Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Thursday
December 18, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
THURSDAY, DECEMBER 18, 2025
পাঁচ লাখ টাকার সিএনজি অটোরিকশার দাম যেভাবে এখন ২৫ লাখ টাকা!

ফিচার

সালেহ শফিক
14 August, 2023, 01:10 pm
Last modified: 01 January, 2024, 11:36 am

Related News

  • ঢাকার সেই দিন: যখন পাড়াই ছিল আমাদের জগৎ
  • মির্জা আব্বাসের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা
  • ঢাকাসহ এশিয়ার বেশিরভাগ মেগাসিটি কেন বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে?
  • গাজীপুরে বলাকা কমিউটার ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল, ঢাকা-ময়মনসিংহ রেল যোগাযোগ বন্ধ
  • জোবাইদা রহমান কাল সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকায় পৌঁছাবেন

পাঁচ লাখ টাকার সিএনজি অটোরিকশার দাম যেভাবে এখন ২৫ লাখ টাকা!

মোশাররফ হোসেন অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছিলেন। গেন্ডারিয়ায় তার গ্যারেজ ও বাসা। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ শেষ ট্রিপের জন্য যাত্রী খুঁজছিলেন বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে দাঁড়িয়ে — ইচ্ছা যাত্রাবাড়ি, সায়দাবাদের প্যাসেঞ্জার ধরবেন। এর মধ্যে তিনটা ভেলপুরি খেলেন। দুইবার দুই যাত্রী এসে ধানমন্ডি আর মিরপুরে যেতে বলেছিলেন। কিছুক্ষণ পর ঢালকানগরের এক যাত্রী পেয়ে যান। যাত্রী নামিয়ে গাড়ি গ্যারেজে ঢুকিয়ে টের পেলেন, তার মাথায় চক্কর দিচ্ছে। শেষে আরেক চালকের সহায়তায় বাসায় পৌঁছাতে পেরেছিলেন। মোশাররফ বললেন, ‘যদি মিরপুর বা ধানমন্ডির প্যাসেঞ্জার লইতাম, তাইলে কট (ধরা) খাইয়া যাইতাম।’
সালেহ শফিক
14 August, 2023, 01:10 pm
Last modified: 01 January, 2024, 11:36 am
দুপুরের কম ব্যস্ত সময়ে দুইজন সিএনজি অটোরিকশা চালক। ছবি: সালেহ শফিক/দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

তিনটি প্রশ্ন নিয়ে পথে নামলাম। এক. পাঁচলাখ টাকার সিএনজি অটোরিকশার দাম কীভাবে ২৫ লাখ টাকায় উঠল? দুই. নতুন গাড়ি কেন বরাদ্দ দেওয়া হয় না? তিন. চালকেরা কেন মালিক হতে পারছেন না? কিন্তু পথের চিত্র বেশ গোলমেলে। চালকেরা দুষছেন মালিকদের। মালিকপক্ষ দোষ দিচ্ছেন আমদানিকারক ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষকে।

১৩ জুলাই বিকেল। মিরপুর ১০ নম্বরের স্ক্যামকো পেট্রোল পাম্পের কাছে দাঁড়িয়ে আছি। সিএনজি অটোরিকশার লম্বা লাইন। দিনকয়েক ধরে গ্যাসের সংকট চলছে। ছয়টার আগেই গ্যাস নিয়ে নিতে হয়। ধীরগতিতে এগোচ্ছে গাড়ির সারি। টেনে সামনে নিয়ে সিরিয়াল রক্ষা করতে হয় কিছুক্ষণ পরপর। তাতে শক্তি লাগে ভালোই।

'ডেইলি ১২–১৩ ঘণ্টা খাটুনি দিই'

বয়স্ক চালক মতিনউদ্দিন বেবি-ট্যাক্সির আমল (১৯৯৫ সাল) থেকে আছেন রাস্তায়। সেই চিরায়ত জীবনের গল্প — গ্রাম থেকে ঢাকায় এসেছিলেন ভাগ্য বদলের আশায়। তারপর আর ঢাকা ছাড়তে পারেননি। বললেন, 'রাস্তার সঙ্গে জীবন লটকায় গেছে। এখন আর ছাড়ার বয়সও নাই। এগারশ টাকা জমা (মালিককে দেওয়া দৈনিক অর্থ), ৫০০ টাকার গ্যাস, ২০০ টাকা রোড খরচ — সবমিলায়ে দৈনিক ১৮শ–১৯শ টাকা খরচ। এরপর যা থাকে তা দিয়ে সংসার চালাই।

'২৫ লাখ টাকা দিয়ে গাড়ি কেনার কথা কোন ড্রাইভার ভাবতে পারে জানি না, আমি কোনো আশা দেখি না। ডেইলি ১২–১৩ ঘণ্টা খাটুনি দিই — ধুলা-বালি, শব্দ, পানি, গর্ত শরীর অবশ কইরা ফালায়। তবু পরের দিন বের হই। কারণ উপায় নাই।'

মতিনের কাছে প্রথমে জানা গেল গাড়ির দাম এত বেশি হওয়ার পেছনের কারণ, '২৫ লাখ টাকা গাড়ির দাম ওঠে, কারণ নতুন রেজিস্ট্রেশন (নিবন্ধন) দেওয়া হয় না। যাদের আগের নিবন্ধন আছে তারা বিক্রি করতে চাইলে তবে আপনি গাড়ি পাইবেন, নাইলে না। তাই ইচ্ছামতো দাম ধরার সুযোগ পুরানা মালিকদের আছে। ২০০৮ সালের দিকে চালকদের জন্য পাঁচ হাজার সিএনজি বরাদ্দ দেওয়ার কথা হইছিল। কিন্তু মালিক সমিতি মামলা দেওয়ায় সুযোগটা আমাদের হাতছাড়া হয়ে গেছে।'

দেড়শ টাকা জমায় শুরু শফিকুলের

মতিনউদ্দিন ধীরে ধীরে গ্যাস ডিপোর কাছে পৌঁছে গেলেন। আমি শফিকুল ইসলামের কাছে গেলাম। তার জন্ম ১৯৭৪ সালে জামালপুরে। অভাবের তাড়নায় শফিকুল ঢাকায় চলে আসেন '৮৯ সালে। এরপর বেবি-ট্যাক্সি চালানো শুরু করেন '৯৬ থেকে। তখন জমা ছিল ১৫০ টাকা। বাজার-সদাই করেও কিছু টাকা বাঁচাতে পারতেন।

যাত্রীর অপেক্ষায় কয়েকটি সিএনজি-চালিত অটোরিকশা। ছবি: সালেহ শফিক/দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড/ফাইল

২০০১ সালে বেবি-ট্যাক্সি উঠিয়ে দিয়ে সিএনজি আমদানি করা হয়। তখন চেসিসের দাম ধরা হয়েছিল দুই–আড়াই লাখ টাকা। বডি তৈরি, নম্বর প্লেট, ফিটনেস সার্টিফিকেট এবং অন্যান্য কাগজপত্র জোগাড় করতে আরও বেশ কয়েক হাজার টাকা বেরিয়ে যেত। চালকেরা বেশি কেউ তখনো মালিক হতে পারেননি। তবে শফিকুল মনে করেন, এখন বাস-ট্রাকসহ যত পরিবহন ব্যবসা আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি লাভের ব্যবসা এই সিএনজি অটোরিকশার।

শফিকুল সকাল আটটায় বের হন, ফেরেন রাত ১১টায়। আজ বের হতে ১০টা বেজে গেছে। কারণ তাকে রান্না সারতে হয়েছে। স্ত্রী থাইরয়েড আর ডায়বেটিসের অসুখ নিয়ে দেড় মাস ধরে হাসপাতালে পড়ে আছেন। টিফিন বাটি দেখিয়ে বললেন, 'ভাত, ডাল আর আলু ভর্তা নিয়ে গেছিলাম হাসপাতালে। তারে খাওয়াইলাম, নিজেও খাইলাম, তারপর আসলাম। এ পর্যন্ত ৪টা ট্রিপ মারছি।'

'মানতি' দিয়ে ঢাকায় চালান আনোয়ার

মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়ামের পেছন দিকে এলোমেলো হাঁটছিলাম। একজন চালককে দেখলাম নিজের সিএনজি ঝাড়পোঁছ করছেন। নাম বললেন আনোয়ার হোসেন, থাকেন নারায়ণগঞ্জে। শাজাহানপুরে তার গাড়ির গ্যারেজ হলেও নারায়ণগঞ্জে নিয়েই রাখেন। বিকাশে মালিককে জমা পাঠিয়ে দেন।

তার গাড়ির নিবন্ধন হয়েছে জেলায়। এসব গাড়ির ঢাকায় ঢোকার অনুমতি নেই। জেলার গাড়িগুলোর দাম ঢাকার (মেট্রো) তুলনায় অর্ধেকেরও কম। আরেক ধরনের গাড়ি আছে যেগুলোর গায়ে প্রাইভেট লেখা থাকে, সেগুলো আরও কম দামে কেনা যায়। তবে এ গাড়িগুলোর বাণিজ্যিক চলাচল বৈধ নয়। কিন্তু এসব গাড়ি ঢাকায় ভাড়া খাটে 'মানতি' দিয়ে।

মানতি হলো ট্রাফিক পুলিশকে মাসওয়ারি চাঁদা দিয়ে গাড়ি চালানো। সেক্ষেত্রে গাড়ির নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব তারা নিজেদের কাঁধে নিয়ে নেয়। মোবাইল কোর্ট অভিযান যেদিন যেখানে চলে, তার খবরও অগ্রিম তাদের কাছ থেকে পাওয়া যায়। আনোয়ার প্রতিদিন গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পঞ্চবটিতে আসেন, তারপর নাস্তা করেন। পঞ্চবটিতে গাড়ি রাখার জন্য তাকে ২০ টাকা দিতে হয়। তারপর যাত্রী পেলে ঢাকায় চলে আসেন আর ঢাকার ভেতরেই ট্রিপ দিতে থাকেন। দুপুরে রাস্তার হোটেলে খেয়ে নেন। আজ মুড়িঘণ্ট দিয়ে তিন প্লেট ভাত খেয়েছেন। বিল দিয়েছেন ১১৫ টাকা। তার জমা ৮০০ টাকা।

'গত পরশু দিনই একটা রেকার কেস খাইছি, ৭০০ টাকার। এমনই চলে, যার যেমন খুশি আমাগো তেমনই চালায়। অথচ সবাই আমাগো দোষ দেয় — আমরা মিটারে গাড়ি চালাই না। সত্য কথা হইল, মিটারে চললে আমাদের সংসার করা হবে না।'

গ্যাস নেওয়ার অপেক্ষায় একজন চালক। ছবি: সালেহ শফিক/দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

মালিক সমিতির অফিস

সিএনজি অটোরিকশা মালিক সমিতির কার্যালয় মগবাজার রেললাইন থেকে বেশি দূরে নয়। একটু খোলা চত্বর, তার পাশে ওয়ার্কশপ আর মোটর পার্টসের কয়েকটা দোকান। অফিসে পদাধিকারী কাউকে পাওয়া গেল না। তবে একজন সিএনজি মালিকের দেখা পেলাম। তিনি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। তবে কথা বলতে আপত্তি করলেন না। টেম্পুর আমল থেকে তার পরিবার পরিবহন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। কেন পাঁচ লাখ টাকার সিএনজি ২৫ লাখ টাকায় বিক্রি হয়, সরাসরি চলে যাই এ প্রশ্নে।

'মিশুকের বা বেবি-ট্যাক্সির নিবন্ধন নম্বর আমরা অনিশ্চয়তার মধ্যেও ধরে রেখেছিলাম দীর্ঘ সময় ধরে। পরে যখন নম্বরের বদলি হিসাবে সিএনজির নম্বর দেওয়া হলো, তা নিতে সরকারের ধার্যকৃত টাকার চেয়ে অনেক বেশি টাকা লাগল। ১৪ বছর করে একটা সিএনজির মেয়াদ ধরা হয়েছিল।

'১৪ বছর পর যখন ডাম্পিং করা হলো ২০১৫ বা ২০১৬ সালে, তখন আরেকটি নিতে (রিপ্লেস) আবার ৫–৭ লাখ টাকা লেগে গেল। তাহলে কত ধাপে টাকা গুনতে হয় ভেবে দেখেন?'

তিনি বলেন, 'আমাদের দেশে সিএনজি আমদানি করে একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান। তাদের কাছে ব্যবসাটি জিম্মি হয়ে আছে। প্রতিটি গাড়ি থেকে তারা দুই–আড়াই লাখ টাকা লাভ করে। তারা বড় কোম্পানি, তাদের কিছু বলে না কেউ। আমরা টুকটাক ব্যবসা করি, তাতেই লোকের চোখে লেগে যায়।'

নতুন সিএনজি বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না, আপনারা কি কর্তৃপক্ষের কাছে কারণ জানতে চেয়েছিলেন? 'তারা বলে, শহরের রাস্তায় জায়গা কম। নতুন গাড়ি মানে আরও যানজট। অথচ দেখেন মোটর সাইকেল, প্রাইভেট কার, বাসও রাস্তায় নামতেছে হরদম।'

প্রাইভেট সিএনজি অটোরিকশা

মালিক সমিতির অফিসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই মালিক বলেন, ঢাকায় নিবন্ধিত সিএনজি আছে সাড়ে ১৫ হাজার। অথচ ব্যাক্তিগত (প্রাইভেট) আর জেলার গাড়ি চলে ২০ হাজার। 'চার বা সাড়ে চার হাজার টাকা মানতি দিয়ে এসব গাড়ি ইচ্ছামতো ভাড়া খাটে। মালিক সমিতির পক্ষ থেকে এগুলো নিয়ে বহুবার বৈঠক করা হয়েছে। কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি।'

ইস্কাটনে হুট করে দেখা হয়ে গেল প্রাইভেট সিএনজি অটোরিকশা চালক জয়নাল মিয়ার সঙ্গে। 'মালিক মানতি দিয়ে চালায়। এই গাড়ির জমাও কিছু কম। ড্রাইভারের চাকরি আর ভালো লাগে না। রাস্তা-ঘাটে বহুত পেরেশানি। মেয়েটার এসএসসি পরীক্ষা হয়ে গেলে গ্রামে চলে যাব,' দুঃখ করে বললেন তিনি।

ঢাকায় নিবন্ধিত সিএনজি অটোরিকশার সংখ্যা সাড়ে ১৫ হাজার। ছবি: সালেহ শফিক/দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

তবে আরেক চালক মনির হোসেনের অভিজ্ঞতা ভিন্নরকম। এ পেশা তার খারাপ লাগে না। বিশেষ করে এখানে একরকম স্বাধীন জীবন যাপন করা যায়, ধরা-বাঁধা চাকরির মতো না এটা। শুরুতে একটা সিএনজির মালিকও ছিলেন। সমস্যায় পড়ে সেটা বিক্রি করে দিতে হয়েছে। তিনি আক্ষেপ করে বললেন, 'এ পেশায় সমস্যা হলো কোনো সম্মান পাওয়া যায় না। খাটুনিও অনেক বেশি। দিনে ১২–১৩ ঘণ্টাও খাটতে হয়। তার ওপর রাস্তাঘাটে হয়রানি তো আছেই।

'এখন নতুন গাড়ির রুট পারমিট দেওয়া হয় না। আমার মনে হয় এটা মালিক সমিতি ও পদস্থ কর্মকর্তাদের কারসাজি। অন্য কোনো গাড়ির ব্যাপারে তো এমন দেখবেন না। ২৫–২৭ লাখ টাকা দিয়ে কোনো ড্রাইভার সিএনজির মালিক হইতে পারবে? কোনোদিন পারবে না।'

গাড়ি চুরি যায়

শুনেছি গাড়ি চুরি হয়। আপনি কখনো এই বিপদে পড়েছেন? মনিরের কপাল ভালো, জানালেন এখনো একবারও এমন বিপদের মুখে পড়তে হয়নি। 'যারা অসতর্ক তারা এসব বিপদে পড়ে। নিয়ম হইল, গাড়ির সামনে কাউরে বসতে দিবেন না, প্যাসেঞ্জারের সঙ্গে চা খাইতে বসবেন না। প্যাসেঞ্জার যদি গাড়ি ছাইড়া দুই কদমও যাইতে কয়, যাইবেন না।

'সপ্তাহখানেক আগের ঘটনা। এক ড্রাইভার খুব সকালে কল্যাণপুরে গেছে প্যাসেঞ্জার তুলতে, গাড়ি থেকা নাইমা একজন প্যাসেঞ্জারের লাগেজ আনতে গেছে, এই ফাঁকেই চোর দিছে গাড়ি নিয়া দৌড়। এজন্য আমি বলি, রাস্তায় হুঁশ হারানো চলবে না। সবদিকে কড়া নজর রাখতে হবে,' বলেন মনির।

মোশাররফ হোসেন অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছিলেন। গেন্ডারিয়ায় তার গ্যারেজ ও বাসা। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ শেষ ট্রিপের জন্য যাত্রী খুঁজছিলেন বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে দাঁড়িয়ে — ইচ্ছা যাত্রাবাড়ি, সায়দাবাদের প্যাসেঞ্জার ধরবেন।

এর মধ্যে তিনটা ভেলপুরি খেলেন। দুইবার দুই যাত্রী এসে ধানমন্ডি আর মিরপুরে যেতে বলেছিলেন। কিছুক্ষণ পর ঢালকানগরের এক যাত্রী পেয়ে যান। যাত্রী নামিয়ে গাড়ি গ্যারেজে ঢুকিয়ে টের পেলেন, তার মাথায় চক্কর দিচ্ছে। শেষে আরেক চালকের সহায়তায় বাসায় পৌঁছাতে পেরেছিলেন। মোশাররফ বললেন, 'যদি মিরপুর বা ধানমন্ডির প্যাসেঞ্জার লইতাম, তাইলে কট (ধরা) খাইয়া যাইতাম।'

মানতি দিয়ে ভাড়ায় চলে প্রাইভেট সিএনজি অটোরিকশা। ছবি: সালেহ শফিক/দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

চালকেরা জানান, গাড়ি চুরির পর চোর জায়গা বদল করতে থাকে দ্রুত। মালিকের নম্বরে ফোন দিয়ে বিকাশে টাকা পাঠাতে বলে। মালিক যদি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তবে পুরো গাড়িটাকে ভাঙ্গারি বানিয়ে ফেলে। গাড়ি চুরি গেলে ৬০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা লাগে ছাড়াতে। এ টাকা মালিক ড্রাইভারের কাছ থেকে আদায় করতে চেষ্টা করেন। কেউ কেউ অবশ্য সহানুভূতিশীল থাকে। মালিক বেশি চাপাচাপি করলে ড্রাইভার গ্রামের বাড়ি গিয়ে বসে থাকেন।

অ্যাপে চালালে লাভ কম

পেছনে 'ওভাই' লেখা দেখে একটা গাড়ির দিকে এগিয়ে গিয়ে নূর আলী ড্রাইভারকে পেলাম। ওভাই এবং উবার অ্যাপে তার গাড়ি তালিকাবদ্ধ। তবে বেশিরভাগ সময় ভাড়াতেই গাড়ি চালান। দুপুর বেলায় যখন প্যাসেঞ্জার কম থাকে, তখন অ্যাপ অন করেন। কারণ জানালেন, অ্যাপে গাড়ি চালানোর চেয়ে ভাড়ায় চালানোই বেশি লাভজনক।

অ্যাপে গাড়ি চালানো নিয়ে তিনি বলেন, 'এটা কখনো কখনো সুবিধা দেয়, তবে বেশি অসুবিধা তৈরি হয় মোটর সাইকেল রাইড যারা দিচ্ছে তাদের জন্য। ব্যস্ত রাস্তার অনেক জায়গাই তারা দখল করে রাখে। আমরা দাঁড়ানোর জায়গাও পাই না। তারা এক–দেড়শ টাকায় যাত্রী উঠিয়ে নেয়, আমাদেরও মাঝে মধ্যে বাধ্য হয়ে কম টাকায় যাত্রী তুলতে হয়।'

কিন্তু যাত্রীরা তো সাশ্রয়ী মূল্যেই যেতে চাইবে, এটাই স্বাভাবিক। আপনারা যাত্রীর দিকটা খেয়াল করেন? এই প্রশ্নের উত্তরে নূর আলী বললেন, 'জমা কম  হইলে, রাস্তায় হয়রানি না থাকলে, আমরা যাত্রীদের আরও বেশি সুবিধা দিতে পারতাম।'

সত্যিই কি সবার সুযোগ আছে?

সবশেষে কথা হলো সিএনজি অটোরিকশা মালিক সমিতির সভাপতি বরকতুল্লাহ বুলুর সঙ্গে। তিনি স্বীকার করলেন, সরকার নির্ধারিত জমার (৯০০ টাকা) চেয়ে কিছু বেশি নিয়ে থাকেন মালিকেরা। 'এ জমা নির্ধারিত হয়েছিল এক দশক আগে, ২০১৩ সালে। তারপর থেকে গাড়ির যন্ত্রাংশসহ সব কিছুরই দাম বেড়েছে। সরকার অবশ্য শীঘ্রই জমার পরিমাণ পুনঃনির্ধারণ করে ১,২০০ টাকা করতে পারে।' তার সঙ্গে বাকি কথোপকথন হলো পরিবহনের এ খাতের সংকটগুলো নিয়ে।

ছবি: সালেহ শফিক/দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

লেখক: চালকেরা অভিযোগ করছেন, মালিক সমিতি ও কর্তৃপক্ষের যোগসাজশেই নতুন গাড়ির নিবন্ধন দেওয়া হচ্ছে না — এটা কতটা ঠিক?

বুলু: এটা আবেগের কথা। যানজট ও সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ তো নেই।

লেখক: পাঁচ লাখ টাকার গাড়ি ২৫ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, এটাকে কীভাবে দেখেন?

বুলু: যেহেতু নতুন নিবন্ধন দেওয়া হচ্ছে না, তাই গাড়ির দাম বাড়ছে। এটা তো সবক্ষেত্রে দেখা যায় — যেটা দুর্লভ সেটার চাহিদাও বেশি থাকে, দামও বেশি হয়। আর যেহেতু এ ব্যবসা থেকে দিনশেষে কিছু না কিছু পাওয়া যায়, তাই দাম বেশি হলেও ক্রেতার অভাব হয় না।

লেখক: চালকেরা যদি মালিক হওয়ার সুযোগ পেতেন, তাহলে কি সামগ্রিক পরিস্থিতির উন্নতি ঘটত?

বুলু: কেউ কি কাউকে মালিক হতে বাধা দিতে পারে? এমন তো কোথাও লেখা নেই যে, এ লোক মালিক হতে পারবে, আর এ লোক পারবে না। সুযোগ সবারই আছে।

লেখক: জমার পরিমাণ বৃদ্ধি, মিটারে গাড়ি না চালানো ইত্যাদির মাশুল যাত্রীকেই কি দিতে হচ্ছে না?

বুলু: এটা খুবই সত্যি কথা — এসবের ভুক্তভোগী আসলে যাত্রীরাই। আপনি সবক্ষেত্রে দেখবেন বিক্রেতা ইচ্ছেমতো দাম নির্ধারণ করছে, আর ক্রেতাকে সেই দামেই জিনিসপত্র কিনতে হচ্ছে। সিএনজির ক্ষেত্রেও যাত্রীদের কখনো কখনো দুই–তিনগুণ ভাড়া গুণতে হচ্ছে।

বুলু সাহেবকে ধন্যবাদ জানিয়ে আলাপ শেষ করলাম। মনে পড়ল, ১৯৮৭ সালে একটি বাংলা সিনেমা চলেছিল। নাম — দায়ী কে? সিএনজিতে শতশত কোটি টাকার ব্যবসা। ধাপে ধাপে সামগ্রিক পরিস্থিতি জটিল রূপ ধারণ করেছে। দায়ী কে? আসলে পুরো সিস্টেমটাই দায়ী এখানে।

Related Topics

টপ নিউজ

সিএনজি চালিত অটোরিকশা / সিএনজিচালক / সিএনজি / ঢাকা

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ছবি: সংগৃহীত
    সচিবালয় ভাতার দাবিতে অর্থ উপদেষ্টাকে অবরুদ্ধের জেরে ১৪ কর্মচারী সাময়িক বরখাস্ত
  • ফাইল ছবি/ভিডিও থেকে নেওয়া
    বিশ্বব্যাংকের সালিশি আদালতে এস আলমের করা আবেদনের বিরুদ্ধে লড়বে সরকার: গভর্নর
  • গ্রাফিক: টিবিএস
    বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব
  • ফাইল ছবি/সংগৃহীত
    নিরাপত্তা শঙ্কায় ঢাকায় আজ দুপুর থেকে বন্ধ ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র 
  • ছবি: টিবিএস
    ওসমান হাদির ওপর হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, হেলমেট ও ভুয়া নম্বর প্লেট উদ্ধার
  • কোলাজ: টিবিএস
    মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: আদালতে দায় স্বীকার করলেন গৃহকর্মী আয়েশা

Related News

  • ঢাকার সেই দিন: যখন পাড়াই ছিল আমাদের জগৎ
  • মির্জা আব্বাসের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা
  • ঢাকাসহ এশিয়ার বেশিরভাগ মেগাসিটি কেন বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে?
  • গাজীপুরে বলাকা কমিউটার ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল, ঢাকা-ময়মনসিংহ রেল যোগাযোগ বন্ধ
  • জোবাইদা রহমান কাল সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকায় পৌঁছাবেন

Most Read

1
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ

সচিবালয় ভাতার দাবিতে অর্থ উপদেষ্টাকে অবরুদ্ধের জেরে ১৪ কর্মচারী সাময়িক বরখাস্ত

2
ফাইল ছবি/ভিডিও থেকে নেওয়া
বাংলাদেশ

বিশ্বব্যাংকের সালিশি আদালতে এস আলমের করা আবেদনের বিরুদ্ধে লড়বে সরকার: গভর্নর

3
গ্রাফিক: টিবিএস
বাংলাদেশ

বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব

4
ফাইল ছবি/সংগৃহীত
বাংলাদেশ

নিরাপত্তা শঙ্কায় ঢাকায় আজ দুপুর থেকে বন্ধ ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র 

5
ছবি: টিবিএস
বাংলাদেশ

ওসমান হাদির ওপর হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, হেলমেট ও ভুয়া নম্বর প্লেট উদ্ধার

6
কোলাজ: টিবিএস
বাংলাদেশ

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: আদালতে দায় স্বীকার করলেন গৃহকর্মী আয়েশা

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net