বিছানায় গোখরা ছেড়ে দিয়ে স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর দুবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

স্ত্রীকে গোখরা সাপের ছোবল খাইয়ে হত্যা করার অভিযোগে ভারতের কেরালায় এক ব্যক্তিকে দুবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন একটি আদালত। সেইসঙ্গে তাকে পাঁচ লক্ষ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।
সাজাপ্রাপ্ত আসামির নাম সুরাজ কুমার। গত বছর তার স্ত্রী উথরা সাপের ছোবল খেয়ে মারা যান। এর পরই উথরার পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সুরাজকে গ্রেপ্তার করা হয়। উথরার পরিবারের অভিযোগ ছিল, যৌতুকের জন্য তাদের অনেকদিন ধরে হয়রানি করছিলেন সুরাজ।
ঘুমানোর সময় উথরার বিছানায় গোখরা ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে সুরুজকে গত সোমবার দোষী সাব্যস্ত করেন আদালত।
গত বছরের মে মাসে ২৫ বছর বয়সি গৃহবধূ উথরাকে নিজের বাড়িতে বিছানায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
এর মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেও একবার সাপের কামড় খেয়েছিলেন উথরা। এত অল্প সময়ের ব্যবধানে দ্বিতীয়বার সাপের ছোবল খাওয়ায় তার পরিবার সন্দিহান হয়ে ওঠে।
পুলিশ জানিয়েছে, তাদের তদন্তে উঠে আসে উথরার সাপের ছোবল খাওয়ার দুটো ঘটনার পেছনেই সুরাজের হাত ছিল। সাপ সংগ্রহে সুরাজকে সাহায্য করা এক ব্যক্তিকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পর তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে রহস্য সমাধান করতে সাহায্য করেন।
লাইভল নামের একটি ভারতীয় আইনবিষয়ক ওয়েবসাইটের খবর অনুসারে, এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে পুলিশ আদালতে এক হাজার পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে সুরাজের হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা এবং তা বাস্তবায়নের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয়।
জানা যায়, গোখরা ও বোড়া সাপ সংগ্রহের উপায় জানার জন্য অনেকদিন অনলাইনে ঘাঁটাঘাঁটি করেছেন সুরাজ। গোখরার বিষ বের করার ভিডিয়োও কয়েকবার দেখেছেন। বিস্তর খোঁজাখুঁজির পর সুরেশ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ হয় তার। দশ ও সাত হাজার রুপি দিয়ে সুরেশের কাছ থেকে দুটি সাপ কেনেন তিনি।
এরপর উথরা বাবার বাড়িতে গেলে সে সময় তার বিছানায় সাপ ছেড়ে দিয়ে তাকে হত্যা করেন সুরাজ। উথরার ঘর থেকেই গোখরা উদ্ধার হয়।
আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় পাবলিক প্রসিকিউটর এটিকে 'বিরল ঘটনার মধ্যেও বিরলতম' বলে উল্লেখ করে আসামির মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন।
এই হত্যাকাণ্ড যে বিরল ঘটনা, সে বিষয়ে বিচারকও একমত হন। তবে মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে সুরাজকে দুবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন তিনি।
তবে সুরাজের মৃত্যুদণ্ড না হওয়ায় উথরার পরিবার বলেছে যে, তারা এই রায়ে সন্তুষ্ট নয়।
- সূত্র: বিবিসি ও আনন্দবাজার পত্রিকা