Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

‘বাবুমশাই হেরিটেজ’: ঢাকায় বসে সাবেকি চালে খানাপিনা!

বাবুমশাই হেরিটেজ-এর অন্দরমহলের সাজসজ্জাও তেমনই। মাথার ওপরে ঢিমে তালে জ্বলছে নরম হলুদ আলো। দেয়ালজুড়ে লেখা গান-কবিতা। সাবেকিয়ানার তালে তালে হলদেটে দেয়ালে ঝুলছে সেকেলে সুইচবোর্ড, আবার কোথাও কোথাও আদ্যিকালের রোটারি টেলিফোন। বাবুমশাই হেরিটেজ-এর অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে কলকাতার খাবার। ডাব চিংড়ি থেকে শুরু করে চিকেন কাটলেট, ফিশ কাটলেট কিংবা লুচি-আলুর দম থেকে শুরু করে লুচি-কষা মাংস সব পাওয়া যায় এখানে। রান্নার স্বাদের ক্ষেত্রেও কলকাতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। তবে কলকাতার স্বাদের খাবার একটা বড় অনুষঙ্গ হলেও বাংলাদেশের মানুষের স্বাদের সাথে মিল রেখেই তা প্রস্তুত করা হয়।
‘বাবুমশাই হেরিটেজ’: ঢাকায় বসে সাবেকি চালে খানাপিনা!

ফিচার

সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু
14 June, 2023, 07:00 pm
Last modified: 15 June, 2023, 10:10 am

Related News

  • এবারের রমজানে রেস্তোরাঁয় সেহরি বিক্রি কমেছে
  • বাংলাদেশের সব সমস্যা গণতান্ত্রিক উপায়ে সমাধানের পক্ষে ভারত
  • বাংলাদেশি পর্যটক নেই, ফাঁকা দোকানপাট: কারও ব্যবসা বন্ধ, কেউ চিন্তিত অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে
  • “ডিঙ্গা ভাসাও সাগরে সাথীরে” … দেখা একবার, কথা বহুবার!
  • হঠাৎ সিদ্ধান্তে বিশ্ব হিন্দু পরিষদকে স্টল দিলো কলকাতা বইমেলা কর্তৃপক্ষ

‘বাবুমশাই হেরিটেজ’: ঢাকায় বসে সাবেকি চালে খানাপিনা!

বাবুমশাই হেরিটেজ-এর অন্দরমহলের সাজসজ্জাও তেমনই। মাথার ওপরে ঢিমে তালে জ্বলছে নরম হলুদ আলো। দেয়ালজুড়ে লেখা গান-কবিতা। সাবেকিয়ানার তালে তালে হলদেটে দেয়ালে ঝুলছে সেকেলে সুইচবোর্ড, আবার কোথাও কোথাও আদ্যিকালের রোটারি টেলিফোন। বাবুমশাই হেরিটেজ-এর অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে কলকাতার খাবার। ডাব চিংড়ি থেকে শুরু করে চিকেন কাটলেট, ফিশ কাটলেট কিংবা লুচি-আলুর দম থেকে শুরু করে লুচি-কষা মাংস সব পাওয়া যায় এখানে। রান্নার স্বাদের ক্ষেত্রেও কলকাতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। তবে কলকাতার স্বাদের খাবার একটা বড় অনুষঙ্গ হলেও বাংলাদেশের মানুষের স্বাদের সাথে মিল রেখেই তা প্রস্তুত করা হয়।
সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু
14 June, 2023, 07:00 pm
Last modified: 15 June, 2023, 10:10 am

শানাই বাজা আতশ জ্বালা,

ঢাক বাজাবি জোরে,

বাবুমশাই আসল তেড়ে,

হলুদ টানায় চড়ে!!

প্রাচীন কলকাতার বাবুমশাইয়ের কথা ভাবলেই চোখের সামনে কী ভেসে ওঠে? নিশ্চয়ই সুগন্ধি তেল মাখা মাঝখানে সিঁথি করে আঁচড়ানো কোনো ব্যক্তিবর্গের ছবি — যাদের চলনবলন ঠাঁটবাটই অন্যরকম। গায়ে সুগন্ধী আতর মেখে হাতে ধুতির কোঁচা কিংবা হুঁকো কিংবা হাতির ডাঁটের বাঁটওয়ালা ছড়ি নিয়ে হাঁক পেড়ে টানা রিক্সায় কিংবা ঘোড়ার গাড়িতে রাজসিক চালে চলাই তাদের নেশা। আর খাবারের সময়? বাবু হয়ে বসে পাত পেড়ে খেতে বসতেন তারা — সামনে থাকত অজস্র পদের মস্ত থালি। বাবুমশাইদের এমন হাল-হকিকত অবশ্য এখন দেখা যায় না। কিন্তু তাদের মতো আয়েশী খানাপিনা যদি চাইলেই পাওয়া যেত, তাহলে বোধহয় মন্দ হতো না। তাই ঢাকায় বাবুমশাইদের মতো খাবারের থালি অর্থাৎ কলকাতার খাবারের ছোঁয়া এনে দিতে হাজির হয়েছে 'বাবুমশাই হেরিটেজ'।

ছবি: বাবুমশাই হেরিটেজ

বাবুমশাই হেরিটেজ-এর নেপথ্যের কারিগর শাকির জামান। তার বয়স এখন সবে ২৩-এর কোঠায়। আর এই বয়সেই খুলেছেন বাবুমশাই হেরিটেজ-এর ঝাঁপি। যে ঝাঁপির একদিকে রয়েছে নান্দনিকতার ছোঁয়া, আরেকদিকে ছোটখাটো কলকাতার খাবারের মেলা। যেখানে পা দেওয়া মাত্রই পাওয়া যাবে পুরাতন কোনো নান্দনিক গৃহে প্রবেশের অনুভূতি।

ছবি: বাবুমশাই হেরিটেজ

হলুদ আলোয় সাবেকিয়ানা

বাবুমশাই হেরিটেজ-এর অন্দরমহলের সাজসজ্জাও তেমনই। মাথার ওপরে ঢিমে তালে জ্বলছে নরম হলুদ আলো। দেয়ালজুড়ে লেখা গান-কবিতা। সাবেকিয়ানার তালে তালে হলদেটে দেয়ালে ঝুলছে সেকেলে সুইচবোর্ড, আবার কোথাও কোথাও আদ্যিকালের রোটারি টেলিফোন। একখানা টাইপরাইটার যন্ত্রও খুঁজে পাবেন এখানে। একপাশে অবশ্য সেই কলকাতার টানা রিকশারও দেখা মিলবে। এই রিক্সার কোনো চালক নেই, তবে দিব্যি বসে কাটিয়ে দিতে পারবেন কিছু সময়।

ছবি: বাবুমশাই হেরিটেজ

রাজধানীর কলাবাগান বাসস্ট্যান্ডের পাশেই বাবুমশাই হেরিটেজ-এর অবস্থান। শহরের বুকে পুরাতনকে ধারণ করতেই আবির্ভাব হয়েছে বাবুমশাই হেরিটেজ-এর। এক টুকরো কলকাতাকে তুলে ধরতে কর্ণধার শাকির জামান করেছেন নানান পরিকল্পনা। ঘুরে বেড়িয়েছেন কলকাতার অলিগলিতে। আস্বাদ নিয়েছেন কলকাতার রূপ, রঙ, সংস্কৃতি ও ইতিহাসের। পরবর্তীসময়ে সেগুলোই নিয়ে তুলে এনেছেন বাবুমশাই হেরিটেজ-এর অন্দরমহলে এবং খাবারের তালিকায়।

ছবি: বাবুমশাই হেরিটেজ

ছোটবেলা থেকেই আর্ট নিয়ে ভীষণ আগ্রহ ছিল শাকিরের। তাই পড়াশোনাও করেছেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্ট (ইউল্যাব)-এ। পড়াশোনা চলাকালীনই মনের মধ্যে লালন করেছেন এমন একটি ক্যাফের স্বপ্ন, যেটি সত্যিকার অর্থেই নান্দনিকতার নিদর্শন হবে। শাকিরের মতে, তার কাছে নান্দনিকতার অর্থ কেবল পেইন্ট করা কোনো স্কুটার এক কোণে রেখে দেওয়া নয়, বরং শিল্পের ছাপ দেয়ালের প্রতিটি কোণায় ছড়িয়ে থাকাই নান্দনিকতা।

পুরোনো বাড়িতে জমে থাকা গল্প

বাংলাদেশে বিশ্বের অন্যান্য দেশের খাবারের থালি খুঁজে পাওয়া গেলেও খাঁটি কলকাতার খাবার খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিনই বটে। সেই জায়গা থেকেই শাকিরের মনে উদ্ভূত হয় কলকাতার স্বাদ বঙ্গদেশের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রবল বাসনা। ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে এ লক্ষ্যেই দুই মাসের জন্য কলকাতা চলে যান তিনি।

ছবি: বাবুমশাই হেরিটেজ

কলকাতায় পৌঁছেই শুরু করেন আনাচে-কানাচে ঘোরা। ঘুরতে ঘুরতেই চলতে থাকে গবেষণা। নানান রেস্তোরাঁয় খাবার খেয়ে প্রথমে বুঝতে চেষ্টা করেন তাদের খাবারের অভিরুচি। খাবারের স্বাদ গ্রহণ করে বোঝার চেষ্টা করেন মশলা ব্যবহারের ধরন। পাশাপাশি চলতে থাকে কলকাতার ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানাশোনা।

খাবার নিয়ে গবেষণা শেষে দেশে ফিরে শুরু হয় নতুন কর্মযজ্ঞ। এবার তিনি একা নন। সহযাত্রী তার মা রাশেদা আহমেদ। সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে শুরু থেকেই শাকিরের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছেন রাশেদা আহমেদ। মা-ছেলের যৌথ উদ্যোগে শুরু হয় বাবুমশাই হেরিটেজ-এর কাজ।

কল্পনায় আঁকা পুরাতন বাড়িতেই শাকির শুরু করতে চেয়েছিলেন তার স্বপ্নের উদ্যোগ। তাই প্রথমে শুরু করেন পুরোনো বাসা খোঁজার কাজ। নতুন ঢাকায় পলেস্তারা খসে পড়া দেয়ালের মতো পুরোনো বাড়ি খুঁজে পেতে যথেষ্ট কালক্ষেপণ করতে হয়েছে শাকিরকে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর রাজধানীর কলাবাগানে সন্ধান পান এমনই এক বাড়ির। বাড়ি খুঁজে পাওয়ার পর শুরু হয় অন্দরসজ্জার কাজ। বাবুমশাই হেরিটেজ-এর ভেতরে সাজানো অধিকাংশ ভিন্টেজ সামগ্রী শাকির জামানের নিজের বাসা থেকেই আনা। মায়ের সংগ্রহে থাকা পুরাতন টাইপরাইটার, এক জোড়া রোটারি টেলিফোন, রেডিও, ক্যামেরা প্রভৃতি দিয়েই সাজিয়েছেন বাবুমশাই হেরিটেজকে।

ছবি: বাবুমশাই হেরিটেজ

রেস্তোরাঁর সজ্জায় তারা ব্যবহার করেছেন দেশি-বিদেশি বিভিন্ন বই। নিত্য কিচিরমিচির করতে থাকা নানান রঙের রঙিন পাখিদেরও খেলতে দেখা যায় এখানে। তাছাড়া কলকাতা থেকে ফেরার সময় নিয়ে এসেছিলেন এক জোড়া কাঠের খড়ম। রেস্তোরাঁর ঝুল বারান্দাটিকে সাজানো হয়েছে বেতের চেয়ার এবং চিঠির বাক্স দিয়ে। শতরঞ্জি দিয়ে মোড়া এই বারান্দাটিকে ব্যবহার করা হয় স্মোকিং জোন হিসেবে।

বাবুমশাই হেরিটেজ-এর কোনো কোনো দেয়ালকে সাজানো হয়েছে গান কবিতার লাইন দিয়ে। কোথাও চোখে পড়বে নজরুলের লেখা কবিতা; কোথাওবা লেখা কিশোর কুমারের গাওয়া গান। সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্রের পোস্টারকেও তারা সাজানোর অনুষঙ্গ হিসেবে ব্যবহার করেছেন। তাছাড়া দেয়াল জুড়ে আঁকা বিভিন্ন চিত্রকর্ম দিয়েছে নান্দনিকতার এক অনন্য পরিচয়।

ছবি: বাবুমশাই হেরিটেজ

বাবুমশাই হেরিটেজ-এর নামের পেছনের গল্পটাও বেশ চমৎকার। শাকির বলেন, 'আমি যখন কলকাতার ইতিহাস নিয়ে ঘাঁটাঘাটি শুরু করি, তখন দেখি পুরোনো দিনে জমিদারদের বলা হতো বাবুমশাই। সেখানে আমি দেখলাম, সাধারণ মানুষের তুলনায় জমিদাররা অনেক বড় বড় থালি খেতেন। যেহেতু আমার মেনুর পদগুলো থালি আইটেম, তাই আমাদের এখানে এই থালিগুলো যারা খাচ্ছেন, তারাই বাবুমশাই। সেজন্যই এটি বাবুমশাই হেরিটেজ।'

কলকাতার খাবারের বাহার

বাবুমশাই হেরিটেজ-এর অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে কলকাতার খাবার। ডাব চিংড়ি থেকে শুরু করে চিকেন কাটলেট, ফিশ কাটলেট কিংবা লুচি-আলুর দম থেকে শুরু করে লুচি-কষা মাংস সব পাওয়া যায় এখানে। রান্নার স্বাদের ক্ষেত্রেও কলকাতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। তবে কলকাতার স্বাদের খাবার একটা বড় অনুষঙ্গ হলেও বাংলাদেশের মানুষের স্বাদের সাথে মিল রেখেই তা প্রস্তুত করা হয়।

ডাব চিংড়ি। ছবি: বাবুমশাই হেরিটেজ

গ্রাহকদের কথা ভেবে কলকাতার খাবারের পাশাপাশি বাংলাদেশি কিছু খাবারও তালিকায় রেখেছেন শাকির জামান। শাকির বলেন, 'আমাদের এখানে আমরা কলকাতার সব খাবার যুক্ত করতে করতে পারিনি। কারণ হচ্ছে, কলকাতার অনেক খাবার আছে যেগুলো আমি চাইলেও আমি বাংলাদেশে বিক্রি করতে পারব না। কারণ এগুলো আমাদের বাঙালিদের টেস্টবাডের সাথে যায় না — বিশেষ করে মেথির গন্ধ। কলকাতার অনেক খাবারে কসৌরি মেথি ব্যবহার করা হয়। তাই আমি কলকাতার কিছু খাবার এনেছি, পাশাপাশি কিছু বাংলাদেশি খাবারও রেখেছি।'

এখানে প্রতিটি খাবারের কিছু গালভরা নামও রয়েছে। বাবুমশাই মস্ত থালি, রোস্ট পোলাও মস্ত থালি, চুই ঝালের মস্ত থালি, ইলিশ মাছের মস্ত থালি, গরুর মাংসের তেহারি — বাহারি নামে ডাকা হয় খাবারগুলোকে। প্রতিটি থালির শেষ পাতে টক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত থাকে চাটনি এবং মিষ্টি হিসেবে ফিরনি।

বাবুমশাই মস্ত থালি; ছবি- বাবুমশাই হেরিটেজ

কেমন দাম খাবারের?

বাবুমশাই হেরিটেজ-এ ভরপেট খাবারের দাম ২০০ টাকা থেকে শুরু। এখানে ডাব চিংড়ির দাম ৪৫০ টাকা, চিকেন কাটলেটের দাম ২০০ টাকা ও ফিশ কাটলেটের দাম ২২০ টাকা। চিকেন কাটলেট ও ফিশ কাটলেটের সাথে পরিবেশন করা হয় সরিষার কাসুন্দি, টমেটোর সস এবং চাটনি।

এ রেস্তোরাঁয় সাধারণ মানুষের পছন্দের তালিকার শীর্ষে রয়েছে লুচি-আলুর দম এবং লুচি-কষা মাংস। এখানে লুচি আলুর দমের দাম ১৪০ টাকা। পাশাপাশি লুচি-কষা মাংসের মূল্য ধরা হয়েছে ২৯০ টাকা।

ছবি: বাবুমশাই হেরিটেজ

বাবুমশাই মস্ত থালিতে পোলাওর পাশাপাশি সাজানো থাকে ডাব চিংড়ি, কষা মাংস, লাচ্ছিসহ মোট সাত পদের খাবার। এই থালির দামই এখানে সবচেয়ে বেশি। বাবুমশাই মস্ত থালি খেতে খরচ করতে হবে ৯৯৯ টাকা। আবার চুই ঝালের মস্ত থালিতে থাকে খিচুড়ি, বেগুন ভাজা, চুই মাংস এবং শেষ পাতে ফিরনি ও চাটনি। চুই ঝালের এই থালিটির দাম ৩৯০ টাকা। খিচুড়ি, বেগুন ভাজা, ইলিশ মাছ সহ আরও চার পদ সম্বলিত ইলিশ মাছের মস্ত থালির দাম ৪০০ টাকা। লাচ্ছি, ফিরনি এবং চাটনি সমেত রোস্ট পোলাওর মস্ত থালি পাওয়া ৩১০ টাকায়। তাছাড়া কফিহাউজ স্পেশাল এগ স্যান্ডউইচ এবং গ্রিল স্যান্ডউইচের সমাহারও আছে এখানে। এগুলোর দাম যথাক্রমে ৮০ টাকা এবং ১২০ টাকা।

প্রাণ জুড়ানো পানীয় হিসেবে তালিকায় আছে লেবু পানি, লাচ্ছি ও নারকেলের পানি। লাচ্ছির অন্য কোনো নাম না দিলেও নারকেলের পানিকে তারা অভিহিত করেছেন 'নারিয়াল পানি' হিসেবে। এক গ্লাস নারিয়াল পানির দাম ২২০ টাকা এবং এক গ্লাস লাচ্ছির দাম ১২০ টাকা। তাছাড়া ভারী কিছু না খেতে চাইলে রয়েছে চা কিংবা কফি পানের সুযোগ। তাদের চা-কফির ভান্ডারে পাওয়া যাবে লেবু চা, মশলা দুধ চা, ও দুধ কফি। এই তিনটি পদের দাম যথাক্রমে ৫০ টাকা, ৮০ টাকা এবং ১২০ টাকা।

ছবি: বাবুমশাই হেরিটেজ

গ্রাহকের কাছ থেকে পাওয়া 'টিপস'!

কলকাতার খাবারকে সুস্বাদুভাবে মানুষের কাছে তুলে দেওয়ার জন্য শাকির জামান সবচেয়ে বেশি কৃতিত্ব দেন কিচেনের হর্তাকর্তা শেফ জাহাঙ্গীরকে। শেফ জাহাঙ্গীর অতীতেও অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। শাকিরের ভাষ্যমতে, শেফ জাহাঙ্গীর তার কাছে হীরার খনি থেকে পাওয়া কোনো রত্ন। যেকোনো খাবারের রেসিপি দেওয়া হলেই তা তৎক্ষণাৎ প্রস্তুত করে ফেলতে পারেন তিনি।

ছবি: বাবুমশাই হেরিটেজ

বাবুমশাই হেরিটেজ শুরুর দিন থেকেই সাধারণ মানুষের কাছে ভীষণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তাই বেশি লোকবল নিয়ে কাজ করার সুযোগ শাকির জামান পাননি। শাকিরের মা রাশেদা আহমেদ, শেফ ও অন্যান্য স্টাফসহ সর্বমোট ছয়জন একনাগাড়ে গ্রাহকদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। শাকিরও এক্ষেত্রে থেমে নেই। জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ — সবেতেই থাকতে হচ্ছে তাকে। শাকির বলেন, 'আমি কিন্তু ওয়েটারের কাজও করছি। আমি খাবার পরিবেশন করছি, অর্ডার নিচ্ছি; আবার কিচেনে গিয়ে আমাকে থালাবাসনও ধুতে হচ্ছে।'

মজার অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে হাসতে হাসতে শাকির জানান, খাবার অর্ডার নেওয়া ও পরিবেশন করায় অনেকে তাকে ওয়েটার ভেবে খাবার শেষে টিপসও দিয়েছেন। শাকিরের কাছে এটা গ্রাহকের ভালোবাসা। এই ভালোবাসাকে প্রতি মুহূর্তে উষ্ণভাবেই গ্রহণ করেন তিনি।

গ্রাহকদের নিয়েও ভীষণ খুশি শাকির জামান। ৪২ আসন দিয়ে প্রস্তুতকৃত বাবুমশাই হেরিটেজ-এ প্রায় প্রতিদিনই দেখতে পাওয়া যায় উপচে পড়া ভীড়। চাহিদামতো আসন না পাওয়ার আগ পর্যন্ত অনেক গ্রাহকই অপেক্ষার প্রহর গোনেন দাঁড়িয়ে থেকে। গ্রাহকদের নিয়ে শাকির বলেন, 'প্রতিদিনই দেখা যায়, কোনো না কোনো কাস্টমার দুই থেকে তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকছে। এটা আমি খুব গর্ব করে বলতে পারি যে বাবুমশাই এর প্রতিটি কাস্টমার ভীষণ আন্ডারস্ট্যান্ডিং। উনারা বোঝেন পরিস্থিতি। উনারা বলেন যে আমরা আছি। এর থেকে বেশি চাওয়া আমার মনে হয় না আর কিছু আছে।'

ছবি: বাবুমশাই হেরিটেজ

প্রতিদিনের টাটকা বাজার

গড়ে প্রতিদিনই পূর্বদিনের তুলনায় ১০০ জন করে গ্রাহক বাড়ছে বাবুমশাই হেরিটেজ-এ। প্রতিদিনের বাজার প্রতিদিনই করা হয় এখানে। টাটকা মাছ ও শাকসবজি পেতে প্রতিদিন ভোর চারটার মধ্যে শাকির জামান পৌঁছে যান কারওয়ানবাজারে। সেখান থেকে নিজ হাতেই দেখেশুনে প্রতিদিনের চিংড়ি বা ইলিশ মাছ কেনেন। বাবুমশাই হেরিটেজ-এ পুরাতন মাছ বা সংরক্ষণাগারে হিমায়িত মাছ সাধারণত ব্যবহার করা হয় না। ডাব চিংড়ি বা ইলিশের থালিতে প্রতিবার দেওয়া হয় টাটকা মাছ। প্রতিদিন সকাল ১০টার মধ্যে বাজার পৌঁছে যায় বাবুমশাই হেরিটেজ-এর রান্নাঘরে। অতঃপর দুপুর দেড়টার মধ্যে সব রান্না প্রস্তুত হয়ে যায়। সবশেষে দুপুর দুইটায় পরিবেশন করা হয় গরম গরম খাবার।

ছবি: বাবুমশাই হেরিটেজ

বাবুমশাই হেরিটেজ-এ খাবারের বাইরেও ক্রাফটিংয়ের আলাদা একটি অংশ রয়েছে। মূলত সেটির তত্ত্বাবধান করেন রাশেদা আহমেদ। সেখানে শাড়ি, জামা, ফতুয়া, গয়না প্রভৃতি পাওয়া যায়।

চলতি বছরে মে মাসের শেষের দিকে চালু হয়েছে বাবুমশাই হেরিটেজ। প্রতিদিন দুপুর দুইটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত খোলা থাকে রেস্তোরাঁটি। তবে অদূর ভবিষ্যতে সকাল থেকেই গ্রাহকদের সেবা দেওয়ার ইচ্ছা রয়েছে শাকির জামানের।

ছবি: বাবুমশাই হেরিটেজ

খুলতে চান নতুন শাখা

বাবুমশাই হেরিটেজ সাধারণত দুপুর দেড়টা থেকে খুললেও সকাল ১১টা থেকেই সাধারণ মানুষকে ভীড় জমাতে দেখা যায় এখানে। যার জন্য নির্ধারিত সময়ের আগেই আসন পূর্ণ হয়ে যায়। নতুন হিসেবে স্থান সংকটের কিছুটা সমস্যাও তারা অনুভব করেন। বর্তমানে স্থান সংকুলান ও লোকবল কম থাকায় অনেকসময় খাবার পরিবেশনে কিছুটা দেরি হয়; তবুও গ্রাহকেরা তা মানিয়ে নেন। যার জন্য গ্রাহকদের প্রতিও ভীষণভাবে কৃতজ্ঞ তারা। অদূর ভবিষ্যতে এমন সমস্যা থাকবে না বলেই বিশ্বাস তাদের।

ছবি: বাবুমশাই হেরিটেজ

বাবুমশাই হেরিটেজ নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা বলতে গিয়ে শাকির বলেন, 'বড় করার ইচ্ছা তো আমার আছে। এই রেস্টুরেন্টটি আমি গিফট করলাম ধানমণ্ডিবাসীদের। বনানীবাসীদেরকেও এমন আরেকটা রেস্টুরেন্ট উপহার দিতে হবে। যাতে ওই এলাকার মানুষও এমন অভিজ্ঞতা নিতে পারে।'

ছোটবেলা থেকেই নিজের লক্ষ্যে সর্বদা অটল থেকে কাজ করেছেন শাকির জামান। চাকরি করবেন না বরং নিজেই আলাদা একটি জায়গা প্রস্তুত করবেন — এমন চেষ্টাও ক্ষুদে বয়স থেকেই ছিল। তাই বাবুমশাই হেরিটেজকে ব্যবসায়ের চেয়েও ব্র্যান্ড হিসেবে প্রস্তুত করতে চান তিনি। তৈরি করতে চান বাবুমশাই হেরিটেজ-এর একটি স্বতন্ত্র পরিচয়।

Related Topics

টপ নিউজ

বাবুমশাই হেরিটেজ / রেস্তোরাঁ / ঐতিহ্য / বাঙালি খাবার / কলকাতা

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বিশেষ প্রণোদনা, পাবেন জুলাই থেকে
  • সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা বাড়ানোর ঘোষণা অর্থ উপদেষ্টার
  • এখন থেকে বছরে একবারের বেশি ব্যাগেজ রুলসের সুবিধায় স্বর্ণ আনা যাবে না
  • নোবেল পুরস্কারসহ ৯ ধরনের পুরস্কারের আয়ে দিতে হবে না কর
  • যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক চুক্তি প্রস্তাবে ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অনুমতি!
  • যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে, যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে

Related News

  • এবারের রমজানে রেস্তোরাঁয় সেহরি বিক্রি কমেছে
  • বাংলাদেশের সব সমস্যা গণতান্ত্রিক উপায়ে সমাধানের পক্ষে ভারত
  • বাংলাদেশি পর্যটক নেই, ফাঁকা দোকানপাট: কারও ব্যবসা বন্ধ, কেউ চিন্তিত অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে
  • “ডিঙ্গা ভাসাও সাগরে সাথীরে” … দেখা একবার, কথা বহুবার!
  • হঠাৎ সিদ্ধান্তে বিশ্ব হিন্দু পরিষদকে স্টল দিলো কলকাতা বইমেলা কর্তৃপক্ষ

Most Read

1
অর্থনীতি

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বিশেষ প্রণোদনা, পাবেন জুলাই থেকে

2
অর্থনীতি

সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা বাড়ানোর ঘোষণা অর্থ উপদেষ্টার

3
অর্থনীতি

এখন থেকে বছরে একবারের বেশি ব্যাগেজ রুলসের সুবিধায় স্বর্ণ আনা যাবে না

4
বাংলাদেশ

নোবেল পুরস্কারসহ ৯ ধরনের পুরস্কারের আয়ে দিতে হবে না কর

5
আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক চুক্তি প্রস্তাবে ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অনুমতি!

6
অর্থনীতি

যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে, যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে

The Business Standard
Top

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net

Copyright © 2022 THE BUSINESS STANDARD All rights reserved. Technical Partner: RSI Lab