মুখ্যমন্ত্রী পদে তৃতীয়বারের মত শপথ নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

তৃতীয়বারের মতো ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিট নাগাদ রাজভবনে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হয়। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় তাকে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ বাক্য পাঠ করান। ২০১১ ও ২০১৬ সালের মতো এবার শপথগ্রহণ সমারোহে কোনও বৃহৎ আয়োজন করা হয় নি।
বুধবার রাজভবনে তৃতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণ করে উঠেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, তার প্রথম কাজ হবে রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলা করা। শপথ নেওয়ার পরে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছেন মমতা।
এরপরই অগ্রাধিকার পাবে ভোট-পরবর্তী 'বিক্ষিপ্ত' হিংসার ঘটনা এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা। সকল রাজনৈতিক দলের কাছে শান্তি, শৃঙ্খলা এবং সংহতি বজায় রাখার অনুরোধ করে মমতা বলেন, 'বাংলা কিন্তু অশান্তি পছন্দ করে না। আমি নিজেও করি না। আমি সবাইকে উপযুক্ত পদক্ষেপের আর্জি জানাচ্ছি, যাতে কোনও হিংসা না হয়। কোথাও কোথাও নির্বাচনের পর বিক্ষিপ্ত ঘটনা হয়। আমি আজ থেকে আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্ব নিচ্ছি।'
অশান্তি করলে 'কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে' বলেও মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
প্রথমবার মুখ্যমন্ত্রীর শপথ গ্রহণে এসেছিলেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম। রাজভবনের ময়দানে বিরাট মঞ্চ তৈরি করে বৃহৎ জনসমাগমের মাধ্যমে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হয়েছিল। দ্বিতীয়বার মমতার শপথ হয়েছিল রেড রোডে। সেবার আবার দেশের বিজেপি বিরোধী সব নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোভিড সংক্রমণের পরিস্থিতিতে সব পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়েছে।
ঘটনাচক্রে, ২০১১ সালের মতোই এবারও মুখ্যমন্ত্রী বিধায়ক না হয়েই শপথ নিলেন। কারণ, নন্দীগ্রাম থেকে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে পরাজিত হয়েছেন তিনি। যদিও, সেই ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আবার আদালতে যাওয়ার কথা ঘোষণা করে দিয়েছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। ২০১১ সালে সরকার ক্ষমতায় এলে ভবানীপুর উপনির্বাচনে জিতে সাংবিধানিক নিয়মরক্ষা করেন মমতা। ২০১৬ সালে অবশ্য সাধারণ নির্বাচনে দাঁড়িয়ে ভবানীপুর থেকে জিতে দ্বিতীয়বারের জন্য বিধায়ক হয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন। কিন্তু, এবার নন্দীগ্রামে পরাজিত হয়েও তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন।
করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে রাজভবনের হলে সীমাবদ্ধ রাখা হয় মমতার তৃতীয়বারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। কলকাতার কিছু বিশিষ্ট মানুষসহ কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে আমন্ত্রণ জানানো হয় এই কর্মসূচীতে। রবিবার বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর দেখা গিয়েছে গতবারের তুলনায় শক্তি বাড়িয়ে ২১৫টি আসন নিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন মমতা। জয় পাওয়ার পর বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী স্মরণ করিয়ে দেন তাদের দায়িত্বের কথা এবং তার প্রাথমিক লক্ষ্য করোনা নিয়ন্ত্রণ।
- সূত্র- আনন্দবাজার পত্রিকা ও হিন্দুস্তান টাইমস