স্বল্প সুদে ঋণ পাবেন সিনেমা হল মালিকরা

পুরনো সিনেমা হল সংস্কার ও আধুনিকায়ন এবং নতুন সিনেমা হল নির্মাণের জন্য মালিকদের স্বল্প সুদে ঋণ দিতে ১ হাজার কোটি টাকার পুন:অর্থায়ন স্কিম চালুর অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ।
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৪১১তম পরিচালনা পর্ষদ সভায় এর অনুমোদন দেয়া হয়। বোর্ড সভার এজেন্ডায় বলা হয়, চলচ্চিত্র শিল্পের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে পুন:অর্থায়ন স্কিম গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদে এই তহবিল থেকে ঋণ পাবেন হল মালিকরা। এ বিষয়ে বিস্তারিত পরবর্তীতে সার্কুলার জারি করে জানিয়ে দেয়া হবে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।
উল্লেখ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ২৬ আগষ্ট জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় দেশের বন্ধ সিনেমা হল চালু, সংস্কার এবং নতুন সিনেমা হল নির্মাণে হল মালিকদের স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়ার নির্দেশ দেন।
একটি তহবিল গঠনের মাধ্যমে মালিকদের এ ঋণ দিতে তথ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয়ার পর গেল বছরের অক্টোবরে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থায়নে এক হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়।
মঙ্গলবার চলতি বছরের প্রথম বোর্ড সভায় সেই তহবিলের অনুমোদন দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সিনেমা হল মালিকরা।
হল মালিকদের সংগঠন, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সহসভাপতি মিয়া আলাউদ্দিন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, যত দ্রুত ঋণ কার্যক্রম চালু হবে তত দ্রুত তারা সিনেমা হল সংস্কার ও নতুন হল নির্মাণে কাজ শুরু করতে পারবেন।
এই ঋণ কার্যক্রম চলচ্চিত্রের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনাবে কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'ভালো সিনেমা না থাকলে পরিপাটি সিনেমা হল দিয়ে হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা কঠিন হবে'।
দেশে এখন দর্শক প্রিয় চলচ্চিত্র নির্মাণ হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'সিনেমা হলে দর্শক না আসলে আমরা কার জন্য টাকা খরচ করবো? দর্শক পেতে হলে অবশ্যই ভালো সিনেমা দরকার'।
চলমান মধ্যবর্তী সংকট মোকাবেলায় ভারতীয় ছবি আমদানি করতে সরকারের কাছে তারা এবং প্রযোজক সমিতি যে আবেদন করেছেন তা মঞ্জুরের আহবান জানিয়েছেন মিয়া আলাউদ্দিন।
তিনি জানান, 'বাংলা চলচ্চিত্রে অশ্লীতা অনুপ্রবেশের পর থেকেই দর্শকরা সিনেমা হল মুখী হচ্ছেন না। এরপর থেকে আস্তে আস্তে বন্ধ হচ্ছে একের পর এক সিনেমা হল। কোভিডের কারণে পরিস্থিতি আরো জটিল হয়েছে'।
দর্শক প্রিয় সিনেমা তৈরি না হওয়ার পিছনে নতুন শিল্পীর ঘাটতি, নির্মাণ খরচ বেড়ে যাওয়া এবং মেধাবী পরিচালক না থাকার কথা বলেন মিয়া আলাউদ্দিন।
মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, নব্বই দশকের শুরুতে সারা দেশে সিনেমা হল ছিল প্রায় ১৪,৩৫০টি। বর্তমানে জরাজীর্ণ অবকাঠামো নিয়ে টিকে আছে প্রায় ৩০০ সিনেমা হল। এর মধ্যে নিয়মিত সিনেমা প্রর্দশন হচ্ছে মাত্র ষাটটির মত হলে।
পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, ঝালকাঠি, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, মুন্সিগঞ্জ সদর, নরসিংদী সদর, লালমনিরহাট, নাটোর, ব্রাক্ষণবাড়িয়া সদর, বরগুণা, চুয়াডাঙ্গা, বাগেরহাটসহ দেশের অনেক জেলায় এখনো কোনো সিনেমা হল নেই।