Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

প্রফেসর রাব্বানী: একজন পদার্থবিদ ও তাঁর পেটেন্টমুক্ত যত উদ্ভাবন

‘৯০-এর দশকে সিদ্দিক-ই-রাব্বানী তার কোম্পানি বাই-বিট চালু করেন। বাংলাদেশে স্টার্টআপ সংস্কৃতির পথিকৃৎ হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার জন্য কোনো বাধাই ছিল না এ পদার্থবিজ্ঞানীর কাছে। বাই-বিট যখন যাত্রা শুরু করে তখনও বাংলাদেশে গ্রামীণফোন কার্যক্রম শুরু করেনি।
প্রফেসর রাব্বানী: একজন পদার্থবিদ ও তাঁর পেটেন্টমুক্ত যত উদ্ভাবন

ফিচার

মাসুম বিল্লাহ
06 April, 2022, 11:20 am
Last modified: 06 April, 2022, 03:08 pm

Related News

  • নতুন অর্থবছরে চিকিৎসা সেবা-শিক্ষায় বরাদ্দ বাড়ল
  • চতুর্থ দিনের মতো সেবাদান বন্ধ জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে, ফিরে যাচ্ছেন রোগীরা
  • দ্বিতীয় দিনের মতো সেবাদান বন্ধ জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ১৫ হাজার ৩৯৩ জন চিকিৎসা সেবা পেয়েছেন
  • বিশ্বের প্রথম ব্যক্তিগত জিন-সম্পাদনা চিকিৎসায় রোগমুক্তি শিশুর

প্রফেসর রাব্বানী: একজন পদার্থবিদ ও তাঁর পেটেন্টমুক্ত যত উদ্ভাবন

‘৯০-এর দশকে সিদ্দিক-ই-রাব্বানী তার কোম্পানি বাই-বিট চালু করেন। বাংলাদেশে স্টার্টআপ সংস্কৃতির পথিকৃৎ হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার জন্য কোনো বাধাই ছিল না এ পদার্থবিজ্ঞানীর কাছে। বাই-বিট যখন যাত্রা শুরু করে তখনও বাংলাদেশে গ্রামীণফোন কার্যক্রম শুরু করেনি।
মাসুম বিল্লাহ
06 April, 2022, 11:20 am
Last modified: 06 April, 2022, 03:08 pm

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে সুচিকিৎসার ক্ষেত্রে দামি মেডিকেল যন্ত্রপাতি একটি বড় বাধা। ১৯৮০-এর দশকে অধ্যাপক সিদ্দিক-ই-রাব্বানী এসব ব্যয়বহুল মেডিকেল উপকরণের সহজলভ্য বিকল্প তৈরি করা শুরু করলেন। ফোর্বস ম্যাগাজিন তখন সবে এ ধরনের উঠতি কোম্পানিগুলোকে বোঝানোর জন্য 'স্টার্টআপ' শব্দটির প্রয়োগ শুরু করেছে।

'৯০-এর দশকে সিদ্দিক-ই-রাব্বানী তার কোম্পানি বাই-বিট (বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট ফর বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অ্যাপ্রোপ্রিয়েট টেকনোলজি) চালু করেন। বাংলাদেশে স্টার্টআপ সংস্কৃতির পথিকৃৎ হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার জন্য কোনো বাধাই ছিল না এ পদার্থবিজ্ঞানীর কাছে। বাই-বিট যখন যাত্রা শুরু করে তখনও বাংলাদেশে গ্রামীণফোন কাজ শুরু করেনি।

অধ্যাপক রাব্বানী আজকে তার মানবিক কাজগুলোর জন্য শ্রদ্ধার পাত্র হলেও বাংলাদেশের স্টার্টআপ ও উদ্যোক্তা সমাজের খুব কমসংখ্যক মানুষই তাকে চেনেন। চাইলেই তিনি তার আবিষ্কারগুলো ব্যবহার করে বিশাল শিল্পপতি হতে পারতেন। কিন্তু অর্থের মোহ তার কোনোকালে ছিল না।  

বাই-বিট তৈরি করার উদ্দেশ্য ছিল অতীব জরুরি মেডিকেল উপকরণগুলো তৈরি, উৎপাদন ও সরবরাহে গতি সৃষ্টি করা। এ কোম্পানিটি থেকে কোনো লাভ করার চেষ্টা করেননি এ উদ্ভাবক।

জীবন বাঁচানো সব প্রযুক্তি আবিষ্কার করা সিদ্দিক-ই-রাব্বানী তার পেটেন্টগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। পুরো প্রক্রিয়াটিকে লাভের গুড়ের হিসাব থেকে দূরে রাখতে তিনি বাই-বিটকে শেয়ার হোল্ডিং কোম্পানি হিসেবে অনুমোদন করেননি। তার লক্ষ্য ছিল, কেউ লাভ করবে না, বরং সবাই একটি বড় উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে কাজ করবে। 

কোথা থেকে এসব করার শক্তি পান প্রফেসর রাব্বানী? নিজের ছোটবেলার গল্প জানালেন তিনি।

'বড় ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন। প্রত্যেকবার তাকে বিদায় জানানোর জন্য পরিবারের সবাই স্টেশনে যেত, ছেড়ে যাওয়া ট্রেনে থাকা ভাইয়ের উদ্দেশে সবাই হাত নাড়তো। ভাই একবার খেয়াল করলেন, সবাই যখন হাত নাড়ে তখন আমি ট্রেনের চাকাগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকি। ছোটবেলা থেকেই নতুন নতুন জিনিস ও প্রযুক্তি নিয়ে আমার বিশেষ আকর্ষণ ছিল।'

প্রফেসর রাব্বানী বলেন, 'আমর ভেতরের একটা তাড়নাও আমাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। আমার মনে হতো, জীবন তো একটাই, এ জীবনটাকে মানুষের কাজে লাগাতে হবে। আমরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞান পড়েছি বা পড়িয়েছি, তখন যা কিছু নতুন করে তৈরি করা হতো, সেগুলো সবসময় গবেষণাগারের সীমানাতেই আটকে থাকতো। তাই আমি সবসময় পদার্থবিজ্ঞানকে বাস্তবজীবনে জনমানুষের কাজে লাগাতে চেয়েছিলাম।'

১৯৮০'র দশকে প্রথমভাগ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে পড়ানো শুরু করেন অধ্যাপক সিদ্দিক-ই-রাব্বানী। বিভিন্ন দেশি ও বিদেশি সংগঠনের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। এগুলোর মধ্যে আছে শেফিল্ড ইউনিভার্সিটি, ব্রিটিশ কাউন্সিল ইত্যাদি।

সে সময় একটি কম্পিউটারাইজড ইএমজি ইভোক পটেনশিয়াল মেশিনের খরচ পড়তো ২০ লাখ টাকার মতো। রাব্বানী ওই মেশিন তখন তৈরি করে কেবল তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকায় বাজারে ছেড়েছিলেন। আজকের দিনে এসেও তার এ কাজ অব্যাহত আছে। 

এতসব উদ্ভাবনের একটাই লক্ষ্য ছিল অধ্যাপক রাব্বানীর কাছে। যাতে কম দামে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে পারে। ১৯৯৬ সালে বাই-বিট প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নিজের কাজকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেন রাব্বানী।

শুধু একা কাজ করেই ক্ষান্ত হননি এ উদ্ভাবক। তার অধীনে এখন কাজ করছেন একদল তরুণ পদার্থবিদ। এদের বেশিরভাগই তার শিক্ষার্থী। এ তরুণ উদ্ভাবকেরা তার তত্ত্বাবধানে তৈরি করছেন পেশি ও স্নায়ু সিমুলেটর, ফোনোকার্ডিওগ্রাফ, নেগেটিভ প্রেশার আইসোলেশন ক্যানোপি, ইলেক্ট্রো-হেলথ ইত্যাদির মতো কমদামি মেডিকেল পণ্য।

ছবি: নূর-এ-আলম/টিবিএস

কৌতূহলী শিশু থেকে উদ্ভাবক  

ছেলেবেলায় বাবাকে হারিয়েছেন রাব্বানী। তার উদ্ভাবনী ইচ্ছা দেখে এক তুতো ভাই তাকে একদিন ইলেকট্রনিক্স-এ মনোযোগ দিতে পরামর্শ দিলেন। তখন ১৯৬২ সাল, রাব্বানী ক্লাস এইটে পড়তেন।

'ইলেকট্রনিক্সের ওপরে যে কয়টা বই ফরিদপুরে পাওয়া সম্ভব হলো, সেগুলো পড়ে ফেললাম। এরপর ঠিক করলাম আমাকে একটি রেডিও বানাতে হবে। কিন্তু ফরিদপুরে রেডিও বানানোর যন্ত্রপাতি পাওয়া গেল না। পরের বছর ঢাকায় একটা বিজ্ঞান মেলায় যোগ দেই। সেখান থেকে রেডিও বানানোর প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশগুলো সংগ্রহ করি।'

'বাড়ি ফিরেই পুরোদমে রেডিও বানানোর কাজ শুরু হলো। সারারত বসে বানিয়ে ফেললাম রেডিও। সকালে সেই রেডিওতে জাতীয় সঙ্গীত বাজতে শুরু করলো,' স্মৃতিচারণ করেন রাব্বানী। 

'ওই বিজ্ঞান মেলায় যে ব্যক্তি রেডিও বানিয়েছিলেন, তিনি বিদেশ থেকে আনা কিট দিয়ে নিজের রেডিও তৈরি করেছিলেন। কিন্তু আমি চেয়েছিলাম সবকিছু নিজে থেকে বানাতে। সেই থেকে এটাই আমার কাজের বৈশিষ্ট্য হয়ে রইলো।'

'৬০-এর দশকের শেষদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে পড়ার সময় উদ্ভাবন, বিজ্ঞান মেলা এসবের সাথে নিজেকে আরও বেশি জড়ানোর সুযোগ মেলে রাব্বানীর। ১৯৬৭ সালে এক বন্ধুর সাথে দূরনিয়ন্ত্রিত নৌকা তৈরি করে ইস্ট পাকিস্তান সায়েন্স ফেয়ার-এ প্রথম স্থান অর্জন করেন তিনি। ১৯৭০ সালে একটি হাঁটতে সক্ষম রোবট তৈরি করে নিখিল পাকিস্তান বিজ্ঞান মেলায় আবারও পুরস্কার লাভ করেন রাব্বানী। টিনের তৈরি ওই রোবটটি রেডিও দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হতো।

এসব বিজ্ঞান মেলা নিয়ে পড়ে থাকার দরুণ প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় খারাপ ফল করেন রাব্বানী। তবে সম্মানের শেষ বর্ষে এসে তিনিই প্রথম হয়েছিলেন। 

১৯৭১ সালে ইসলামাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় (বর্তমানে কায়েদ-এ-আযম বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে স্নাতকোত্তরের জন্য একটি বৃত্তি পান সিদ্দিক-ই-রাব্বানী। যুদ্ধ শুরু হলে পাকিস্তানে অন্যান্য বাঙালি শিক্ষার্থীদের সাথে আটকা পড়েন রাব্বানী। পরে ১৯৭৩ সালে দেশে ফিরে আসেন তিনি।

যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরপরই দেশে ফিরে আসার চেষ্টা করেছিলেন রাব্বানী। সেজন্য তার বৃত্তি বাতিল হয়ে যায়। তবে ওই সময়টুকুতে আত্মীয়স্বজন ও রেড ক্রসের সাহায্যে মাস্টার্স শেষ করতে সক্ষম হন তিনি। 

দেশে ফিরে রেসিডেনসিয়াল স্কুলে পড়ানো শুরু করার পর থেকে রাব্বানীর উদ্ভাবক-জীবনের পুরোদস্তুর যাত্রা শুরু হয়। 

১৯৭৪ সালে ওই স্কুলে যোগদান করেন রাব্বানী। তিনি বলেন, 'সে-সময় রেডিওর ব্যাটারি খুবই দামি ছিল। আমার সহকর্মীরাও তখন রেডিওর ব্যাটারি কিনতে হিমশিম খেতো। তখন আমি পাওয়ার অ্যাডাপ্টর তৈরি করে শিক্ষকদের কাছে সেগুলো বিক্রি করা শুরু করলাম।'

রেসিডেনসিয়াল স্কুলে বেশিদিন পড়াননি রাব্বানী। মাইক্রোইলেকট্রনিক্স নিয়ে পিএইচডি করার জন্য কমনওয়েলথ বৃত্তি নিয়ে বিলেতে চলে যান তিনি। 

'ইংল্যান্ডে ভ্রমণ আমার সামনে নতুন একটি দৃষ্টিভঙ্গি উন্মুক্ত করে দিলো। সেখানে গিয়ে আমি বুঝতে পারলাম, বিজ্ঞান মানেই রকেট সায়েন্স আর মহাকাশ বিষয়ে গভীর জ্ঞান নয়। বিজ্ঞান আমার খুব কাছের একটি বস্তু। বিজ্ঞান মানে মানুষের জীবনকে সমৃদ্ধ করা। আমি অনুধাবন করলাম, আমার প্রয়োজনীয় যেকোনো কিছু আমি তৈরি করে নিতে পারি।'  

'ইংল্যান্ডে বিজ্ঞানের এ চর্চা অনেকবছর ধরেই চলে আসছিল। এ কারণই সেখানে শিল্পবিপ্লব ঘটতে পেরেছিল। একজন ব্যক্তির আহামরি কিছু করা নয়, বরং একটা নেটওয়ার্ক, একটা সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করাটাই মুখ্য,' বলেন রাব্বানী।

রাব্বানী জানান, "ইংল্যান্ড আর বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রার তুলনা করতে গিয়ে টের পেলাম, সেখানকার মানুষ তাদের জীবনে প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়েছে, যেটা আমরা করিনি। জীবনমানের উন্নয়নে প্রযুক্তি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু প্রশ্ন হলো আমাদের দেশের মানুষদের জন্য কারা এ প্রযুক্তিগুলো তৈরি করবে? সেগুলোতে মার্কিনী বা বিলেতি বিজ্ঞানীরা এসে আমাদের দিয়ে যাবেন না, আমাদেরকেই এসব তৈরি করতে হবে।" 

মাইক্রোইলেক্ট্রনিক্স-এ একটি ডিগ্রি তখন পশ্চিমে অনেক দামি ছিল। রাব্বানীর সেখানে ভালো বেতন ও বিলাসবহুল জীবনের সুযোগ ছিল। কিন্তু তিনি দেশে ফেরত আসার ব্যাপারেই স্থিরসংকল্প ছিলেন। এদেশের কাছে, দেশের মানুষদের কাছে ঋণী থাকার বোধ থেকেই দেশে ফিরে এসেছিলেন বলে জানান রাব্বানী। 

ছবি: নূর-এ-আলম/টিবিএস

গ্লোবাল সাউথ ও রাব্বানীর পেটেন্টমুক্ত উদ্ভাবন 

দেশে ফিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে যোগ দেন রাব্বানী। সেখানে পড়াতে গিয়ে টের পান, পদার্থবিজ্ঞান যেভাবে পড়ানো হচ্ছে তা মানুষের কোনো কাজে আসছে না। রাব্বানী ভাবলেন, পদার্থবিজ্ঞানের জ্ঞান মানুষের কাজে লাগাতে হবে। 

জনগণের জন্য কিছু করার প্রথম সুযোগ রাব্বানী পেয়ে যান এক বন্ধুর মারফত। সহকর্মী অধ্যাপক শামসুল ইসলামের বন্ধু ডক্টর আবদুস সাত্তার সায়েদের বাবার পায়ের একটি হাড় ক্ষতিগ্রস্ত ছিল।

ডক্টর সায়েদ নিজেও একজন উদ্ভাবক মানুষ ছিলেন। বিবিসিতে পালসড ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড থেরাপি নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি দেখার পর প্রফেসর রাব্বানীর সাথে যোগাযোগ করেন তিনি।

পালসড ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড থেরাপি মেশিনের একটি সহজলভ্য বিকল্প বানাতে ব্যর্থ হননি প্রফেসর রাব্বানী। কেবল ৩০০ টাকা খরচ করেই এটি তৈরি করতে পেরেছিলেন তিনি। মূল মেশিনটি ভাড়া করতে তখনকার সময়ে দুই হাজার ডলার গুনতে হতো।

ডক্টর সায়েদ তার বাবার জন্য বিদেশ থেকে ৫৫ হাজার টাকা খরচ করে একটি মেশিন কিনেছিলেন, কিন্তু সেটি কেবল দুইদিন টিকেছিল। প্রফেসর রাব্বানীর বিকল্প মেশিনটি ১৬ জন রোগীকে দুই বছরের মতো সেবা দিয়েছিল।

পরের দশ বছর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন প্রফেসর রাব্বানী বিভিন্ন সংগঠনের সাথে সহযোগিতামূলকভাবে স্বল্পমূল্যের বিভিন্ন মেডিকেল যন্ত্রপাতি তৈরি করেছিলেন।

প্রফেসর রাব্বানীর তৈরি করা যন্ত্রগুলো ব্যবহার করে ডাক্তারেরা সুফল পেয়েছিলেন। এমনকি বিখ্যাত নিউরোসার্জন রশীদ উদ্দীন আহমেদ তার রোগীদের প্রফেসর রাব্বানীর কাছে পাঠাতেন। 

'তখন আমি রোগীদের টাকার বিনিময়ে দেখতে শুরু করি,' বলেন প্রফেসর রাব্বানী। এর বাইরে অন্যান্য নিউরোসার্জনদের সাথেও কাজ করেছিলেন তিনি। তার তৈরি মেশিন বারডেম-এও ব্যবহার করা হয়েছিল।

'জনগণের কাছে আমাদের উদ্ভাবন পৌঁছাতে ১৯৯৬ সালে আমরা বাই-বিট প্রতিষ্ঠা করি। এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা অনেকগুলো যন্ত্র তৈরি করেছি। যেমন আমাদের তৈরি ঘেমো হাত-পা নিরাময় করার যন্ত্রটি পিজি হাসপাতালে সফলভাবে পরীক্ষা করা হয়,' প্রফেসর রাব্বানী জানান।

'আমাদের কোম্পানির ওয়েবসাইট ঘুরে এলে আপনি এক ডজনের বেশি মেডিকেল যন্ত্রপাতি দেখতে পাবেন। সেগুলো খুব কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এসব যন্ত্রের মধ্যে রয়েছে কম্পিউটারাইজড ইসিজি, ডেটা অ্যাকুইজিশন সিস্টেম, ডিজিটাল মাইক্রোস্কোপ, ডায়নামিক পেডোগ্রাফ, ইলেক্ট্রো-হেলথ, ইনস্ট্রুমেন্টেশন অ্যাম্প্লিফায়ার, ইন্ট্রা-অপারেটিভ নিউরোমনিটর, লাইট প্লেদিস্মোগ্রফ ইত্যাদি।

এ যন্ত্রগুলোর সমরূপ পশ্চিমা যন্ত্রের দাম অনেক বেশি, আর এগুলো সব পেটেন্ট-ফ্রি।

এখন পর্যন্ত বাই-বিট এসব উদ্ভাবন থেকে তেমন বেশি লাভ করতে পারে না। অফিসের খরচ, কর্মকর্তাদের বেতন এসবের পাশাপাশি তাদেরকে সু্‌ইডেন থেকে পাওয়া তহবিলের ওপর নির্ভর করতে হয়। তবে প্রফেসর রাব্বানী বিশ্বাস করেন ২০২২ সালের মধ্যে বাই-বিট নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে।

তবে রাব্বানীর কাছে প্রধান সংগ্রামের দিকটি অন্য। তিনি চান এখানে সদ্যোজাত প্রযুক্তি উদ্যোগগুলোকে কর অবকাশ দেওয়ার সংস্কৃতি গড়ে উঠুক।

'এ সংগ্রামটা হচ্ছে এমন একটা সংস্কৃতি বা পরিবেশ গড়ে তোলা যা পশ্চিমের দুনিয়া কয়েকশ বছর ধরে পেয়ে আসছে। এ সংগ্রাম গ্লোবাল সাউথকে পেটেন্টের শিকল থেকে মুক্ত করার, যেই পেটেন্ট সিস্টেমকে গ্লোবাল নর্থ ট্রাম্প কার্ড হিসেবে ব্যবহার করে আসছে,' অভিমত প্রফেসর রাব্বানীর।

বাই-বিট-এর আয়ব্যয় যেদিন সমান হবে, সেদিন থেকে নতুন নতুন উদ্ভাবন ও খাতের ওপর অর্থ ব্যয় করবে সংস্থাটি। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য গবেষণার সুযোগ বাড়াতেও বাই-বিট কাজ করবে বলে জানিয়েছেন প্রফেসর সিদ্দিক-ই-রাব্বানী।

Related Topics

টপ নিউজ

সিদ্দিক-ই-রাব্বানী / চিকিৎসা সেবা / চিকিৎসাবিজ্ঞান / পদার্থবিজ্ঞান

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • চীনের কাছ থেকে এবার স্টেলথ ফাইটার পাচ্ছে পাকিস্তান
  • পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বন্যার ফলে যেভাবে সৃষ্টি হয়েছিল ভূমধ্যসাগর
  • নির্বাচন আয়োজনের জন্য আগামী ঈদুল ফিতরের পর এক মাস সময় যথেষ্ট: বদিউল আলম মজুমদার
  • অনিরাময়যোগ্য রোগী যারা, কেমন কাটবে তাদের ঈদ
  • কোভিড-১৯: আবারও জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় মাস্ক পরার পরামর্শ
  • কসাই নিয়ে কাড়াকাড়ি!

Related News

  • নতুন অর্থবছরে চিকিৎসা সেবা-শিক্ষায় বরাদ্দ বাড়ল
  • চতুর্থ দিনের মতো সেবাদান বন্ধ জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে, ফিরে যাচ্ছেন রোগীরা
  • দ্বিতীয় দিনের মতো সেবাদান বন্ধ জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ১৫ হাজার ৩৯৩ জন চিকিৎসা সেবা পেয়েছেন
  • বিশ্বের প্রথম ব্যক্তিগত জিন-সম্পাদনা চিকিৎসায় রোগমুক্তি শিশুর

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

চীনের কাছ থেকে এবার স্টেলথ ফাইটার পাচ্ছে পাকিস্তান

2
আন্তর্জাতিক

পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বন্যার ফলে যেভাবে সৃষ্টি হয়েছিল ভূমধ্যসাগর

3
বাংলাদেশ

নির্বাচন আয়োজনের জন্য আগামী ঈদুল ফিতরের পর এক মাস সময় যথেষ্ট: বদিউল আলম মজুমদার

4
ফিচার

অনিরাময়যোগ্য রোগী যারা, কেমন কাটবে তাদের ঈদ

5
বাংলাদেশ

কোভিড-১৯: আবারও জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় মাস্ক পরার পরামর্শ

6
ফিচার

কসাই নিয়ে কাড়াকাড়ি!

The Business Standard
Top

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net

Copyright © 2022 THE BUSINESS STANDARD All rights reserved. Technical Partner: RSI Lab