পান্থকুঞ্জ পার্ক ও হাতিরঝিল ‘ধ্বংস করে’ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণকাজ বন্ধের দাবি

পান্থকুঞ্জ পার্ক ও হাতিরঝিল 'ধ্বংস করে' এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে পরিবেশ সচেতন নাগরিক ও সংগঠনসমূহের যৌথ প্লাটফর্ম 'বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলন'।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) আয়োজিত এ কর্মসূচিতে বক্তারা অভিযোগ করেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য হাতিরঝিলে পিলার স্থাপনের জন্য বালি ও মাটি দিয়ে জলাশয় ভরাট করা হয়েছে।
এর ফলে হাতিরঝিলের পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে জলাধারের পরিবেশ, প্রাণবৈচিত্র্য ও এর সৌন্দর্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
তারা আরও বলেন, প্রকল্পের একটি র্যাম্প কারওয়ানবাজার গোলচত্বরের দিকে নামানোর পরিকল্পনা রয়েছে, যা পান্থকুঞ্জ পার্কের মধ্য দিয়ে যাবে। এর ফলে ইতোমধ্যে পার্কের বহু গাছ কেটে ফেলা হয়েছে।
বক্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এ ধরনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
কর্মসূচিতে ৩টি প্রধান দাবি তুলে ধরা হয়। এগুলো হলো এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের জন্য হাতিরঝিল ভরাট বন্ধ করে স্থাপিত পিলারগুলো সরিয়ে জলাধার ও প্রাণবৈচিত্র্য পুনরুদ্ধার করতে হবে। পান্থকুঞ্জ পার্কে গাছ কাটা বন্ধ করে নিয়ম মেনে দেশি প্রজাতির গাছ লাগিয়ে পার্কের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধার করতে হবে।
পাশাপাশি, কারওয়ানবাজার থেকে পলাশি পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাতিল করতে হবে এবং এ প্রকল্পের পরিকল্পনাকারী, নকশাকারী এবং বাস্তবায়নকারীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
বক্তারা অভিযোগ করেন, উন্নয়নের নামে পরিবেশ ধ্বংস করে জনগণের স্বার্থকে উপেক্ষা করা হচ্ছে। সংবিধানের ১৮(ক) অনুচ্ছেদে পরিবেশ সংরক্ষণের যে কথা বলা হয়েছে, এই প্রকল্প তার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
কর্মসূচির শেষে আন্দোলনকারীরা এক্সপ্রেসওয়ের কাজ বন্ধের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন এবং অবিলম্বে পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানান।
লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থর সঞ্চালনায় এ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন পরিবেশকর্মী মিজানুর রহমান, আইনজীবী মাহবুবুল আলম, লেখক ও সাংবাদিক শিমু নাসের, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ প্ল্যানার্স-এর সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান, গবেষক জাহাঙ্গীর আলম, অর্থনীতিবিদ নাঈম উল হাসান, এবং পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক আকতার মাহমুদসহ অন্যান্য পরিবেশবাদী নেতারা।