Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Friday
December 19, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
FRIDAY, DECEMBER 19, 2025
মাতৃত্বের পাশাপাশি ব্যবসায়িক ক্যারিয়ারেও সফল উদ্যোক্তা তারা

ফিচার

শেহেরীন আমিন সুপ্তি
07 March, 2022, 11:45 pm
Last modified: 08 March, 2022, 03:23 pm

Related News

  • নারী প্রার্থীদের সহায়তায় নির্বাচনি তহবিল গঠন ও মনোনয়ন বাড়ানোর সুপারিশ নারী উদ্যোক্তাদের
  • বাজেট ২০২৫-২৬: নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ১২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ
  • সবুজ অর্থায়নের ২০ শতাংশ বরাদ্দ দিতে হবে নারী উদ্যোক্তাদের: বাংলাদেশ ব্যাংক
  • নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ পরিশোধে ১% প্রণোদনা অব্যাহত রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
  • এ গ্রামের টমটম চালায় সারাদেশের শিশুরা

মাতৃত্বের পাশাপাশি ব্যবসায়িক ক্যারিয়ারেও সফল উদ্যোক্তা তারা

কর্মজীবনে মাতৃত্বকে বাধা নয়; শক্তি হিসেবে নিয়ে নিজ গুণে ও পরিশ্রমে সফল হয়ে ওঠা এ তিন নারী উদ্যোক্তা- আজকের উদ্যমী নারীদের এগিয়ে চলার উদাহরণ
শেহেরীন আমিন সুপ্তি
07 March, 2022, 11:45 pm
Last modified: 08 March, 2022, 03:23 pm
ছবি: সৌজন্যে প্রাপ্ত

মাতৃত্বেই নারীর একমাত্র পূর্ণতা- পরিবার ও সামাজিক এমন চাপের মুখে দেশের অসংখ্য নারী নিজের ক্যারিয়ারকে বিসর্জন দিয়ে যাচ্ছেন যুগে যুগে। আবার অনেকেই মাতৃত্বকে সঙ্গী করেই নিজের কাজের পাশাপাশি গড়ে তুলছেন নতুন কর্মসংস্থান। আসলেই কি মাতৃত্বের জন্য নারীর ক্যারিয়ার ত্যাগ স্বীকার করা জরুরি?

মাতৃত্বকে বাধা নয়; শক্তি হিসেবে নিয়ে নিজ গুণে ও পরিশ্রমে সফল হয়ে ওঠা তিনজন নারী উদ্যোক্তার গল্পে এর উদাহরণ দেখা যাক!

'আনাবিয়া'-র জুথী:

তিন বছর বয়সী মেয়ের নামেই মায়ের উদ্যোগ- আনাবিয়া। জামদানিকে সার্বজনীন করে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছেন আনাবিয়ার প্রতিষ্ঠাতা নাদিয়া পারভীন জুথী। দেড় বছর আগে ৩০ হাজার টাকা পুঁজিতে শুরু করা এই উদ্যোগের এখন মাসিক টার্নওভার প্রায় ৬-৭ লাখ টাকা। অথচ উদ্যোগ শুরুর কিছুদিন আগেই নতুন মাতৃত্বের ভার আর মহামারির স্থবিরতায় ক্যারিয়ার নিয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন।

ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছাত্রী জুথী পড়াশোনার পাশাপাশি কো-কারিকুলার কার্যক্রমেও ছিলেন বেশ সক্রিয়। পিরোজপুরে স্কুল জীবন থেকেই আবৃত্তি ও নাচের পাশাপাশি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ছিলেন পরিচিত মুখ। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনেও বিতর্কে পেয়েছেন নানা পুরষ্কার। ২০১৮ সালে স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের আর্কিটেকচার বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষে তিনি ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজে লেকচারার হিসেবে যোগদান করেন।

জুথী ও তার মেয়ে। ছবি: আনাবিয়া

বছরখানেক শিক্ষকতার পর ২০১৯ সালে মাতৃত্বকালীন ছুটি নিয়েছিলেন জুথী। সন্তান কিছুটা বড় হয়ে উঠলে, এক বছর পর ২০২০ সালের মার্চ মাসে যখন কাজে ফেরার জন্য প্রস্তুত হলেন- তখনই বিশ্বব্যাপী মহামারীর প্রভাবে স্থবির হয়ে যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। এর পরবর্তী বছরখানেক সময় জুথীর জীবনে নেমে আসে অনিশ্চয়তার অন্ধকার।

"ক্যারিয়ার নিয়ে সবসময়ই সচেতন ছিলাম আমি। জীবনে বেকার বসে থাকার কথা কখনও ভাবতেই পারিনি। মাতৃত্বকালীন ছুটিতেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ক্যারিয়ারের স্বার্থে মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। কিন্তু করোনায় যখন দেড় বছর ঘরে বসে থাকতে হয়, তখন হতাশায় ডুবে যাচ্ছিলাম। 'পোস্ট পার্টাম ডিপ্রেশন'-এও ভুগছিলাম সেসময়।"

"সরকারি চাকরির পরীক্ষা দিয়ে যাচ্ছিলাম, কিন্তু করোনার কারণে সেগুলোর রেজাল্টও আটকে ছিল। এর মাঝেই কেউ কেউ খোঁচা দিয়ে কথা বলতেন ক্যারিয়ার নিয়ে। সেটাও অসহ্য লাগতো। তখন নিজের প্রচেষ্টাতেই কিছু করার কথা ভাবলাম," বলেন জুথী।

'আনাবিয়া' শুরু করার পেছনে 'রিসাইকেল বিন' নামের ফেসবুক পেজের অবিস্মরণীয় অবদান স্বীকার করেন জুথী। নিজেদের ব্যবহৃত বা অপ্রয়োজনীয় জিনিস এই ফেসবুক গ্রুপের সাহায্যে বিক্রি করে দেয়া যায়। 

জুথী বলেন, গ্রুপের শুরুর দিকে রিসাইকেল বিনে জামা-কাপড় বিক্রি করে দেয়ার একটা ট্রেন্ড চলছিল। তখন আমার একটা দামি জামদানি শাড়ি গ্রুপে বিক্রির জন্য পোস্ট করি। সেই শাড়ি বিক্রির পোস্টে অভাবনীয় সাড়া পাই। প্রায় আড়াই-তিন হাজার ম্যাসেজ আসে আমার ইনবক্সে। জাদুঘর কর্তৃপক্ষ থেকেও আমার সাথে যোগাযোগ করা হয় শাড়িটি সম্পর্কে তাদের আগ্রহ থেকে। কিন্তু ততক্ষণে সেই শাড়িটি বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। তবু অনেকেই আমাকে অনুরোধ করছিলেন এরকম আরও শাড়ি থাকলে বিক্রি করে দিতে।

আনাবিয়ার জামদানি। ছবি: আনাবিয়া

"তখন রিসাইকেল বিনের সদস্যরা অনেকেই আমাকে বলেন এমন নতুন শাড়ি থাকলেও তারা আমার কাছ থেকে কিনতে চান। সেই থেকেই জামদানি শাড়ি নিয়েই ব্যবসা শুরুর সাহস পেলাম।"

ছোটবেলা থেকেই শাড়ির প্রতি ভালোবাসা থাকায় অনেক দুষ্প্রাপ্য সংগ্রহের পাশাপাশি অনেক তাঁতির সাথে পরিচয় ছিল জুথীর। তাদেরকে কাজে লাগিয়ে নিজের জমানো কিছু টাকা দিয়েই শুরু হয় আনাবিয়ার পথচলা।

দেড় বছরে অনেক মানুষের সাথে পরিচয়ের পাশাপাশি আনাবিয়ার কাজের ক্ষেত্র বড় হয়েছে। সাফল্যের সিঁড়িতে ওঠার পাশাপাশি অনেকবার হোঁচটও খেয়েছেন জুথী। কিন্তু নিজের কাজ নিয়ে তার দৃঢ়প্রত্যয় সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে বারবার।

আনাবিয়ার জন্য বর্তমানে ১৮০ জন তাঁতি মাসিক চুক্তিতে কাজ করেন। এক হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৪৫ হাজার টাকা মূল্যের নানান ডিজাইনের জামদানি স্টকে থাকে তাদের। এছাড়াও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী এক্সক্লুসিভ জামদানির প্রি-অর্ডার নিয়ে থাকেন। মার্কেটিং থেকে শুরু করে ডেলিভারি ও অন্যান্য সব বিষয়ে জুথীকে সাহায্য করেন তার বর। জুথীর মেয়ে আনাবিয়াও মায়ের কাজ নিয়ে বেশ উৎসাহী।

মায়ের কাজে যথাসম্ভব সাহায্য করে ছোট্ট আনাবিয়া। মাঝেমধ্যে বাচ্চাকে ঠিকমতো সময় দিতে না পারায় অপরাধবোধে ভোগেন জুথী। কিন্তু, তিনি মনে করেন তার ক্যারিয়ার ঠিক না থাকলে সেটা বাচ্চাকে এক ধরনের খারাপ বার্তা দিত। তার মেয়ে তাকে দেখে যেন ইতিবাচক ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে পারে সে চেষ্টাই করেন তিনি।

বাংলাদেশের ৬১টি জেলাসহ বাইরের ২২টি দেশে ইতোমধ্যে পৌঁছে গেছে আনাবিয়ার পণ্য। "সাধ্যের মধ্যে জামদানি" স্লোগান নিয়ে কাজ করা জুথীর লক্ষ্য জামদানিকে সব শ্রেণির মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলা। শুধু শাড়িতেই নয় ফ্যাশনের অন্যান্য সব অনুষঙ্গেও জামদানির প্রচলন শুরু করতে চান তিনি। জামদানির গাউন, বাচ্চাদের ফ্রক, লেহেঙ্গা, মাস্ক, গয়না ইত্যাদি বানানোর কাজ শুরু করেছেন।

ব্যবসায় নারীদের অনেক প্রতিবন্ধকতার কথা জানালেও- নারী উদ্যোক্তাদের জন্য অনেক সুবিধার কথাও স্বীকার করেন জুথী। নিজের উদ্যোগে ব্যবসা করলে নিজের কাজের সময়কে সুবিধামতো ভাগ করে সন্তানের কাছাকাছি থাকা যায় অনেকটা সময়। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য নানা বিশেষায়িত ফেসবুক গ্রুপ, সংস্থাও তার ব্যবসায় অনেক বড় সহযোগী।

'পাঁচমিশালি'-র তৃনা: 

২৫ বছর বয়সে দেশের বেশীরভাগ তরুণ-তরুণী যখন নিজেদের ক্যারিয়ার গোছানো শুরু করে, তখন উদ্যোক্তা তৃনা পুরোপুরি নিজের প্রচেষ্টায় ঢাকায় দুইটি কারখানার মালিক। ঘর সাজানোর পণ্য নিয়ে তানিয়া ইসলাম তৃনার উদ্যোগ "পাঁচমিশালি" দেড় বছরেই হয়ে উঠেছে হাজার হাজার গ্রাহকের নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান।

তৃণা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। একমাত্র মেয়ে, মা-বাবা আর ভাইকে নিয়ে তার সংসার। মেয়ে রুমাইসার বয়স সাড়ে তিন বছর। এর মধ্যেই সে বুঝে গেছে তার মায়ের উপর অনেক কাজের ভার। মায়ের ব্যবসার সহযোগী হয়ে তাকেও ছুটতে হয় দেশের নানা প্রান্তে।

তৃনা ও তার মেয়ে। ছবি: পাঁচমিশালি

২০১৪ সাল থেকেই টুকটাক ব্যবসা করতেন তৃনা। শুরুতে জামালপুরের হাতের কাজের থ্রিপিস এনে বিক্রি করতেন। এরপর দেশের নানা প্রান্তের নানা পণ্য নিয়ে ব্যবসা করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ঠিকঠাক ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসা সংক্রান্ত অভিজ্ঞতার অভাবে এগোতে পারছিলেন না। পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনি করে নিজের আর দুই বছর বয়সী মেয়ে রুমাইসার খরচ চালাতেন।

২০২০ সালের মাঝামাঝি তিনি যুক্ত হন নারী উদ্যোক্তাদের ফেসবুক গ্রুপ "উই"-তে। উই গ্রুপে উদ্যোক্তা ও প্রশিক্ষকদের বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক পোস্ট পড়ে তিনি ব্যবসা নিয়ে দিকনির্দেশনা পান। তখন নতুন করে ভাবতে শুরু করেন আবার।

উই থেকে আইডিয়া নিয়ে শুরুতে ফ্রোজেন খাবারের ব্যবসা শুরু করেন। এরপর ভিন্ন কিছুর চিন্তায় মন দেন ঘর সাজানোর পণ্যে। বিছানার চাদর, পর্দা, কুশন কভার, ইত্যাদিতে ব্লকের ডিজাইনের নতুনত্বে বিপুল সংখ্যক গ্রাহকের নজর কাড়তে সক্ষম হন তৃণা।

পাঁচমিশালির পণ্য। ছবি: পাঁচমিশালি

ব্যবসার পাশাপাশি এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভালো পদে চাকরিও শুরু করেছিলেন। কিন্তু চাকরির কিছুদিন পেরোতে না পেরোতেই এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার যৌন হয়রানির শিকার হন তৃনা। তার বাবার বয়সী সেই কর্মকর্তা অনলাইনে-অফলাইনে নানাভাবে উত্যক্ত করতে থাকে। নিজের নিরাপত্তার খাতিরে তাই সেই চাকরি ছেড়ে দেন তখনই। নিজের ব্যবসাকেই বড় করে প্রতিষ্ঠিত করার পণ গ্রহণ করেন তৃনা।

দেড় বছর আগে তৃনা তার ডিএসএলআর ক্যামেরা আর কিছু নিজস্ব জিনিস বিক্রি করে ৩৫ হাজার টাকা পুঁজিতে শুরু করেছিলেন পাঁচমিশালির কাজ। কিছুদিন পর ব্যবসায় উন্নতি দেখে তৃনার বাবা ৩ লাখ টাকা ধার দিয়ে মেয়েকে সাহায্য করেন। এখন পর্যন্ত ব্যবসা থেকে আসা লাভ তিনি নিজের ব্যক্তিগত কাজে খুব কমই খরচ করেন। ব্যবসার লভ্যাংশ থেকেই এর পুঁজি বাড়াতে বিনিয়োগ করেন বেশিরভাগ টাকা। পাঁচমিশালি থেকে বর্তমানে তৃনার মাসিক আয় ১৫ লাখ টাকার উপরে। দেশের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি বিদেশেও নিয়মিত পণ্য পাঠান। 

"ব্যবসায় নেমে তিনবার বড় ধরনের লোকসান দিয়েছি৷ কিন্তু এগুলো আমার কাজকে দমিয়ে দিতে পারেনি। নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি বারবার। কাজের জন্য শুরুতে মেয়েকে সব জায়গায় আমার সাথে নিয়ে যেতে হতো। মেয়ে ছোটবেলা থেকেই আমার স্ট্রাগলগুলো দেখেছে। তাই সে এটার সাথে অভ্যস্ত। ইদানিং তাকে একটা ডে কেয়ার সেন্টারে ভর্তি করেছি৷ সেখানে অন্য অনেক বাচ্চার সাথে মিশে সে আরো ভালোভাবে বেড়ে উঠতে পারবে," বলেন তৃনা।
 
২০২১ সালের নভেম্বরে লালমাটিয়ায় পাঁচমিশালির প্রথম নিজস্ব কারখানা চালু করেন তিনি। এর চারমাসের মধ্যে এই মার্চেই ধানমন্ডির শংকরে দ্বিতীয় কারখানা চালু করেছেন। বর্তমানে ব্লকের ডিজাইনের পাশাপাশি রাজস্থানি ডিজাইনের টুল, দেশীয় শাড়ি, শাল ইত্যাদিও আছে তৃনার উদ্যোগে। দেশের নানা প্রান্তের ঐতিহ্যবাহী নানা সামগ্রী নিয়ে ঘর সাজানোর পণ্যের ব্র্যান্ড হিসেবে গড়ে তুলতে চান পাঁচমিশালিকে।

তৃণা মনে করেন মেয়েদের স্বাবলম্বী হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। অন্য কারো জন্য অপেক্ষা না করে নিজেই নিজেকে সহায়তা করতে হবে। "আমি যখন ব্যবসা শুরু করি তখন অনেকেই এটাকে পজিটিভভাবে নিতে পারতেন না। এমনকি কয়েকজন বন্ধুও আমার সাথে মিশতো না তখন। এখন আমার ব্যবসার উন্নতি দেখে তারা আবার প্রশংসা করে। আসলে নিজেই নিজেকে উদ্ধার করেতে হয় সবার। আগুনে পুড়ে আমার সব কয়লা হয়ে গেলেও- সেই কয়লাকে ধরেই উঠে দাঁড়ানোর মনোভাব রাখি," বলেন তৃনা।

'রূপাঞ্জেলস সিক্রেট'-এর ইযু: 

২০১২ সালের দিকে যখন দেশে অনলাইন ব্যবসা মাত্র পরিচিত হতে শুরু করেছে তখনই জন্ম হয় সিক্রেট হেয়ার অয়েল 'রূপাঞ্জেলস সিক্রেট' এর পথচলা। রূপাঞ্জেলস সিক্রেটের প্রতিষ্ঠাতা সাজিয়া হাসান ইযু তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড এন্ড নিউট্রিশন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী।

ইযুর চুল নিয়ে বন্ধু মহলের সবাই খুব প্রশংসা করতেন। একবার তার বাসায় এক বন্ধু বেড়াতে এসে টেবিলে রাখা বোতলে নানা প্রাকৃতিক উপাদানসহ তেল দেখতে পান। ইযু জানান, এই তেলের রেসিপি বংশানুক্রমে তার নানীর নানীর কাছ থেকে পাওয়া। প্রায় একশো বছর পুরানো রেসিপির এই তেল তাদের পরিবারের সবাই ব্যবহার করেন। ইযুর বন্ধু তখন নিজের ব্যবহারের জন্য তার কাছ থেকে তেল নিয়ে যান।

দুই মেয়ের সাথে ইযু। ছবি: রূপাঞ্জেলস সিক্রেট

দেড় মাস তেল ব্যবহার করার পর সেই বন্ধু তার নিজের অনলাইন ব্যবসার পেইজে তেলের রিভিউ দেন। সেখানে থেকে আরো কয়েকজন অনুপ্রাণিত হন এই তেল নিতে। তখন বন্ধুর পরামর্শে হুট করেই বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে তেল বানাতে শুরু করেন সাজিয়া হাসান ইযু।

ইযু বলেন, "সেই প্রথম মাসে আমাদের তেল বিক্রি হয়েছিল মাত্র তিন বোতল। অনলাইনে কাউকে ভরসা করাটা খুব কঠিন ছিল সে সময়ে। তবু পরিচিত মানুষের রিকমেন্ডেশনে আমাদের গ্রাহক বাড়তে থাকে। এতদিনের বিশ্বস্ততায় এখন প্রায়ই দৈনিক ৪০-৫০ বোতল তেল ডেলিভারি দিতে হয় আমাদের।"

সফল ব্যবসায়ীর পাশাপাশি দুই সন্তানেরও মা- ইযু। বড়টির বয়স পাঁচ বছর, আরেকজনের বয়স তিন। ইযু জানান, "আমার প্রথম সন্তান হওয়ার দিন সকালে ডাক্তারের কাছে চেকআপ করাতে গেলে তিনি আমাকে ইমার্জেন্সি হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেছিলেন। তখন বাসায় এসে আগে তেলের সব অর্ডারের প্যাকেট রেডি করে হাসপাতালে যাওয়ার পথে কুরিয়ার কোম্পানিকে দিয়ে গিয়েছিলাম। বাচ্চা হওয়ার পরদিন থেকেই আমি অনলাইনে সব কাজ সামলাতে শুরু করেছিলাম আবার। সে সময় আমাকে দেখে সবাই বেশ অবাক হয়েছিল।

রূপাঞ্জেলস সিক্রেটের পণ্য। ছবি: রূপাঞ্জেলস সিক্রেট

"ব্যবসা করার জন্য নিজের মতো করে কাজের সময় ও বাচ্চাদের দেখাশোনার সময় ভাগাভাগি করে নিতে পারি। এটা আমার জন্য একটা বড় সুবিধা," বলেন তিনি।

দুই সন্তান আয়েশা ও আইযা তাদের মায়ের কাজ নিয়ে খুবই গর্বিত। তারাও বড় হয়ে মায়ের মতো হতে চায় বলে জানান ইযু। 

তেল বানানোর মূল কাজ দশ বছর যাবত ইযু একাই করেন। বর্তমানে তার সাথে কাজ করেন আরো ৬ জন নারী৷ ইযুর স্বামী তার সব কাজে সাহায্য করেন সবসময়। পরিবারের সবার সমর্থন তার জন্য অনেক বড় পাওয়া বলে কৃতজ্ঞতার সাথেই স্বীকার করেন ইযু।

১,২০০ টাকা পুঁজি নিয়ে শুরু করা রূপাঞ্জেলস সিক্রেটের বার্ষিক আয় এখন ১৫ লাখ টাকার উপরে। হেয়ার অয়েলের পাশাপাশি এখন ফেস স্ক্রাবও বানাচ্ছেন ইযু।

উদ্যমী এ নারী ভবিষ্যতে রূপচর্চার জন্য এমন সব প্রাকৃতিক পণ্য উদ্ভাবন করতে চান- যেগুলো একসাথে অনেক সমস্যা দূর করতে পারবে। সাজিয়া হাসান ইযু তার কাজের মাধ্যমে অসহায়-প্রান্তিক নারীদের বড় কর্মক্ষেত্র তৈরির স্বপ্নও দেখেন। 

Related Topics

টপ নিউজ

নারী উদ্যোক্তা / সফল ব্যবসায়ী

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ছবি: সংগৃহীত
    ওসমান হাদির অবস্থা সংকটাপন্ন: মৃত্যু হলে শাহবাগে জড়ো হওয়ার ডাক ইনকিলাব মঞ্চের
  • আব্দুল হান্নান। ছবি: সংগৃহীত
    হাদি হত্যাচেষ্টা মামলা: পুলিশের গাফিলতিতে কি ভুল ব্যক্তি রিমান্ডে?
  • ফাইল ছবি: টিবিএস
    ফাঁকি কমাতে এলপিজির আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট আরোপের উদ্যোগ নিচ্ছে এনবিআর
  • প্রতীকী ছবি: সংগৃহীত
    জিগাতলায় ছাত্রীনিবাস থেকে এনসিপি নেত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
  • রাজধানীর মিরপুরে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে গতকাল (১৭ ডিসেম্বর) সংযোগ সড়কটি খুলে দেওয়া হয়। ছবি: সংগৃহীত
    যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হলো মিরপুর ৬০ ফুটের সংযোগ সড়ক
  • ছবি: টিবিএস
    চলতি অর্থবছরের মধ্যে রিজার্ভ ৩৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য: গভর্নর

Related News

  • নারী প্রার্থীদের সহায়তায় নির্বাচনি তহবিল গঠন ও মনোনয়ন বাড়ানোর সুপারিশ নারী উদ্যোক্তাদের
  • বাজেট ২০২৫-২৬: নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ১২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ
  • সবুজ অর্থায়নের ২০ শতাংশ বরাদ্দ দিতে হবে নারী উদ্যোক্তাদের: বাংলাদেশ ব্যাংক
  • নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ পরিশোধে ১% প্রণোদনা অব্যাহত রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
  • এ গ্রামের টমটম চালায় সারাদেশের শিশুরা

Most Read

1
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ

ওসমান হাদির অবস্থা সংকটাপন্ন: মৃত্যু হলে শাহবাগে জড়ো হওয়ার ডাক ইনকিলাব মঞ্চের

2
আব্দুল হান্নান। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ

হাদি হত্যাচেষ্টা মামলা: পুলিশের গাফিলতিতে কি ভুল ব্যক্তি রিমান্ডে?

3
ফাইল ছবি: টিবিএস
বাংলাদেশ

ফাঁকি কমাতে এলপিজির আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট আরোপের উদ্যোগ নিচ্ছে এনবিআর

4
প্রতীকী ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ

জিগাতলায় ছাত্রীনিবাস থেকে এনসিপি নেত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

5
রাজধানীর মিরপুরে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে গতকাল (১৭ ডিসেম্বর) সংযোগ সড়কটি খুলে দেওয়া হয়। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ

যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হলো মিরপুর ৬০ ফুটের সংযোগ সড়ক

6
ছবি: টিবিএস
অর্থনীতি

চলতি অর্থবছরের মধ্যে রিজার্ভ ৩৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য: গভর্নর

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net