‘চার’ গোল দিয়েও ২-৪ ব্যবধানে হারলেন রোনালদোরা

শুধু জালের ঠিকানা পেলেই হয় না, বলটা প্রতিপক্ষের জালে পাঠাতে হয়। পর্তুগালের চেয়ে এটা এই মূহূর্তে আর কেউ ভালো বুঝবে না। ম্যাচে চার গোল দিয়েও দুই গোলের ব্যবধান থেকে গেলো। ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে জার্মানির বিপক্ষে বড় হার মেনে নিতে হলো ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর দেশকে।
'এফ' গ্রুপের ম্যাচে মিউনিখের আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় পর্তুগালকে ৪-২ গোলে হারিয়েছে প্রথম ম্যাচে ফ্রান্সের বিপক্ষে হারা মানা জার্মানি। জার্মানির পক্ষে গোল করেন কাই হাভের্টজ ও রবিন গোসেন। জার্মানির পাওয়া বাকি দুটি গোল পর্তুগালের করা আত্মঘাতী। পর্তুগালের হয়ে গোল করেন রোনালদো দিয়েগো জটা।
পুরো ম্যাচে জার্মানিরই আধিপত্য ছিল। ৫৮ শতাংশ সময় বল নিজেদের পায়ে রাখে তারা। পিছিয়ে পড়েও দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ানো দলটি গোলমুখে ১২টি শট নিয়েছে, এর মধ্যে ৭টি ছিল লক্ষ্যে। পর্তুগালের নেওয়া ৭টি শটের মাত্র ২টি ছিল লক্ষ্যে।
ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো জার্মানি। পর্তুগালের জালে বলও পাঠিয়েছিল তারা। কিন্তু অফসাইডের কারণে গোলটি বাতিল হয়। দশম মিনিটে হাভের্টজ দূরপাল্লার দারুণ একটি শট নেন। ঝাঁপিয়ে পড়ে ফেরান পর্তুগালের গোলরক্ষক রুই পেত্রিসিও। তবে ঠিকভাবে ধরতে না পারায় ফিরতি বল পান সার্জ নাব্রি। যদিও এ যাত্রায় বিপদ হয়নি তাদের।
১৫তম মিনিটে কর্নার পায় জার্মানি। গোল পায়নি দলটি, উল্টো পাল্টা আক্রমণে সোজা জার্মানির রক্ষণভাগে পর্তুগালের হানা। বার্নান্দো সিলভার লম্বা করে বাড়ানো বল খুঁজে নেয় দিয়েগো জটাকে। ডি- বক্সে ঢুকে রোনালদোকে বল দেন তিনি। আলতো শটে বল জালে জড়ান পর্তুগিজ অধিনায়ক। দেশের হয়ে ১০৭টি গোলের মালিক হলেন তিনি, ইউরোতে করলেন তৃতীয় গোল।
১৮তম মিনিটে আক্রমণ সাজায় জার্মানি। কিন্তু গোসেনের নেওয়া শট ফিরিয়ে দেন পর্তুগালের গোলরক্ষক রুই পেত্রিসিও। ২২তম মিনিটে পর্তুগালের হানা। সিলভার ক্রস থেকে ভালো হেড নিয়েছিলেন রুবেন দিয়াস। তবে সামান্যর জন্য তা লক্ষ্যে থাকেনি।
৩৫তম মিনিটে কপাল পোড়ে পর্তুগালের। জশুয়া কিমিখের ক্রস থেকে গোসেনের নেওয়া ভলি ফেরাতে গিয়ে বল নিজেদের জালে জড়িয়ে দেন রুবেন দিয়াস। সমতায় ফিরে ছন্দময় ফুটবল খেলতে থাকে জার্মানরা। ৩৯ মিনিটে পর্তুগালের ভুলেই এগিয়ে যায় তারা। কিমিখের শট ঠেকাতে গিয়ে নিজেদের জালে বল পাঠিয়ে দেন রাফায়েল গুয়েরেইরো।
ম্যাচের যোগ করা সময়ের শেষ মুহূর্তে দারুণ একটি আক্রমণ থেকে পর্তুগালকে বাঁচান পেত্রিসিও। মাঝমাঠ থেকে দারুণ দক্ষতায় বল নিয়ে পর্তুগালের ডি-বক্সে ঢুকে জোরালো শট নেন নাব্রি। ঝাঁপিয়ে পড়ে ফেরান পেত্রিসিও।
৫১তম মিনিটে আরও এগিয়ে যায় জার্মানি। টমাস মুলারের বাড়ানো বল ধরে ডি-বক্সে দারুণ এক ক্রস দেন গোসেন। অরিক্ষত হাভের্টস বল পেয়ে জালে জড়াতে ভুল করেননি। ৬০তম মিনিটে পর্তুগালকে আরও পেছনে ফেলেন জার্মানি। কিমিখের ক্রস থেকে হেডে গোল আদায় করে নেন গোসেন।
সাত মিনিট পর ব্যবধান কমায় পর্তুগাল। ৬৭তম মিনিটে বদলি খেলোয়াড় জোয়াও মৌতিনহোর ফ্রি-কিক থেকে দারুণ ভলিতে গোললাইনে বল রাখেন রোনালদো। আলতো টোকায় বল জালে জড়ান জটা।
৭৮তম মিনিটে আরেকটি গোল পেতে পারতো পর্তুগাল। কিন্তু রেনেতো সাঞ্চেজের নেওয়া বুলেট গতির শট বারপোস্টে লেগে ফিরে আসে। ৮৩তম মিনিটে একইভাবে গোলবঞ্চিত হয় জার্মানি। গোরেটজকার শট বারপোস্টে লেগে বেরিয়ে যায়। এরপর কোনো দলই আর গোলের দেখা পায়নি।