ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের প্রক্রিয়া আরও সহজ করা হবে: আইনমন্ত্রী

শিল্প কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের প্রক্রিয়া সহজ করার অনুরোধ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
রবিবার সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা এ অনুরোধ জানান।
ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে শ্রমিকদের সম্মতি বা সই নেওয়ার হার পর্যায়ক্রমে কমিয়ে প্রক্রিয়া সহজ করা হবে বলে তাদের জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী।
বৈঠক শেষে আনিসুল হক সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের প্রথম সচিব ও লেবার অ্যাটাসের সঙ্গে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, 'শ্রমিক অধিকার নিয়ে তারা তাদের বক্তব্য বলেছেন। গত বছর থেকে কিন্তু তাদের সঙ্গে আমাদের এই আলোচনা হচ্ছে। সময়ে সময়ে যে অগ্রগতি হয়েছে এবং আরও কোনো অগ্রগতি সম্ভব কি না, সেটা নিয়ে আলাপ-আলোচনা করে থাকি। সেই চলমান আলাপ আলোচনার একটা পদক্ষেপ হিসেবেই আজকে আলোচনা হয়েছে।'
তিনি বলেন, 'আজকে আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল রাষ্ট্রপতির কাছে যে শ্রম আইনটা গিয়েছিল, সেটি একটি বিশেষ কারণে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই কারণটা আগেও আপনাদের ব্যাখ্যা করেছি। এই ব্যাপারটা আলোচনায় এসেছে।'
আইনমন্ত্রী বলেন, 'থ্রেস হোল্ড (ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে শ্রমিকদের সইয়ের হার) এবং অন্যান্য ইস্যু নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।'
তিনি বলেন, 'তারা বলেছেন এই ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সঙ্গে পার্টনার হিসেবে কাজ করতে চায়। যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিকদের অধিকারের ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন, এটা তাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যু।'
তিনি আরও বলেন, 'আমি বলেছি, এটা বাংলাদেশ সরকার এবং আওয়ামী লীগ সরকারের কাছেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে এবার প্রধানমন্ত্রী শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়টা নিজের হাতে রেখেছেন।'
আনিসুল হক বলেন, 'আমি এটাও বলেছি যে আগামী বুধবার শ্রম মন্ত্রণালয়ের একটা টিমের সঙ্গে আলোচনায় বসব। আইএলওর গভর্নিং বডির মিটিং হচ্ছে মার্চ মাসে, আমাদের অগ্রগতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল হওয়ার জন্য এবং দু'একটা বিষয় তারা জানতে চেয়েছেন, সেই মিটিং এরপরে তাদের আমরা জানাব। আমাদের আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আপত্তি বা এমন কিছু তোলেনি।'
ড. ইউনূস নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না- এ বিষয়ে তিনি বলেন, ড. ইউনূসকে নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি।
থ্রেস হোল্ড নিয়ে তাদের বক্তব্য কী জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, 'থ্রেস হোল্ড নিয়ে তাদের বক্তব্য আছে, এটা সব সময়ই ছিল। থ্রেস হোল্ডের ব্যাপারে আমি বলেছি, এটা আমরা ১৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। সেখানে একটা কন্ডিশন আছে এটা শুধু অ্যাপ্লিক্যাবল হবে যে ফ্যাক্টরিতে তিন হাজার বা এর বেশি শ্রমিক আছে সেখানে। সেটার ব্যাপারে একটা আলোচনা হতে পারে।'
তিনি আরও বলেন, 'তারা এটাও বলেছেন যে তিন হাজার বা তিন হাজারের বেশি শ্রমিক আছে এমন কারখানা অনেক কম। এই ব্যাপারে যখন প্রশ্ন এসেছে তখন আমি বলেছি, এটা নিয়ে স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা এটা সিদ্ধান্ত নিতে পারব।'
তারা কী শ্রমিকদের সইয়ের হার ১০ শতাংশ চাইছে এ প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, 'এটা জেনারেল ইয়ে যে ১০ শতাংশ, আমি পরিষ্কার করে দিয়েছি, আমাদের ইমপ্লয়ার্স ও ওয়ার্কার্স ফেডারেশনগুলো সব সময় বলে আসছে আস্তে আস্তে কমানোটাই তাদের জন্য ভালো হবে। বাংলাদেশ শ্রমিকের অধিকারের ক্লাইমেট অনুযায়ী এটা কমানো হবে। এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত। সেজন্য আমরা আস্তে আস্তে কমানোর ব্যাপারে গুরুত্ব দেবো।'