খেলার মাঠে খুচরা বাজার

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকি কমানোর পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে সোমবার বগুড়ার তিনটি খুচরা বাজার শহরের জলেশ্বরীতলায় আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বলছেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি পর্যায়ক্রমে অন্যান্য এলাকার বাজারগুলোও উন্মুক্ত স্থানে সরানো হবে।
তবে আবাসিক এলাকায় এ ধরনের খুচরা বাজার মানুষের মাঝে সংক্রমণ বাড়াতে পারে বলে আশংকা করছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরা।
এদিকে হঠাৎ করে বাজার স্থানান্তরিত হওয়ায় বেচাকেনা কিছুটা কমলেও তা নিয়ে আক্ষেপ নেই বিক্রেতাদের। তবে ক্রেতারা বলছেন, অন্যান্য দিনের তুলনায় এ বাজারে
পণ্যেও দাম কিছুটা বেশি। আর খোলামেলা জায়গায় বাজার হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন নারী ক্রেতারা।

আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে জেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় দোকানদার আর ক্রেতাদের সুবিধা নিশ্চিত করতে কাজ করছে রাজাবাজার ও ফতেহআলী বাজার দোকান মালিক সমিতি।
বগুড়া জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ বলছেন, বৈশ্বিক এ সমস্যা মোকাবেলায় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে অন্যান্য এলাকার খুচরা বাজারগুলোও বড় কোনো মাঠে স্থানান্তর করা হবে।
"আশা করছি এ রকম ব্যবস্থায় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত হবে; একই সঙ্গে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিও কমবে"।
হঠাৎ করে বসানো এ ধরনের বাজারে দোকানদার এবং ক্রেতা বিক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কী উদ্দ্যোগ নেওয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা জানান, ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তা দিতে সব সময়ই পুলিশ সদস্যরা থাকবেন। শুধু বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতাই নয়, যাওয়া-আসার পথও নিরাপদ করা হবে।
ফতেআলী বাজারে ইলিশসহ বিভিন্ন ধরনের বড় মাছ খুচরা বিক্রি করেন চিত্ত রঞ্জন দাস। তিনি তার দোকান নিয়ে আলতাফুন্নেছা মার্কেটে বসেছেন। ফতেআলী বাজারে দিনে তার ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি হতো। নতুন বাজারে বেলা ১১টা পর্যন্ত তিনি বিক্রি করেছেন দুই হাজার ৬০০ টাকায়।
রেলওয়ে বাজারে বহু বছর ধরে সুটকি মাছ বিক্রি করেন আব্দুল মজিদ। তিনিও তার দোকান নিয়ে নতুন এ বাজারে বসেছেন সকাল ৯টার আগে। বেলা ১১টার মধ্যে তিনি প্রতিদিন গড়ে বিক্রি করেন ৩ হাজার টাকার শুটকি মাছ। কিন্তু নতুন এ বাজারে এসে বেলা ১১টা পর্যন্ত বিক্রি করেছেন মাত্র ৩০০ টাকার।

তবে খোলামেলা হওয়ায় বাজারে চলাচলে সাচ্ছন্দ বোধ করছেন নারী ক্রেতারা। বগুড়া শহরের বাসিন্দা মার্জিয়া আখতার এ বাজারের পরিবেশে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, চলাচলে সুবিধা হলেও পণ্যের দাম কিছুটা বেশি।
একই ধরনের কথা বলেছেন এ বাজারে আসা আরও অন্যান্য নারী ও পুরুষ ক্রেতারা।
তবে আবাসিক এলাকায় এ বাজার নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের।
বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকার বড় ব্যবসায়ী এবং স্থায়ী বাসিন্দা রেজাউল বারী ইছার মতোই আরও অনেকেই করোনা ঝুঁকি এড়াতে বাজারটি পাশে জেলা স্কুলের মাঠে নেয়ার আহ্বান জানান। একই ধরনের প্রস্তাব দিয়েছেন জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারন সম্পাদক অ্যাডোনিস বাবু তালুকদার।
তিনি বলেন, আমরা প্রশাসন এবং ব্যবসায়ীদের প্রতি আহবান জানাচ্ছি তারা যেন বিষয়টি বিবেচেনা করে সঠিক একটি সিদ্ধান্ত নেন।
ব্যবসায়ীদের মতে, এ বাজারে খুচরা পণ বেচা-কেনার জন্য দোকান বসছে ৪ শ'রও বেশি।