Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Sunday
December 14, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
SUNDAY, DECEMBER 14, 2025
ইয়েভগেনি প্রিগোজিন: সেন্ট পিটার্সবার্গের হটডগ বিক্রেতা থেকে পুতিনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহকারী

ফিচার

শন ওয়াকার ও জটর সয়্যার, দ্য গার্ডিয়ান
24 August, 2023, 01:15 pm
Last modified: 24 August, 2023, 01:55 pm

Related News

  • আখমত: ইউক্রেনে ওয়াগনারের স্থান দখলে নেওয়া রুশ ছায়া বাহিনী
  • রাশিয়ার জন্য ওয়াগনারের নতুন ভূমিকা কী হবে, জানালেন কমান্ডার
  • ওয়াগনারের মক্কেলদের এবার নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে কাজ করতে হবে
  • জেনেটিক পরীক্ষায় প্রিগোজিনের মৃত্যু নিশ্চিত করল মস্কো
  • ওয়াগনারকে অবশ্যই রাশিয়ার প্রতি আনুগত্যের শপথ নিতে হবে: পুতিন

ইয়েভগেনি প্রিগোজিন: সেন্ট পিটার্সবার্গের হটডগ বিক্রেতা থেকে পুতিনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহকারী

যৌবনের এক দশক কেটেছে কারাগারে, ডাকাতি অপরাধে। সেখান থেকে বেরিয়ে হয়েছেন হটডগ বিক্রেতা। পরে করেছেন খাবার সরবরাহের কাজ। সেই তিনিই প্রতিষ্ঠা করে ফেললেন দুর্ধর্ষ ভাড়াটে যোদ্ধাদের গ্রুপ ওয়াগনার। সেই যোদ্ধাদল নিয়েই বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন ঘনিষ্ঠ মিত্র পুতিনের বিরুদ্ধে। বিচিত্র তার জীবন।
শন ওয়াকার ও জটর সয়্যার, দ্য গার্ডিয়ান
24 August, 2023, 01:15 pm
Last modified: 24 August, 2023, 01:55 pm
ইয়েভজেনি প্রিগোজিন। ছবি: মিখাইল সভেতলভ

২০১৪ সালের গ্রীষ্ম। মস্কভা নদীর তীরবর্তী রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর। পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়ার প্রথম কাভার্ট আক্রমণের চূড়ান্ত মুহূর্তে রাশিয়ার একদল উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জড়ো হয়েছেন সেখানে।

এই কর্মকর্তাদের জড়ো হওয়ার উদ্দেশ্য ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের সাথে দেখা করা। উপস্থিত রুশ কর্মকর্তারা ভারী গলার টাকমাথার মধ্যবয়সী ব্যক্তি প্রিগোজিনকে চেনেন সেনাবাহিনীর ক্যাটারিংয়ের দায়িত্বে থাকা একজন সাধারণ ব্যক্তি হিসেবে।

তবে সেদিন প্রিগোজিনের দাবি ছিল অন্যরকম। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে তিনি একখণ্ড জমি চাইলেন। কারণ? ওই জমি তিনি 'স্বেচ্ছাসেবকদের' প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজে ব্যবহার করবেন। রুশ সেনাবাহিনীর সাথে ওই প্রশিক্ষকদের সরাসরি সম্পর্ক থাকবে না, তবে তাদের রাশিয়ার অন্যান্য যুদ্ধের কাজে ব্যবহার করা যাবে।

মন্ত্রণালয়ের অনেকের কাছেই প্রিগোজিনের অনুরোধ ভালো লাগেনি। তবে তিনি স্পষ্ট করে আগেই বলেছিলেন, এটা কোনো সাধারণ অনুরোধ নয়। প্রিগোজিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের বলেন, "আদেশগুলো 'পাপা'র কাছ থেকে এসেছে।" এখানে প্রিগোজিনের 'পাপা' আর কেউ নন, স্বয়ং ভ্লাদিমির পুতিন। পুতিনের ডাকনাম ব্যবহার করে তিনি রাষ্ট্রপতির সাথে তার ঘনিষ্ঠতার দিকে ইঙ্গিত করেন। 

বৈঠকে পরবর্তীতে কী হয়েছিল, তা এতদিন কোনো গণমাধ্যমেই উঠে আসেনি। তবে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রাক্তন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, যিনি ওই আলোচনায় সরাসরি যুক্ত ছিলেন, অবশেষে এ ব্যাপারে মুখ খুলেছেন। তিনি জানান, 'তখন আমি এই প্রকল্প নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাইনি।'

প্রকৃতপক্ষে সেদিন যে সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছিল, তা রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতি এবং রাশিয়ার সামরিক অভিযানের ওপর বিশাল প্রভাব ফেলে। প্রিগোজিনের 'স্বেচ্ছাসেবক' বা চুক্তিবদ্ধ যোদ্ধারা পরবর্তীতে পরিচিত হয় ওয়াগনার গ্রুপ নামে এবং তাদেরকে যুদ্ধ করতে দেখা যায় ইউক্রেন, সিরিয়াসহ বহু আফ্রিকান দেশে।

পিএমসি ওয়াগনার সেন্টার, সেন্ট পিটার্সবার্গে। ছবি: রয়টার্স

গত বছর পুতিনের ইউক্রেনে সর্বাত্মক আগ্রাসন চালানোর সিদ্ধান্তের পর থেকে ওয়াগনার গ্রুপ ফের রাশিয়ার প্রতিবেশী দেশটিতে সরাসরি কাজ শুরু করেছে। পশ্চিমা গোয়েন্দাদের ধারণা, ওয়াগনার গ্রুপের ৫০ হাজার সদস্য সরাসরি ইউক্রেনে যুদ্ধ করছে। এছাড়া এ দলে রাশিয়ার কারাগার থেকে নিয়োগ করা কয়েক হাজার প্রাক্তন বন্দীও রয়েছে, যাদেরকে প্রিগোজিন নিজে বাচাই করে নিয়োগ দিয়েছেন।

জানুয়ারি মাসের শুরুর দিকে প্রিগোজিনের সৈন্যরা ইউক্রেনের সোলেদার শহর দখল করে নেওয়ার পর প্রিগোজিন তার 'ওয়াগনার গ্রুপ'কে 'বিশ্বের সবচেয়ে অভিজ্ঞ সেনাদল' হিসেবে প্রশংসা করে একটি ভিডিওবার্তা প্রকাশ করেন। সোলেদারের জয় ছিল গত গ্রীষ্মের পর ইউক্রেনের মাটিতে রাশিয়ার প্রথম বড় জয়।

প্রিগোজিন ইতিমধ্যেই রুশ অভিযানে নেতৃত্বদানকারী কমান্ডারদের মধ্যে নিষ্ঠুরতম কমান্ডার হিসাবে কুখ্যাতি অর্জন করেছেন। বন্দী বিনিময়ের সময় ওয়াগনার গ্রুপের একজন সদস্যকে নিজেদের দলে টেনে নেয় ইউক্রেনীয়রা। তখন ওয়াগনার গ্রুপ ছেড়ে যাওয়ার মতো 'দেশদ্রোহী' কাজ করায় তাকে হাতুড়ির ঘা মেরে হত্যা করার ভিডিও প্রচার করার সময় প্রিগোজিন বলেন, 'একটি কুকুরের মৃত্যু হয়েছে একটি কুকুরের মতোই।'

প্রিগোজিনের কাছে এই নিবন্ধের জন্য মন্তব্য করার অনুরোধ করা হলেও তিনি কোনো জবাব দেননি। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে গোপনে কাজ করার পর তিনি স্পষ্টতই পুতিনের যুদ্ধ কমান্ডারদের মধ্যে অন্যতম শক্তিশালী, এবং সর্বাধিক আলোচিত সদস্য হিসাবে পাওয়া স্পটলাইট উপভোগ করছেন। এক দশক জেলে কাটানোর পর হটডগ সেলসম্যান হিসেবে কাজ করা প্রিগোজিনের মতো এরকম চূড়ান্ত সাফল্য আর কয়জনের হতে পারে? 

দ্য গার্ডিয়ান এই প্রতিবেদনটি তৈরির জন্য প্রিগোজিনকে বহু বছর ধরে চেনেন এরকম বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বলেছে। তারা প্রিগোজিনের পুরো জীবনকে চিত্রিত করার বিনিময়ে নিজেদের নাম অপ্রকাশিত রাখার অনুরোধ করেছেন। এই কথোপকথনগুলো থেকে একজন নির্মম পরিকল্পনাকারীর চিত্র ফুটে উঠেছে, যিনি সামাজিক উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতেন এবং ওপরে ওঠার সাথে সাথে নিম্নপদস্থদের ওপর অত্যাচার করতেন।

বিদেশি পণ্ডিত ও সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ডিনারে ভ্লাদিমির পুতিনকে সাহায্য করছেন প্রিগোজিন (বাঁয়ে)। ছবি: রয়টার্স

'সে সাফল্য পাওয়ার জন্য পরিশ্রম করতে পারে, একইসাথে প্রতিভাবানও বটে। আর সে যা চায়, তা পাওয়ার জন্য মোটেই চুপ করে বসে থাকবে না,' জানান এক ব্যবসায়ী, যিনি ১৯৯০-এর দশকে প্রিগোজিনকে চিনতেন।

প্রিগোজিনকে যারা চেনেন, তাদের ধারণা: অর্থ বা ক্ষমতা কোনোটাই প্রিগোজিনের মূল উদ্দেশ্য ছিল না। অবশ্য এই দুটোর কোনোটিরই অভাব নেই তার। বরং তিনি পরিচালিত হন রোমাঞ্চ আর অন্যকে ছাপিয়ে যাওয়ার নেশা দিয়ে। প্রিগোজিন বিশ্বাস করেন, তিনি সাধারণ মানুষের পক্ষে দুর্নীতিবাজ অভিজাতদের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। তবে প্রাক্তন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা জানান, 'মনে হচ্ছে সে নিজেই তার বিশ্বাস থেকে সরে গেছে, কেবল ফলাফলই নয়।'

বছরের পর বছর ধরে প্রিগোজিন অনেক শত্রু তৈরি করেছেন। তার শত্রুদের তালিকায় আছেন প্রাক্তন ব্যবসায়িক অংশীদাররা, যারা নিজেদের প্রতারিত মনে করেন; সেনাবাহিনীর জেনারেলরা, যাদের তিনি ডেস্কবাউন্ড আমলা হিসেবে সমালোচনা করেছেন; এবং শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তারা, যাদের আশঙ্কা, তিনি রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করার উচ্চাকাঙ্ক্ষা পোষণ করেন।

কিন্তু এখনও পর্যন্ত প্রিগোজিন তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমর্থকের সুদৃষ্টি ধরে রেখেছেন, যাকে তিনি ডাকেন 'পাপা' বলে।

পুতিনের নয় বছর পর ১৯৬১ সালে লেনিনগ্রাদে (বর্তমান সেন্ট পিটার্সবার্গ) জন্মগ্রহণ করেন ইয়েভজেনি প্রিগোজিন। ছোটবেলাতেই বাবাকে হারান; মা কাজ শুরু করেন এক হাসপাতালে। তরুণ প্রিগোজিনকে একটি স্পোর্টিং একাডেমিতে পাঠানো হয় স্কিইং শেখার জন্য। তবে পেশাদার ক্রীড়াবিদ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাননি। স্কুল শেষ করার পর অপরাধীদের সঙ্গে মেলামেশা শুরু করেন। ১৯৮১ সালের আদালতের নথি থেকে প্রিগোজিনের জীবনের এই গল্পের বিবরণ পাওয়া যায়।

২০২২ সালে প্রিগোজিনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ছবি: রয়টার্স

১৯৮০ সালের মার্চের এক সন্ধ্যায়, ব্রেজনেভের শাসনামলের শেষভাগে ১৮ বছর বয়সী প্রিগোজিন আর তিন বন্ধু মধ্যরাতে সেন্ট পিটার্সবার্গের এক ক্যাফে থেকে বেরিয়ে অন্ধকার রাস্তায় এক মহিলাকে একা হাঁটতে দেখেন। প্রিগোজিনের এক বন্ধু তার কাছে সিগারেট চেয়ে মহিলাকে চমকে দেন। মহিলা তার পার্স খুলতে গেলেই প্রিগোজিন তার পিছনে এসে ঘাড় চেপে ধরে মহিলাকে অজ্ঞান করে ফেলেন। এরপর তার বন্ধু মহিলার জুতা খোলার পর প্রিগোজিন তার সোনার কানের দুল খুলে ফেলেন। মহিলাকে রাস্তায় শুইয়ে রেখেই চারজন ছুটে পালিয়ে যান।

কয়েক মাস ধরে এভাবে প্রিগোজিন আর তার বন্ধুরা সেন্ট পিটার্সবার্গে ডাকাতি চালিয়ে যায়। আদালতে অপরাধ প্রমাণ হওয়ার পর তাকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ব্রেজনেভের মৃত্যু এবং মিখাইল গর্বাচেভের পেরেস্ত্রোইকা না দেখেই দশ বছর কাটান জেলখানায়। ১৯৯০ সালে ছাড়া পান তিনি, এদিকে সোভিয়েত ইউনিয়নও তখন মৃত্যুশয্যায়। প্রিগোজিন ফিরে আসেন সেন্ট পিটার্সবার্গে।

শহরটি ছিল এক বিশাল রূপান্তরের অপেক্ষায়। বুদ্ধিমান আর হিংস্রদের জন্য পড়ে ছিল প্রচুর ধন-সম্পদ। তবে প্রিগোজিন আস্তে-ধীরেই নতুন জীবন আরম্ভ করেন। শুরু করেন হটডগ বিক্রির কাজ। নিজের অ্যাপার্টমেন্টের রান্নাঘরেই হটডগের সাথে মাস্টার্ড মেশানোর কাজ করতেন তিনি।

'আমরা মাসে এক হাজার ডলার উপার্জন করতাম। যা রুবলে হিসাব করলে প্রচুর টাকা ছিল। আমার মা খুব কমই টাকা গুণে শেষ করতে পারতেন,' ২০১১ সালে সেন্ট পিটার্সবার্গের এক নিউজ পোর্টাল গরদ ৮১২-কে দেওয়া একমাত্র সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন প্রিগোজিন।

কিন্তু প্রিগোজিনের লক্ষ্য ফাস্ট ফুডের চেয়েও বেশি ছিল। এবং তিনি জানতেন কীভাবে সেই যোগাযোগ তৈরি করতে হয়। নব্বইয়ের দশকে তার পরিচিত সেই ব্যবসায়ী জানান, 'প্রিগোজিন সবসময় বন্ধুত্ব পাতানোর জন্য সমাজের উঁচু স্তরের লোকজনের খোঁজ করত, আর এ কাজে সে বেশ ভালোও ছিল।'

এক ভোজে প্রিগোজিনের সঙ্গে পুতিন। ছবি: হ্যান্ডআউট

কিছুদিন পরই প্রিগোজিন এক সুপারমার্কেট চেইনের অংশীদার বনে যান। তারপর ১৯৯৫ সালে সিদ্ধান্ত নেন, ব্যবসায়িক অংশীদারদের সাথে একটি রেস্টুরেন্ট খুলবেন। এ কাজে সঙ্গে নেন ব্রিটিশ নাগরিক টনি গিয়ারকে। টনি আগে হোটেল অ্যাডমিন হিসেবে লন্ডনের স্যাভয়ে কাজ করতেন, তারপর  এখন সেন্ট পিটার্সবার্গের অন্যতম একটি বিলাসবহুল হোটেলে চাকরি নেন।

প্রিগোজিন প্রথমে সেন্ট পিটার্সবার্গের ভ্যাসিলিভস্কি দ্বীপে একটা ওয়াইনের দোকান দেন। তারপরে খোলেন তার নতুন রেস্তোরাঁ, ওল্ড কাস্টমস হাউস। পরিচালনা করার জন্য নিয়োগ দেন গিয়ারকে।

প্রথমে ওল্ড কাস্টমস হাউসে ক্লায়েন্ট আকর্ষণ করার জন্য স্ট্রিপারদের নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে শীঘ্রই রেস্তোরাঁর অসাধারণ খাবারের নামডাক চারদিকে ছড়িয়ে গেলে স্ট্রিপারদের ছাঁটাই করে দেওয়া হয়। শহরের সবচেয়ে ভালো খাওয়ার পরিবেশ হিসেবে রেস্তোরাঁটিকে তুলে ধরার দিকে মনোনিবেশ করেছিলেন গিয়ার। ফলে অল্পদিনের মধ্যেই সমাজের উঁচু তলার লোকেদের কাছে রেস্তোরাঁটি জনপ্রিয়তা পেয়ে যায়। পপ তারকা, ব্যবসায়ীসহ অনেকেই সেখানে খেতে আসতেন—যাদের মধ্যে ছিলেন সেন্ট পিটার্সবার্গের তৎকালীন মেয়র আনাতোলি সোবচাক, যিনি মাঝে মাঝে তার সহকারী ভ্লাদিমির পুতিনকে সাথে নিয়ে আসতেন।

গিয়ার, যিনি এখনও সেন্ট পিটার্সবার্গে থাকেন, গার্ডিয়ানকে সাক্ষাৎকার দিতে রাজি হননি। এর আগে অবশ্য তিনি প্রিগোজিনের প্রশংসা করলেও বস হিসেবে তাকে 'খুব কঠোর' বলেছেন। প্রতিদিন সকালে টেবিলের নিচে ধুলো দেখার জন্য একটি বিশেষ প্রজেক্টর ব্যবহার করতেন প্রিগোজিন, রুম পরিষ্কারকেরা ঠিকমতো কাজ করেছে কি না তা যাচাই করার জন্য।

১৯৯০-এর দশকে প্রিগোজিন তার জেলখাটার কথা ভুলেও উচ্চারণ করতেন না। নতুন অভিজাত গ্রাহকদের সাথে বন্ধুত্ব পাতিয়ে ফেলেন তিনি। 

ওই সময় প্রিগোজিনের পরিচিত ওই ব্যবসায়ী জানান, 'কারোর কাছ থেকে কোনোকিছুর প্রয়োজন পড়লে তিনি তাকে খুশি করার জন্য যেকোনো কিছু করে ফেলতেন। এটা অবশ্যই তার অন্যতম প্রতিভা।'

২০০৬ সালে ভিলা লিন্ডস্ট্রেমে জর্জ বুশ ও পুতিনের সঙ্গে প্রিগোজিন (বাম থেকে চতুর্থ)। ছবি: হ্যান্ডআউট

১৯৭০-এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়ন ছাড়া বিখ্যাত চেল্লোবাদক মিস্টিস্লাভ রোস্ট্রোপোভিচের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন প্রিগোজিন। ২০০১ সালে রোস্ট্রোপোভিচ যখন স্পেনের রানিকে তার সেন্ট পিটার্সবার্গের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান, তখন প্রিগোজিনকে খাবারের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০০২ সালে তার ৭৫তম জন্মদিনে রোস্ট্রোপোভিচ প্রিগোজিন আর তার স্ত্রীকে লন্ডনের এক গালা কনসার্টে আমন্ত্রণও জানান।

ততদিনে পুতিন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হয়ে গেছেন। শাসনামলের প্রথম বছরগুলোতে পুতিন প্রায়ই বিশিষ্ট বিদেশি ব্যক্তিদের সাথে দেখা করতে। মাঝেমধ্যে তাদেরকে ওল্ড কাস্টমস হাউস অথবা নিউ আইল্যান্ডে নিয়ে যেতেন। নিউ আইল্যান্ড এমন এক নৌকা, যেটিকে প্রিগোজিন ভাসমান রেস্তোরাঁ বানিয়েছিলেন।

ওই সময় পুতিনের অফিসিয়াল ছবিগুলো দেখলে ব্যাকগ্রাউন্ডে প্রায়ই প্রিগোজিনের হাস্যোজ্জ্বল চেহারা চোখে পড়বে। পুতিন যখন জর্জ বুশের সাথে খাবার খাচ্ছেন, তখন টেবিলের পেছনে প্রিগোজিনকে দেখা যাবে। সেন্ট পিটার্সবার্গের হার্মিটেজ জাদুঘরে প্রিন্স চার্লসকে দেওয়া অভ্যর্থনায় প্রিন্স চার্লসের পেছনে তাকে ঘুরতে দেখা যাবে।

প্রিগোজিনের এই লাইমলাইটে আসার প্রবণতা রুশ রাষ্ট্রপতির সাথে তার সম্পর্কের সূচনা ঘটায়, যা অপ্রত্যাশিত মোড় নেয়। 

১৯৯০-এর দশকেই প্রিগোজিন কনকর্ড নামে এক প্রতিষ্ঠান খুলে বসেন, যার লক্ষ্য বড় বড় সরকারি ইভেন্টগুলোতে খাবার সরবরাহ করার টেন্ডার হাতে পাওয়া। এর পরবর্তী ধাপ ছিল বিশাল বিশাল সরকারি প্রকল্পে খাবার সরবরাহের চুক্তি হাতিয়ে নেওয়া। ২০১২ সালে তিনি মস্কোর স্কুলগুলোতে খাদ্য সরবরাহের জন্য ১০.৫ বিলিয়ন রুবল বা ২০০ মিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশি চুক্তির দায়িত্ব পান। 

রাশিয়া যখন ২০১৪ সালের মার্চ মাসে ক্রিমিয়া দখল করে নেয় এবং এর পরেই পূর্ব ইউক্রেনে সামরিক হস্তক্ষেপ করা শুরু করে, তখন প্রিগোজিনের সামনে নতুন সুযোগের দরজা খুলে যায়। যদিও পুতিন এই দুটি ঘটনায়ই রুশ সেনাদের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন।

২০০৩ সালে এক অনুষ্ঠানে প্রিন্স চার্লসের পেছনে প্রিগোজিন। ছবি: গার্ডিয়ান

এই অস্বীকারকে কীভাবে আরও কিছুটা যুক্তিযুক্ত করা যায়, তা নিয়ে ভাবতে শুরু করেছিল ক্রেমলিন। বেসরকারি সামরিক কোম্পানিগুলো রাশিয়ায় অবৈধ থাকলেও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামনে বেশ কিছু বিকল্প গ্রুপের তালিকা হাজির করা হয়, যারা এই কাজ করবে। ভবিষ্যতে সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় হয়ে ওঠে প্রিগোজিনের ওয়াগনার গ্রুপ।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই প্রাক্তন কর্মকর্তা জানান, "আমি মনে করি প্রিগোজিন নিজেই এটি পুতিনের কাছে তুলে ধরেছিলেন এবং পুতিনও সম্মতি জানিয়েছিলেন। ওয়াগনার শুরু থেকেই রাশিয়ার জিআরইউ সামরিক গোয়েন্দাদের একটি প্রকল্প ছিল বলে মনে করি না আমি। জিআরইউ-এর কিছু লোক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করতে পারে, তবে শেষ পর্যন্ত এটি প্রিগোজিনের নিজের প্রকল্পই ছিল।"

মন্ত্রণালয় প্রিগোজিনকে কাজ করার জন্য দক্ষিণ রাশিয়ার মোলকিনোতে জমি দেয়। প্রিগোজিনের ভাড়াটে সেনা সংস্থাগুলো চিলড্রেনস ক্যাম্পের ছদ্মবেশে যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ক্যাম্প গড়ে তোলে। সাবেক ওই কর্মকর্তা বলেন, "প্রিগোজিন একটি গন্ধশোঁকা কুকুরের মতো, সবসময় টাকার খোঁজ করতেন। আর এই প্রকল্প তার এই ক্ষুধা আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল।"

ফোর্বস রাশিয়ার তথ্যানুযায়ী, ২০১৪ সালের বসন্তে প্রিগোজিনের কনকর্ড গ্রুপ এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রাশিয়ার সামরিক শহরগুলোর বিশাল নেটওয়ার্কে খাবার সরবরাহের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা চালিয়েছিল। প্রকল্পটি শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত না হলেও ২০১৫ সালের মধ্যে তার কোম্পানি সেনাবাহিনীর খাবার সরবরাহের জন্য ৯২ বিলিয়ন রুবল বা ১ বিলিয়ন পাউন্ডের চুক্তি বাগিয়ে নেয়।

প্রিগোজিনের এই ত্বরিত উত্থান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বেশ কিছু কর্মকর্তাকে বিরক্ত করে তোলে। তার কাজের ক্ষেত্র আরও বাড়তে থাকলে এই উত্তেজনা পরবর্তী বছরগুলোতে আরও বাড়তে থাকে। ২০১৫ সালের শেষের দিকে প্রিগোজিনের ক্যারিয়ারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হাজির হয়, যখন পুতিন বাশার আল-আসাদ সরকারকে সহায়তা করার জন্য সিরিয়ায় সামরিক হস্তক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নেন। প্রিগোজিন খাবার ও রসদ সরবরাহের চুক্তি বাগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি নিজের ওয়াগনার গ্রুপের সৈন্যও পাঠায়।

২০১৫ সালে ক্রেমলিনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ব্রাজিলের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট দিলমা রুসেফকে খাবার পরিবেশন করছেন প্রিগোজিন। ছবি: ক্রেমলিন ডটআরইউ

সিরিয়ায় ওয়াগনার গ্রুপ নিজেদেরকে শক্তিশালী যোদ্ধা গ্রুপ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। মস্কোর হস্তক্ষেপ সফল করতে গ্রুপটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সিরিয়ায় ওয়াগনার যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অসংখ্য যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ওঠে। তবে গ্রুপটি অনেক সৈন্য হারালেও উচ্চবাচ্য করেনি, কারণ আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের সেখানে থাকার কথা ছিল না।

আসল মার্সেনারিদের পাশাপাশি প্রিগোজিনের বিরুদ্ধে কিবোর্ড যোদ্ধাদেরও একটি সেনাবাহিনী গড়ে তোলার অভিযোগ আনা হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল প্রথমে রাশিয়ার অভ্যন্তরে ও বিদেশে পুতিনের রাশিয়ার পক্ষে জনমত গড়ে তোলা।

২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের বিষয়েও প্রিগোজিন এবং তার কোম্পানির বিরুদ্ধে আঙুল তোলা হয়। ডোনাল্ড ট্রাম্প-পন্থী ফেসবুক ও টুইটার প্রোফাইলগুলোর নেটওয়ার্কের পেছনে রাশিয়ার হাত ছিল বলে উঠে আসে রবার্ট ম্যুলারের তদন্তে। নকল প্রোফাইলগুলোর মাধ্যমে ট্রাম্প-পন্থী কনটেন্ট ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি সমাবেশের জন্য সরঞ্জাম কেনার জন্যও আমেরিকানদেরকে অর্থ প্রদান করেছে তারা।

এই মুহূর্ত পর্যন্তও প্রিগোজিন একেবারেই গোপন চরিত্র ছিলেন। তবে তিনি তার ক্রমবর্ধমান কুখ্যাতি উপভোগ করছিলেন বলে জানা যায়।

২০১৬ সালের মে মাসে, প্রিগোজিন ৫৫ বছর বয়সে পা রাখার কয়েক দিন আগে, এক নকল আমেরিকান ফেসবুক প্রোফাইল থেকে একজন আসল আমেরিকান ব্যক্তিকে হোয়াইট হাউসের বাইরে প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়ানোর জন্য টাকা দেওয়া হয়। ওই প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, "শুভ ৫৫তম জন্মদিন, প্রিয় বস"।

মার্কিন অভিযোগ পরে তুলে নেওয়া হলেও গত নভেম্বরে নির্বাচনী হস্তক্ষেপের ব্যাপারে আনা অভিযোগ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে প্রিগোজিন এর প্রত্যুত্তর দেন ভয়াবহভাবে: "ভদ্রমহোদয়গণ, আমরা হস্তক্ষেপ করেছি, আমরা হস্তক্ষেপ করছি এবং আমরা হস্তক্ষেপ করব। 'কেয়ারফুলি, প্রিসাইসলি, সার্জিক্যালি অ্যান্ড ইন ইন আওয়ার ঔন ওয়ে', যেহেতু আমরা জানি এগুলো কীভাবে করে। আমাদের পিনপয়েন্ট অপারেশনের সময়, আমরা একসাথে কিডনি এবং লিভার দুটোই সরিয়ে ফেলব।"

রুশ কারাবন্দীদের ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিতে উদ্বুদ্ধ করার জন্য বক্তব্য দিচ্ছেন প্রিগোজিন। ছবি: টুইটার

প্রিগোজিনের ক্রমবর্ধমান পোর্টফোলিওর সাথে সাথে তাকে নিয়ে তদন্তের পরিমাণও বাড়ছিল। বিরোধীপক্ষের রাজনীতিবিদ আলেক্সেই নাভালনি প্রিগোজিনের ব্যবসায়িক কাঠামো সম্পর্কে একটি তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি প্রিগোজিনের সাথে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের চুক্তিকে দুর্নীতির মাধ্যমে পাওয়া হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়েছেন, যেগুলোর সুবাদে প্রিগোজিন বিলাসবহুল জীবন যাপন করছেন ।

নাভালনির সহযোগী লিউবভ সোবোল জানান: "তার সন্তানরা সব সময় ইনস্টাগ্রামে ছবি পোস্ট করে; যেখানে তারা তাদের প্রাইভেট জেট নিয়ে গর্ব করছে। এবং সেখান থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা হোল্ডিং কোম্পানিকে খুঁজে পাই, যেটি আমাদেরকে প্রিগোজিনের সম্পদ সম্পর্কে জানতে সাহায্য করেছে।"

সোবোল আর তার সহযোগীরা হেলিপ্যাড ও বাস্কেটবল কোর্টসহ প্রিগোজিনের প্রাসাদোপম বাড়ির ওপর দিয়ে ড্রোন ওড়ান। এরপর তাদের বাড়ির সামনেই এক লোক সোবোলের স্বামীর পায়ে সূচ ঢুকিয়ে দেন এবং তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। সোবোলও জানান যে, তিনি বাড়ি থেকে বেরোলেই গুন্ডারা প্রকাশ্যে তার পিছু নিত। তার ওপর আইনি চাপও দেওয়া হচ্ছিল। 

সোবোল জানান, "এই লোকেগুলো আসলেই প্রতিদিন আমার ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছিল। পুরোই ডাকাতদের মতো কাজ। আপনি আমার ব্যবসায় বাম হাত ঢুকিয়েছেন, তাই আমিও তা-ই করব।"

প্রিগোজিনের কার্যকলাপ নিয়ে তদন্ত করা আরও বেশ কয়েকজন রুশ সাংবাদিকও হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। ২০১৮ সালে নোভায়া গ্যাজেটা একটি তদন্ত চালানোর পর সংবাদপত্রের সম্পাদকীয় অফিসে এক ভেড়ার বিচ্ছিন্ন মাথা পাঠানো হয়। যে সাংবাদিক প্রতিবেদনটি লিখেছিলেন, তার বাড়িতে পাঠানো হয় মৃত্যুর পর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় ব্যবহার হওয়া ফুল।

সবচেয়ে অদ্ভুত বিষয় হলো, ২০১৮ সালে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে ওয়াগনার গ্রুপের কার্যকলাপ তদন্তের জন্য তিন রুশ সাংবাদিক অতর্কিত হামলায় নিহত হন। হামলাটি সুপরিকল্পিত এবং সমন্বিত বলে মনে হয়, যার সাথে ওয়াগনার গ্রুপের সাথে সংশ্লিষ্ট একজন রাশিয়ান নিরাপত্তা প্রশিক্ষকও জড়িত রয়েছেন। প্রিগোজিন অবশ্য হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা বারবার অস্বীকার করেছেন।

ততদিনে প্রিগোজিনের প্রিগোজিনের কার্যক্রম আফ্রিকার অন্তত ১০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ওসব দেশে তিনি নিরাপত্তা ও অস্ত্র প্রশিক্ষণ সেবা দেন। পাশাপাশি খনি মাইনিংসহ অন্যান্য ব্যবসা করার সুযোগ বাগিয়ে নেন।

প্রিগোজিন তার এই বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক পরিচালনা করতেন সেন্ট পিটার্সবার্গের ভ্যাসিলিভস্কি দ্বীপের এক অফিসে বসে। অফিসটা ওল্ড কাস্টমস হাউসের কাছেই, যেখানে তিনি ও টনি গিয়ার দুই দশক আগে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা শুরু করেছিলেন।

২০১৭ সালের শেষ দিকে তিন মাস প্রধান কার্যালয়ে কাটিয়েছিলেন ওয়াগনার কমান্ডার মারাত গ্যাবিদুলিন। প্রিগোজিনকে সিরিয়ার সামরিক পরিস্থিতির খবর দেওয়ার পালন করতেন তিনি। বর্তমানে গ্যাবিদুলিন ফ্রান্সে থাকেন। তিনি জানান, "প্রিগোজিন আতঙ্কের শাসন কায়েম করেছিলেন।" 

গ্যাবিদুলিন বলেন, অফিসের পরিবেশ অত্যন্ত কঠোর ছিল। প্রিগোজিন প্রায়শই কর্মীদের সাথে দুর্ব্যবহার করতেন। গালি দিয়ে অন্যদের সামনে বিব্রত করতেন।

প্রিগোজিনের কোনো অফিসিয়াল পদ ছিল না, তবু ওই সময় তিনি প্রতিরক্ষা চুক্তি-সংক্রান্ত বৈঠকে নিয়মিতই হাজির হতেন। এমনকি ২০১৮ সালের এপ্রিলে ক্রেমলিনে পুতিন ও মাদাগাস্কারের রাষ্ট্রপতি হেরি রাজাওনারিমাম্পিয়ানিনার মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেও উপস্থিত ছিলেন তিনি। টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই বৈঠকের পরেই প্রিগোজিনের সাথে যুক্ত রাজনৈতিক পরামর্শদাতাদের মাদাগাস্কারে দেখা যায়।

সেই বৈঠকের মাত্র দুই মাস পরে অস্ট্রিয়ান টেলিভিশন দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে পুতিনকে  প্রিগোজিন সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়। পুতিন তখন হেসে বলেছিলেন, "সে একটা রেস্টুরেন্ট ব্যবসা চালায়, এটাই তার কাজ; সে সেন্ট পিটার্সবার্গের এক রেস্তোরাঁর মালিক।"

তবে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনের উপর সর্বাত্মক হামলা শুরু হওয়ার পর পুতিন অবশ্য প্রিগোজিনের কার্যক্রম সম্পর্কে লুকোচুরি খেলা বন্ধ করেছেন। প্রিগোজিনকে তিনি ব্যবসায়ী ও মানবহিতৈষী জর্জ সোরোসের সঙ্গে তুলনা করেন। 

কয়েক বছর ধরে ওয়াগনারের সাথে সমস্ত সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করার পর প্রিগোজিন গত সেপ্টেম্বরে গর্বভরে ঘোষণা করেন যে, তিনিই ২০১৪ সালে গ্রুপটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। 

মূলত প্রিগোজিনের এই স্বীকারোক্তি আসে একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি এক কারাগারে বন্দীদের ইউক্রেনে যুদ্ধ করতে যাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছেন। 

প্রিগোজিন বন্দীদের বলেন যে, তারা যুদ্ধে মারাও যেতে পারে। কিন্তু যদি তারা যুদ্ধক্ষেত্রে ছয় মাস বেঁচে থাকে, তবে তাদের সম্পূর্ণ ক্ষমাসহ মুক্তি দেওয়া হবে এবং বড় অঙ্কের অর্থ প্রদান করা হবে।

প্রিগোজিনের পরিদর্শন করা একটি কারাগারের বন্দী এক সাক্ষাৎকারে বলেন, "উনি আমাদেরই একজন। উনিও বন্দী ছিলেন। আমি মনে করি এত লোক যুদ্ধে নাম লিখিয়েছে, কারণ ওরা প্রিগোজিনকে বিশ্বাস করেছে। ওরা কর্তৃপক্ষকে বিশ্বাস করে না, তবে ওরা বিশ্বাস করে প্রিগোজিন ওদেরকে মুক্তি দেবেন।"

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা মিখাইলো পোডোলিয়াক সম্প্রতি দাবি করেছেন, ওয়াগনার গ্রুপ সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ৩৮ হাজারেরও বেশি বন্দীকে নিয়োগ দিয়েছে। তাদের মধ্যে ৩০ হাজারই নিহত, আহত, বন্দী অথবা নিখোঁজ হয়েছে। তিনি ওয়াগনার গ্রুপের বিরুদ্ধে ইউক্রেনে রুশ 'গণহত্যা' চালানোর অভিযোগ তোলেন।

নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের অনেককেই একেবারে ফ্রন্টলাইনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কারণ এর মাধ্যমে প্রিগোজিন প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন যে, তার যোদ্ধারা নিয়মিত রুশ সেনাবাহিনীর চেয়ে বেশি দক্ষ। সাবেক কমান্ডার গ্যাবিদুলিন বলেন, ওয়াগনার গ্রুপের সদস্যরা আগে ছিল ভাইয়ের মতো, এখন তারা পরিণত হয়েছে একদল যুদ্ধের ক্রীতদাসে।

প্রিগোজিন ওয়াগনারের 'অতি-কঠোর শৃঙ্খলা'র প্রশংসা করেছেন। অন্যদিকে প্রাক্তন এক কমান্ডার দাবি করেছেন, আদেশ অমান্যকারীদেরকে হত্যা করাও এই শৃঙ্খলার অন্তর্ভুক্ত। আন্দ্রে মেদভেদেভ নামের একজন ওয়াগনার কমান্ডার দাবি করেছেন, তিনি জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বাখমুতের কাছে যুদ্ধ করেন। এই সময়ের মধ্যে অন্তত ১০টি হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে তিনি জানেন অথবা সরাসরি প্রত্যক্ষ করেছেন বলে দাবি করেন তিনি।

রাশিয়া থেকে নরওয়েতে পালিয়ে যাওয়ার সময় গার্ডিয়ানকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "কমান্ডাররা তাদের মাঠে নিয়ে গিয়ে সবার সামনে তাদেরকে গুলি করেন।"

তবে যেসব দণ্ডিত ব্যক্তি যুদ্ধক্ষেত্রে ছয় মাস টিকে যাবেন, তাদের জন্য অপেক্ষা করছে স্বাধীনতা ও আর্থিক পুরস্কার। প্রিগোজিন রাশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তাদের বৃত্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এদিকে এক রুশ কর্মকর্তা সম্প্রতি তো এ-ও বলেছেন যে, কিছু প্রাক্তন বন্দীকে সংসদ সদস্য করা উচিত।

প্রিগোজিন—যার যৌবনর বড় একটা সময় কেটেছে কারাগারে—এখন হাজার হাজার সহিংস অপরাধীর মুক্তি ও পুনর্বাসনের পথ প্রশস্ত করেছেন।

ইভান ক্রাস্টেভ নামের একজন রাজনৈতিক বিজ্ঞানী অভিমত দেন যে, প্রিগোজিনের এ পদ্ধতি এই যুদ্ধকালীন পরিবেশে 'পুরো রুশ জাতিকে পুনরায় সংজ্ঞায়িত করার' প্রচেষ্টার অংশ। ক্রাস্টেভ বলেন, "দেশে বন্দীদের উষ্ণতার সঙ্গে গ্রহণ করা হচ্ছে; অন্যদিকে পুতিনের কয়েকজন অলিগার্কসহ সব যুদ্ধবিরোধী অভিজাতদের বেলায় করা হচ্ছে উল্টোটা।"

অভিজাত সম্প্রদায়ের যেসব 'বিশ্বাসঘাতক' বিদেশে ছুটি কাটাচ্ছেন এবং যুদ্ধে রাশিয়া হেরে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, সম্প্রতি তাদের আক্রমণ করে ঘন ঘন বিবৃতি দিয়েছেন প্রিগোজিন। গত সপ্তাহেই তিনি দাবি করেছেন, "পুতিনের প্রশাসনে অনেকেই আছেন যারা 'আঙ্কেল স্যামের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে থাকতে চায় '।" 

ক্রাস্টেভ প্রিগোজিনকে অভিহিত করেছেন 'অভিজাত পুতিনবাদের নেতা' হিসেবে, যিনি জারের প্রতি অনুগত থেকে বাকি সবাইকে আক্রমণ করছেন।

প্রিগোজিনকে যারা চেনেন তাদের অনেকেই বলেছেন, বছরের পর বছর ধরে তিনি নিজেকে অভিজাতদের সাথে লড়াই করা নিচুসারির লোকেদের রক্ষক হিসাবে দেখেছেন। কিন্তু তিনি নিজেই যে সম্পদ অর্জন করেছেন, তার সামনে এই দাবি মানায় না। গ্যাবিদুলিন এ সম্পর্কে মন্তব্য করেন, "তিনি নিজেকে জনগণের, নিম্নবর্গের রক্ষক হিসাবে উপস্থাপন করেন। কিন্তু এটা তার ছদ্মবেশ।"

এখন অভিজাতদের প্রতি প্রিগোজিনের এই ক্রমবর্ধমান নির্লজ্জ সমালোচনা দেখে অনেকেই ভাবছেন তার উচ্চাকাঙ্ক্ষার সীমা কোথায় যেতে পারে।

রাশিয়ার রাজনৈতিক অভিজাতদের এক সূত্র জানিয়েছেন, "এফএসবি-র লোকেরা তার ওপর ক্ষুব্ধ এবং তাকে সংবিধানের জন্য হুমকি হিসাবে দেখে। তার হাতে থাকা এই বড় সামরিক গোষ্ঠীটি রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত নয় এবং যুদ্ধের পরে তারা তাদের পুরস্কার চাইবে, যার মধ্যে রাজনৈতিক ক্ষমতাও থাকবে।"

তবে প্রিগোজিন কতদূর যেতে পারে সেটি নিয়েও ভাবছেন ভাবছেন। সোলেদারে ওয়াগনার গ্রুপের বিজয় 'চুরি' করার চেষ্টা করার জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওপর প্রিগোজিনের বারবার ক্ষোভপ্রকাশ তার শক্তিপ্রকাশের চেয়ে দুর্বলতার মতোই শোনায়। সর্বোপরি, ওয়াগনার গ্রুপ তাদের লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের রসদ এবং গোয়েন্দা সহায়তার ওপর অনেকখানি নির্ভর করে। তাছাড়া পুতিনের অব্যাহত সমর্থনের তো রয়েছেই।

যে ব্যবসায়ী নব্বইয়ের দশকে প্রিগোজিনকে চিনতেন, তিনি তার পুরনো সহযোগী সম্পর্কে একটি বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন: 'প্রিগোজিনের উচ্চাকাঙ্ক্ষার কোনো অফ সুইচ নেই।'

"সে জানে যে পুরো সিস্টেমের অনেকেই তাকে ঘৃণা করে…তাই সে জানে, যদি থেমে যায়, তাহলে সে চিরজীবনের জন্য থেমে যাবে। তার হাতে আর কোনো উপায় নেই। সে এ অবস্থা থেকে ফিরে যেতে পারবে না।"

তবে পরিস্থিতি এখন বদলে গেছে। প্রিগোজিন সম্ভবত আর পুতিনের ঘনিষ্ঠ বলয়ে থাকছেন না। কারণ গতকাল শনিবারই বিদ্রোহ ঘোষণা করে ইউক্রেন সীমান্ত থেকে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর পানে যাত্রা শুরু করে ওয়াগনার গ্রুপ।

ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার হয়ে অংশ নিয়েছে ওয়াগনার। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরেই অস্ত্র সরবরাহে ঘাটতির অভিযোগ তুলে রাশিয়ার সামরিক নেতাদের নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছিলেন প্রিগোজিন। রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও সামরিক-প্রধানের সঙ্গেও প্রকাশ্য বিরোধে জড়িয়ে পড়েন তিনি। তারই চূড়ান্ত পরিণতি হিসেবে তার বিদ্রোহ ঘোষণা।

অবশ্য গতকালই ফের বিদ্রোহ বাদ দিয়ে ফিরতি পথ ধরেছে ওয়াগনার বাহিনী। বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় প্রিগোজিনের সঙ্গে রফায় এসেছে রাশিয়া। ওয়াগনারের মস্কোমুখী অগ্রগতি থামানোর বিনিময়ে বিদ্রোহীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সমঝোতায় এসেছে দুপক্ষ। প্রিগোজিন এখন বেলারুশে আছেন। তবে এ ঘটনার পর পুতিনের সঙ্গে তার সম্পর্কের যে অবনতি হবে, সে কথা বলা বাহুল্য।


  • সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Related Topics

টপ নিউজ

প্রিগোজিন / ওয়াগনার গ্রুপ

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ছবি: ডিএমপি
    হাদি হত্যাচেষ্টায় জড়িত ফয়সালকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা সরকারের
  • এভারকেয়ার হসপিটাল। ফাইল ছবি: বিজনেস ওয়্যার
    হাদির অবস্থা ‘অত্যন্ত আশঙ্কাজনক’, মস্তিষ্কে মারাত্মক ক্ষতি, চলছে ভেন্টিলেশন: মেডিকেল বোর্ড
  • ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-টু’ অবিলম্বে চালু, এমপি প্রার্থীরা পাবেন অস্ত্রের লাইসেন্স: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
    ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-টু’ অবিলম্বে চালু, এমপি প্রার্থীরা পাবেন অস্ত্রের লাইসেন্স: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • ৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধি ও দীর্ঘসূত্রতার কবলে চট্টগ্রামের ছয় মেগা প্রকল্প
    ৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধি ও দীর্ঘসূত্রতার কবলে চট্টগ্রামের ছয় মেগা প্রকল্প
  • ছবি: ডিএমপি
    হাদির ওপর হামলা: সন্দেহভাজন ব্যক্তির ছবি প্রকাশ, তথ্য চায় পুলিশ
  • ছবি: সংগৃহীত
    হাদিকে গুলি করা সন্ত্রাসীরা শনাক্ত, যেকোনো সময় গ্রেপ্তার করা হবে: ডিএমপি কমিশনার

Related News

  • আখমত: ইউক্রেনে ওয়াগনারের স্থান দখলে নেওয়া রুশ ছায়া বাহিনী
  • রাশিয়ার জন্য ওয়াগনারের নতুন ভূমিকা কী হবে, জানালেন কমান্ডার
  • ওয়াগনারের মক্কেলদের এবার নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে কাজ করতে হবে
  • জেনেটিক পরীক্ষায় প্রিগোজিনের মৃত্যু নিশ্চিত করল মস্কো
  • ওয়াগনারকে অবশ্যই রাশিয়ার প্রতি আনুগত্যের শপথ নিতে হবে: পুতিন

Most Read

1
ছবি: ডিএমপি
বাংলাদেশ

হাদি হত্যাচেষ্টায় জড়িত ফয়সালকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা সরকারের

2
এভারকেয়ার হসপিটাল। ফাইল ছবি: বিজনেস ওয়্যার
বাংলাদেশ

হাদির অবস্থা ‘অত্যন্ত আশঙ্কাজনক’, মস্তিষ্কে মারাত্মক ক্ষতি, চলছে ভেন্টিলেশন: মেডিকেল বোর্ড

3
‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-টু’ অবিলম্বে চালু, এমপি প্রার্থীরা পাবেন অস্ত্রের লাইসেন্স: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বাংলাদেশ

‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-টু’ অবিলম্বে চালু, এমপি প্রার্থীরা পাবেন অস্ত্রের লাইসেন্স: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

4
৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধি ও দীর্ঘসূত্রতার কবলে চট্টগ্রামের ছয় মেগা প্রকল্প
বাংলাদেশ

৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধি ও দীর্ঘসূত্রতার কবলে চট্টগ্রামের ছয় মেগা প্রকল্প

5
ছবি: ডিএমপি
বাংলাদেশ

হাদির ওপর হামলা: সন্দেহভাজন ব্যক্তির ছবি প্রকাশ, তথ্য চায় পুলিশ

6
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ

হাদিকে গুলি করা সন্ত্রাসীরা শনাক্ত, যেকোনো সময় গ্রেপ্তার করা হবে: ডিএমপি কমিশনার

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net