চট্টগ্রামে উপকূল ও পাহাড় থেকে সরানো হচ্ছে বাসিন্দাদের

'সুপার' ঘূর্ণিঝড় আম্ফান থেকে রক্ষায় চট্টগ্রামের উপকূলীয় এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে জেলা প্রশাসন উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া শুরু করে।
এ ছাড়া ঝুঁকিপূর্ণভাবে পাহাড়ে বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে পাহাড়ের বাসিন্দাদের সরে যেতে মাইকিং করা হয়েছে।
উপকূলীয় এলাকা কাট্টলী জেলেপাড়ার প্রায় ৩০০ পরিবারকে আশ্রয় কেন্দ্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, পতেঙ্গাসহ অন্যান্য উপকূলবর্তী এলাকা থেকে স্থানীয়দের সরানো হচ্ছে। অন্যদিকে পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থান না করার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে।
প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, নগরে ১৮টি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে প্রায় হাজারো পরিবার বসবাস করছে। তবে বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা আরও বেশি। নগরীর বাটালি হিল, মতিঝর্ণা ও বায়েজিদ এলাকায় বেশিরভাগ মানুষ পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করেন।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সজীব কুমার চক্রবর্তী দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, চট্টগ্রামে এক হাজার ৭৭০টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে চার হাজার ৪৬টি আশ্রয় কেন্দ্র। ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে ৩০০ মেট্রিক টন চাল, পাঁচ লাখ টাকা জিআর ক্যাশ (নগদ টাকা), তিন হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, তিন লাখ টাকা সমমূল্যের শিশুখাদ্য ও এক লাখ টাকা মূল্যের গবাদি পশুর খাদ্য মজুদ রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামে ছয় হাজার ৬৬০ জন সিপিসি স্বেচ্ছাসেবক, আট হাজার রেড ক্রিসেন্ট স্বেচ্ছাসেবক ও ৩৬০ জন স্কাউট স্বেচ্ছাসেবক উদ্ধার কাজের জন্য প্রস্তুত রয়েছেন। পাশাপাশি ২৮৪টি মেডিকেল টিম ও প্রয়োজনীয় ওষুধ মজুদ করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াছ হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী উদ্ধারকাজে সহায়তার জন্য উদ্ধারকারী দল প্রস্তুত রয়েছে। জনপ্রতিনিধি, স্বেচ্ছাসেবকরা একযোগে কাজ করছেন। আশ্রয় কেন্দ্রে যারা উঠছেন তাদের মাঝে শুকনো ও রান্না করা খাবার বিতরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দূর্যোগ মোকাবেলার জন্য প্রতিটি উপজেলায় টাকা ও চাল বরাদ্দ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে করোনাভাইরাসের প্রকোপ চলছে। তাই আমরা এবার আশ্রয় কেন্দ্রের সংখ্যা দ্বিগুণ করেছি। জেলার সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আশ্রয় কেন্দ্র করা হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে আশ্রয় কেন্দ্রে আসা মানুষদের রাখা হচ্ছে।