লক্ষীপুরের মেঘনার পানি লোকালয়ে

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে এবং লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীর তীরে বেড়িবাঁধ না থাকায় জেলার প্রায় ৩৩ কিলোমিটার এলাকার নদী তীরবর্তী উপকূলীয় এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। প্রায় ৩ ফুট পানিতে ডুবে আছে ফসলি মাঠ। নদীতে পানি বেড়েছে অনন্ত ৬-৭ ফুট। এতে ৩৭ কিলোমিটার উপকূলীয় এলাকা অরক্ষিত হয়ে পড়েছে।
বুধবার দুপুর আড়াইটার পর থেকে মেঘনায় জোয়ারের পানি অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে। ৩টার দিকে মেঘনার পানি উপকূলে ঢুকে পড়ে।
সাগর ও নদী উপকূলীয় অন্যান্য জেলার সঙ্গে লক্ষ্মীপুরেও ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানো হচ্ছে। দুপুর থেকেই উত্তাল হয়ে উঠেছে মেঘনা। জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপকূলে ঢুকে গেছে।
তবে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের মধ্যেও শত শত নৌকায় জেলেরা মাছ ধরায় ব্যস্ত ছিলেন বেলা সাড়ে ৩টায়। জেলদের উঠিয়ে আনতে প্রশাসন কিংবা স্বেচ্ছাসেবী কাউকেই নদী এলাকায় দেখা যায়নি।
অন্যদিকে লক্ষ্মীপুর সদর থেকে কমলনগর হয়ে রামগতির আলেকজান্ডার পর্যন্ত ৩৭ কিলোমিটার এলাকা নদী ভাঙন কবলিত। এরমধ্যে ৪ কিলোমিটার এলাকা নদীর তীর রক্ষা বাঁধ রয়েছে। তবে বাঁধের দুই পাশেই খালি। এতে উপকূলের বহু অঞ্চলসহ বাঁধটিও হুমকিতে রয়েছে। যেকোনো সময় বাঁধে ধ্বস নামতে পারে।

রামগতি উপজেলার বালুর চর, আসলপাড়া এবং কমলনগর উপজেলার মতিরহাট এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফসলি ক্ষেতের পাশাপাশি মতিরহাট ও চরকালকিনি এলাকার বসতবাড়িতে মেঘনার জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে। ধীরে ধীরে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। নদী তীরবর্তী অনেক এলাকায় আশ্রয় কেন্দ্র নেই।
চর কালকিনির কৃষক নুরনবী জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পান যদি ১০ থেকে ২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে পরিণত হয়, তাহলে পুরো উপকূল লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বিভাগ সূত্র জানায়, রামগতির এক কিলোমিটার, আলেকজান্ডারের সাড়ে তিন কিলোমিটার ও কমলনগরের এক কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে। সেসব স্থানে তেমন কোনো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে যেসব স্থানে বাঁধ নেই, সেসব স্থান খুব ঝুঁকিতে রয়েছে।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ বলেন, মেঘনায় পানির উচ্চ কতটুকু বেড়েছে তা এখনো নির্ণয় করা যায়নি। আম্পান আঘাত করলে এটি নির্ণয় করা হবে। এখনো স্বাভাবিক জোয়ার চলছে। মেঘনা উপকূলীয় পুরো এলাকায় ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে।