ভবন নির্মাণে রুয়েটে কাটা পড়ল অর্ধশতাব্দী প্রাচীন বৃক্ষ

নতুন প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের জায়গা করতে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) কাটা হচ্ছে অর্ধশতাব্দী প্রাচীন বৃক্ষ। ইতোমধ্যে ১৫টি গাছ কাটা হয়েছে। নামমাত্র মূল্যে সেইসব গাছ বিক্রি করা হয়েছে রুয়েটেরই এক কর্মচারীর কাছে।
বন বিভাগ এ বিষয়ে কিছুই জানে না। যদিও রুয়েট কর্তৃপক্ষ বলছে, যথাযথ বিধি মেনেই এসব গাছ বিক্রি করা হয়েছে। ৫০টির মতো গাছ কাটা পড়বে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ।
যেসব গাছ কাটা হয়েছে এবং কাটার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে আছে আম, লিচু, মেহগনি, কড়ই, মিনজিরি ও কৃষ্ণচূড়া।
সরেজমিনে দেখা যায়, বুধবার পর্যন্ত অন্তত ১৫টি কৃষ্ণচূড়া ও মিনজিরি গাছ কাটা হয়েছে। শ্রমিকরা একের পর এক গাছ কাটছে এবং কাঠের গুঁড়ি রিকশা-ভ্যানে করে ক্যাম্পাস থেকে সরিয়ে ফেলছে।

পরিবেশবিদরা বলছেন, এভাবে পুরনো গাছ কেটে ফেললে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।
ক্যাম্পাস সূত্র জানায়, ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই গাছগুলোর অধিকাংশই রুয়েট ক্যাম্পাসে লাগানো হয়েছিল। প্রতিটি গাছের মূল্য প্রায় ৫০ হাজার টাকা হলেও রুয়েট কর্তৃপক্ষ ১৫টি গাছ মাত্র ১.২৭ লাখ টাকায় বিক্রি করেছে।
রুয়েটের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. সেলিম হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতেই এসব বৃক্ষ কাটা হচ্ছে। সম্প্রতি সরকার ছয়শ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। সে প্রকল্পের আওতায় আছে ১০টি দশতলা ভবন নির্মাণসহ মোট ১৩টি ভবন নির্মাণ। ইতিমধ্যে তিনটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ভবন নির্মাণ করতে যেসব এলাকায় গাছ পড়বে সেসব এলাকার গাছ কাটা হবে। এজন্য গত আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে রুয়েটের পক্ষ থেকে এক হাজার গাছও লাগানো হয়েছে ক্যাম্পাসে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনার বাড়ি নির্মাণের সময় আপনার বাড়ির মধ্যে গাছ পড়লেও তো আপনি গাছ কাটতেন ।

রেজিস্ট্রার আরও বলেন, 'গাছ কাটার বিষয়টি পরিকল্পনা ও উন্নয়নের অফিস এবং রুয়েটের সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার তদারকি করছে। যথাযথ বিধি মেনেই যিনি উচ্চমূল্য দিয়েছেন, তার কাছেই গাছ বিক্রি করা হয়েছে।
রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আহমেদ নিয়ামুর রহমান বলেন, 'সরকারি গাছ কাটার জন্য কর্তৃপক্ষের বাধ্যতামূলকভাবে অনুমোদন নেওয়া উচিত এবং বন বিভাগের উচিত গাছের দাম মূল্যায়ন করা।'
তিনি দাবি করেন, রুয়েট কর্তৃপক্ষ গাছ কাটার বিষয়ে বন বিভাগকেও অবহিত করেনি।