Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Thursday
May 29, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
THURSDAY, MAY 29, 2025
কোহিনূর কেন ব্রিটিশরা ফেরত দেবে না

ইজেল

মারুফ হোসেন
13 March, 2021, 11:05 am
Last modified: 13 March, 2021, 03:26 pm

Related News

  • ১৫ বছর বয়সে ভারত ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন শেষ শিখ রাজা দুলিপ সিং, বন্ধু হয়েছিলেন রানি ভিক্টোরিয়ার
  • কল্লুরের খনি থেকে যেভাবে ব্রিটিশ রাজমুকুটে ঠাঁই হলো কোহিনুরের
  • রানির কোহিনূরের মুকুট এবার কার মাথায়
  • শাহজাহান, নাদির শাহ, দুলিপ সিং থেকে রানি ভিক্টোরিয়া... এরপর কোহিনূর উঠছে কার মাথায়?

কোহিনূর কেন ব্রিটিশরা ফেরত দেবে না

১৬২৮ সালে মোগল সম্রাট শাহ জাহান একটি রত্নখচিত চোখ-ধাঁধানো সিংহাসন বানানোর হুকুম দেন। ইহুদি রাজা সলোমনের কিংবদন্তির সিংহাসন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বানানো হয়েছিল এই রাজাসন। তখতটি বানাতে সময় লেগেছিল সাত বছর, খরচ হয়েছে তাজমহলের চেয়েও চারগুণ বেশি। তাজমহলও সে সময়ই নির্মাণাধীন ছিল।
মারুফ হোসেন
13 March, 2021, 11:05 am
Last modified: 13 March, 2021, 03:26 pm
কোহিনূর

হীরাটি পাওয়া গিয়েছিল কয়েক হাজার বছর আগে, ভারতের পলল খনির বালি ছেঁকে। হিন্দু বিশ্বাসমতে, কৃষ্ণের মতো দেবতারাও এই অভিশপ্ত হীরাকে খুব ভক্তি করতেন।  
কোহিনূর নামে জগদ্বিখ্যাত হয়ে ওঠা রত্নটি উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ব্রিটিশ মুকুটরত্ন হিসেবে ঠাঁই পায়। তার আগে বিস্তর প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের সাক্ষী হয় এই পাথর। ব্রিটিশদের অধিকারে আসবার পর থেকেই হিরেটির জন্মকে ঘিরে অসংখ্য মুখরোচক গল্প-গাথা ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু ঐতিহাসিক অনিতা আনন্দ ও উইলিয়াম ড্যালরিম্পলের মতে, এসব কাহিনির প্রায় সবই কল্পনাপ্রসূত। কোহিনূরকে ঘিরে ইতিহাসের নামে গড়ে উঠেছে অসংখ্য মিথ।

'কোহ-ই-নূর: দ্য হিস্ট্রি অভ দ্য ওয়ার্ল্ডস মোস্ট ইনফেমাস ডায়মন্ড' বইয়ে ড্যালরিম্পল ও অনিতা ভারতবর্ষের চার শতাব্দীরও বেশি প্রাচীন ইতিহাস ছেঁকে তুলে এনেছেন এই রত্নের প্রকৃত ইতিহাস। এবং এই প্রকৃত ইতিহাসের পুরোটাই নাটকীয়তায় পরিপূর্ণ। ড্যালরিম্পলের ভাষায় কোহিনূরের ইতিহাস 'গেম অফ থ্রোনসের' চাইতে কম রোমাঞ্চকর নয়। অনেক প্রেমোপাখ্যান, রক্তপাতের কাহিনি জড়িয়ে রয়েছে এর সাথে।

নাদের শাহের ময়ূর সিংহাসন। অন্যান্য রত্নের সঙ্গে কোহিনূরও এই সিংহাসনে খচিত ছিল

তবে হীরাটির নাটকীয় ইতিহাসের সঙ্গে আরেকটি গুরুতর প্রশ্ন জড়িয়ে আছে—উপনিবেশকালে লুট করা এসব সম্পদের ব্যাপারে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া উচিত আধুনিক রাষ্ট্রগুলোর? ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তানসহ অনেকগুলো দেশ কোহিনূরের মালিকানা দাবি করে। এই মালিকানা দাবিও একটি তুমুল বিতর্কের বিষয়।

হীরাটির জন্মস্থান কোথায়—একে জন্মস্থানে ফিরিয়ে আনা সম্ভব কি না—এসব সুলুকসন্ধানের জন্যে ঘুরে আসতে হবে সেই মোগল ভারত থেকে।

নাদের শাহ, শাহ সুজা দুররানি এবং রহ্জিত সিং

রত্নের সিংহাসনে

বহু শতাব্দী ধরে—১৭২৫ সালে ব্রাজিলে হীরার খনি আবিষ্কৃত হওয়ার আগ পর্যন্ত—বিশ্বে হীরা পাওয়া যেত কেবল ভারতবর্ষে। রত্নগুলোর বেশিরভাগই নদীর বালি ছেঁকে সংগ্রহ করতে হতো। উপমহাদেশের প্রথম হিরে সংগ্রহকারী ছিলেন এখানকার শাসকরা।

ড্যালরিম্পল ও অনিতা তাদের বইয়ে লিখেছেন, ভারতের অনেক প্রাচীন রাজদরবারে সভাসদদের মর্যাদার প্রতীক ছিল নানা রকমের রত্ন। মর্যাদার ক্রম অনুসারে একেক পদের সভাসদের পাগড়িতে একেক ধরনের রত্ন পরার কঠোর রীতি ছিল। রত্নবিদ্যার ওপর বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন বইপত্রগুলোও ভারতেই লেখা। 

তুর্ক-মঙ্গোল নেতা জহির-উদ-দীন বাবুর মধ্য এশিয়া থেকে খাইবার পাস দিয়ে ১৫২৬ সালে ভারত আক্রমণ করতে আসেন। তার হাতেই উপমহাদেশে প্রতিষ্ঠিত হয় মোগল রাজবংশ। সেইসাথে শুরু হয় রত্নপাথরের প্রতি মোহের এক নতুন যুগ। মোগলরা ৩৩০ বছর ভারত শাসন করে। বর্তমান ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের প্রায় গোটাটাই তাদের সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। সেইসাথে 'পাহাড়সম' রত্নের অধিকার আসে তাদের হাতে।

কোহিনূরের জন্মস্থান এবং এটি কখন মোগলদের দখলে এসেছিল, তা সঠিকভাবে জানা অসম্ভব। তবে লিখিত রেকর্ডে হিরেটিকে প্রথম উপস্থিতি কখন দেখা গিয়েছিল, সে সম্পর্কে জানা যায়। ১৬২৮ সালে মোগল সম্রাট শাহ জাহান একটি রত্নখচিত চোখ-ধাঁধানো সিংহাসন বানানোর হুকুম দেন। ইহুদি রাজা সলোমনের কিংবদন্তির সিংহাসন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বানানো হয়েছিল এই রাজাসন। তখতটি বানাতে সময় লেগেছিল সাত বছর, খরচ হয়েছে তাজমহলের চেয়েও চারগুণ বেশি। তাজমহলও সে সময়ই নির্মাণাধীন ছিল।

রাজদরবারের লেখক আহমদ শাহ লাহোর সিংহাসনটি সম্পর্কে লিখেছেন: '(সিংহাসনের) চাঁদোয়ার বাইরের কলাই করা অংশটি ছিল রত্নখচিত। ভেতরের অংশে বসানো হয়েছিল অসংখ্য পদ্মরাগমণি, তামড়ি এবং অন্যান্য রত্ন। আর চাঁদোয়াটির থামগুলো ছিল পান্নাখচিত। মণি-মাণিক্যখচিত এক জোড়া ময়ূর মুখোমুখি বসানো হয়েছিল প্রতিটা থামের মাথায়। প্রতি জোড়া ময়ূরের মাঝখানে স্থাপন করা হয়েছিল হিরে, পান্না, চুনি, মুক্তো প্রভৃতি মণি-মাণিক্যনির্মিত গাছ।'

সিংহাসনে বসানো অসংখ্য মূল্যবান রত্নের মধ্যে দুটো রত্ন পরবর্তীকালে বাকি সবগুলোর চাইতে মূল্যবান হয়ে ওঠে। একটির নাম 'তৈমূর রুবি'। মোগলরা রঙিন রত্নপাথর খুব পছন্দ করতে বলে এই পাথরটিকে তারা খুব মূল্য দিত। অপর রত্নটির নাম 'কোহিনূর'। হিরেটি বসানো হয়েছিল রত্নপাথরে তৈরি ময়ূরের মাথায়।

ব্রিটিশদের হাতে যাওয়ার আগে কোহিনূরের আঁকা ছবি

ময়ূর সিংহাসন তৈরির পরের একশো বছর প্রবল প্রতাপে ভারত ও ভারতের বাইরের বহু অঞ্চল শাসন করে মোগলরা। সে সময় মোগল সালতানাত ছিল এশিয়ার সবচেয়ে ধনী সাম্রাজ্য। ২ কোটি মানুষের বাস ছিল এ সাম্রাজ্যের রাজধানী দিল্লিতে। প্যারিস ও লন্ডনের সম্মিলিত জনসংখ্যাও এর চেয়ে কম ছিল সে সময়। এই সমৃদ্ধি ও প্রাচুর্য পারস্যের শাসক নাদের শাহ-সহ মধ্য এশিয়ার অন্যান্য শাসকদের নজর কাড়ে।

১৭৩৯ সালে দিল্লি আক্রমণ করেন নাদের শাহ। দশ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারায় এ আক্রমণে। নাদেরের লুটতরাজের ফলে প্রায় খালি হয়ে যায় রাজকোষ। আক্ষরিক অর্থেই পর্বতপ্রমাণ সোনাদানা, মণিমাণিক্য লুট করেন পারস্য-শাসক। ৭০০ হাতি, ৪ হাজার উট এবং ১২ হাজার ঘোড়া লেগেছিল সেই লুণ্ঠিত রত্নভাণ্ডার বয়ে নেয়ার জন্য। অন্যান্য ধনরত্নের সঙ্গে ময়ূর সিংহাসনও নিয়ে গিয়েছিলেন নাদের। অবশ্য বাহুবন্ধনিতে পরার জন্য তৈমূর রুবি আর কোহিনূর খুলে নিয়েছিলেন সিংহাসন থেকে। 

৭০ বছরেরও বেশি সময় ভারতের বাইরে থাকে কোহিনূর। এই সত্তর বছর হীরাটি ছিল আজকের আফগানিস্তানে। এর মধ্যে রত্নটি বহু শাসকের হাত ঘুরে আসে। সাক্ষী হয় অসংখ্য রক্তাক্ত ঘটনার। এ সময় এক রাজা তার নিজের সন্তানকে অন্ধ করে দেন, সিংহাসনচ্যুত হন এক রাজা। ক্ষমতার দখল নিয়ে লড়াই শুরু হয় মধ্য এশিয়ায়। ফলে ক্ষমতার শূন্যতা তৈরি হয় ভারতে। এই ঘোলাটে পরিস্থিতির ফায়দা লোটার জন্য অচিরেই দৃশ্যপটে আবির্ভূত হয় ব্রিটিশরা।

ব্রোচ হিসেবে কোহিনূর পরতেন রানি ভিক্টোরিয়া, ১৮৮৭

বালক রাজা আর ব্রিটিশ রাজমুকুট

উনিশ শতকের শুরুতে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বিভিন্ন উপকূলীয় শহর থেকে উপমহাদেশের অভ্যন্তরে তাদের নিয়ন্ত্রণ বিস্তার করে। নেপোলিয়ন ইউরোপে যত এলাকা জয় করেছিলেন, কোম্পানিটি তারচেয়েও বেশি জায়গা দখল করে নেয়। ভারতের প্রাকৃতিক সম্পদ আর ব্যবসায়িক সুবিধা ছাড়াও অমূল্য রত্ন কোহিনূরের ওপরও শ্যেনদৃষ্টি ছিল ব্রিটিশদের।

কয়েক দশকের লড়াইয়ের পর, ১৮১৩ সালে হীরাটি ভারতে, শিখ শাসক রঞ্জিত সিংয়ের কাছে ফিরে আসে। রত্নটি তার খুব প্রিয়বস্তু হয়ে উঠেছিল। এর কারণ, ড্যালরিম্পল ও অনিতার ভাষায়, 'রঞ্জিত যেমন হীরা পছন্দ করতেন, ...তেমনি কোহিনূর তার জন্য হয়ে উঠেছিল বিশেষ মর্যাদার প্রতীকও।' আহমদ শাহর (যিনি ১৭৬১ সালে দিল্লি লুট করেছিলেন) আমলে ভারতের যেসব অঞ্চল হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিল, তার প্রায় সবটাই আফগান দুররানি বংশের কাছ থেকে ফের জিতে নেন রঞ্জিত সিং।

রঞ্জিত সিংয়ের দখলে আসার পরই হীরাটি ইতিহাসের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে ওঠে। সৌন্দর্যের বদলে শৌর্যের প্রতীকে পরিণত হওয়ার পরই ইতিহাসে প্রভাব বিস্তারকারী রত্ন হয়ে ওঠে কোহিনূর।

রানি ভিক্টোরিয়া ব্রোচ হিসেবে কোহিনূর পরেছেন

ব্রিটিশদের কাছে মর্যাদা ও ক্ষমতার এই প্রতীক হয়ে উঠল এক দুর্দমনীয় আকর্ষণ। ভারতের সাথে সাথে কোহিনূরও দখল করতে পারলে এই রত্ন হয়ে উঠবে তাদের ঔপনিবেশিক শ্রেষ্ঠত্ব ও ক্ষমতার প্রতীক। ১৮৩৯ সালে মারা যান রঞ্জিত সিং। মৃত্যুকালে হিরেটি তিনি একটি হিন্দু পুরোহিত সম্প্রদায়কে দিয়ে যেতে মনস্থ করেন। এ খবর পেয়ে প্রচণ্ড ক্ষোভে ফেটে পড়ে ব্রিটিশরা। 

কিন্তু তাদের তখন অপেক্ষা ছাড়া আর কিছু করার ছিল না। ১৮৩৯ সালে রঞ্জিত সিংয়ের মৃত্যুর পরের চার বছরে চারজন শাসক বসেন পাঞ্জাবের সিংহাসনে। এই ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সময় পেরিয়ে যাবার পর দেখা গেল সিংহাসনে বসার জন্য বেঁচে আছে এক বালক—দুলিপ সিং—আর তার মা রানি জিন্দান। ১৮৪৯ সালে জিন্দানকে বন্দি করে দুলিপকে দিয়ে বলপূর্বক একটি আইনি দলিলে স্বাক্ষর করিয়ে নেয় ব্রিটিশরা। লাহোর চুক্তি সংশোধন করে লেখা এ দলিল অনুসারে কোহিনূর ও রাজ্যের অধিকার ইংরেজদের কাছে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় দুলিপ। এ সময় তার বয়স ছিল মাত্র দশ বছর।

এরপর হীরাটি রানি ভিক্টোরিয়ার বিশেষ সম্পদে পরিণত হয়। ১৮৫১ সালে লন্ডনে এক প্রদর্শনীতে জনসম্মুখে দেখানো হয় রত্নটিকে। সাধারণ চেহারার এই রত্নটি দেখে সাধারণ মানুষের বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল, এর জন্য যুগ যুগ ধরে এত মারামারি কাটাকাটি চলছে।

রানি ভিক্টোরিয়ার স্বামী, প্রিন্স আলবার্ট রত্নটিকে আবার কাটিয়ে পালিশ করান। এর ফলে হিরেটি আগের চেয়ে আকারে প্রায় অর্ধেক হয়ে যায়। তবে আগের চেয়ে অনেক মনোমুগ্ধকরভাবে আলোর বিচ্ছুরণ করতে সক্ষম হয়ে ওঠে।

রানি ভিক্টোরিয়া হীরাটিকে ব্রোচ হিসাবে পরতে শুরু করেন। তবে রানি আলেকজান্দ্রা (ভিক্টোরিয়ার জ্যেষ্ঠ পুত্র, সপ্তম এডওয়ার্ডের স্ত্রী) এবং পরে রানি মেরির মুকুটে (ভিক্টোরিয়ার দৌহিত্র, পঞ্চম জর্জের স্ত্রী) শোভা পেত কোহিনূর। এভাবে এটি 'ক্রাউন জুয়েল'-এর অংশ হয়ে ওঠে। হিরেখানাকে মুকুটের সম্মুখভাগে (বর্তমানের অবস্থানে) ঠাঁই দেন পঞ্চম জর্জের স্ত্রী ও দ্বিতীয় এলিজাবেথের মা, রানিমাতা এলিজাবেথ। ব্রিটিশ রাজমুকুট সর্বশেষ জনসম্মুখে এসেছিল ২০০২ সালে, রানিমাতা এলিজাবেথ মারা যাওয়ার পর। শেষকৃত্যের সময় তার কফিনের ওপর রাখা হয়েছিল কোহিনূর।

রাজা পঞ্চম জর্জের সময় কোহিনূর রাজমুকুটে ওঠে আসে

কোহিনূরের মালিকানা-বিতর্ক

এখনও অসংখ্য কিংবদন্তি, রহস্য আর বিতর্ক প্রচলিত রয়েছে কোহিনূরকে ঘিরে। এমনকি রত্নটিকে অভিশপ্ত বলেও আখ্যা দিয়েছে অনেকে। 

'হোপ ডায়মন্ড: দ্য লেজেন্ড্রি হিস্ট্রি অফ আ কার্সড জেম'-এর লেখক রিচার্ড কুরিনের মতে এ ধরনের রত্নপাথরকে অভিশপ্ত আখ্যা দেয়ার পেছনে মূল কারণ হচ্ছে এগুলো দখল করার রক্তাক্ত ইতিহাস। কুরিন বলেছেন, 'ক্ষমতাবানরা যখন দুর্বলদের কাছ থেকে কিছু কেড়ে নেয়, দুর্বলদের তখন ক্ষমতাধরদেরকে অভিশাপ দেয়া ছাড়া আর কিছু করার থাকে না।'

কোহিনূরকে ভারতে ফিরিয়ে দেয়া উচিত কি না, এ নিয়ে অনেক আলোচনা, তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। 

তবে এসব রত্ন ফিরিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, এগুলোর প্রথম মালিকানা কার ছিল তা নিশ্চিত করে জানা যায় না। কুরিন এবং ড্যালরিম্পল দুজনেই জানান যে, এসব রত্ন এককালে যেসব শাসকের অধিকারে ছিল, সেসব জাতির কোনোরটাই এখন আর অস্তিত্ব নেই। কাজেই এসব পাথরের ওপর কার বৈধ অধিকার সবচেয়ে বেশি, তা নিশ্চিত করে নির্ণয় করাই ভীষণ দুরূহ।

উপনিবেশ-পরবর্তী সময়ে এ ধরনের জিনিসপত্রের মালিকানা ফিরিয়ে দেয়া নিয়ে সর্বত্রই ঝামেলা হয়েছে। ভারত কোহিনূরের মালিকানা দাবি করে বলেছে, ব্রিটিশরা অন্যায়ভাবে হীরাটি ছিনিয়ে নিয়েছিল। তাই হিরেখানি ভারতের কাছে ফিরিয়ে দেয়া উচিত। ১৯৯৭ সালে ভারতের ৫০তম স্বাধীনতা বার্ষিকী উদ্‌যাপনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভারতে রাষ্ট্রীয় সফরে এসেছিলেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। সে সময় তার কাছে কয়েকজন সংসদ সদস্যসহ বহু ভারতীয় কোহিনূর ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান। কেন্দ্রীয় সরকারের মতো উড়িষ্যার কংগ্রেস সরকারও হীরাটি ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানায়। উড়িষ্যার রাজ্য সরকার ব্রিটিশ সরকারকে জানায় যে, বংশ পরম্পরায় হীরাটির বর্তমান মালিক ভগবান জগন্নাথ। এদিকে পাঞ্জাবের রঞ্জিৎ সিংয়ের পরিবারও কোহিনূরের মালিকানা দাবি করছে।

রানিমাতা কোহিনূর শোভিত রাজমুকুট পরেছেন মাথায়। পাশে বড় মেয়ে এলিজাবেথ

১৯৭৬ সালে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জেমস কালাহানের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে হিরেখানা তার দেশের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান। ব্রিটিশ সরকার তার দাবি প্রত্যাখ্যান করলেও জানিয়ে দেয় যে, তারা কোনো দেশের কাছে কোহিনূর হস্তান্তর করবে না। ইরানের একটি প্রভাবশালী দৈনিক হীরাটি তেহরানের কাছে ফিরিয়ে দিতে অনুরোধ জানায় ব্রিটেনকে। এ তো গেল মালিকানা সংক্রান্ত ঝামেলার কথা। এছাড়াও এসব শিল্পসামগ্রী ফিরিয়ে দেয়ার আরেকটি বিপদ হচ্ছে—এতে করে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঔপনিবেশিক ইতিহাস জনসম্মুখে চলে আসতে পারে। কাজেই বর্তমানে এ ধরনের সামগ্রীর সবচেয়ে উপযুক্ত আশ্রয়স্থল হচ্ছে জাদুঘর।

কোহিনূর ছাড়াও যুক্তরাজ্যের দখলে থাকা আরও অনেক ধনরত্ন ও শিল্পসামগ্রীর মালিকানা নিয়েই টানাহেঁচড়া চলছে। তবে অনিতা আনন্দ এবং উইলিয়াম ড্যালরিম্পলের বিশ্বাস, হীরাটিকে ভারতে ফিরিয়ে দেয়া যতটা প্রয়োজনীয়, তারচেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে রত্নটির প্রকৃত ইতিহাস সাধারণ মানুষকে জানানো।

  • সূত্র: স্মিথসোনিয়ান

Related Topics

টপ নিউজ

কোহিনূর

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • আন্তঃনগর ট্রেনে আরও বেশি যাত্রাবিরতি দেওয়ার চাপে রেলওয়ে
  • যুক্তরাষ্ট্রের ‘৫১তম অঙ্গরাজ্য’ হলে কানাডাকে বিনামূল্যে ‘গোল্ডেন ডোম’ সুরক্ষা দেবেন ট্রাম্প
  • মুদ্রাস্ফীতি ও বিনিময় হারের ধাক্কা ২০২৫-২৬ অর্থবছরে অর্থনীতিতে চাপ বাড়াবে
  • ইউক্রেনের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে ‘পাল্লার সীমাবদ্ধতা’ তুলে নিল যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ
  • ‘সরকারের মাথা থেকে পচন ধরেছে’: তারুণ্যের সমাবেশে মির্জা আব্বাস
  • ‘ড. ইউনূসের কাছে নির্বাচনী রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, কিন্তু তিনি পদত্যাগের নাটক করেছেন’: সালাহউদ্দিন আহমদ

Related News

  • ১৫ বছর বয়সে ভারত ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন শেষ শিখ রাজা দুলিপ সিং, বন্ধু হয়েছিলেন রানি ভিক্টোরিয়ার
  • কল্লুরের খনি থেকে যেভাবে ব্রিটিশ রাজমুকুটে ঠাঁই হলো কোহিনুরের
  • রানির কোহিনূরের মুকুট এবার কার মাথায়
  • শাহজাহান, নাদির শাহ, দুলিপ সিং থেকে রানি ভিক্টোরিয়া... এরপর কোহিনূর উঠছে কার মাথায়?

Most Read

1
বাংলাদেশ

আন্তঃনগর ট্রেনে আরও বেশি যাত্রাবিরতি দেওয়ার চাপে রেলওয়ে

2
আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের ‘৫১তম অঙ্গরাজ্য’ হলে কানাডাকে বিনামূল্যে ‘গোল্ডেন ডোম’ সুরক্ষা দেবেন ট্রাম্প

3
অর্থনীতি

মুদ্রাস্ফীতি ও বিনিময় হারের ধাক্কা ২০২৫-২৬ অর্থবছরে অর্থনীতিতে চাপ বাড়াবে

4
আন্তর্জাতিক

ইউক্রেনের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে ‘পাল্লার সীমাবদ্ধতা’ তুলে নিল যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ

5
বাংলাদেশ

‘সরকারের মাথা থেকে পচন ধরেছে’: তারুণ্যের সমাবেশে মির্জা আব্বাস

6
বাংলাদেশ

‘ড. ইউনূসের কাছে নির্বাচনী রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, কিন্তু তিনি পদত্যাগের নাটক করেছেন’: সালাহউদ্দিন আহমদ

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net