শ্রীলঙ্কার সাথে বাংলাদেশের তুলনা লজ্জাজনক: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়

স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে বাংলাদেশ যখন দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনৈতিক অবস্থানে রয়েছে, তখন বাংলাদেশকে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে তুলনা করা লজ্জাকর বলে মনে করছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও)। বাংলাদেশের যে বৈদেশিক ঋণ রয়েছে, তা পরিশোধে আগামী এক দশকের মধ্যে কোন সমস্যা হবে না বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।
আজ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন অর্থসচিব আবদুর রউফ তালুকদার ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতেমা ইয়াসমিন ও ব্যাংকিং সচিব শেখ মো. সল্লীম উল্লাহ।
ইআরডি সচিব জানান, বাংলাদেশের বেশিরভাগ বৈদেশিক ঋণ বহুপাক্ষিক সংস্থা ও দ্বিপাক্ষিক। এসব ঋণে ঝুঁকি কম, পরিশোধকাল দীর্ঘ। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার বেশিভাগ ঋণ বাণিজ্যিক ও সভরেন বন্ডের, যেগুলো উচ্চসুদসহ ৫ বছরে পরিশোধ করতে হয়।
শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ৩৫ বিলিয়ন ডলার, অথচ দেশটিকে প্রতিবছর ঋণ পরিশোধ করতে হয় ৭.৫ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে, বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ৫০ বিলিয়ন ডলার হলেও, প্রতিবছর ঋণ পরিশোধে ব্যয় হয় ২.৫ বিলিয়ন ডলার।
শ্রীলঙ্কার ঋণের সুদহার ৮% হলেও, বাংলাদেশের নেওয়া বৈদেশিক ঋণের সুদহার ১.৪% এবং ঋণ পরিশোধের মেয়াদকাল ৩০ বছর। উচ্চ সুদের বাণিজ্যিক ঋণ ও সভরেন বন্ড বাংলাদেশের নেই।
অর্থসচিব বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার চারটি বড় অর্থনীতি ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান। কিন্তু, বাংলাদেশের জিডিপির আকার পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার জিডিপির যোগফলের চেয়েও বেশি। দেশ দু'টির মোট রপ্তানি আয়ের তুলনায়, বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণও বেশি এবং বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের পরিমাণ ওই দুই দেশের রিজার্ভের যোগফলের দ্বিগুণ।
আহমেদ কায়কাউস বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশের অর্থনৈতিক তথ্য-উপাত্ত তিন ঘন্টা ধরে বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হয়েছেন যে, শ্রীলঙ্কার মতো হওয়া দূরের কথা, বাংলাদেশের সামনে বৈদেশিক ঋণ নিয়ে কোন ঝুঁকি নেই। এনিয়ে তিনি মোটেও উদ্বিগ্নও নন।
'স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্জন নিয়ে আমরা যখন গর্বিত ও উল্লসিত, তখন জাতীয় অর্জনকে এভাবে অবদমন করতে একটি পক্ষ যেভাবে বাংলাদেশকে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে তুলনা করছে- তা খুবই হাস্যকর এবং এর চেয়ে লজ্জার কিছু হতে পারে না'- যোগ করেন আহমেদ কায়কাউস।