এমভি আবদুল্লাহ: রুটিন কাজের অনুমতি পেয়েছেন নাবিকেরা, কয়লার তাপমাত্রা বাড়ার আশঙ্কা কমল

ভারত মহাসাগরে সোমালি জলদস্যুদের ছিনতাইয়ের শিকার বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ'র রুটিন কাজগুলো করার অনুমতি পেয়েছেন জিম্মি নাবিকেরা। এতে জাহাজে থাকা ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লার তাপমাত্রা বেড়ে বিস্ফোরণের আশঙ্কা কমেছে।
কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া কনসালটেন্ট মিজানুল ইসলাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'নাবিকেরা জাহাজের ডেক এবং ইঞ্জিন রুমে রুটিন কাজ শুরু করেছেন। আমরা ক্রুদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছি। তারা সবাই সুস্থ আছেন।'
এর আগে জাহাজের মালিকপক্ষের কাছে পাঠানো এক অডিওবার্তায় জাহাজে থাকা ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন জাহাজটির প্রধান কর্মকর্তা মো. আতিকউল্লাহ খান।
'আমাদের একটা অসুবিধা আছে। আমাদের জাহাজে প্রায় ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা আছে। এটা একটু ঝুঁকিপূর্ণ কার্গো। এটার মিথেনের ঘনত্ব বাড়তে থাকে। সর্বশেষ অক্সিজেন-লেভেল ৯–১০ শতাংশ ছিল। এটা নিয়মিত আপডেট করতে হয়। বেড়ে গেলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ প্রয়োজন হবে,' বলেন তিনি।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, 'বাংলাদেশি নাবিকদের সঙ্গে জলদস্যুদের একটা ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। বর্তমানে আমাদের নাবিকেরা ডেক ও ইঞ্জিন রুমের সবকিছু দেখভাল করছেন। ফলে কয়লার তাপমাত্রা নিয়ে যে আশঙ্কা ছিল সেটা আর থাকার কথা নয়।'
ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম সলিড বাল্ক কার্গোস (আইএমএসবিসি) কোড অনুযায়ী, কয়লার তাপমাত্রা যদি ৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে কার্গোতে কয়লা লোড দেওয়া যাবে না। কারণ এটি সেল্ফ-হিটিংয়ের জন্য সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ধরা হয়। কয়লা পরিবহনের ক্ষেত্রে লোডিংয়ের পর হোল্ড এলাকায় ২৪ ঘণ্টা বায়ুচলাচল সঠিক রাখতে হবে। তা না হলে কয়লা নিজে নিজেই গরম হয়ে উঠবে।
গত সপ্তাহে মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে কয়লা পরিবহনের সময় জলদস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজা এমভি আবদুল্লাহ।
সোমালি জলদস্যুরা এমভি আবদুল্লাহকে হাইজ্যাক করার পর ইউরোপীয় নৌবাহিনীর একটি জাহাজ এবং ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধজাহাজ ক্রু সদস্যদের জন্য উদ্ধার অভিযান শুরু করার অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো ধরনের সশস্ত্র হস্তক্ষেপে রাজি হয়নি।
জাহাজের মালিক এসআর শিপিংও ক্রু সদস্যদের জীবনের সম্ভাব্য ক্ষতির ভয়ে এই ধরনের অপারেশনের পক্ষে মত দেয়নি।
জাহাজটির মালিকপক্ষ গত বৃহস্পতিবার জানায়, জলদস্যুরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ না করলেও তারা উদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।