Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Friday
May 09, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
FRIDAY, MAY 09, 2025
'অবশেষে এল শেষ বিচারের দিন, বিবিজান এসে আমার এখানে উঠলেন': বিয়ে নিয়ে মান্টো

ফিচার

সাদত হাসান মান্টো
11 May, 2023, 04:40 pm
Last modified: 11 May, 2023, 04:41 pm

Related News

  • খোশবাস নয়, ঢাকাইয়া কুট্টি নয়, তারা হলেন সোব্বাসী
  • আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ যেভাবে উর্দু সাহিত্যের সযতন চর্চা করেছিল
  • হারানো বুকলেট ও উর্দু ছবির ঝলমলে জহির রায়হান, শবনম, কবরী ও এহতেশামেরা
  • সংস্কৃত, উর্দু, ফারসিতে স্নাতক, কিন্তু এ ভাষা পড়তে পারেন না

'অবশেষে এল শেষ বিচারের দিন, বিবিজান এসে আমার এখানে উঠলেন': বিয়ে নিয়ে মান্টো

আজ সাদত হাসান মান্টোর ১১১তম জন্মবার্ষিকী। নিজের বিয়ে নিয়ে মান্টো লিখেন, "আমার কাছে ৫০০ রুপি ছিল। তাই দিয়েই বউয়ের জন্য শাড়ি আর অন্যান্য আনুষাঙ্গিক জিনিস কিনলাম। বাড়ি ফিরে দেখি আমার পকেট প্রায় ফাঁকা। শুধু আমার পকেটই না, ফ্ল্যাটটাও একইভাবে শূন্য পড়ে রয়েছে। একটা ভাঙা চেয়ারও নেই সেখানে।"
সাদত হাসান মান্টো
11 May, 2023, 04:40 pm
Last modified: 11 May, 2023, 04:41 pm
স্ত্রী সাফিয়া মান্টোর সঙ্গে সাদাত হাসান মান্টো

(আজ সাদত হাসান মান্টোর ১১১তম জন্মবার্ষিকী। ১৯১২ সালের ১১ মে ভারতের পাঞ্জাবের লুধিয়ানার পাপরউদি গ্রামের এক ব্যারিস্টার পরিবারে জন্ম নেন তিনি। মান্টোর 'মাই ম্যারেজ' শীর্ষক প্রবন্ধের অনুবাদকৃত একটি অংশ দেওয়া হলো। )

আমার বিয়ের প্রায় দশ মাস পর নাজুক এক পরিস্থিতিতে পড়লাম। আশিক নামে আমার বোকা মূর্খ এক বন্ধু ছিল। গবেট হলেও আশিক ছিল বেশ দুরন্ত। এক বিকেলে সে আমার মন ভালো করার দায়িত্ব নিল। আমাকে প্রচুর মদ খাওয়াল, নিজেও খেল। তারপর আরেক বন্ধুর গাড়ি নিয়ে ছুটল এক মেয়ের বাসায়। মেয়েটি নাকি তার ছাত্রী। বাড়ির দরজায় ধাক্কা দিতেই মেয়েলি একটি কণ্ঠ জিজ্ঞাসা করল, 'কে?'

আমার বন্ধুটি উত্তর দিল, 'আশিক', মানে প্রেমিক!

ওপাশ থেকে মোটা গলায় কুৎসিত গালি শোনা গেল 'আশিকের...'

শুনে আশিক ক্ষিপ্ত হয়ে একরকম জোর করেই বাড়িতে ঢুকে পড়ল। পিছু পিছু গিয়ে আমি দেখলাম সে এক চাকরকে মারছে। সংক্ষেপে গল্পটা শেষ করি। পরদিন আশিক গ্রেপ্তার হলো। পুলিশকে সে জানাল তার সঙ্গে আরও একজন ছিল। এবার আমাকেও আটক করল পুলিশ।

শীঘ্রই মাহিমে (বোম্বের এলাকা) আমার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা আমার এই দুঃসাহসিক কাজের কথা জানতে পারল। কীভাবে তাদের মুখোমুখি হব বুঝতে পারছিলাম না। আমি নিজেকে আমার স্ত্রীর জায়গায় রেখে চিন্তা করলাম। ঘটনা শুনে সে কেঁদেকেটে অস্থির এমন দৃশ্য মাথায় আসল। ভাবলাম সে ভাবছে, 'বিয়ে করে এখন তো এই হতচ্ছাড়ার হাত থেকে আমার পার পাওয়াও সম্ভব নয়।"

আমি ঠিক করলাম খালাজানের সঙ্গে লজ্জাজনক এই ঘটনা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। যাইহোক খালাজানের কাছে আমার দুশ্চিন্তার কথা জানানোর পর তিনি বললেন, "তুমি পাগল নাকি এসব নিয়ে ভাবছ। আমরা নিশ্চিত তোমার কোনো দোষ নেই।"

খালাজানের কথা শুনে কিছুটা স্বস্তি পেলেও এই বিয়ে যে আমার জন্য দুর্ভাগ্য বই কিছু আনেনি সেই বিশ্বাস অটুট থাকল। কোম্পানি আর্থিক সংকটে ছিল। তার ওপর আমরা স্যালারির পরিবর্তে অ্যাডভান্সড পেমেন্ট পাচ্ছিলাম। আমার টাকা বাকি ছিল কিন্তু সেটা পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছিলাম না।

বিয়ের এক বছর পার হওয়ার পর আমার শ্বশুরবাড়ির সব ধৈর্য ভাঙল। তাদের জোরাজুরিতে বিবিজান রুখসাতির তারিখ ঠিক করলেন। রুখসাতি হলো বাপের বাড়ি থেকে মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি তুলে দেওয়ার আয়োজন।

সংসার চালানোর মতো যথেষ্ট উপার্জন নেই এটাই ছিল চিন্তার কারণ। আমার জন্য বিনাদোষে স্বচ্ছল পরিবারের একটি মেয়েকে কষ্ট পোহাতে হবে। এজন্যই আমার ওকে নিয়ে আসার বিষয়ে কোনো তাড়া ছিল না। আমি মনেপ্রাণে চাচ্ছিলাম রুখসাতি যেন না হয়। আমার জন্য তা শেষ বিচারের দিন অপেক্ষা কম ছিল না।

সাপ্তাহিক মুসাভির বেশ ভালোই চলছিল। পত্রিকার দপ্তরও আগের চেয়ে ভালো জায়গায় নিয়ে আসা হলো। নাজির সাহেব আর আমি এখন এই অফিসে থাকা শুরু করলাম। এখানে একটা টেলিফোন ছিল। নাজির সাহেবের ছোট একটি গাড়িও ছিল, যাতে চড়ে তিনি সারা শহর ঘুরে বিজ্ঞাপন সংগ্রহ করতেন। প্রতি রোববার আমি মাহিম যেতাম এবং প্রায়ই দরজার ফাঁক দিয়ে এক ঝলক আমার স্ত্রীকে দেখতাম। ডিনারের পর ঘরে ফিরে নিজেকেই বকতাম এই ভেবে যে- ঠিক হবে না জেনেও কেন আমি বিয়ের মতো একটা খেলা খেলতে গেলাম।

রুখসাতির যখন আর দশদিন বাকি তখন তাড়া খেয়ে আমি অফিস ভবনেই মাসিক ৩৫ রুপিতে ফ্ল্যাট ভাড়া নিলাম। নাজির সাহেবের কাছে আমি ৪০ রুপি পেতাম। সেখান থেকেই তাকে ভাড়া দিতে বললাম। আমার ও আমার স্ত্রীর খাবার জন্য মাত্র ৫ রুপি বরাদ্দ রইল।

আমি পুরো ফ্ল্যাট ভালোভাবে পরিষ্কার করলাম। কাঠের মেঝে দরজা সবকিছু কস্টিক সোডা দিয়ে পরিষ্কার করে ঘরে তালা দিলাম। কয়েকজনকে সাথে নিয়ে গেলা নানুভাই দেশাইয়ের কাছে। স্যালারি আর আমার গল্পের ফি চাইলাম। কিন্তু শেঠ সাহেব আমাকে এক পয়সাও দিতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। তার এই ভাবলেশহীন আচরণ দেখে গালি দিয়ে বসলাম। আমাকে কোম্পানি চত্বর থেকে বের করে দেওয়া হলো।

আমি তখনই ফিল্মইন্ডিয়ার সম্পাদক বাবুরাও পাটেলকে ফোন দিয়ে তাকে পুরো ঘটনার বর্ণনা দিলাম। একথাও বললাম যে নানুভাই যদি আমার অ্যাকাউন্টের বিষয়টি মীমাংসা না করে, তাহলে আমি অনশনে বসব। আমার এই ক্ষেপে যাওয়ার বিষয়টি বাবুরাও জানেন। বিরক্ত হয়ে তিনি তাৎক্ষণিকভাবেই নানুভাইকে ফোন দিয়ে বললেন, মান্টো যদি অনশনে বসে তাহলে পুরো প্রেস তাকে সমর্থন দিবে। আর তাই শেঠ যেন দ্রুত বিষয়টির সমাধান করেন।

তবে বাবুরাও আর নানুভাই ফোনে কোনো সমাধানে আসতে পারলেন না। নানুভাইয়ের অফিসে দুজনের দেখা করে আমাকে ডাকলেন। নানুভাই আর আমি পরস্পরের কাছে ক্ষমা চাইলাম। অবশেষে ঠিক হলো প্রতিষ্ঠানের দুরবস্থার জন্য আমি যে টাকা পাই তার অর্ধেক দেওয়া হবে। আমাকে নয়শ রুপির একটি পোস্ট ডেটেড চেক ধরিয়ে দেওয়া হলো।

এর কয়েকদিন পর আমি নানুভাই দেশাইকে ফোন করে জানাই যে খুব শীঘ্রই চেকের ডিউ ডেট আসবে আর আমি চেক ভাঙাব। তিনি আমাকে ব্যাংকে যাওয়ার আগে তার সঙ্গে দেখা করতে বললেন। আমি যখন তার সঙ্গে দেখা করলাম তখন তিনি কাতর কণ্ঠে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন আমি নগদ ৫০০ টাকা নিব কি না।

আমি তখুনি রাজি হয়ে গেলাম। সৎভাবে কঠোর পরিশ্রমের জন্য আমার ১৮০০ টাকা পাওনা থাকলেও ৯০০ টাকা নেওয়ার কথা ঠিক হয়েছিল। আর এখন আমি পাচ্ছি ৫০০। কিন্তু রুখসাতির মাত্র চারদিন বাকি ছিল। অন্যকোনো উপায় ছিল না। দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল। আমি কোম্পানির গাড়িতে চড়ে বসলাম। স্রেফ পেট্রল পাম্প পর্যন্ত যাওয়ার মতো তেল ছিল। আমি পাম্পে গিয়ে নিজের টাকায় তেল ভরে ড্রাইভারকে বললাম আমাকে সরাসরি বাজারে নিয়ে যেতে।

আমার কাছে ৫০০ রুপি ছিল। তাই দিয়েই বউয়ের জন্য শাড়ি আর অন্যান্য আনুষাঙ্গিক জিনিস কিনলাম। বাড়ি ফিরে দেখি আমার পকেট প্রায় ফাঁকা। শুধু আমার পকেটই না, ফ্ল্যাটটাও একইভাবে শূন্য পড়ে রয়েছে। একটা ভাঙা চেয়ারও নেই সেখানে।

শহরে আমার এক বড়ভাই ছিলেন। হাকিম মোহাম্মদ আবু তালিব আশক আজিমাবাদি। তিনি এক নিপাট ভদ্র মানুষ। আমি খালি ফ্ল্যাটে বউ তুলব শুনে তিনি আমাকে ফার্নিচারের দোকানে নিয়ে গেলেন। দোকানের মালিক ছিল তার সুপরিচিত। সহজ ইন্সটলমেন্টে আমি তার কাছে স্টিলের ফ্রেমওয়ালা দুটো স্প্রিং বিছানা, খাবার রাখার একটি কাপবোর্ড, ব্যবহৃত ড্রেসিং টেবিল এবং নিজের জন্য ডেস্ক ও চেয়ারসহ আরও কিছু জিনিস কিনলাম।

কিন্তু মালামালগুলো যখন আমার ফ্ল্যাটে এসে পৌঁছাল তখন মন ভীষণ খারাপ হলো। বিশাল বড় দুটো ঘরের মধ্যে কোথায় যেন হারিয়ে গেল সব ফার্নিচার। আমি দুটো মোড়া কিনে ঘরের কোণায় রাখলাম। কিন্তু অন্যান্য ফার্নিচারের মতো সেগুলোও হারিয়ে গেল। এখানে-সেখানে যা পেলাম, তাই দিয়েই ঘর ভরানোর চেষ্টা করলাম। এরপর বারবার পুরো ঘর দেখতে লাগলাম স্রেফ এই আশায় যেন ঘর ভরা মনে হয়।

অবশেষে শেষ বিচারের দিন আসল। বিবিজান আমার কাছে এসে উঠলেন। আমি তাকে বললাম বরযাত্রীর সবকিছু আমি ব্যবস্থা করব। নাজির সাহেব বেশকিছু মানুষকে দাওয়াত দিয়েছিলেন যাদের অধিকাংশই ফিল্মি দুনিয়ার লোক। আমার বরযাত্রীরাও ফিল্মি বরযাত্রী। আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে ছিল মিয়াঁ কারদার, পরিচালক গাঙ্গুলি; তৎকালীন জনপ্রিয় অভিনেতা ই. বিলিমোরিয়া এবং ডি বিলিমোরিয়া, নূর মোহাম্মদ চার্ল, মির্জা আশরাফ, বাবুরাও পাটেল এবং প্রথম টেকনিকালার সিনেমার নায়িকা পদ্মা দেবী। বাবুরাও যখন শুনলেন মান্টোর মা একা তখন তিনি বিবিজানকে মেহমান সামলাতে সাহায্য করার জন্য আমাদের বাড়িতে পাঠালেন।

কিছু চেয়ার ভাড়া আনার পাশাপাশি কাছের ইরানি দোকান থেকে ভিমটোর বোতল আনালাম। কিন্তু তা সত্ত্বেও ভীষণ চিন্তা হচ্ছিল। ঘর-সংসার কীভাবে চালাব, সেই চিন্তা মাথা থেকে যাচ্ছিলই না।

অফিসে ঢোকার সাথে সাথেই মাহিম থেকে ফোন করে আমার বোন জিজ্ঞেস করেন, "কেমন আছিস বল?"

আঘা হাশরের বিখ্যাত পঙ্কতি আওড়ে বললাম, "সিংহ এখন লোহার খাঁচায়"। বললাম, "আমি এক অদ্ভূত সমস্যায় আছি। বরযাত্রী নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি কিন্তু আমার পকেটে আছে মাত্র সাড়ে চার আনা। চার আনায় একটা সিগারেটের প্যাকেট আর দুপয়সায় একটা ম্যাচবক্স কেনা যাবে- তারপরই খেল খতম।"

কিন্তু বেচারির আমাকে সাহায্য করার সাধ্য নেই। তার স্বামী তাকে রুখসাতিতে আসার বা ভাইকে বরবেশে দেখার অনুমতি দেয়নি। কিন্তু তারপরও সে বলল, "সাদাত, তোর জন্য আমি জীবন দিতে পারি। আমার ফ্ল্যাটের সামনে কিছুক্ষণের জন্য তোমার গাড়ি থামা। তোকে দেখব।"

ও অনেক ইমোশনাল হয়ে পড়েছিল। আমি খুব সংক্ষেপে কথা বলার চেষ্টা করলাম। এরপর কাছের সেলুনে গিয়ে চুল কাটালাম। হামামে গিয়ে স্নান সারলাম। সব ধারের টাকায়। বিকেলের মধ্যে সিগারেটের পুরো প্যাকেট খালি করে ফেললাম। আর এরপর পকেটে শুধু একটা ম্যাচবক্স ছিল। সেটিও অর্ধেক খালি।

পোশাক বদলে শ্বশুরবাড়ি থেকে আসা স্যুট পরে নেকটাই ঠিক করলাম। চুলের দৈর্ঘ্য তখন কোনো রকমের। আয়নার নিজেকে দেখে কার্টুন মনে হয়। নিজেই অনেক হাসলাম।

বরযাত্রীর লোকরা সবাই জড়ো হওয়ার পর কেউ একজন ঝাড়বাতি জ্বালাল। পদ্মা দেবী ও আমার মার অভ্যর্থনার পর ১০ থেকে ১৫টি গাড়ি মাহিমের উদ্দেশ্যে রওনা দিল। আমি নানুভাই দেশাইয়ের গাড়িতে ছিলাম। আমার মাথা খালি, কোনো সেহরা নেই। সেহরা ঐতিহ্যবাহী ফুলের ঘোমটা যা দিয়ে বরের মুখ ঢাকা থাকে।

জাফর হাউজে পৌঁছে আমি ড্রাইভারকে আরেকটু এগিয়ে যেতে বললাম। সেখানে ফুটপাতে আমার বোনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখছি। নেমে আমি তার দিকে এগিয়ে গেলাম। চোখ ছলছল করছে তার। সে আস্তে করে আমার মাথায় ঠোকা দিল। অভিনন্দন জানিয়ে আমি যেন সুখী হই সেই দোয়া করল। আমি তাড়াতাড়ি গাড়িতে উঠে বসে ড্রাইভারকে গাড়ি ঘোরাতে বললাম।

ভেতরে যেতেই দেখি রফিক গজনবী, পরিচালক নন্দা ও আগা খালিশ কাশ্মিরী আড্ডায় মগ্ন। খালাজান ওপরের খোলা ছাদে খাবারের দারুণ আয়োজন করেছেন। কাশ্মিরী এই রান্না দেখতে যেমন দারুণ, খেতেও তেমনি অসাধারণ। সবাই মন ভরে খাওয়া-দাওয়া করল। খাওয়া শেষে শুরু হলো গল্পগুজব। আগা খালিশ সাহেব একটি হাসির কবিতা আবৃতি করেন।

উৎসব-আয়োজন সব শেষ হলে আমাকে নিচে ডাকা হলো বউকে তুলে দিতে। এখন সব স্বপ্নের মতো লাগছে। বউ পাশে থাকার মুহূর্তে অন্য সব বাজে চিন্তা মাথায় ছিল না। তার হাত ধরে কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম, "চলো তাহলে"।

আমরা নিজে নামলাম। বিলিমোরিয়া তার গাড়ি দিতে চাইল। বিবিজান বউকে পেছনের সিটে বসিয়ে আমার আগেই নিজে উঠে বসলেন। মানে আমার বউ আর আমার মাঝে ভ্যালভেটের কাপড়ে মোড়ানো একটি কুরআন শরীফ কোলে নিয়ে বসলেন তিনি। আমার বউয়ের গলাভর্তি ফুলের মালা।

গাড়ি চলতে শুরু করলে আমার মা বিড়বিড় করে কুরআন তেলাওয়াত শুরু করলেন। বউয়ের সঙ্গে দুষ্টুমি করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখন কুরআন তেলাওয়াত শুনে সব উত্তেজনা কমে গেল। সব কামনা নিমেষে শেষ।

মনে নেই পুরো জার্নিতে কতক্ষণ সময় লেগেছিল। হঠাৎ করেই বাসায় এসে পড়লাম। পুরোনো ধাঁচের বাড়িটিকে ইট কম কাঠ বেশি। স্যার আগা খানের সঙ্গে বাজিতে জেতা এই বাড়িটি একসময় বোম্বের বিশাল এক হোটেল ছিল। মা আমার বউকে নিয়ে ওপরের ফ্ল্যাটে গেলেন। আমি বন্ধুবান্ধবদের যখন ধন্যবাদ দিচ্ছি তখন বউয়ের বাড়ি থেকে উপহারসামগ্রী নিয়ে আসা একটি ট্রাক থামল।

ট্রাক থেকে ডাইনিং টেবিল, চেয়ার, একটি স্প্রিং বিছানা, সোফাসেট, কতগুলো ট্রাংক ও কেটলি নামানো হলো। মির্জা আশরাফ এবং ট্রাক ড্রাইভার ভাড়া নিয়ে দীর্ঘ তর্কে জড়িয়ে পড়ল। অনেক নাটক করে শেষে মির্জা আশরাফ মিটমাট করলেন। এরপর সবকিছু ওপরের ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়ে সাজানো হলো তবে সাময়িকভাবে। মির্জা আশরাফ যাওয়ার আগে আমার কানে কানে কথা বলেন গেলেন। "ইয়াং ম্যান, দেখো, আমাদের নাক কেটো না"।

আমি ভীষণ ক্লান্ত ছিলাম আর আমার গলাও শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছিল। আমি মির্জার ঠাট্টার জবাব দিলাম না। পরদিন সকালে আমার এক-চতুর্থাংশ স্বামীতে রূপান্তরিত হলো।  অদ্ভুত এক প্রশান্তি ছেয়ে গিয়েছিল মনে। আমি কল্পনায় হারিয়ে গেলাম। দেখলাম বারান্দাজুড়ে একটা দড়িতে বাচ্চাদের জামাকাপড় ও ন্যাপি ঝুলছে।


সাদাত হাসান মান্টোর 'মাই ম্যারেজ' শীর্ষক প্রবন্ধের অনুবাদকৃত একটি অংশ। উর্দু থেকে লেখাটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেন নাসরিন রেহমান।

সূত্র: স্ক্রল ডট ইন

অনুবাদ: তামারা ইয়াসমীন তমা

Related Topics

টপ নিউজ

সাদত হাসান মান্টো / মান্টো / উর্দু

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • উত্তেজনা বাড়াতে চায় না ভারত, গোপন বার্তা, পাকিস্তান-ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের যোগাযোগ
  • চট্টগ্রামে ৪০০ একর জমিতে মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলা হবে: বিডা চেয়ারম্যান
  • ভারতের ২৫ ড্রোন ভূপাতিত, এক বেসামরিক নাগরিক নিহত, ৪ সেনা কর্মকর্তা আহত: পাকিস্তান সেনাবাহিনী
  • আবদুল হামিদের দেশত্যাগ: দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে এক পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার, ২ জন সাময়িক বরখাস্ত
  • নগর পরিবহন ও গোলাপি বাস: হোঁচট খাচ্ছে ঢাকার গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনার উদ্যোগ
  • নয়াদিল্লিতে সৌদি ও ইরানি মন্ত্রী; পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে পূর্বে যেসব তৃতীয় পক্ষ মধ্যস্থতা করেছে

Related News

  • খোশবাস নয়, ঢাকাইয়া কুট্টি নয়, তারা হলেন সোব্বাসী
  • আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ যেভাবে উর্দু সাহিত্যের সযতন চর্চা করেছিল
  • হারানো বুকলেট ও উর্দু ছবির ঝলমলে জহির রায়হান, শবনম, কবরী ও এহতেশামেরা
  • সংস্কৃত, উর্দু, ফারসিতে স্নাতক, কিন্তু এ ভাষা পড়তে পারেন না

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

উত্তেজনা বাড়াতে চায় না ভারত, গোপন বার্তা, পাকিস্তান-ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের যোগাযোগ

2
বাংলাদেশ

চট্টগ্রামে ৪০০ একর জমিতে মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলা হবে: বিডা চেয়ারম্যান

3
আন্তর্জাতিক

ভারতের ২৫ ড্রোন ভূপাতিত, এক বেসামরিক নাগরিক নিহত, ৪ সেনা কর্মকর্তা আহত: পাকিস্তান সেনাবাহিনী

4
বাংলাদেশ

আবদুল হামিদের দেশত্যাগ: দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে এক পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার, ২ জন সাময়িক বরখাস্ত

5
বাংলাদেশ

নগর পরিবহন ও গোলাপি বাস: হোঁচট খাচ্ছে ঢাকার গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনার উদ্যোগ

6
আন্তর্জাতিক

নয়াদিল্লিতে সৌদি ও ইরানি মন্ত্রী; পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে পূর্বে যেসব তৃতীয় পক্ষ মধ্যস্থতা করেছে

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net