Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Sunday
May 11, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
SUNDAY, MAY 11, 2025
সমগ্র বাংলাদেশ ৫ টন, ১০০ হাত দূরে থাকুন, আমাকে ডিজেল দিন—ট্রাক যখন ক্যানভাস

ফিচার

তামারা ইয়াসমীন তমা & মো. পনিচুজ্জামান সাচ্চু
09 February, 2022, 10:30 pm
Last modified: 10 February, 2022, 10:58 pm

Related News

  • বাটি ছাঁট থেকে রোনাল্ডো কাট: সেলুনগুলো যেভাবে বদলে যাচ্ছে জেন্টস পারলারে
  • ঈদের সাজগোজ থেকে খাবার; আগের রাতে মায়ের জাদুতেই ঈদ আনন্দ পায় পূর্ণতা
  • ঈদ কার্ড: হারিয়েও ফিরে আসে বারবার
  • বিশ্ব ভ্রমণের বিরল অর্জনের পথে নাজমুন নাহার  
  • দ্য থ্রেড স্টোরি: স্বল্প দামে যেখানে ভাড়া পাবেন লাখ টাকার পোশাক!

সমগ্র বাংলাদেশ ৫ টন, ১০০ হাত দূরে থাকুন, আমাকে ডিজেল দিন—ট্রাক যখন ক্যানভাস

সমগ্র বাংলাদেশ ৫ টন, সাধারণ পরিবহন, ১০০ হাত দূরে থাকুন, আমাকে ডিজেল দিন—লেখাগুলো পড়লেই চোখের সামনে ভেসে উঠবে ধুলোমাখা এক ট্রাকের ছবি। শুধু লেখা নয়, মহাসড়কে মাইলের পর মাইল ছুটে চলা এসব ট্রাকের পুরো শরীরই যেন চলন্ত ক্যানভাস। চাঁদ-তারা, কাবাঘর, তাজমহল, বাঘ, ময়ূর, ঈগল, বোরাক, দুলদুল, শাপলা, কলমী, ফুল-লতাপাতা, গ্রামের দৃশ্য কী নেই তাতে! বহুবার চোখে পড়লেও শিল্পের এই নান্দনিক দিক নিয়ে কখনো হয়তো গভীরভাবে চিন্তার সুযোগ আসেনি। অথচ অন্যান্য লোকজ শিল্পের মতো ট্রাকে আঁকা এসব নকশা ও ছবিতেও রয়েছে দেশের মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস, রাজনৈতিক চর্চাসহ সামাজিক পারিপার্শ্বিকতার প্রতিফলন।
তামারা ইয়াসমীন তমা & মো. পনিচুজ্জামান সাচ্চু
09 February, 2022, 10:30 pm
Last modified: 10 February, 2022, 10:58 pm

সমগ্র বাংলাদেশ ৫ টন, সাধারণ পরিবহন, ১০০ হাত দূরে থাকুন, আমাকে ডিজেল দিন—লেখাগুলো পড়লেই চোখের সামনে ভেসে উঠবে ধুলোমাখা এক ট্রাকের ছবি। শুধু লেখা নয়, মহাসড়কে মাইলের পর মাইল ছুটে চলা এসব ট্রাকের পুরো শরীরই যেন চলন্ত ক্যানভাস। চাঁদ-তারা, কাবাঘর, তাজমহল, বাঘ, ময়ূর, ঈগল, বোরাক, দুলদুল, শাপলা, কলমী, ফুল-লতাপাতা, গ্রামের দৃশ্য কী নেই তাতে! বহুবার চোখে পড়লেও শিল্পের এই নান্দনিক দিক নিয়ে কখনো হয়তো গভীরভাবে চিন্তার সুযোগ আসেনি। অথচ অন্যান্য লোকজ শিল্পের মতো ট্রাকে আঁকা এসব নকশা ও ছবিতেও রয়েছে দেশের মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস, রাজনৈতিক চর্চাসহ সামাজিক পারিপার্শ্বিকতার প্রতিফলন।

রিকশা আর্ট নিয়ে শিল্পবোদ্ধারা যতটা মাতামাতি করেছে কিংবা দেশে-বিদেশে রিকশা আর্টের যে প্রচারণা ও বাণিজ্যকরণ ঘটেছে, তা আমাদের ট্রাক আর্টের বেলায় ঘটেনি। ফলে এই শিল্প ও এর সঙ্গে জড়িত শিল্পীরাও অগোচরেই থেকে গেছে। অন্যদিকে আধুনিকায়নের খপ্পড়ে ট্রাকের গায়েও লেগেছে ডিজিটাল প্রিন্টের হাওয়া। যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে যা কিছু অবশিষ্ট ছিল তাও আজ বিলুপ্তির পথে।

ছবি: টিবিএস

দূর-দূরান্তের একঘেয়ে যাত্রাপথ রঙিন করে তুলে যে আর্ট

দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সব দেশেই ট্রাক আর্ট দেখতে পাওয়া যায়। এরমধ্যে সবেচেয়ে এগিয়ে আছে পাকিস্তানি ট্রাক অলঙ্করণ শিল্প। ট্রাক আর্টের রয়েছে দীর্ঘ ইতিহাস। এককালে সিল্ক রুট দিয়ে মালবাহী উটের গাড়ি চলত। এসব গাড়িতে নানারকমের নকশা করা হতো। কালক্রমে ট্রাকেও আসে এই নকশা।

'বাংলাদেশের ট্রাক অলঙ্করণ' শীর্ষক গবেষণা প্রবন্ধে লেখক ফারহান রহিম ট্রাক আর্টের ইতিহাস তুলে ধরেছেন। তার মতে, উপমহাদেশে আধুনিক যানবাহন অলঙ্করণের সূচনা ১৯২০ সালের দিকে। পাকিস্তানের করাচি থেকে আফগানিস্তান হয়ে মধ্যপ্রাচ্য ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশে পণ্য পরিবহনে ট্রাক ব্যবহৃত হতো। ট্রাক চালককে গাড়ি নিয়ে একা দূর-দূরান্তে পাড়ি দিতে হতো। এই দীর্ঘ সময় কাটানোর কোনো উপকরণ চালকদের ছিল না। আর তাই এই ক্লান্তিকর মুহূর্তগুলোকে রঙিন করে তুলতে বিভিন্ন নকশা ও ছবির মধ্য দিয়ে ট্রাক অলঙ্করণের চল শুরু হয়।

পাকিস্তানি ট্রাক অলঙ্করণ। ছবি: সংগৃহীত

সিনেমার ব্যানার থেকে আসা বাংলাদেশের ট্রাক ও রিকশা পেইন্টিং

বাংলাদেশে ট্রাক পেইন্টিং কবে শুরু হয় তা নিশ্চিতভাবে জানা না গেলেও ধারণা করা হয় পাকিস্তান ও ভারত থেকেই ট্রাক আর্ট জনপ্রিয়তা লাভ করে। বলাবাহুল্য সাধারণ শ্রমিক শ্রেণির মানুষই এই চিত্রকর্ম শুরু করে। এখনও অধিকাংশ ট্রাক আর্টিস্টই নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্তের সাধারণ মানুষ।

সিনেমার ব্যানার পেইন্টিংয়ের সাথে বাংলাদেশের ট্রাক ও রিকশা পেইন্টিংয়ের সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। দেশভাগের পর কলকাতা, মুম্বাই, চেন্নাইয়ে সিনেমা ব্যানারের কাজ করা বহু পেইন্টার পূর্ব বাংলায় আসেন। তাদের হাতেই পঞ্চাশের দশকে সিনেমার ব্যানার পেইন্টিং বিকাশ লাভ করে। জীবিকার তাগিদে এই পোস্টার পেইন্টাররাই একসময় সাইনবোর্ড, দেওয়াল লিখন, ব্যানার লেখাসহ রিকশা ও ট্রাক পেইন্টিংয়ের দিকে ঝুঁকে। রিকশা ও ট্রাক ছাড়াও আমাদের দেশের বাস, পানসী নৌকা, বেবি ট্যাক্সি, পালকি, টিনের ট্রাঙ্কেও একই ধরনের নকশা দেখা যায়।

ছবি: টিবিএস

আশি ও নব্বইয়ের দশককে বাংলাদেশের ট্রাক আর্টের স্বর্ণযুগ বলা চলে। এসময় ট্রাকের গায়ে জনপ্রিয় সিনেমার নায়ক-নায়িকাদের ছবিও অলঙ্কৃত হতে দেখা যায়।

ট্রাক পেইন্টিংয়ের সন্ধানে

ঢাকার অদূরে আমিনবাজার, হেমায়েতপুর, বলিয়ারপুর ও সাভার থেকে মানিকগঞ্জ পর্যন্ত ট্রাক তৈরির অসংখ্য ওয়ার্কশপ আছে। ঢাকার বাইরেও বিভিন্ন জেলায় ট্রাক আর্টের কাজ হয়।

আমিনবাজার ট্রাকস্ট্যান্ডে গিয়ে বেশকিছু ওয়ার্কশপ দেখা যায়। জানা গেল, সাধারণত ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসের শুরুতে অধিকাংশ ট্রাক রঙ করা হয়। এসময় স্ট্যান্ডে নতুন ট্রাকগুলো আসে। মালিকের পছন্দ অনুসারেই হয়ে পেইন্টের কাজ।

১৮ বছর ধরে ট্রাকের বডি পেইন্টের কাজ করেন জাহিদ হুসেন। কী রঙ করছেন জিজ্ঞেস করতেই বললেন বাংলা রঙের কথা। প্রাথমিক রঙ করা শেষ হলে এর ওপর নকশা করা হবে। জানা গেল ছবির ধরন ও নকশার ওপর নির্ভর করে ট্রাক পেইন্ট করানোর দাম।

রঙ করছেন জাহিদ হুসেন। ছবি: টিবিএস

রিকশার ক্ষেত্রে সাধারণত বাহনের পেছনেই পাওয়া যায় রিকশা আর্ট। তবে ট্রাকের সারা শরীরজুড়েই অলঙ্করণ। সামনের অংশ, দুই পাশের বডি এবং পেছনের অংশজুড়েও থাকে নকশা, লেখা ও ছবি।

তেলের ট্যাংক এবং এবং মাথার উপরে মুকুটের মতো অংশেও থাকে বিশেষ নকশা। মুকুটে সাধারণত দুধরনের কাজ দেখা যায়। এর মধ্যে একটি হলো টিনের ওপর আঁকা নকশা আর দ্বিতীয়টি হলো কাঠের খোদাই করা নকশা, যার ওপর আলাদা করে রঙ করে দেওয়া হয়।

জাহিদের ট্রাকে গোলাপী রঙ হলেও ট্রাকের বডিতে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় হলুদ রঙ। জানা গেল, রাস্তাঘাটে বেশ দূর থেকে সহজেই চোখে পড়ে বলে ট্রাকের সামনের অংশে হলুদ রঙের প্রাধান্য। অন্যদিকে, দুই পাশের বডির জমিনে নীল রঙই বেশি পাওয়া যায়।

ট্রাকের পেছনের অংশ ও মূল বডি কাঠের বা স্টিলের দুধরনের হতে পারে। প্রাথমিক কোট হিসেবে বডিতে নীল বা সবুজ সঙের 'সেন্টারডিক' রঙ ব্যবহার করা হয়। এই রঙ শুকিয়ে যাওয়ার পর তুলির সাহায্যে শিল্পী নিখুঁতভাবে বিভিন্ন লেখা, মোটিফ ও দৃশ্য ফুটিয়ে তুলেন।

ট্রাক পেইন্টে ব্যবহৃত ছাঁচ। ছবি: ফারহান রহিম

তবে রঙ তুলির সাহায্যে আঁকা ছাড়াও আরেকটি পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। সেটি হলো ছাঁচের ব্যবহার। আগে থেকে বানানো ছাঁচ বসিয়ে রঙ স্প্রে করে প্রত্যাশিত নকশা বা ডিজাইন পাওয়া যায়। ছাঁচের বাইরে রঙ লাগলে সেগুলো উঠিয়ে দেওয়া হয় নিখুঁত আকৃতি।

ট্রাকের গায়ের ছবি ও লেখা

বাংলাদেশের ট্রাক আর্টে ধর্মীয় বিশ্বাস কেন্দ্রিক বাণী, ছবি ইত্যাদির প্রাধান্যই বেশি। চাঁদ-তারা সম্বলিত ইসলামী প্রতীক, কাবাঘর ও মিনার, মাজার, বোরাক, দুলদুল এধরনের চিত্রই সচরাচর চোখে পড়ে। ট্রাকশিল্পীরা জানান, ট্রাকের পেছনের অংশে সাধারণত মসজিদ, মন্দির বা ধর্মীয় চিহ্ন আঁকা হয় না। এই অংশে পা দিয়ে ট্রাক থেকে ওঠানামা করা হয় বলেই এই ব্যবস্থা।

ছবি: টিবিএস

তবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত নকশা ও মোটিফ সম্ভবত ফুল ও লতাপাতা। শাপলা, গোলাপ, সূর্যমুখী, কলমিলতাসহ নানা চেনা-অচেনা ফুলের ছবি মিলবে ট্রাক আর্টে। পশু-পাখির ছবিও চোখে পড়ার মতো। ময়ূর, দোয়েল, কবুতর, ঈগল, বাঘ, সিংহ, ঘোড়া, উট, গরু ইত্যাদি প্রাণীর ছবিই বেশি।

আরেকটি লক্ষণীয় বিষয় হলো ট্রাকে আঁকা বিভিন্ন বিমান, রকেট, ক্ষেপনাস্ত্রের ছবি। ট্রাক যেন রকেটের মতো দ্রুত গতিতে চলতে পারে সেই ভাবনা থেকেই সম্ভবত এধরনের চিত্র দেখা যায়।

ছবি: টিবিএস

এগুলোর বাইরে ট্রাকের গায়ে আছে বিভিন্ন দৃশ্য, যার মধ্যে গ্রামীণ পটভূমিই বেশি।

ট্রাকশিল্পীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় ট্রাক মালিকদের পছন্দ অনুযায়ীই অধিকাংশ সময় কাজ করেন তারা। এছাড়া অনেকক্ষেত্রে একই প্রতিষ্ঠানের ট্রাক হলে সবগুলো একই নকশায় পেইন্ট করতে হয়। ডিজাইন নির্ধারিত না থাকলেই কেবল নিজস্ব প্রতিভার স্বাক্ষর রাখার সুযোগ পান তারা।

স্ট্যান্ডে কোনো সিনেমার নায়ক-নায়িকার দেখা মিলল না। তবে একসময় ট্রাকের গায়েও রিকশার মতোই বিভিন্ন সিনেমার দৃশ্য ধরা দিত। নায়ক-নায়িকা ছাড়াও বিভিন্ন বিখ্যাত ব্যক্তির অলঙ্করণের চলও ছিল।

ট্রাকের গায়ে রবিউলের আঁকা কাজী নজরুল ইসলামের ছবি

অঞ্চলভেদেও বাংলাদেশের ট্রাক আর্টে দেখা যায় ভিন্নতা। যেমন, বাংলাদেশের যশোর, খুলনা, চট্টগ্রাম ইত্যাদি যেসব অঞ্চলে চিংড়ি ও মাছ উৎপাদন হয় সেখানকার ট্রাক আর্টে চিংড়ি, রূপচাঁদা প্রভৃতি মাছের চিত্র মিলবে। আবার সুন্দরবনের আশেপাশে খুলনা-সাতক্ষীরায় বাঘ ও হরিণ আঁকতে পছন্দ করেন শিল্পীরা।

ট্রাকের লেখাগুলোর মধ্যে কালেমা, দোয়া, আল্লাহ সর্বশক্তিমান, বিসমিল্লাহ এ ধরনের লেখাই বেশি। শুধু বাংলাই নয়, আরবি লেখাও চোখে পড়ার মতো। এছাড়াও বিভিন্ন ধর্মীয় বাণী যেমন: নামাজ পড়ুন, মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত এধরনের বাণীও দেখা যায়।

ছবি: টিবিএস

ট্রাকের পেছন দিকে দুর্ঘটনা এড়াতে বিভিন্ন সচেতনতামূলক বাক্য চোখে পড়ার মতো। যেমন: বেপরোয়া গাড়ি চালাবেন না, থামুন, ১০০ গজ দূরে থাকুন, সাবধান ইত্যাদি। এগুলোর বাইরে ধন্যবাদ, ওকে, আবার দেখা হবে ইত্যাদি লেখাও চোখে পড়ে।

তবে কৌতুকপূর্ণ লেখাগুলোই সবচেয়ে মজার। যেমন, ডিজেল ট্যাংকে লেখা থাকে জন্ম থেকে জ্বলছি, আমাকে ডিজেল দিন, মামা কতদূর ইত্যাদি। মহাসড়কের ছোটাছুটিতে এমন বাক্য চোখে যাত্রার কষ্ট কিছুটা হলেও যে কমবে তাতে সন্দেহ নেই।

ক্যাটারপিলারের মতো আমদানিকৃত ট্রাক ও ভারী যানগুলো আগ থেকেই রঙ করা থাকে। ছবি: টিবিএস

ডিজিটালাইজেশনের খপ্পড়ে হারিয়ে যাচ্ছে ট্রাক আর্ট

আমিনবাজার ট্রাকস্ট্যান্ডে ট্রাক আর্টের যত কাজ হয় তার অধিকাংশই করেন মোহাম্মদ ফারুক হোসেন। তিনি এখানকার স্থানীয়। ফারুকের আত্মীয়-স্বজনদের কমবেশি সবাই এই ট্রাকস্ট্যান্ড ঘিরে বিভিন্ন পেশায় জড়িত।

৩৫ বছর ধরে ট্রাক আর্টের কাজ করছেন তিনি। কাজ শিখেছেন উস্তাদের কাছে। ট্রাক আর্ট নিয়ে বলেন, এখন এসব কাজ অনেক কমে গেছে। প্রায় নেই বললেই চলে। আগে তিন থেকে চারদিন সময় নিয়ে ট্রাকের গায়ে বিভিন্ন নকশা ও ছবি আঁকতেন। এখন সবাই হালকা নকশা চায় বলে একদিনেই শেষ হয়ে যায়।

ট্রাকের পেছনে গ্রামের দৃশ্য। ছবি: ফারহান রহিম

কেমন ধরনের নকশা করেন জিজ্ঞেস করায় তিনি জানান, যে যেমন কাজ চায় তাই করে দেন। তাজমহল, শহীদ মিনার এধরনের ছবির চাহিদা বেশি।

ফারুক হোসেন বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে জিয়াউর রহমানের খাল কাটার ছবির বেশ চাহিদা ছিল। একটানে আঁকতে পারতেন সে ছবি। তবে এখন তা প্রায় ভুলেই গেছেন। এখন বিশেষ কোনো ব্যক্তিত্বের ছবি আঁকার চলও কমে গেছে। তবে এখন অনেকেই ট্রাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের প্রতিকৃতি আঁকিয়ে নিতে চান।

মোহাম্মদ ফারুক হোসেন। ছবি: টিবিএস

সাম্প্রতিক কাজের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন ছাঁচের কাজ আর ডিজিটাল স্টিকারের ব্যবহারই বেশি। অনেকক্ষেত্রে ট্রাকগুলো আগে থেকেই রঙ করা থাকে। ফলে নতুন করে পেইন্ট করার প্রয়োজনই পড়ে না।

বর্তমানে প্রতিটি ট্রাক রঙ করার জন্য আড়াই থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে পান তিনি। মাসিক আয়ের কথা শুনে বোঝা গেল তিনি আর্থিকভাবে সচ্ছল। সন্তানরা মানুষ হলেই তিন সন্তুষ্ট হবেন। তবে তাদের এই পেশায় নিয়ে আসতে চান না বলেও জানান ফারুক।

ট্রাকের গায়ে বিভিন্ন লেখা। ছবি: টিবিএস

নেই শিল্পের মূল্যায়ন

তবে এই কাজের স্বীকৃতি ও পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় শিল্পীরা ক্ষোভও প্রকাশ করেন।

দেশের বিভিন্ন জায়গায় এ পর্যন্ত ১০ থেকে ১২টি ট্রাকে আর্ট করেছেন লালমনিরহাটের রবিউল। ঢাকা সায়েদাবাদের স্টারগোল্ড অ্যাডভার্টাইজিং প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন তিনি। কাজের ফাঁকে অবসরে ট্রাক পেইন্টিংয়ের কাজ করেন।

কিছুদিন আগে ময়মনসিংহের ভালুকায় একটি ট্রাকে তিনি কাজী নজরুল ইসলামের ছবি আঁকেন। এই ছবির জন্য তিনি ১০ হাজার টাকা পান।

রবিউল জানান, তিনি দাদার কাছে আর্টের কাজ শিখেছেন। ক্লাস টু থেকে শুরু করে আজ প্রায় ৩০ বছর ধরে আঁকার কাজ করছেন। তবে এখন তিনি ক্যালিগ্রাফির কাজই বেশি করেন।

ব্যক্তিগত কাজ ও অন্যদের আর্ট শেখানোর জন্য একসময় আর্ট ভুবন নামের একটি প্রতিষ্ঠান চালু করলেও বেশিদিন তা চালাতে পারেননি। রবিউল জানান তিনি নিজে চিত্রকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকলেও সন্তানদের এই পেশায় আনতে চান না।

সাতক্ষীরায় ট্রাকের গায়ে আঁকছেন এক শিল্পী। ছবি: ফারহান রহিম

"শিল্প যখন ঠিকাদারের আওতাধীন হয় তখন সেটা আর শিল্প থাকে না। অনেক বড় বড় শিল্পীই আছে যারা এখন মানবেতর জীবনযাপন করেন। ঢাকায় চারুকলা কিংবা পল্টনের আশেপাশে এসব শিল্পীরা হয়তো দোকান করে কোনো মতে টিকে আছে," বলেন তিনি।

উদাহরণ দিতে গিয়ে রবিউল বলেন প্রবীণ শিল্পী পান্নুর কথা। বাংলাদেশের রিকশা ও ট্রাক আর্ট কিংবা সিনেমার পোস্টারের সবক্ষেত্রেই নিজের স্বাক্ষর রেখেছেন পান্নু আর্টের এই শিল্পী। অথচ ভীষণ গুণী এই মানুষটি বাংলাদেশে যথাযথ মূল্য পাননি বলেও তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

রবিউল নিজেও আঁকাআঁকি ছেড়ে দিয়ে ভবিষ্যতে শুধু বাংলা ও আরবি ক্যালিগ্রাফির কাজ করবেন বলে জানান।

"সমাজে যে পেশার কোনো মূল্যায়ন নেই তা নিয়ে পড়ে থাকার আর মানে হয় না," বলেন এই অভিমানী শিল্পী।

Related Topics

টপ নিউজ

আর্ট / ট্রাক আর্ট / ফিচার

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • যাত্রীবাহী লঞ্চে পিকনিকে আসা নারীদের প্রকাশ্যে মারধর–লুটপাটের অভিযোগ
  • চার সপ্তাহের ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের মোট ব্যয় প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার!
  • লঞ্চে প্রকাশ্যে নারীদের মারধর করা সেই যুবক গ্রেপ্তার
  • তিন মাসে বিএটি বাংলাদেশের ৯ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকার ব্যবসা, সিগারেট বিক্রি কমেছে ৫৩৮ কোটি শলাকা
  • ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত: পিএল-১৫ই ক্ষেপণাস্ত্রের পেছনে আছে চীনের রোবট বাহিনী
  • আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার

Related News

  • বাটি ছাঁট থেকে রোনাল্ডো কাট: সেলুনগুলো যেভাবে বদলে যাচ্ছে জেন্টস পারলারে
  • ঈদের সাজগোজ থেকে খাবার; আগের রাতে মায়ের জাদুতেই ঈদ আনন্দ পায় পূর্ণতা
  • ঈদ কার্ড: হারিয়েও ফিরে আসে বারবার
  • বিশ্ব ভ্রমণের বিরল অর্জনের পথে নাজমুন নাহার  
  • দ্য থ্রেড স্টোরি: স্বল্প দামে যেখানে ভাড়া পাবেন লাখ টাকার পোশাক!

Most Read

1
বাংলাদেশ

যাত্রীবাহী লঞ্চে পিকনিকে আসা নারীদের প্রকাশ্যে মারধর–লুটপাটের অভিযোগ

2
আন্তর্জাতিক

চার সপ্তাহের ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের মোট ব্যয় প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার!

3
বাংলাদেশ

লঞ্চে প্রকাশ্যে নারীদের মারধর করা সেই যুবক গ্রেপ্তার

4
বাংলাদেশ

তিন মাসে বিএটি বাংলাদেশের ৯ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকার ব্যবসা, সিগারেট বিক্রি কমেছে ৫৩৮ কোটি শলাকা

5
আন্তর্জাতিক

ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত: পিএল-১৫ই ক্ষেপণাস্ত্রের পেছনে আছে চীনের রোবট বাহিনী

6
বাংলাদেশ

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net