Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Friday
December 19, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
FRIDAY, DECEMBER 19, 2025
'স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশ': সাপ ধরা যাদের নেশা

ফিচার

জুনায়েত রাসেল
30 June, 2024, 04:25 pm
Last modified: 01 July, 2024, 01:36 pm

Related News

  • বাংলাদেশে বিরল দুই প্রজাতির গেছো সাপের সন্ধান পেলেন গবেষকরা
  • দেশেই অ্যান্টিভেনম উৎপাদনের পরিকল্পনা করছে সরকার
  • মৌলভীবাজারে ছাগল খেয়ে ফেলায় অজগরকে পিটিয়ে হত্যা
  • কুড়িগ্রামে সাপুড়ের প্রাণ নেয়া সাপকে কাঁচা চিবিয়ে খেয়ে নিলেন আরেক সাপুড়ে
  • লাগেজে ৪৭ বিষধর ভাইপার সাপ, মুম্বাই বিমানবন্দরে আটক ভারতীয়

'স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশ': সাপ ধরা যাদের নেশা

ছোটবেলায় সিদ্দিকুর রহমান রাব্বিকে একবার ছবি তুলে দিচ্ছিলেন তার বাবা। সে সময় এক সাপুড়িয়ার থেকে তিনটা সাপ নিয়ে একটি ছবি তোলা হয় তার। সেই প্রথমবার সাপের সঙ্গে ছবি তুলেই রাব্বির ভালো লেগে যায় প্রাণীটিকে। তখনই সাপুড়িয়ার কাছে চেয়ে বসেন একটি কালনাগিনী সাপ! কিন্তু সে কি আর দেওয়া যায়? কান্নাকাটি করে একসময় সাপুড়ের মন গলাতে পারলেও বাদ সাধে পরিবার। রাব্বি তো মন্ত্র জানে না, কীভাবে নেবে সাপ? জেদের বশে রাব্বি সেদিনই ঠিক করেন, মন্ত্র শিখবেন তিনি!
জুনায়েত রাসেল
30 June, 2024, 04:25 pm
Last modified: 01 July, 2024, 01:36 pm
ছবি: সৌজন্যেপ্রাপ্ত

কোথাও সাপের খবর পেলে ছুটে যান তারা। হোক নির্বিষ কিংবা বিষধর, আলগোছে ধরে ফেলেন লোকালয়ে চলে আসা সাপ। এরপর সাপটিকে অবমুক্ত করেন নিরাপদ কোনো আবাসভূমিতে। তারা ওঝা নন, সাপুড়েও নন। করেন না সাপের ব্যবসা। নিছক ভালোবাসা থেকেই আজ চার বছর হলো সাপ উদ্ধারের কাজ করে চলছেন নিরলসভাবে।

সাপ উদ্ধারকারী এ দলটির নাম 'স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশ'। সাপ থেকে মানুষ নিরাপদ থাকবে, মানুষ থেকে নিরাপদে থাকবে সাপ—এমন ভাবনাকে সঙ্গী করে ২০২০ সালে যাত্রা করে সংগঠনটি। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি রাসেল'স ভাইপার জীবিত উদ্ধার করে নতুন করে আলোচনায় এসেছে দলটি।

সাপের কথা শুনলেই যখন বেশিরভাগ লোক শিউরে ওঠেন, তখন এ দলটির উদ্ধারকারীরা খবর পেলেই ছুটে যান সাপ ধরতে। কোনো তন্ত্র-মন্ত্র বা ভেলকিবাজি নয়, যথাযথ কৌশলে তারা উদ্ধার করে আনেন লোকালয়ে আসা সাপ। সাম্প্রতিক সাপকাণ্ডে তাই হাজারো মানুষের ভরসার নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে 'স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশ'।

শুরুটা যেভাবে

ছোটবেলায় সিদ্দিকুর রহমান রাব্বিকে একবার ছবি তুলে দিচ্ছিলেন তার বাবা। সে সময় এক সাপুড়িয়ার থেকে তিনটা সাপ নিয়ে একটি ছবি তোলা হয় তার। সেই প্রথমবার সাপের সঙ্গে ছবি তুলেই রাব্বির ভালো লেগে যায় প্রাণীটিকে। তখনই সাপুড়িয়ার কাছে চেয়ে বসেন একটি কালনাগিনী সাপ! কিন্তু সে কি আর দেওয়া যায়? কান্নাকাটি করে একসময় সাপুড়ের মন গলাতে পারলেও বাদ সাধে পরিবার। রাব্বি তো মন্ত্র জানে না, কীভাবে নেবে সাপ? জেদের বশে রাব্বি সেদিনই ঠিক করেন, মন্ত্র শিখবেন তিনি!

ছবি: সৌজন্যে প্রাপ্ত

এরপর সাপ ধরার মন্ত্র শিখতে গিয়েই সাপের প্রতি আগ্রহ বাড়তে থাকে তার। বুঝতে পারেন, তন্ত্র-মন্ত্র আসলে কিছু না। সব হলো কৌশল। সাপ নিয়ে দেশি-বিদেশি নানা কাজ দেখে আগ্রহ বাড়তেই থাকে। আয়ত্ত করতে শুরু করেন সাপ ধরার দক্ষতা। একপর্যায়ে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় ঘটে সমমনা অনেকের সঙ্গে। কোভিড লকডাউনের সময় এমনই কয়েকজনকে নিয়ে গড়ে তোলেন অনলাইনভিত্তিক গ্রুপ 'স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশ'। ২০২০ সালে যাত্রা শুরু। এরপর বেড়েছে দলটির সদস্যসংখ্যা। শুরুতে চট্রগ্রামকেন্দ্রিক হলেও এখন সারাদেশের প্রায় সব অঞ্চলে তাদের প্রতিনিধি রয়েছে বলে জানালেন রাব্বি।

সংগঠনের বর্তমান সভাপতি মোহাম্মদ রাজু আহমেদ শুরু থেকেই যুক্ত আছেন কার্যক্রমের সাথে। সাপের প্রতি তার ভালোবাসার গল্পও অনেকটা রাব্বির মতো। ছোটবেলায় গ্রামে খেলা দেখাতে আসা এক সাপুড়ে দুটি সাপ পেঁচিয়ে দিয়েছিলেন রাজুর গলায়। সেই যে সাপের সঙ্গে সখ্য, আজও টিকে রয়েছে তা। প্রাণীটির প্রতি ভালোবাসা থেকেই সাপ ধরার কৌশল রপ্ত করেছিলেন তিনি। সতোরে-আঠারো সালের দিকে অনলাইনে পরিচিত হন তারই মতো কয়েকজনের সঙ্গে। অনলাইন পরিচিতি থেকেই যুক্ত হন 'স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশ'-এ। এখন সংগঠনটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। জানালেন সংগঠনের শুরুর দিনগুলোর কথা।

শুরু থেকেই স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশের মূল উদ্দেশ্য ছিল লোকালয়ে ঢুকে পড়া প্রাণীরা যেন সুরক্ষিত থাকে এবং প্রাণীদের আক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকে মানুষ। সে লক্ষ্যে সংগঠনের উদ্ধারকারীরা শুরুতেই বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে নিজেদের দক্ষ করে তোলেন।

"আমরা যখন শুরু করি, তখন আমাদের সদস্যসংখ্যা ছিল ১০ জনের মতো। পরবর্তীতে আমরা সবাই প্রশিক্ষণ নিই ওই বছরই। ধীরে ধীরে আমাদের কাজ শুরু হয়। এরপর আমরা মূল ফোকাস করি সদস্যসংখ্যা বাড়ানোর ওপর," বললেন রাজু আহমেদ।

সংগঠনের বেশিরভাগ সদস্য চট্টগ্রামের হওয়ায় বেশিরভাগ সাংগঠনিক আয়োজন সেখানেই হতো। চট্রগ্রামেই চলত সিংহভাগ কার্যক্রম। তবে ধীরে ধীরে দেশের সর্বত্র কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়ায় এখন দেশব্যাপী পরিচিতি এসেছে তাদের।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার সাপ উদ্ধার করেছেন সংগঠটির উদ্ধারকারীরা। বিষধর কিংবা নির্বিষ, উভয় ধরনের সাপই রয়েছে তালিকায়। উদ্ধার করা সাপের চিকিৎসা দরকার হলে সে ব্যবস্থাও করেন তারা। শুধু সাপই নয়, তারা ছুটে যান অন্য যেকোনো বিপন্ন প্রাণী উদ্ধারের ডাকে। এখন প্রতিদিন অসংখ্য ফোনকল আসে তাদের কাছে। তারা ছুটে যান সেবা দিতে।

ছবি: সৌজন্যে প্রাপ্ত

যেভাবে চলে কার্যক্রম

স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশের কার্যক্রম চলে মূলত অনলাইনভিত্তিক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া যোগাযোগ নম্বরে কোনো সাপ লোকালয়ে ঢুকেছে এমন তথ্য পেলে উদ্ধারকারীরা পৌঁছে যান যথাযথ স্থানে। এলাকাভেদে দায়িত্ব পড়ে স্বেচ্ছাসেবীদের ওপর। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে কাজটি করে থাকেন সংগঠনটির সদস্যরা। সাপ উদ্ধার করার পর সেটিকে নিরাপদে অন্যত্র অবমুক্ত করাই তাদের মূল দায়িত্ব।

সংগঠনটির আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো জনসচেতনতা সৃষ্টি করা। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে প্রাণীদের প্রতি মানুষের ইতিবাচক মনোভাব তৈরির কাজ করেন তারা, জানালেন প্রতিষ্ঠাতা-পরিচালক সিদ্দিকুর রহমান রাব্বি। কার্যক্রম পরিচালনায় প্রয়োজনীয় অর্থ সদস্যদের চাঁদার মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। সে অর্থ থেকেই চলে প্রচারণার কাজ।

সভাপতি মোহাম্মদ রাজু আহমেদ জানালেন, বর্তমানে তাদের দলে উদ্ধারকারীর সংখ্যা প্রায় ৩০০। অনলাইনে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সের মাধ্যমে প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ করা হয়। তাদের মধ্যে থেকে সশরীর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয় স্থায়ী সদস্য। যারা চূড়ান্তভাবে মনোনীত না-ও হয়, তারাও বাংলাদেশের সব প্রজাতির সাপের ধরন ও আচরণ সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করতে পারে।

"শুরুতে আমরা ভাবলাম কীভাবে সদস্য বাড়ানো যায়। একজনকে একটি বিশেষ সাপের প্রশিক্ষণ দিলে অন্য সাপ তো সে উদ্ধার করতে পারবে না। তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে অনলাইনভিত্তিক একটি প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করব। ব্যপক সাড়া পেলাম। যারা এই স্ট্যাডি ব্যাচ সম্পূর্ণ করল, তাদের মধ্যে থেকে পরীক্ষার মাধ্যমে ২০ জনকে বাছাই করলাম সশরীর প্রশিক্ষণের জন্য। তখন আমাদের সদস্য বাড়ল। এভাবেই একটার পর একটার স্ট্যাডি ব্যাচে সদস্য বেড়েছে আমাদের," বললেন রাজু আহমেদ।

দলের সদস্যদের মধ্যে যিনি যে বিষয়ে দক্ষ তাকে সেই বিষয়ে কাজে লাগানো হয় বলে জানালেন তিনি। বললেন, "কেউ হয়তো উদ্ধার কাজে যুক্ত নয়, কিন্তু সে ভালো ভিডিও এডিট করতে পারে কিংবা ফটোশপের কাজ পারে, তখন তাকে আমরা সে ধরনের কাজে যুক্ত করি। মেয়েদের মধ্যে অনেকেই আমাদের সাথে কাজ করে। শুরুতে যখন ওরা ভয় পেত, তখন ওরা ফেসবুক পোস্টের কাজগুলো করত। এভাবেই এগিয়ে চলছে আমাদের কার্যক্রম।"

আছে প্রতিবন্ধকতা

উদ্ধারকাজ পরিচালনায় বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করতে হয় দলের সদস্যদের, জানালেন রাজু আহমেদ। অনেকে মনে করেন, সাপ ধরে তা বিক্রি করে দিয়ে অর্থ উপার্জন করে স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশ। "উদ্ধারকাজে গেলে অনেকে অর্থ দাবি করে বসে। তারা মনে করে আমরা চড়া দামে সাপ বিক্রি করি। ফলে তাদের তো কিছু টাকা দেয়াই যায়। আসলে কিন্তু তা নয়। নিজেদের অর্থ খরচ করে, ঝুঁকি নিয়ে আমরা সাপ উদ্ধার করি। সেটিকে আবার ছেড়ে দেয়া হয় উপযুক্ত পরিবেশে।"

তবে কাজ করার ক্ষেত্রে অনেক অসুবিধা থাকলেও বন বিভাগের পক্ষ থেকে সবসময় সহযোগিতা পান বলে জানালেন সংগঠনটির সদস্যরা। প্রত্যেক অপারেশনের আগে বন বিভাগকে অবহিত করা হয় বলে এড়ানো সম্ভব হয় সব ধরনের আইনি জটিলতা। কারো বসতবাড়ি থেকে যখন সাপ উদ্ধার করা হয়, সে বাড়ির মানুষদের স্বস্তিই বড় প্রাপ্তি উদ্ধারকারীদের কাছে। তাই সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

ছবি: সৌজন্যে প্রাপ্ত

সাপ কেন জরুরি

অনলাইনভিত্তিক কার্যক্রম হওয়ায় নিজেদের কর্মকাণ্ডের ছবি ও ভিডিও নিয়মিত প্রকাশ করে সংগঠনটি। এর ফলে প্রশংসার পাশাপাশি শুনতে হয় নানা সমালোচনা। বিষধর সাপ ধরে আবার তাকে অবমুক্ত করাকে অনেকে নেতিবাচকভাবে দেখেন। বিরূপ মন্তব্য করে বসেন কেউ কেউ। তবে এ ধরনের মন্তব্য অসচেতনতাপ্রসূত, মনে করেন সংগঠনটির সভাপতি।

"অনেকের ধারণা যে সাপ আমাদের কী উপকারে লাগে? সাপ যেমন কোনো না কোনো প্রাণীকে খায়, আবার সাপকেও অন্য কোনো প্রাণী খায়। এভাবেই তো টিকে থাকে খাদ্যশৃঙ্খল। এই ফুড চেইন থেকে যেকোনো একটা প্রাণীকে সরিয়ে দিলে তার প্রভাব কিন্তু প্রতিটা প্রাণীর ওপর এসে পড়ে। মানুষও বাদ বাদ যায় না," বললেন রাজু আহমেদ।

তার মতে, ফসলের খেতে যে পরিমাণ ইদুর হয়, সেগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখে সাপ। হাজার হাজার মণ ফসল রক্ষা পায় সাপের কারণে। তাছাড়া কেউ ঘোষণা দিয়ে হত্যায় নামলেও সব সাপ মেরে ফেলা সম্ভব নয়। তাই নির্বিচারে সাপ মেরে বিষধর সাপ বাড়ানোটা বোকামি হবে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থেই সাপ জরুরি, মনে করেন তিনি।

ওঝাদের দৌরাত্ম্য

রাজু আহমেদ নিজেও একসময় বিশ্বাস করতেন, সাপে কামড়ালে ওঝার কাছে যেতে হয়। নিজে যখন ভুল বুঝতে পারলেন তখন দেখলেন, তার মতো আরও অনেক শিক্ষিত ব্যক্তি রয়েছেন যারা জানেন না সাপের কামড়ের চিকিৎসার করার কোনো ক্ষমতা ওঝাদের নেই। রাজুর মতে, সাপ উদ্ধার কিংবা সাপেকাটা রোগীদের সাহায্য করতে গিয়ে তাদের সবচেয়ে বেশি ভুগতে হয়ে ওঝা ও সাপুড়েদের জন্য।

"যখন একটা নির্বিষ সাপ কামড়ায়, ওদের কাছে নিয়ে গেলে সে কিন্তু সুস্থ হয়ে উঠবে। অন্যরা সেটা দেখে ভাববে যে ওঝার অনেক ক্ষমতা, সে বিষ নামাতে পারে। এভাবে ভ্রান্ত বিশ্বাস জন্মে যায় বলে সাপে কাটলেই মানুষ ওঝার কাছে দৌড়ায়। কারো ঘর-বাড়িতে সাপ দেখা গেলে ওঝারা তো আয় করতে আসে। আমাদের মতো পরিশ্রম তারা করে না। আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় দিয়ে নিরাপদে সাপ উদ্ধার করি। ফলে ওঝাদের সমস্যা হয়ে যায়," বললেন রাজু।

ছবি: সৌজন্যে প্রাপ্ত

তার মতে, বাংলাদেশের যতগুলো সাপ পাওয়া যায় তার বেশিরভাগই নির্বিষ। "প্রায় ১০৫ প্রজাতির সাপের মধ্যে মাত্র ২৪-৩০ প্রজাতি বিষধর, যার অর্ধেকই আবার সামুদ্রিক। দেশের অভ্যন্তরে যে বিষধর সাপগুলো আছে, সেগুলা আবার সব এলাকায় পাওয়া যায় না। যেমন কিং কোবরা বা পিট ভাইপার পাহাড়ি এলাকা ছাড়া দেখা যায় না। তার মানে এলাকাভিত্তিক বেশি হলে ২-৩ টা প্রজাতির বিষধর সাপ আছে। বিষধর সাপের মধ্যেও নানা প্রকারভেদ আছে। যেমন গোখরা ১০০টা কামড় দিলেও বিষ ঢালে সর্বোচ্চ ৪০-৫০ বার। বাকিগুলো কিন্তু সে বিষের ব্যবহার করে না,' তথ্য দিলেন রাজু।

তার মতে, ওঝাদের জন্যই বিষধর সাপেকাটা রোগীদের মৃত্যু হার বাড়ে। ওঝাদের কাছে যেতে যেতে যে সময় অপচয় হয়, সেটিই এসব মৃত্যুর কারণ। এদের দৌরাত্ম্য কমানো গেলে সাপের কামড়ে মানুষের মৃত্যুও কমবে।

রাসেল'স ভাইপার নিয়ে আতঙ্ক নয়

স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশের ফেসবুক পেইজে প্রতিনিয়ত দেখা যায় সাপ উদ্ধারের ঘটনা। সম্প্রতি রাসেল'স ভাইপার নিয়ে দেশজোড়া আলোড়নের ছাপ পড়েছে সেখানেও। সংগঠনের উদ্ধারকারীরা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ধারে সক্ষম হয়েছেন এই বিষধর সাপটি। তবে পদ্মা তীরবর্তী বেশ কিছু জেলায় রাসেল'স ভাইপারের উপস্থিতি থাকলেও তা আতঙ্কিত হওয়ার মত নয়, বলছেন রাজু আহমেদ।

"বাংলাদেশের বিষধর সাপের তালিকা করলে রাসেল'স ভাইপার পাঁচ নম্বরের পরে আসবে। গোখরা সাপও এর চেয়ে বেশি বিষধর। তাছাড়া দেশের সর্বত্র কিন্তু এই সাপটি নেই। শুধু পদ্মার তীরবর্তী কিছু জেলায়," বললেন রাজু। "একটা হিসাবে দেখা গেছে, দেশে প্রতি বছর সাপের কামড়ের শিকার হয় ৭ লাখের মতো মানুষ। এর মধ্যে মারা যায় মাত্র সাড়ে ৬ হাজার। আর রাসেল'স ভাইপারের কামড়ে মারা যায় সর্বোচ্চ ৬০-৭০ জন। বোঝাই যাচ্ছে, কত কম। আর সচেতন থাকলে এই সংখ্যাও নিশ্চিতভাবে আরও অনেক কমে আসবে।"

তার মতে, অনেকে মনে করেন রাসেল'স ভাইপার ভারত থেকে এসেছে। আদতে এই সাপ আমাদের এই অঞ্চলে শত শত বছর আগেও ছিলো। "মিডিয়া আর ফেসবুকের মাধ্যমে অনেক ভ্রান্ত ধারণা ছড়িয়েছে। যার বেশিরভাগই ভুল। বাংলাদেশে সাপের কামড়ের যে অ্যান্টিভেনম, তা সব ধরনের সাপের ক্ষেত্রেই কার্যকর। কামড় দিলে সাপ ধরে নেয়ার সময় অপচয় করা কখনোই উচিত নয়।"

রাজু আহমেদ আরও জানালেন, যেসব প্রাণী আছে যারা রাসেল'স ভাইপার খায়, তারা সংখ্যায় কমে যাওয়ার কারণে এই সাপ বেড়ে গেছে। গুইসাপ, বেজি কিংবা কিছু শিকারি সাপ বিলুপ্ত হওয়ার কারণে বিষধর সাপের আধিপত্য বাড়ছে। তার মতে, রাসেল'স ভাইপার নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে এসব বিষয়ে সচেতন হওয়া জরুরি।

মানুষ ও প্রাণীর সহাবস্থান নিশ্চিত হোক

প্রকৃতির বিরুদ্ধে কাজ করলে, পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হলে মানুষকেই ভুগতে হবে—এমনটাই বিশ্বাস করে 'স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশ'। তারা চায় সব প্রাণীই যার যার জায়গায় টিকে থাকুক।

"আমরা যে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছি, এটা কিন্তু আমাদের অদূর ভবিষ্যতে বড় সমস্যার সৃষ্টি করবে। রাসেল'স ভাইপার আতঙ্কে হাজারও নির্বিষ সাপ হত্যা করা হচ্ছে, এটি বিপদ আরও বাড়াবে। পৃথিবীতে যে শুধু মানুষ টিকে থাকবে, তা কিন্তু নয়। সৃষ্টিকর্তা প্রকৃতিকে এমনভাবে সৃষ্টি করেছেন যেখানে একটি প্রাণী অন্য প্রাণীর ওপর নির্ভরশীল," বললেন রাজু।

নিজে ব্যক্তিগতভাবে প্রায় আড়াইশ সাপ উদ্ধার করেছেন এই পরিবেশকর্মী। নিজের এলাকা পাবনা ছাড়াও ময়মনসিংহ, নাটোর, টাঙ্গাইল, গাজীপুরে কাজ করেছেন তিনি। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে চালিয়ে যেতে চান তাদের কাজ।

Related Topics

টপ নিউজ

সাপ / সাপ উদ্ধার / স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন / সাপ নিয়ে সচেতনতা

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ছবি: সংগৃহীত
    ওসমান হাদির অবস্থা সংকটাপন্ন: মৃত্যু হলে শাহবাগে জড়ো হওয়ার ডাক ইনকিলাব মঞ্চের
  • আব্দুল হান্নান। ছবি: সংগৃহীত
    হাদি হত্যাচেষ্টা মামলা: পুলিশের গাফিলতিতে কি ভুল ব্যক্তি রিমান্ডে?
  • ফাইল ছবি: টিবিএস
    ফাঁকি কমাতে এলপিজির আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট আরোপের উদ্যোগ নিচ্ছে এনবিআর
  • প্রতীকী ছবি: সংগৃহীত
    জিগাতলায় ছাত্রীনিবাস থেকে এনসিপি নেত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
  • রাজধানীর মিরপুরে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে গতকাল (১৭ ডিসেম্বর) সংযোগ সড়কটি খুলে দেওয়া হয়। ছবি: সংগৃহীত
    যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হলো মিরপুর ৬০ ফুটের সংযোগ সড়ক
  • ছবি: টিবিএস
    চলতি অর্থবছরের মধ্যে রিজার্ভ ৩৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য: গভর্নর

Related News

  • বাংলাদেশে বিরল দুই প্রজাতির গেছো সাপের সন্ধান পেলেন গবেষকরা
  • দেশেই অ্যান্টিভেনম উৎপাদনের পরিকল্পনা করছে সরকার
  • মৌলভীবাজারে ছাগল খেয়ে ফেলায় অজগরকে পিটিয়ে হত্যা
  • কুড়িগ্রামে সাপুড়ের প্রাণ নেয়া সাপকে কাঁচা চিবিয়ে খেয়ে নিলেন আরেক সাপুড়ে
  • লাগেজে ৪৭ বিষধর ভাইপার সাপ, মুম্বাই বিমানবন্দরে আটক ভারতীয়

Most Read

1
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ

ওসমান হাদির অবস্থা সংকটাপন্ন: মৃত্যু হলে শাহবাগে জড়ো হওয়ার ডাক ইনকিলাব মঞ্চের

2
আব্দুল হান্নান। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ

হাদি হত্যাচেষ্টা মামলা: পুলিশের গাফিলতিতে কি ভুল ব্যক্তি রিমান্ডে?

3
ফাইল ছবি: টিবিএস
বাংলাদেশ

ফাঁকি কমাতে এলপিজির আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট আরোপের উদ্যোগ নিচ্ছে এনবিআর

4
প্রতীকী ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ

জিগাতলায় ছাত্রীনিবাস থেকে এনসিপি নেত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

5
রাজধানীর মিরপুরে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে গতকাল (১৭ ডিসেম্বর) সংযোগ সড়কটি খুলে দেওয়া হয়। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ

যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হলো মিরপুর ৬০ ফুটের সংযোগ সড়ক

6
ছবি: টিবিএস
অর্থনীতি

চলতি অর্থবছরের মধ্যে রিজার্ভ ৩৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য: গভর্নর

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net