চূড়ান্ত মনোনয়নের পর আলোকিত দেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন জো বাইডেন

২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় এপর্যন্ত সক্রিয় ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্য আর কর্মকাণ্ডের বিপরীতে অনেকটাই নিষ্প্রভ ছিলেন ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী জো বাইডেন। কিন্তু, গত বৃহস্পতিবার (যুক্তরাষ্ট্র সময়) সৌজন্যের সে আবরণ ভেঙ্গে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নিজের অস্তিত্ব জানান দিয়েছেন তিনি।
এদিন নিজ দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীতার চূড়ান্ত মনোনয়ন নেওয়ার কালে তিনি এমন জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিয়েছেন, যা তাকে আলোচনার কেন্দ্রে ফিরিয়ে এনেছে আবারও।
বাইডেনের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের অভিযোগ ছিল- মহামারিকালে বাইডেন নিজ বাড়ির বেজমেন্টে লুকিয়ে রাখছেন। অর্থাৎ, তিনি সংক্রমণের ভয়ে জনগণের মাঝে না থেকে নিজেকে অন্তরালে সরিয়ে রেখেছেন। খবর রয়টার্সের।
প্রতিপক্ষের এসব অভিযোগকে নিজের শক্তিতে পরিণত করেন বাইডেন ডেমোক্র্যাট দলের জাতীয় অধিবেশনে দেওয়া তার ভাষণে। প্রায় নিঃশব্দ ওই সম্মেলন কক্ষে বাইডেনের ভাষণ মার্কিন রাজনীতির ডান ও বাম- উভয় ঘরানার বিশেষজ্ঞদের মুগ্ধ করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন শক্তিশালী ভাষণ তারা হোয়াইট হাউজ (মার্কিন প্রেসিডেন্টের) কাছ থেকে প্রত্যাশা করেছিলেন। অর্থাৎ, বাইডেন প্রেসিডেন্টের মতো ভাষণ দিয়েছেন। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও এমন বক্তব্য দিতে বারংবার ব্যর্থ হয়েছেন, সেদিকেই ইঙ্গিত দেন তারা।
ভাষণে ৭৭ বছরের বাইডেন নিজেকে বিভক্ত জাতি এবং সঙ্কটে নিপতিত দেশের রক্ষাকর্তা হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেন। খোদ ডেমোক্র্যাট দলের ভেতর যারা বাইডেনের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীতার যোগ্যতা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন, যারা বলেছিলেন তিনি এই মুহূর্তে দরকারি নেতা নন- এতে তাদের মুখও বন্ধ হয়েছে।
বাইডেনের উপস্থাপনা রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মনে করিয়ে দিয়েছে, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ফ্রাঙ্কলিন ডেলানো রুজভেল্টের কথা। তিনিও যুক্তরাষ্ট্রকে কঠিন এক অর্থনৈতিক মন্দা এবং যুদ্ধের মধ্যে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। বাইডেন যদি নির্বাচিত হন, তবে তাকে বিশ্বযুদ্ধ না লড়লেও- মহামারির বিরুদ্ধে জয়ী হতে হবে। অরাজকতা আর বর্ণবাদের বৈষম্য থেকে বাঁচাতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে।
বাইডেনের বক্তব্যের আগের দিন, মার্কিন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য ট্রাম্পকে একটি হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তার অধীনেই এককালে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন জো বাইডেন।
মার্কিন নাগরিকদের কাছে বাইডেন নিজেকে 'আলোকিত পথের মিত্র' হওয়ার অঙ্গীকার করে বলেছেন, তিনি ব্যক্তি স্বার্থে জাতীয় ঐক্য জলাঞ্জলি দেওয়া-ট্রাম্পের অন্ধকার রাজনৈতিক দৃষ্টান্ত অনুসরণ করবেন না।