Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

নিক্লাওস গ্রেবার: বাংলাদেশের স্থাপত্যকে ইউরোপে ছড়িয়ে দেওয়ার জাদুকর!

পেশায় স্থপতি। থাকেন সুইজারল্যান্ডে। আপাদমস্তক কেতাদুরস্ত সাহেব। ২০১২ সালে প্রথম এ বঙ্গে বেড়াতে এসে নজরে পড়ে সংসদ ভবন। সে সময় লুই আই কানের পরম মমতায় সৃষ্ট সংসদ ভবনের স্থাপত্য সৌন্দর্য দেখে অবাক বনে যান। বাংলার স্থাপত্যের মোহময়তার আঁচড় সেদিনই প্রথম তার মনে দাগ কেটেছিল। পরের দশ বছরে বাংলাদেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা নানা স্থাপত্যের প্রতি মুগ্ধতায় একাধিকবার সুদূর সুইজারল্যান্ড থেকে ছুটে এসেছেন এই বঙ্গে।
নিক্লাওস গ্রেবার: বাংলাদেশের স্থাপত্যকে ইউরোপে ছড়িয়ে দেওয়ার জাদুকর!

ফিচার

সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু
08 January, 2023, 10:00 pm
Last modified: 08 January, 2023, 10:00 pm

Related News

  • অতীতের রাজধানী: কেমন ছিল ঢাকার কার্জন হল, মেডিকেল কলেজ, মিটফোর্ড, ভুলভুলাইয়া বা দিলখুশা…
  • কিউএস ওয়ার্ল্ড র‍্যাঙ্কিং ২০২৪ অনুযায়ী স্থাপত্যবিদ্যায় সেরা ৫০ বিশ্ববিদ্যালয়
  • মানুষের মতোই মৌমাছিও পারে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধরে রাখতে
  • বইমেলার স্টল ও প্যাভিলিয়নের কুশীলবেরা
  • এই সব বাড়ি এখন শুধুই ছবি

নিক্লাওস গ্রেবার: বাংলাদেশের স্থাপত্যকে ইউরোপে ছড়িয়ে দেওয়ার জাদুকর!

পেশায় স্থপতি। থাকেন সুইজারল্যান্ডে। আপাদমস্তক কেতাদুরস্ত সাহেব। ২০১২ সালে প্রথম এ বঙ্গে বেড়াতে এসে নজরে পড়ে সংসদ ভবন। সে সময় লুই আই কানের পরম মমতায় সৃষ্ট সংসদ ভবনের স্থাপত্য সৌন্দর্য দেখে অবাক বনে যান। বাংলার স্থাপত্যের মোহময়তার আঁচড় সেদিনই প্রথম তার মনে দাগ কেটেছিল। পরের দশ বছরে বাংলাদেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা নানা স্থাপত্যের প্রতি মুগ্ধতায় একাধিকবার সুদূর সুইজারল্যান্ড থেকে ছুটে এসেছেন এই বঙ্গে।
সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু
08 January, 2023, 10:00 pm
Last modified: 08 January, 2023, 10:00 pm

নাম নিক্লাওস গ্রেবার। পেশায় স্থপতি। থাকেন সুইজারল্যান্ডে। আপাদমস্তক কেতাদুরস্ত সাহেব। ২০১২ সালে প্রথম এ বঙ্গে বেড়াতে এসে নজরে পড়ে সংসদ ভবন। সে সময় লুই আই কানের পরম মমতায় সৃষ্ট সংসদ ভবনের স্থাপত্য সৌন্দর্য দেখে অবাক বনে যান তিনি। দেশীয় স্থপতিদের সাথে ঘুরে দেখেন পুরো ভবন। বাংলার স্থাপত্যের মোহময়তার আঁচড় সেদিনই প্রথম গ্রেবার সাহেবের মনে দাগ কেটেছিল।

মাঝে কেটে গেছে দশটি বছর। এর মধ্যে বাংলাদেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা নানা স্থাপত্যের প্রতি মুগ্ধতায় একাধিকবার সুদূর সুইজারল্যান্ড থেকে ছুটে এসেছেন এই বঙ্গে। সন্ধান করে গেছেন বাংলাদেশের স্থাপত্যকেন্দ্রিক বইপত্র। কিন্তু শুরুর দিকে পর্যাপ্ত বই কিংবা প্রকাশনার সন্ধান না পাওয়ায় কিঞ্চিৎ হতাশ হতে হয়েছিল তাকে। তবে হাল ছাড়েননি।

নিজ উদ্যোগেই আলাপ করেছেন বহু দেশীয় স্থপতিদের সাথে। বছরের পর বছর বঙ্গীয় স্থাপত্য নিয়ে গবেষণার পর তা উন্মোচন করেছেন বিশ্ববাসীর কাছে। লিখেছেন বই। এমনকি বাংলাদেশের স্থাপত্য পেশা চর্চার পথিকৃৎ মাজহারুল ইসলামের কাজকেও বিশ্বের কাছে পরিচিত করিয়েছেন নিক্লাওস গ্রেবার সাহেব।

আমাদের গল্পের নেপথ্যের নায়ক নিক্লাওস গ্রেবার। নিজের হাতে বাংলাদেশের স্থাপত্য বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিয়েছেন উদ্যোগ। শুরু করেছেন প্রদর্শনী, নাম দিয়েছেন 'বেঙ্গল স্ট্রিম: দ্য ভাইব্র্যান্ট আর্কিটেকচার সিন অভ বাংলাদেশ'। যার উদ্দেশ্য বাংলাদেশের সমকালীন স্থাপত্যকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরা। 

ছবি: মুমিত এম

বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের স্থাপত্য

এই উদ্যোগে নিক্লাওস গ্রেবারকে সঙ্গত দিয়েছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন ও সুইস আর্কিটেকচার জাদুঘর। তবে প্রদর্শনীর জন্য বাঙালি স্থপতিদের কাজ বাছার দায়িত্ব পালন করেছিলেন স্বয়ং গ্রেবার সাহেব। একইসাথে প্রদর্শনীর প্রধান কিউরেটর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। তার সঙ্গে ছিলেন সুইস জাদুঘরের আন্দ্রেয়াস রুবি ও ভিভিয়ানা ইওহেনসব্যাগার।

২০১৬ সালের আগপর্যন্ত সৃষ্ট বাংলাদেশের স্থাপত্যগুলো ঠাঁই পেয়েছে এই প্রদর্শনীতে। ঐতিহাসিক, আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিধি থেকে শুরু করে আধুনিক সময়ের স্থাপত্য—যেভাবে বাংলাদেশ সময়ের পরিক্রমায় আধুনিকতায় পা দিয়েছে, তা সুইজারল্যান্ড তথা ইউরোপীয়দের কাছে তুলে ধরাই ছিল প্রদর্শনীর লক্ষ্য। শহুরে হোক কিংবা গ্রামীণ—স্থাপত্যে বাংলার অনন্যতার মিশ্রণ বিশ্ববাসী যাতে উপভোগ করতে পারে তার জন্যই আয়োজন করা হয়েছে 'বেঙ্গল স্ট্রিম: দ্য ভাইব্র্যান্ট আর্কিটেকচার সিন অভ বাংলাদেশ'।

নিক্লাওস গ্রেবার। ছবি: টিবিএস

২০১৭ সাল থেকে শুরু হওয়া এই প্রদর্শনীটির সূত্রপাত ঘটেছিল সুইজারল্যান্ডের বাসেল শহরে। সুইস আর্কিটেকচার জাদুঘরে প্রথম প্রদর্শিত হয়েছিল বাংলাদেশের স্থাপত্য। বলাই বাহুল্য, ইউরোপে বাংলাদেশের ওপর এটিই ছিল প্রথম এবং সবচেয়ে বড় স্থাপত্য প্রদর্শনী।

ইউরোপীয় দর্শকদের কাছে বাংলাদেশের একত্রিশজন স্থপতির কাজ তুলে ধরেছিল প্রদর্শনীটি। বাংলাদেশের স্থপতিদের উদ্ভাবনী এবং সৃজনশীল কাজের প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে প্রদর্শনীটি বিপুল দর্শকপ্রিয়তা পায় সে সময়। পরবর্তী সময়ে সুইজারল্যান্ডের পদাঙ্ক অনুসরণ করে এটি প্রদর্শিত হয় ফ্রান্সের প্যারিসে ও জার্মানির ফ্রাঙ্কফুট শহরে। পরিকল্পনা ছিল নিউইয়র্কেও প্রদর্শিত হবে। কিন্তু করোনা মহামারি বাদ সাধার কারণে সমাপনী অনুষ্ঠানের দিকে ঝুঁকতে হয় তাদের। তাই তিনটি দেশ ঘুরে প্রদর্শনীটির সমাপনী প্রদর্শনী হচ্ছে বাংলাদেশে।

ছবি: মুমিত এম

বেঙ্গল শিল্পালয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে মাসব্যাপী সমাপনী অনুষ্ঠান। ৯ ডিসেম্বর শুরু হওয়া এই প্রদর্শনী শেষ হবে ৯ জানুয়ারি।

নিক্লাওসের কাছে বাংলাদেশের স্থাপত্য

বেঙ্গল শিল্পালয়ে উপস্থাপিত প্রদর্শনীতে যেদিন নিক্লাওস গ্রেবারের সাথে সাক্ষাত হয়, সেদিন তিনি নিজেই কিউরেটর হয়ে পুরো প্রদর্শনীটি ঘুরে দেখান। পরিচয় করিয়ে দেন বাংলাদেশের সেরার সেরা স্থাপত্যগুলোর সাথে।

কথা প্রসঙ্গে জানান, যখন তিনি ঠিক করেছেন এমন একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করবেন, তখন প্রায় ৯০টির মতো প্রকল্পের বিবরণ জমা পড়েছিল। গ্রেবার বলেন, '৯০টি প্রকল্পের স্থাপত্যের বিবরণী দেখে সুইস জাদুঘর কর্তৃপক্ষ হতবাক হয়ে গিয়েছিল। কারণ তারা এর আগে কখনো ২০টি প্রকল্পের বেশি নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করেনি। আমি তাদের সেসময় আশ্বাস দিয়েছিলাম প্রদর্শনীর জন্য প্রকল্প কমিয়ে আনবো। তবে আমি ৬০টি প্রকল্পের নিচে যেতে পারিনি, সেটিও কর্তৃপক্ষের কাছে বেশি বলেই মনে হয়েছিল।'

ছবি: মুমিত এম

বাংলাদেশের মনোমুগ্ধকর স্থাপত্যের বর্ণনা করতে গিয়ে নিক্লাওস বলেন, 'বাংলাদেশের সমসাময়িক স্থাপত্য বোঝার জন্য আপনাকে অতীতে ফিরে তাকাতে হবে। কারণ কোনো কিছুই এমনি এমনি আসে না। সবকিছুরই একটি উৎস আছে।'

জনসংখ্যার ঘনত্ব ও জলবায়ুর পরিবর্তনকে বাংলাদেশের স্থাপত্যশিল্পের অন্যতম কাণ্ডারি বলে মনে করেন নিক্লাওস গ্রেবার। তিনি বলেন, 'জলবায়ু পরিবর্তন এখানে খুব দৃশ্যমান। তাই অনেক স্থপতি মনে করেন, স্থাপত্যের মাধ্যমেই এই সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে। এখানে ঐতিহ্যের সাথে আধুনিকতার মিশ্রণ দেখা যায় কিন্তু কোনো দ্বন্দ্ব এখানে নেই। আমি মনে করি এটি গুরুত্বপূর্ণ। যা আমি বাংলাদেশ থেকে শিখতে পেরেছি।'

ছবি: মুমিত এম

মুগ্ধতায় মোড়া প্রদর্শনীর স্থাপত্য

প্রদর্শনীতে প্রবেশ করে আচমকা মনে হলো, গোলকধাঁধায় ঢুকে পড়েছি যেন। চারপাশ পুরোটাই সাজানো ছিল বাঁশের স্থাপনা দিয়ে। আর তার উপরে ঝোলানো হয়েছিল তথ্য প্রদর্শনকারী ফেব্রিক ব্যানার। আর প্রায় প্রতিটি ব্যানারের সামনে ছিল প্রকল্পের মিনিয়েচার রূপ। দর্শক যাতে সঠিকভাবে প্রদর্শিত স্থাপত্যগুলো চিনতে পারে তার জন্যই করা হয়েছিল এই ব্যবস্থা।  

নিক্লাওস গ্রেবারের ভাষ্যমতে, ইউরোপের জাদুঘরে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অনুভূতি ও ধারণা আনার জন্যই বাঁশের ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিটি স্থাপত্যের আমেজ যাতে যথাযথভাবে বজায় থাকে, তার জন্যই এই ব্যবস্থা। সর্বোপরি জাদুঘরে প্রবেশ করে মানুষের যাতে ভিন্নরকম অভিজ্ঞতা হয়, সে কারণে পুরো প্রদর্শনী বাঁশ দিয়ে সাজানো হয়েছে।

প্রদর্শনীর বামপাশের পুরো অংশটি সাজানো হয়েছিল স্থপতি মাজহারুল ইসলামের দৃষ্টিনন্দন সব স্থাপত্য দিয়ে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ, গণগ্রন্থাগারসহ অজস্র কাজের সাক্ষী ছিল সেই অংশটি। মাজহারুল ইসলামের স্থাপত্যকর্ম মূলত বাংলাদেশের সমাজ, অর্থনীতি ও সাংস্কৃতিক পটের বহিঃপ্রকাশ। তাই আধুনিকতার চিত্রপটে সাজানো এসব স্থাপত্য যে-কাউকে মুগ্ধ করতে সক্ষম।

ছবি: মুমিত এম

গ্রেবারের মতে, পুরো প্রদর্শনীটিই একটি স্রোতের মতো। তাই উত্তর থেকে দক্ষিণে বয়ে চলা স্রোতের মতো করেই সাজানো হয়েছে একে। মাজহারুল ইসলামের অংশটুকু সমাপ্ত হওয়ার পর প্রথমে উত্তরাঞ্চলের স্থাপত্য, পরে ধীরে ধীরে দক্ষিণ অংশের স্থাপত্যের মুখোমুখি হবেন দর্শক।

নিক্লাওস বলেন, 'বাংলাদেশে চমৎকার কিছু কাজ রয়েছে। প্রতিটি কাজই কোনো না কোনো গল্প বলে।'

নিক্লাওস গ্রেবার গল্প করতে করতেই ঘুরে দেখাচ্ছিলেন সবকিছু। দেখালেন—যমুনা নদী নেটওয়ার্কের রেইজড সেটেলমেন্টস, দিনাজপুরের এমইআইটি স্কুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান চত্বর প্রভৃতি। সাভারের আর্কেডিয়া স্কুল দেখাতে দেখাতে এর ভীষণ সুনাম করলেন স্থপতি। এটি একটি ভাসমান স্কুল। বন্যাপ্রবণ এলাকার শিশুরা যাতে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত না হয়, তার জন্য স্থপতি সাইফ উল হক ২০১৫ সালে এটি নির্মাণ করেন।

ছবি: মুমিত এম

এছাড়াও প্রদর্শনীতে রয়েছে গাইবান্ধার ফ্রেন্ডশিপ সেন্টার, নেত্রকোনার বিদ্যাভুবন বিদ্যালয়, ভাসমান হাসপাতাল, কড়াইল বস্তির আশার মাচা, ফার্মগেটের কালিন্দী হাউজিং কমপ্লেক্স, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার প্লেপেন স্কুল, বসিলায় শহুরে শিশুদের জন্য বাঁশ দিয়ে তৈরি খেলার মাঠ নকশা নির্মাণ খেলা, বাইত উর রউফ মসজিদ, গাজীপুরের ছুটি বাড়ি, গাজীপুরের আম্বার ডেনিম তাঁত বুনন, যশোরের প্রশিক্ষণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, চট্টগ্রামের গোবিন্দ গুণালঙ্কার হোস্টেল, ওসবান হাউজ, ঝিনাইদহের নাগরিক উন্নয়ন প্রকল্প প্রভৃতি।  

তবে গাজীপুরের আম্বার ডেনিম তাঁত বুনন গার্মেন্টসের প্রশংসা নিক্লাওস গ্রেবার আলাদাভাবে করলেন। তিনি বলেন, 'সাধারণত ঢাকার গার্মেন্টসে যা দেখা যায়, তার থেকে এটি সম্পূর্ণ আলাদা। ঢাকার গার্মেন্টসের ক্ষেত্রে দেখা যায় সেখানে প্রকৃতির কোনো ছোঁয়া নেই। আলো-বাতাস কম থাকে। অথচ এই গার্মেন্টসটি একেবারে ভিন্ন। আমরা বাড়িতে ব্যয় করার চেয়ে কর্মক্ষেত্রে বেশি সময় ব্যয় করি। তাই আমি মনে করি এই স্থাপত্যটি খুব ভালো উদাহরণ। বিরতির সময় শ্রমিক বা যারা এখানে কাজ করেন, তারা প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে পারেন।'

ছবি: মুমিত এম

সুইজারল্যান্ডের সাথে বাংলাদেশের মিল!

নিক্লাওস গ্রেবার যেহেতু সুইজারল্যান্ডের অধিবাসী, তাই সুইজারল্যান্ডের স্থাপত্যের গল্প শোনার লোভ সে যাত্রায় সামলাতে পারিনি। তাই সুযোগ পেয়েই প্রশ্ন করে বসলাম, বাংলাদেশ আর সুইজারল্যান্ডের স্থাপত্যের মধ্যে কোনো মিল আছে কি না। নিক্লাওস হেসে জবাব দেন, 'জলবায়ুর উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের স্থাপত্য হয়তো নির্দিষ্ট, তবে সর্বজনীন। এখানে স্থপতিরা এমন কিছু উপাদান ব্যবহার করেন যা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। তাই বাংলাদেশের ভবনের সাথে সুইজারল্যান্ডের মিল রয়েছে।

'আমার মনে হয়, বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ড উভয়েই হয়তো ধীরে ধীরে স্থাপত্যের দেশ হয়ে উঠেছে। দুটি দেশের কিছু মিল রয়েছে। সুইজারল্যান্ড পর্বত, তুষারে পরিপূর্ণ একটি দেশ। আবার বাংলাদেশ একটি বন্যাপ্রবণ দেশ। উভয় দেশই বড় দেশ দ্বারা বেষ্টিত। আমি মনে করি, উভয় দেশেরই গ্রামীণ ঐতিহ্য রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পূর্বপুরুষেরা কৃষক ছিলেন। আমার দাদা-দাদি, এমনকি বাবা-মাও গ্রামাঞ্চলে থাকতেন। এখানে নগরায়ন অপেক্ষাকৃত দেরিতে এসেছিল।'

ছবি: মুমিত এম

বাংলাদেশের স্থাপত্যশিল্পে এত দ্রুত উন্নতিকে কেন্দ্র করে নিক্লাওস জানান, 'গত দশ বছর ধরে আমি বাংলাদেশে আসছি। এখানে এত দ্রুত পরিবর্তন লক্ষ করেছি যা ইউরোপেও আমি অনুভব করিনি। সেখানে এই বিষয়গুলো একটু ধীরগতিতে চলে, কিন্তু বাংলাদেশ নিয়ে আমি আশাবাদী। বাংলাদেশে অতীতেও অনেক ভালো স্থপতি ছিল, কিন্তু কার্যক্রম অতটা দৃশ্যমান ছিল না। কিন্তু গত ৫-৬ বছর ধরে বাংলাদেশের হাত ধরে অনেক নতুন প্রকল্প এসেছে।'

২০২২ সালে 'আগা খান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচার'-এ বাংলাদেশ স্থাপত্যে দুটি পুরস্কার পায়। এ প্রেক্ষাপটে তিনি জানান, 'গত বছর বাংলাদেশ দুটি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। এর আগেও পেয়েছিল। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ৮-৯টি আগা খান অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে।'

ছবি: মুমিত এম

তরুণ স্থপতিদের সমাজে কী চলছে, তা পর্যবেক্ষণ করার উপদেশ দেন স্থপতি নিক্লাওস। শুধুমাত্র স্থপতি হিসেবেই নয়, সুন্দর কিছু সৃষ্টির লক্ষ্যেও তরুণদের কাজ করার পরামর্শ দেন নিক্লাওস গ্রেবার।

নিক্লাওস গ্রেবার যতক্ষণ কথা বলছিলেন, মুগ্ধ হয়েই গল্প শুনছিলাম। ভবিষ্যতে কখনো গ্রেবার সাহেবের সাথে আলাপ হবে নাকি জানি না, তবে এমন একটি গোধূলি বেলার কথা অনেকদিন মনে থাকবে। 

Related Topics

টপ নিউজ

স্থাপত্য / নিক্লাওস গ্রেবার / বাংলাদেশের স্থাপত্য / বেঙ্গল স্ট্রিম

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • চাটগাঁইয়াদের চোখে ‘ভইঙ্গা’ কারা? কেনই-বা এই নাম?
  • জি-৭ সম্মেলনে মোদিকে আমন্ত্রণ, তোপের মুখে কানাডার প্রধানমন্ত্রী
  • গাজায় ইসরায়েল-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীর নেতা ইয়াসির আবু শাবাব কে?
  • বন্ধু থেকে শত্রু: ট্রাম্প-মাস্ক সম্পর্কের নাটকীয় অবসান
  • শেখ পরিবারের একচ্ছত্র শাসন থেকে দুই ভাইয়ের মনোনয়ন লড়াই: বাগেরহাটের রাজনীতিতে পরিবর্তনের হাওয়া
  • রাশিয়ার ‘আন্ডারকভার’ ড্রোন যুদ্ধ: ‘হোম কল’, ছদ্মবেশ—আরও যত কৌশল

Related News

  • অতীতের রাজধানী: কেমন ছিল ঢাকার কার্জন হল, মেডিকেল কলেজ, মিটফোর্ড, ভুলভুলাইয়া বা দিলখুশা…
  • কিউএস ওয়ার্ল্ড র‍্যাঙ্কিং ২০২৪ অনুযায়ী স্থাপত্যবিদ্যায় সেরা ৫০ বিশ্ববিদ্যালয়
  • মানুষের মতোই মৌমাছিও পারে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধরে রাখতে
  • বইমেলার স্টল ও প্যাভিলিয়নের কুশীলবেরা
  • এই সব বাড়ি এখন শুধুই ছবি

Most Read

1
ফিচার

চাটগাঁইয়াদের চোখে ‘ভইঙ্গা’ কারা? কেনই-বা এই নাম?

2
আন্তর্জাতিক

জি-৭ সম্মেলনে মোদিকে আমন্ত্রণ, তোপের মুখে কানাডার প্রধানমন্ত্রী

3
আন্তর্জাতিক

গাজায় ইসরায়েল-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীর নেতা ইয়াসির আবু শাবাব কে?

4
আন্তর্জাতিক

বন্ধু থেকে শত্রু: ট্রাম্প-মাস্ক সম্পর্কের নাটকীয় অবসান

5
বাংলাদেশ

শেখ পরিবারের একচ্ছত্র শাসন থেকে দুই ভাইয়ের মনোনয়ন লড়াই: বাগেরহাটের রাজনীতিতে পরিবর্তনের হাওয়া

6
আন্তর্জাতিক

রাশিয়ার ‘আন্ডারকভার’ ড্রোন যুদ্ধ: ‘হোম কল’, ছদ্মবেশ—আরও যত কৌশল

The Business Standard
Top

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net

Copyright © 2022 THE BUSINESS STANDARD All rights reserved. Technical Partner: RSI Lab