা ব্যবসাটি চালু রাখার চেষ্টা করছিলেন। যদিও তাদের খরচ আগের চেয়ে বেড়ে গিয়েছিল, তারপরও তারা চাইছিলেন দোকানের দুই কর্মচারীকে ছাঁটাই না করতে। প্রতি মাসে তাদের দুজনের বেতন ছিল ৩০ হাজার টাকা। সঙ্গে ছিল দোকানের ভাড়া। 

এ দম্পতি ভেবেছিলেন পরিস্থিতি হয়ত খুব শীঘ্রই স্বাভাবিক হয়ে আসবে। এ ভরসাতেই ব্যবসা চালু রাখতে তারা ঋণ নিতে শুরু করেন। কিন্তু, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তারা ঋণের দুষ্টচক্রে আটকে পড়তে শুরু করেন।

তারা বিভিন্ন ঋণদাতা ও ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঋণ নেন। একপর্যায়ে তাদের দেনার পরিমাণ ১৫ লাখ টাকায় গিয়ে দাঁড়ায়। বিপুল টাকা ঋণের বোঝায় দিন দিন আরও হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন এ দম্পতি।  

স্থানীয় ঋণদাতার কাছ থেকে নেওয়া তিন লাখ ৬০ হাজার টাকার দুটি ঋণের কারণে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি চাপে রয়েছেন তারা।

টেইলার্সের ব্যবসা থেকে প্রতিমাসে তাদের আয় ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা। তবে পুরো টাকা ঋণ পরিশোধ করতেই শেষ। এর পরও ঋণের সবগুলো কিস্তি পরিশোধ করতে পারেন না তারা। 

অধিক সুদের হারের কারণে প্রত্যেক মাসে তাদের কেবল সুদই ৩০ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হয়। 

হালিমা বেগম বললেন, 'আমরা আর কী-ই বা করতে পারি? আমাদের কিডনি বিক্রয় করা ছাড়া আর উপায় নেই। মাসিক কিস্তি পরিশোধের জন্য নতুন করে ঋণ নিচ্ছি। ফলে আমাদের ঋণ বাড়ছেই।'

তিনি আরও বলেন, 'মাঝে মাঝে এনজিওর কর্মকর্তারা গ্রাহকদের সামনেই আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। আমি তা সহ্য করতে পারি না। তাই বেশ কয়েকবার আত্মহত্যার কথাও ভেবেছিলাম। কিন্তু ছোট্ট মেয়েটির কথা ভেবে এ কাজ করতে পারিনি।' 

উত্থান-পতন

আলাপে আলাপে জানতে চাওয়া হয়, তারা কীভাবে এত টাকা ঋণে জড়িয়ে পড়লেন। তখন কাজ রেখে স্ত্রীর পাশে এসে দাঁড়ালেন জামশেদ। 

হালিমা জানালেন, ২০১৭ সালে জামশেদের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। শুরুতে হালিমা টেইলার্সের দোকান চালাতেন। জামশেদ অন্য জায়গায় কাজ করতেন। দুজনের আয়ে সংসারও ভালোই চলছিল। দোকানে দুজন কর্মচারীও ছিল। দোকানের আয় থেকেই তাদের বেতন মিটিয়ে প্রতিমাসে বাড়িতে বাবা-মার কাছেও টাকা পাঠাতেন হালিমা।  

তবে করোনা মহামারির কারণে তাদের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায় লোকসানের শুরু। দোকান ভাড়া, কর্মচারীদের বেতন, বাড়ি ভাড়া, সংসারের খরচ এসব চালাতে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন তারা।  

জামশেদ বলেন, 'প্রতিমাসে দোকান ভাড়া ১২ হাজার টাকা, বাড়ি ভাড়া ১৩ হাজার টাকা আর দুই কর্মচারীর বেতন ৩০ হাজার টাকা। আমার স্ত্রী তখন অন্তঃসত্ত্বা। ২০২০ সালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আমার স্ত্রী মেয়ের জন্ম দেন। এসব মিলিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা খরচ হয়ে যায়। যে কারণে শেষপর্যন্ত ঋণ করতে হয়।' 

ঋণ বাড়তে থাকায় বাধ্য হয়ে তারা দোকানের কর্মচারীদের কাজ থেকে ছাঁটাই করেন। যদিও তাদের এমনটা করার কোনো ইচ্ছাই ছিল না। কিন্তু এ ছাড়া তাদের আর উপায়ও ছিল না। 

এরই মধ্যে করোনার ঝুঁকি সত্ত্বেও দৈনন্দিন খরচ মেটাতে জামশেদ দোকানটিতে কাজ শুরু করেন। তবে তিনি যে টাকা আয় করতেন, তার চেয়ে তাদের খরচ ছিল অনেক বেশি। তাই বাধ্য হয়ে কেবল দোকান ভাড়া পরিশোধের জন্য স্থানীয় ঋণদাতাদের কাছ থেকে উচ্চ সুদে ঋণ নেন তিনি।

হালিমা বলেন, 'মহামারির পর যখন আমরা দোকানটি আবার চালু করি, ততদিনে আমাদের দেনার পরিমাণ প্রায় ৭-৮ লাখ টাকা হয়ে গিয়েছে। আমরা ভেবেছিলাম দুজনে কাজ করলে সেটি পরিশোধ করতে পারব। কিন্তু তা তো হলোই না, বরং পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে লাগল।'

ছবি: সৈয়দ জাকির হোসেন

তিনি জানান, তারা ছয়টি এনজিও ও ব্যাংক থেকে ১৫ লাখ টাকারও বেশি ঋণ নিয়েছেন। এর মধ্যে এক লাখ ১০ হাজার টাকা তারা স্থানীয় এক ঋণদাতার কাছ থেকে নিয়েছেন। যার সাপ্তাহিক কিস্তি দুই হাজার ৭৫০ টাকা। সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত তাদের এখনও ৮৮ হাজার ৬৬০ টাকা পরিশোধ বাকি। 

একটি এনজিও থেকে তারা নিয়েছেন তিন লাখ ৮০ হাজার ৭০০ টাকা। প্রতি মাসে ১৬ হাজার ২০০ টাকা করে এ পর্যন্ত ১১টি কিস্তি পরিশোধ করেছেন। সংস্থাটির কাছে এখনও তাদের ঋণ দুই লাখ দুই হাজার ৫০০ টাকা।

আরেক এনজিও থেকে নিয়েছেন এক লাখ ৩০ হাজার টাকা। প্রতি দুই মাস পর পর সেখানে ১৩ হাজার টাকা দিতে হয়। সেখানে তাদের ঋণ ২৬ হাজার টাকা। 

মার্কেন্টাইল ব্যাংকের বাংলামোটর শাখা থেকে তারা চার লাখ ৪৭ হাজার টাকা নিয়েছেন। দৈনিক দুই হাজার টাকা ভিত্তিতে গত ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪২ হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন তারা।

হালিমার দাবি, তাদের কাছে অন্যান্য এনজিও, ব্যাংক ও ঋণদাতা মিলিয়ে ১০ লাখ টাকারও বেশি পাওনা রয়েছে। তারা প্রতি মাসে একটি এনজিওকে ৩০ হাজার টাকা, আরেকটিকে ১০ হাজার টাকা এবং এক ঋণদাতাকে ৩০ হাজার টাকা সুদ পরিশোধ করেন।  

কথাবার্তার একপর্যায়ে ঋণের কাগজপত্র বের করে দেখালেন হালিমা। তিনি ও তার স্বামী জানালেন, তাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুবই নাজুক। 

তখন হালিমার কাছে কিডনি বিক্রয়ের কথা মাথায় এল কীভাবে, তা জানতে চাওয়া হয়। 

'আপনি সাংবাদিক, দয়া করে আমাদের কিডনি বিক্রয়ে সাহায্য করুন' 

হালিমা বললেন, 'আমার স্বামী একটা সময় হাসপাতালে চাকরি করতেন। তিনি আমাকে বলেছিলেন, একটি কিডনি নিয়েও মানুষ বাঁচতে পারে। তখন আমরা কিডনি বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিই। আর কিডনি বিক্রয় করে যে টাকা পাবো, তা দিয়ে দেনা  মেটাবো।' 

এরপরই তারা ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় দেয়ালে দেয়ালে কিডনি বিক্রয়ের লিফলেট লাগান। তাতে যোগাযোগের জন্য মোবাইল নম্বরও দেন। 

লিফলেট দেখে অনেকেই ফোন করেছেন। কিন্তু তাদের বেশিরভাগই ফোন করে শুধু বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছেন। 

হালিমা বলেন, 'লোকেরা ফোন করে উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করে। তবে দুজন ব্যক্তির সঙ্গে ফোনেই আলাপ হয়েছে। তারা কিডনি নিতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। তবে তাদের সঙ্গে এখনো সরাসরি কথা হয়নি।' 

একপর্যায়ে হালিমা এই প্রতিবেদককে উদ্দেশ্য করে বললেন, 'আপনি তো সাংবাদিক, একটু আমার কিডনিটা বিক্রির ব্যবস্থা দেন।' মুখের কথাটি শেষ না হতেই চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ল হালিমার। 

এ দম্পতির সঙ্গে আলাপ শেষ করে দোকান থেকে বের হতেই জামশেদ পেছন থেকে এসে কানে কানে বললেন, বেশ কয়েক বছর ধরে তারা এ এলাকায় থাকছেন। স্থানীয় অনেকেই তাদের কাস্টমার। এ কারণে এ এলাকায় তারা লিফলেট লাগাননি। তাই কিডনি বিক্রয়ের বিষয়টি এখানকার কেউ যাতে জানতে না পারেন, সে অনুরোধ তার।

এও বললেন, যদি খবরের সঙ্গে যদি তাদের ছবি প্রকাশ করা হয়, তাহলে যেন সেটি ঝাপসা করে দেওয়া হয়।  

গত বুধবার মুঠোফোনে হালিমার সঙ্গে ফের যোগাযোগ করলে হতাশা নিয়ে তিনি জানালেন,  আগের ব্যক্তিদের কেউই কিডনির জন্য আর যোগাযোগ করেননি। তবে এর মধ্যে আরো অনেকেই যোগাযোগ করেছেন।
তবে হালিমা আশা ছাড়েননি। 

এর কি বিকল্প নেই?

গত পহেলা অক্টোবর এই প্রতিবেদক দ্য মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংক লিমিটেডের বাংলামোটর শাখায় যোগাযোগ করেন। ব্যাংকটিকে হালিমা খাতুনের পরিস্থিতি জানিয়ে এর সম্ভাব্য সমাধানের বিষয়ে অনুরোধ জানান। তবে এ বিষয়ে ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তাই মন্তব্য করতে রাজি হননি। 

কথা হয় বেসরকারি ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর সঙ্গে।

তিনি জানান, মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরএ) লোন লস প্রভিশন নির্দেশিকা অনুযায়ী, এনজিওগুলো গ্রাহকদের যে পরিমাণ ঋণ দেয়, সেই ঋণের ৫-১০ শতাংশ পরিমাণ টাকা ফেরত না-ও পেতে পারে। এনজিওগুলোকে এসব শর্ত মেনে নিয়েই লাইসেন্স নিতে হয়।

এ বিধান অনুযায়ী, হালিমা বেগমের ঋণ মওকুফ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে বলে জানান রেজাউল করিম চৌধুরী।  

তিনি বলেন, 'হালিমা বেগমের দুর্দশার কথা জানলে এনজিওগুলো তার ঋণ মওকুফ করবে বলে আমার বিশ্বাস।' 

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মোস্তফা কে মুজেরী বলেন, হালিমা বেগমের এ দুর্দশার জন্য সংশ্লিষ্ট ক্ষুদ্রঋণ কর্তৃপক্ষ দায়ী।

তার কথা- 'সাধারণত ব্যাংকগুলো একটি নির্দিষ্ট সম্পদের বিপরীতে ঋণ দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে একই সম্পদের বিপরীতে অন্য কোনো উত্স থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছে কি না, তা ব্যাংকগুলো যাচাই করে, যা ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলো করে না।'

তিনি বলেন, 'হালিমার মতো অনেকেই একই সম্পদের বিপরীতে একাধিক ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিতে পারেন। এসব এনজিওগুলোর সুদের হার বেশি হওয়ায় মানুষ কিস্তি পরিশোধ করতে পারে না।'   

তিনি হালিমাকে তার অবস্থা সংশ্লিষ্ট এনজিও অফিসে অবহিত করার পরামর্শ দেন। 

আইন যা বলে

মানব অঙ্গ প্রতিস্থাপন আইন-১৯৯৯ ও ২০১৮ সালের সংশোধিত আইন অনুযায়ী, কেবল নিকটাত্মীয় যেমন ছেলে, মেয়ে, বাবা-মা, ভাই-বোন, চাচা, খালা এবং স্বামী-স্ত্রীকে অঙ্গ দান করতে পারবেন। এক্ষেত্রে অঙ্গদাতা জীবিত কিংবা ব্রেইন ডেন রোগী উভয়ই হতে পারেন।

কোনো আত্মীয় বা অন্যরা তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি করছে বা এ ধরনের কাজে সহায়তা করছে বলে প্রমাণিত হলে তিন থেকে সাত বছরের জেল, ন্যূনতম ৩০০,০০০ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে।

এ আইনের ধারা ৯ অনুযায়ী, সব মিলিয়ে ২৩ ধরনের নিকটাত্মীয় কিডনি দান করতে পারবেন। তবে মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ব্যবসা, উপহারের বিনিময়ে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পাওয়া বা এর জন্য বিজ্ঞাপন প্রচার পুরোপুরি নিষিদ্ধ।

আত্মীয় কিংবা অন্য কেউ তাদের অঙ্গ বিক্রয় করেছে কিংবা এ কাজে সহায়তা করেছে বলে প্রমাণিত হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তিন থেকে সাত বছরের কারাদণ্ড কিংবা তিন লাখ টাকা অর্থদণ্ড কিংবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে।

উল্লেখ্য, প্রতিবেদনটিতে এ দম্পতির ছদ্মনাম ব্যবহার করা হয়েছে।

Related Topics

কিডনি / দম্পতি / ঢাকা / টাকা / ঋণ / ব্যাংক / দোকান / দর্জি

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • আহমেদাবাদে মেডিক্যাল হোস্টেলের ওপর বিমান বিধ্বস্ত: নিহতের সংখ্যা দুই শতাধিক, ১ জনকে জীবিত উদ্ধার
  • দেশেই কোচ অ্যাসেম্বল করতে তিন কারখানার আধুনিকায়নে ২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প রেলের
  • চুক্তি 'হয়ে গেছে', চীন দেবে বিরল খনিজ, যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে পারবেন চীনা শিক্ষার্থীরা: ট্রাম্প
  • এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট দুর্ঘটনা: ফের আলোচনায় মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা বোয়িং
  • এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনার পর বোয়িংয়ের শেয়ারদরে ৮ শতাংশ পতন
  • আহমেদাবাদে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত; দেখুন ভিডিও

Related News

  • ২০২৭-২৮ অর্থবছরে ঋণভার পৌঁছাবে ২৯ লাখ কোটি টাকায়, ডেট অফিস স্থাপনের পরিকল্পনা সরকারের
  • ‘নিরাপত্তাঝুঁকিতে’ টাঙ্গাইলে ‘তাণ্ডব’ সিনেমার প্রদর্শনী বন্ধ
  • ‘নো করিডর, নো পোর্ট’: ২৭-২৮ জুন রোডমার্চ করবেন বামপন্থীরা
  • প্রস্তাবিত বাজেট ‘অকার্যকর, একতরফা’: বিএনপি
  • অন্য জেলা থেকে ঢাকায় কাঁচা চামড়া পরিবহন ঈদের দিনসহ ১০ দিন নিষিদ্ধ

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

আহমেদাবাদে মেডিক্যাল হোস্টেলের ওপর বিমান বিধ্বস্ত: নিহতের সংখ্যা দুই শতাধিক, ১ জনকে জীবিত উদ্ধার

2
বাংলাদেশ

দেশেই কোচ অ্যাসেম্বল করতে তিন কারখানার আধুনিকায়নে ২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প রেলের

3
আন্তর্জাতিক

চুক্তি 'হয়ে গেছে', চীন দেবে বিরল খনিজ, যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে পারবেন চীনা শিক্ষার্থীরা: ট্রাম্প

4
আন্তর্জাতিক

এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট দুর্ঘটনা: ফের আলোচনায় মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা বোয়িং

5
আন্তর্জাতিক

এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনার পর বোয়িংয়ের শেয়ারদরে ৮ শতাংশ পতন

6
আন্তর্জাতিক

আহমেদাবাদে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত; দেখুন ভিডিও

The Business Standard
Top

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net

Copyright © 2022 THE BUSINESS STANDARD All rights reserved. Technical Partner: RSI Lab