চেয়ারম্যানের নাম মুছে ফেলার হুমকি দেওয়া আ.লীগ প্রার্থীকে অনুসন্ধান কমিটির তলব

নির্বাচনী জনসভায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার কুণ্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিনের নাম নাসিরনগর থেকে মুছে ফেলার হুমকি দেওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য বদরুদ্দোজা মো. ফরাহদ হোসেনকে তলব করেছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি।
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) অনুসন্ধান কমিটির দেওয়া এক ব্যাখা প্রদান নোটিশে আগামীকাল সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাকে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জ্যেষ্ঠ সহকারি জজ ও অনুসন্ধান কমিটির প্রধান মোহাম্মদ রেজাউল হক সাক্ষরিত নোটিশ সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনী জনসভায় দেওয়া বক্তব্যে ইউপি চেয়ারম্যানের নাম মুছে ফেলার হুমকি দেওয়ার ঘটনায় গতকাল শনিবার গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির দৃষ্টিগোচর হয়েছে। সংবাদে উল্লেখিত বক্তব্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর ৭৭ (১) অনুচ্ছেদ ও সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮ এর ১১ বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন মর্মে কমিটির কাছে প্রতীয়মান হয়। এ অবস্থায় ফরহাদ হোসেনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কেনো নির্বাচন কমিশনকে সুপারিশ করা হবে না- তা সোমবার বিকেল পাঁচটায় স্বশরীরে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখা প্রদানের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত শুক্রবার বিকেলে কুণ্ডা ইউনিয়নের কুণ্ডা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে হওয়া নির্বাচনী জনসভায় ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিনের নাম মুছে ফেলার ঘোষণা দেন এমপি ফরহাদ হোসেন।
জনসভায় এমপি ফরহাদ হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, "নাম বলতেও আমার লজ্জা লাগে। নিজেকেই আমার প্রশ্ন করতে ইচ্ছা করে, আমি কি মানুষ এত কম চিনলাম। নাম ধরেই বলছি- নাসির (ইউপি চেয়ারম্যান) আপনাদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। আমি খুব অবাক হয়ে গেছি। আগেরদিন আমার সঙ্গে সে মিছিল করেছে নৌকার। হঠাৎ কী হলো? এত কথা, কাজের অমিল। কিন্তু তুমি মনে রেখো, তুমি খালি কুণ্ডাবাসী নও, এই নাসিরনগর থেকে তোমার নাম মুছে যাবে। আমি আজকে বলে দিয়ে গেলাম। নড়চড় মানুষকে কেউ পছন্দ করে না।"
নাসির উদ্দিনকে উদ্দেশ্য করে ফরহাদ হোসেন আরও বলেন, "তোমার বক্তব্য থাকতে পারে। আমি তো তোমাকে ডাকিনি। তুমিই এসেছিলে। তুমি স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচন করছিলে ভালো কথা। আমি বলেছিলাম, তুমি কাজ করো। তোমাকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। এর মানে এই নয় যে, তুমি নৌকায় উঠে নৌকার পিঠে ছুরি মারবা। তাহলে তুমি বোকার স্বর্গে বাস করছো।"