যুক্তরাষ্ট্রসহ ১০টি দেশের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করতে যাচ্ছে তুরস্ক

যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও ফ্রান্সসহ তুরস্কে নিযুক্ত ১০টি দেশের রাষ্ট্রদূতকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান।
এর মাধ্যমে তাদের কূটনৈতিক মর্যাদা ও অধিকার প্রত্যাহার করে নেবে তুরস্ক।
এ দশ রাষ্ট্রদূত তুর্কী সমাজকর্মী ওসমান কাভালার মুক্তি দাবি করে বিবৃতি দেওয়ার পরই প্রতিক্রিয়ায় এ ঘোষণা দেন এরদোয়ান।
এ সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক, জার্মানি নেদারল্যান্ডস. নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে এবং সুইডেন যৌথভাবে এই বিবৃতি দেয়। এরমধ্যে সাতটি দেশই ন্যাটোর সদস্য দেশ।
তুরস্ককে দেওয়া এক চূড়ান্ত সতর্কবার্তায় বিচারের মুখোমুখি না করা পর্যন্ত কাভালাকে মুক্তি দেওয়ার দাবি ইউরোপের মানবাধিকার নজরদারি সংস্থা কাউন্সিল অব ইউরোপ।
এসকিসেহির এক ভাষণের সময় এরদোয়ান বলেন, "এসব রাষ্ট্রদূত তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এসে নির্দেশ দেওয়ার সাহস দেখাতে পারেন না"।
তিনি বলেন, "আমি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছি। বলে দিয়েছি কী করতে হবে। আমি বলেছি, এই দশ জন রাষ্ট্রদূতকে অবিলম্বে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করতে হবে। আপনি দ্রুত ব্যবস্থা নিন।"
তবে কী হতে যাচ্ছে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
তুরস্কের সংবাদমাধ্যমকে এরদোয়ান বলেন, "এসব রাষ্ট্রদূতদের হয় তুরস্কের বাস্তবতা বুঝতে হবে, নয়ত তুরস্ক ছেড়ে চলে যেতে হবে।
রাষ্ট্রদূতদরা এখন পর্যন্ত এবিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে নরওয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, দেশটির রাষ্ট্রদূত "এমন কিছু করেননি যে কারণে তাকে বহিষ্কার করা যায়।"
গত মঙ্গলবার তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ দশজন রাষ্ট্রদূতকে তলব করে। কাভালার বিষয়ে তাদের দেওয়া বিবৃতিকে "দায়িত্বজ্ঞানহীন" বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে।
ওই বিবৃতিতে ওসমান কাভালাকে বিচারের মুখোমুখি করতে তুরস্ক সরকারের কালক্ষেপণের সমালোচনা করা হয়। দীর্ঘসূত্রিতা গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং তুরস্কের বিচার ব্যবস্থার স্বচ্ছতা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি করছে বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।
কাভালাকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানানো হয় বিবৃতিতে।
২০১৩ সালে দেশব্যাপী বিক্ষোভ সংগঠিত করার অভিযোগ থেকে কাভালাকে অব্যাহতি দেয়া হয়। পরবর্তীতে তাকে আবারও গ্রেপ্তার করা হয়।
তার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে এরদোয়ান সরকারের বিরুদ্ধে সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টায় হাত থাকার নতুন অভিযোগ আনা হয়।
তার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কাভালা।
এরদোয়ানের সমালোচকরা বলছেন, তুরস্কে ব্যাপকভাবে ভিন্নমত দমন করা হয়, কাভালার ঘটনাই তার বড় উদাহরণ।
- সূত্র: বিবিসি