অর্থবছরের প্রথম চার মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হার কমেছে
চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) সময়ে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বাস্তবায়ন হার কমেছে।
এসময় মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো মোট এডিপি বরদ্দের ১২.৬৪ শতাংশ অর্থ ব্যয় করেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এডিপি বরাদ্দের ১৩.০৬% অর্থ ব্যয় হয়েছিল।
বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
আইএমইডির তথ্য অনুযায়ী, এডিপি বাস্তবায়নে সরকারি তহবিলের বরাদ্দ থেকে অর্থ ব্যয় গত অর্থবছরের তুলনায় কমেছে।
গত অর্থবছরের প্রথম চার মাসে সরকারি তহবিল থেকে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো ১৯,৫৪৯ কোটি টাকা ব্যয় করেছিল। চলতি অর্থবছরে এই ব্যয় ১৮,১৯০ কোটি টাকায় নেমে এসেছে।
চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে সরকারি তহবিলের মোট বরাদ্দ থেকে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো ব্যয় করছে ১২.২১% অর্থ। এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে এ হার ছিল ১৪.২৪%।
যদিও এই সময়ে বৈদেশিক সহায়তা খাতের বরাদ্দের ব্যয় গত অর্থবছরের তুলনায় ৩.২৩% বেড়েছে।
গত অর্থবছরের প্রথম চার মাসে বৈদেশিক সহায়তা খাত থেকে ব্যয় হয়েছিল ৯৮৫৭ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে বৈদেশিক সহায়তা খাত থেকে ব্যয় হয়েছে ১৩২৭৭ কোটি টাকা।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সরকারের ব্যয় কমানোর নির্দেশনার কারণে সরকারি তহবিলের বরাদ্দ থেকে অর্থব্যয় কিছুটা কমেছে।
অন্যদিকে বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পগুলোকে সরকার গুরুত্ব দিয়ে বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে, যে কারণে বৈদেশিক সহায়তা খাতের ব্যবহার এবার বেড়েছে।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় সরকার উন্নয়ন প্রকল্পের গুরুত্ব বিবেচনায় এ, বি এবং সি ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছে। এখনই ব্যয় না করলে তেমন সমস্যা হবে না এমন প্রকল্পগুলোকে রাখা হয়েছে সি ক্যাটাগরিতে। এসব প্রকল্পের অর্থছাড় বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
বি ক্যাটাগরির প্রকল্পগুলো বরাদ্দে ৭৫% অর্থ ব্যয়ের সুযোগ রাখা হয়েছে। এর ফলে এসব প্রকল্পের ২৫% অর্থ ছাড় করা হবে না।
গুরুত্ব বিবেচনায় এ ক্যাটাগরির প্রকল্পে শতভাগ অর্থই ছাড় করবে সরকার। বৈদেশিক অর্থায়নের সব প্রকল্প রাখা হয়েছে এ ক্যাটাগরিতে।
আইএমডির তথ্য অনুযায়ী, অর্থবছরের চার মাস পার হলেও অনেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এখনো অর্থব্যয়ে গতি বাড়াতে পারেনি। এর মধ্যে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া মন্ত্রণালয় ও বিভাগও রয়েছে।
প্রথম চার মাসে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সেতু বিভাগ বরাদ্দের ৩৭% অর্থ ব্যয় করলেও নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় ব্যয় করেছে মাত্র ৪.৫৪% অর্থ।
সর্বোচ্চ বরাদ্দের তালিকায় থাকা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ৫.৭৩%, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ ৬%, বিজ্ঞাপন ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ৮.০৩%, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ ৮.৬৭%, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ৮.৭৫% অর্থ ব্যয় করেছে।
সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে সেতু বিভাগ ছাড়াও বিদ্যুৎ বিভাগ, রেল পথ মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগের এডিবি বাস্তবায়ন হারে গতি রয়েছে বলে আইএমইডির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে।
