বিশ্ব মহামারির সঙ্কটেও সুরক্ষিত অর্থনীতিতে ৯ম বাংলাদেশ: ইকোনমিস্ট

দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরাশক্তি ভারত এবং চীনের চাইতে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অর্থনীতি তুলনামূলক ভালো অবস্থানে থাকবে।
বিশ্ব অর্থনীতির চাকা যখন বন্ধ এবং লাখো মানুষের জীবিকা প্রশ্নের মুখে, ঠিক তখনই ৬৬টি দেশের অর্থনীতি নিয়ে এক গবেষণায় বাংলাদেশ সম্পর্কে এমন আশার বাণী শুনিয়েছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য ইকোনমিস্ট।
ইকোনোমিস্টের বিশেষজ্ঞদের মতে, চলমান সঙ্কটের মাঝেও বাংলাদেশ অপেক্ষাকৃত নিরাপদ অবস্থানে আছে। করোনা ভাইরাসের সংকটময় পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্বের কোন দেশ কতটুকু অর্থনৈতিক নিরাপদ, সেটা ইকোনমিস্টের তালিকায় প্রাধান্য দেওয়া হয়।
অর্থনৈতিক নিরাপত্তার দিক থেকে ভারত,পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার অবস্থান যথাক্রমে; ১৮, ৪৩ ও ৬১তম। আর বাংলাদেশ আছে নবম অবস্থানে। এমনকি চীন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থনীতির চেয়েও কম ঝুঁকিতে বাংলাদেশ।
লন্ডনভিত্তিক গণমাধ্যমটির আলোচিত র্যাংকিংয়ে; মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) বিপরীতে সরকারি দেনার পরিমাণ, সরকারি ও বেসরকারিখাতে মোট বৈদেশিক ঋণ এবং ঋণের সুদ ও অন্যান্য খরচকে আমলে নেওয়া হয়। সেই তুলনায় একটি দেশের বৈদেশিক মুদ্রা ও সম্পদের রিজার্ভ কতটুকু সুরক্ষা দিতে পারে সেটাও বিবেচনা করা হয়েছে।
এসব সূচকের বিচারে প্রতিবেশীদের তুলনায় বাংলাদেশ তুলনামূলক শক্তিশালী অবস্থানেই আছে।
তবে উদীয়মান এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য আগামীদিনের চ্যালেঞ্জগুলো নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
ইকোনমিস্ট জানায়, কোভিড-১৯ প্রধানত তিনভাবে উদীয়মান অর্থনীতিগুলোকে ক্ষতির মুখে ফেলেছে। এগুলো হলো; জনগণের চলাচলের স্বাধীনতা হরণ করে, রপ্তানি আয়ে ধ্বস সৃষ্টি করে এবং বিদেশী পুঁজি প্রবাহে বাধা সৃষ্টির মাধ্যমে।
চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধ নাগাদ যদি বিশ্ব মহামারির প্রভাব কমেও যায়, তারপরেও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ভোক্তাদের ক্রয়-সক্ষমতা ২০২০ সালে যা হবে বলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ধারণা করছে- তার চাইতে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ কমতে পারে।
'সবচেয়ে বড় ধ্বস অব্যাহত থাকবে রপ্তানিখাতে। জ্বালানি তেলের রেকর্ড দরপতনের কারণে এর ফলে উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর অর্থনীতি তাদের চলতি বাজেটে ৩ শতাংশের বেশি রেকর্ড ঘাটতির মুখে পড়বে। আইএমএফ এই অনুমান করছে। গতবছর এসব দেশের বাজেট উদ্বৃত্ত ছিল ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। তবে সাধারণত যখন রপ্তানি আয় কমে তখন প্রায় সকল দেশই বিদেশী ঋণ নিয়ে সেই ঘাটতি পূরণ করার চেষ্টা করে। তবে বিদেশী বিনিয়োগ প্রত্যাহার এবং মূলধনের বহিঃমুখী প্রবাহের চাপে ঋণের খরচও বাড়তে চলেছে। যা নগদ অর্থ সঙ্কটে থাকা তুলনামূলক ধনী আরব দেশগুলোকেও চাপের মুখে ফেলবে।'
এসব কথা উল্লেখ করে, সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর মোট আড়াই লাখ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ প্রয়োজন বলে জানায় দ্য ইকোনমিস্ট। এটা তারা নিজেদের রিজার্ভ থেকে খরচ করতে পারে, বা বিদেশী উৎস থেকেও ঋণ নিতে পারে। তবে গৃহীতা দেশগুলোর তারল্য সঙ্কট বিবেচনায় দাতাদের প্রতি ঋণের সুদ নেওয়া বন্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
.