অন্ধকে পথ দেখাবে সুটকেস

বিমানবন্দরের গোলকধাঁধার মতো করিডর, প্রচুর চলন্ত সিঁড়ি আর অসংখ্য গেট পেরিয়ে যাওয়া সহজ কাজ নয়। এবার ভাবুন, কোনো অন্ধের পক্ষে এমন ধকল সামলানো কতটা দুঃসাধ্য ব্যাপার!
জাপানি কম্পিউটার বিজ্ঞানী ও আইএবিএম গবেষক চিয়েকো আসাকাওয়া ঠিক এমন চ্যালেঞ্জেরই মুখোমুখি হয়েছিলেন। প্রতি মাসে ঘড় ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানে আসা-যাওয়া করতে হয় এই অন্ধ নারীকে। ভ্রমণকালে যদি কোনো সঙ্গী না থাকে, নিতে হয় বিমানবন্দরের কর্মীদের সাহায্য। এজন্য কখনো কখনো অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় থাকে না তার।

এই বিড়ম্বনা থেকে রেহাই পেতে, একটি হাই-টেক সুটকেস উদ্ভাবন করেছেন আসাকাওয়া। স্বচালিত গাড়ির প্রযুক্তি এক্ষেত্রে ব্যবহার করেছেন তিনি। এর ফলে ছড়ি কিংবা কুকুরের সাহায্য ছাড়াই নিশ্চিন্তে পথ চলতে পারবেন অন্ধরা।
এই রোবট সুটকেসটিতে রয়েছে ক্যামেরা ও সেন্সর। রয়েছে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সংযোজন, যেন লোকেশন শনাক্ত ও দূরত্ব পরিমাপ করতে পারে।
সুটকেসটি যেন গন্তব্য ঠিকঠাক চিনতে পারে, এর জন্য রয়েছে মোবাইল অ্যাপ। এছাড়া চেহারা দেখে শনাক্তকরণের প্রযুক্তিও ব্যবহার করা হয়েছে। এর ফলে ব্যবহারকারীর কোনো পরিচিতজন বা বন্ধু-বান্ধব কাছাকাছি থাকলে তাকে চিনে নেবে সুটকেসটি। আর সেই বার্তা পৌঁছে দেবে ব্যবহারকারীর কাছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কম্পিউটার হার্ডওয়ার কোম্পানি আইবিএম এবং অন্যান্য জাপানি কোম্পানির সহযোগিতায় ২০১৭ সাল থেকে এই কনসেপ্ট বিকাশের কাজ করছেন আসাকাওয়া। আরও সহযোগিতা নিয়েছেন পেনসিলভানিয়ার কার্নেগি মেলন ইউনিভার্সিটির, যেখানে আইবিএমের পক্ষে রোবটিকস ইনস্টিটিউটে অধ্যাপনা করেন তিনি।
আসাকাওয়া জানিয়েছেন, বিমানবন্দর, শপিংমল ও অন্যান্য পাবলিক স্পেসে সুটকেসটির পরীক্ষামূলক ব্যবহার করার কথা ভাবছেন তারা। সহসাই এটির বাণিজ্যিকীকরণেরও আশা রাখেন। যদিও বর্তমান সংস্করণে সুটকেসটি ভরা রয়েছে নানাবিধ প্রযুক্তি পণ্যে, তবে ভবিষ্যতে এর পরিমার্জন করে একে জামা-কাপড় ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ভরে রাখা-সহ সাধারণ কাজে ব্যবহারযোগ্য করে তোলারও পরিকল্পনা রয়েছে আসাকাওয়ার।
- সূত্র: সিএনএন