মুশফিক-মাহমুদউল্লাহকে বিদায় জানানোর পরামর্শ ভারতীয় সাবেকদের

অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ তারা, দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশের জার্সিতে খেলছেন। কিন্তু আইসিসির টুর্নামেন্টে নিজেদের নামরে প্রতি সুবিচার করতে পারেন না মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মতো সিনিয়র ক্রিকেটারও। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জেতা ম্যাচে এ দুজনের ভুলে হেরেছিল বাংলাদেশ। এটা কেবলই একটা উদাহরণ মাত্র, চাইলে তালিকাটা বড় করা সম্ভব। সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের ভরাডুবিতেও দায় আছে এ দুজনের। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দলের বিপদের সময়ে অহেতুক শট খেলে নিজের উইকেট বিলিয়ে আসেন এ দুজন।
অনেকেরই মত, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর এবার বিদায় বলা উচিত। সেটা না হলেও দলই যেন কাজটা করে। এই তালিকায় আছেন ভারতের সাবেক দুই ক্রিকেটার দিনেশ কার্তিক ও পার্থিব প্যাটেল। দুই সাবেক উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মনে করেন, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহকে বিদায় জানিয়ে সামনে তাকানো উচিত বাংলাদেশ দলের। পার্থিব তো আরও কঠিন পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষে। তার মতে, সৌম্য সরকার ও লিটন কুমার দাসকেও ফেরানোর প্রয়োজন নেই।
ভারতীয় ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজের শোতে এমন ভাবনার কথা জানান কার্তিক ও পার্থিব। শুরুতেই উপস্থাপক প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট কি শেষবারের মতো দুই 'এম'কে দেখছে? কিছুটা সময় নিয়ে কার্তিক বলেন, 'তাদের ক্রিকেটের স্বাস্থ্যের জন্য, আমি বলব 'হ্যাঁ।' পরে তিনি আরও যোগ করেন, 'আমার মনে হয়, তাদের সামনে তাকানো উচিত, তরুণদের সুযোগ দেওয়া উচিত এবং আমার ভালো লাগবে, ক্রিকেটারদের হিসেবে তরুণদের বেড়ে উঠতে দেখলে। বারবার অদলবদল যেন না করা হয়। খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে ওঠার সময় দিতে হবে তাদেরকে।'
'বেশ কিছু ভালো প্রতিভা তাদের আছে। তানজিদকে মাঠে আরও জ্বলে ওঠার পথ বের করে দিতে হবে তাদের। তাওহিদকে (হৃদয়) মনে হচ্ছে ভালো ক্রিকেটার, জাকের আলী ভালো প্রতিভা। এই দলে প্রতিভা কিছু আছে। এখন ব্যাপারটি হলো, তাদেরকে নিরাপদ অনুভব করানো, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের যোগ্য মনে করানো এবং বোর্ড যেন তাদের পাশে থাকে, যেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।' বলেন তিনি।

২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও ভরাডুবি হয় বাংলাদেশের। বড় আশা নিয়ে গিয়ে ৯ ম্যাচের মাত্র দুটিতে জেতে বাংলাদেশ, হারে মানে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষেও। নতুন করে না ভাবলে এই অবস্থার পরিবর্তন হবে না জানিয়ে কার্তিক বলেন, 'দুই বছরের মধ্যে দুটি ওয়ানডে টুর্নামেন্টে যদি দুই-দিনটি ম্যাচও জিততে না পারেন, তাহলে অবশ্যই সময় হয়েছে নতুন করে পরিকল্পনা করা, বাস্তবতা মেনে নিয়ে গর্ব নিয়ে নতুনদের ওপর নির্ভর করা। দল হিসেবে তখনই গড়ে ওঠা যাবে। একই খেলোয়াড়দের ধরে রাখলে ফলাফলও একই হতে পারে।'
পার্থিব আরও পরিবর্তন চান। তার ভাষায়, 'তাওহিদ হৃদয় অবশ্যই সবাইকে মুগ্ধ করেছে এখানে। নাজমুল হোসেন শান্ত আছে, তাদের অধিনায়ক। জাকের আলী আছে, তানজিদ হাসানের প্রতিভা আছে দারুণ, তার বড় ইনিংস খেলা প্রয়োজন। তাসকিন আহমেদ, রিশাদ হোসেন, নাহিদ রানা, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাদের স্কোয়াডে থাকা উচিত। ওই ক্রিকেটারদের আর ফিরিয়ে আনবেন না। সামনে তাকাতে হবে। সমস্যা এখানেই। বলা হচ্ছে, কেউ বাদ পড়লে সৌম্য সরকার দলে আসছে। আলোচনা হচ্ছে কাউকে বাদ দেওয়ার, লিটন দাস তখন চলে আসছে। এভাবে স্কোয়াড গড়ে তোলার যাবে না।'
দলের দুঃসময়ে রান করতে পারেননি, উল্টো চাপ বাড়িয়েছেন মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ। দুই ম্যাচে মুশফিকের রান ২। ভারতের বিপক্ষে প্রথম বলেই আউট হন, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২ রান করা অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান বাজে শট খেলে আউট হন। চোটের কারণে ভারতের বিপক্ষে খেলেননি মাহমুদউল্লাহ, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কঠিন সময়ে তেড়েফুঁরে খেলতে গিয়ে নিজের উইকেট বিলিয়ে দেন ৪ রান করা এই ব্যাটসম্যান।