সাতক্ষীরার উপকূল দিয়ে শুরু হবে আম্পানের তাণ্ডব

ঘূর্ণিঝড় আম্পান বাংলাদেশের সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চলে প্রথম আঘাত হানবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। ইতোমধ্যে মঙ্গলবার বেলা ১২টায় উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলায় প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া শুরু হয়েছে।
করোনা আতঙ্কের মধ্যেই ঘূর্ণিঝড় আম্পান আঘাত হানছে উপকূলে। ফলশ্রুতিতে চরম উদ্বেগ আর উৎকন্ঠা বিরাজ করছে উপকূলবর্তী এ অঞ্চলের মানুষের মনে।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী জানান, বেলা ১২টা পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের উপকূল থেকে ৭০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড়টি প্রতি ঘন্টায় ২২৫ থেকে ২৪৫ কিলোমিটার বাতাসের গতিবেগ নিয়ে ধেয়ে আসছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের উপকূলে ঘূর্ণিঝড়টি যখন আঘাত হানবে তখন তার গতিবেগ থাকবে প্রতি ঘন্টায় ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে উপকূলে ৫ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জ্বলোচ্ছ্বাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে।
সাতক্ষীরার উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ.ন.ম আবুজর গিফারী জানান, উপকূলীয় এলাকা থেকে ইতোমধ্যে দুই হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকার ৬০ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবকরা একযোগে কাজ করছে। মানুষদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে ও সচেতনতার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, প্রত্যেকটি আশ্রয়কেন্দ্রে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা হবে। উপজেলাব্যাপী ১০৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

উপকূলীয় আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আলিফ রেজা বলেন, এখন পর্যন্ত দুই হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। উপজেলাব্যাপী ১০৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সকল মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্র নেওয়া সম্ভব নয়। আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়াও আশপাশে যাদের ভালো বাড়ি রয়েছে তাদের বাড়িতে এসব মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে দেওয়া হবে।
এছাড়াও দূর্যোগ পরবর্তী সময়ে উদ্ধারকাজ পরিচালনার জন্য প্রস্তুত রয়েছে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও ফায়ার সার্ভিস।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ.ন.ম আবুজর গিফারী জানান, ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী উদ্ধারকাজে সহায়তা করবে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ডের দল। তারা প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া চিকিৎসা সেবার জন্য মেডিকেল টিমও প্রস্তুত রয়েছে।
জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল ইতোমধ্যে দূর্যোগ মোকাবেলার জন্য কয়েক দফা বৈঠক করেছেন।
তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবেলায় ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সকল ধরণের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলায় ১৪৭টি সাইক্লোন শেল্টারসহ ১৭০০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠাণকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। জেলা ও উপজেলায় কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে।