প্রয়োজনের চেয়ে ১০০ কোটি ডোজ বেশি ভ্যাকসিন মজুদ করছে ধনী দেশগুলো

নিজেদের প্রয়োজনের চেয়েও একশো কোটি ডোজ বেশি ভ্যাকসিন মজুদের পথে হাঁটছে ধনী দেশগুলো। সেইসাথে ভ্যাকসিন পাওয়ার দৌড়ে আরও পিছিয়ে পড়তে যাচ্ছে দরিদ্র দেশগুলো।
দারিদ্র্য বিরোধী প্রচারণা প্রতিষ্ঠান 'ওয়ান ক্যাম্পেইনের' সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সরবরাহের সাম্প্রতিক চুক্তিগুলোর ব্যাপারে সংস্থাটির বিশ্লেষণী প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী মহামারি নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো ধনী দেশগুলোর উচিৎ বাড়তি ভ্যাকসিনের ডোজ অন্যান্য দেশে সরবরাহ করা।
দারিদ্র্য বিমোচন ও প্রতিরোধযোগ্য রোগ নিয়ে কাজ করা এ সংস্থাটি জানিয়েছে, এর ব্যত্যয় হলে কোটি কোটি মানুষ কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা পাবে না, মহামারিও আরও দীর্ঘায়িত হবে।।
ফাইজার-বায়োএনটেক, মডার্না, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, জনসন অ্যান্ড জনসন ও নোভাভ্যাক্স- শীর্ষ এ ৫টি ভ্যাকসিনের চুক্তির ব্যাপারে প্রতিবেদনটিতে আলোকপাত করা হয়।
প্রতিবেদনটিতে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও জাপান ইতোমধ্যেই ৩ বিলিয়নের বেশি ডোজ ভ্যাকসিন কিনে নিয়েছে। দেশগুলোর মোট জনসংখ্যাকে দুই ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য প্রয়োজন হবে ২.০৬ বিলিয়ন ডোজ, অর্থাৎ প্রয়োজনের তুলনায় ১ বিলিয়নেরও বেশি ডোজ ভ্যাকসিন মজুদ করছে দেশগুলো।
ওয়ান ক্যাম্পেইনের সিনিয়র ডিরেক্টর ফর পলিসি, জেনি ওটেনহফ বলেন, "ভ্যাকসিন জাতীয়তাবাদেরই ফলাফল এটি। মহামারির শুরু থেকেই আগেভাগে ভ্যাকসিন মজুদের চেষ্টা করেছে ধনী দেশগুলো। বিশ্বের নানা প্রান্তের কোটি কোটি মানুষকে সুরক্ষা দিতে এ প্রবণতার পরিবর্তন প্রয়োজন।"
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী ন্যায্যতার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন সরবরাহের জন্য গঠিত কোভ্যাক্সের ভ্যাকসিন বিতরণ কর্মসূচির সাথে সাথে, ধনী দেশগুলোর মজুদকৃত অতিরিক্ত ভ্যাকসিন দরিদ্র দেশের জনগণের সুরক্ষায় বড় ভূমিকা রাখবে।
এরফলে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার কমে যাওয়ার পাশাপাশি ভাইরাসের নতুন ধরন সৃষ্টির সম্ভাবনা কমে যাবে ও দ্রুত মহামারির অবসান হবে।
ভ্যাকসিন পেয়েছে এমন দেশগুলোকে একতরফা ভাবে ভ্যাকসিন প্রদান না করে ন্যায্যতা নিশ্চিত করার জন্য কোভ্যাক্সে ভ্যাকসিন প্রদানের আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
- সূত্র: রয়টার্স