প্রায় ১৫২ কোটি টাকার সুদ মওকুফ করায় সাবেক ভ্যাট কমিশনারের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

চার মোবাইল ফোন অপারেটরকে বেআইনিভাবে প্রায় ১৫২ কোটি টাকার সুদ মওকুফ করায় সাবেক ভ্যাট (মূসক) কমিশনার ওয়াহিদা রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (১১ জুন) দুদকের সহকারী পরিচালক মো. শাহআলম শেখ বাদী হয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে (ঢাকা-১) মামলাটি দায়ের করেন।
এদিন বিকালে সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান দুদকের সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন।
তিনি বলেন, মূসকের সাবেক কমিশনার ওয়াহিদা খানমের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। তিন সদস্যের এই কমিটি তদন্ত প্রতিবেদনে জানায়, ওয়াহিদা রহমান ক্ষমতার অপব্যবহার করে চারটি মোবাইল কোম্পানিকে ১৫২ কোটি ৮৯ হাজার ৩৯০ টাকা অপরিশোধিত সুদ মওকুফ করে দেন। যার ফলে সরকার এই টাকা আদায় করতে পারেনি।
"তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে সরকারের আর্থিক ক্ষতিসাধন করে আত্মসাৎপূর্বক দণ্ডবিধির ২১৮/৪০৯ ধারা ও ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।"
মামলার এজাহার সূ্ত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত সময়কালে ওয়াহিদা রহমান চৌধুরী তাঁর একক সিদ্ধান্তে গ্রামীণফোনের ১৬টি নথিতে ৫৮ কোটি ৬৪ লাখ ৮৮ হাজার ৯৬৭ টাকা, বাংলালিংকের ৭টি নথিতে ৫৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকা, রবির ২টি নথিতে ১৪ কোটি ৯৪ লাখ টাকা এবং এয়ারটেলের একটি নথিতে ২০ কোটি ৫৩ লাখ টাকার সুদ মওকুফ করেন।
এসব নথি মূলত স্থান ও স্থাপনা ভাড়ার উপর প্রযোজ্য ভ্যাট আদায়-সংক্রান্ত। আইনানুগভাবেই চার কোম্পানির প্রায় ১৮৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা কর নির্ধারণ করা হয়।
এই কর নির্দিষ্ট মেয়াদে পরিশোধ না করায় মূসক আইন অনুযায়ী প্রযোজ্য হারে প্রদেয় সুদের পরিমাণ হয় প্রায় ১৫২ কোটি টাকা। তৎকালীন কমিশনার ওয়াহিদা রহমান চৌধুরী অতি দ্রুত সুদের হিসাব করার নির্দেশ প্রদান করেন।
তবে কয়েক মাস পরে ওয়াহিদা রহমান চৌধুরীই কিছু যুক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে একক নির্বাহী আদেশে সুদ আদায় না করার সিদ্ধান্ত নেন।
এই টাকা আইনানুগভাবে আদায়যোগ্য ছিল। কিন্তু, ওয়াহিদার সিদ্ধান্তের ফলে সরকারের এ পরিমাণ রাজস্ব আদায় বাধাগ্রস্ত হয়েছে।